পার্বত্য বাঙালিদের চরম দুঃখদুর্দশা কবে গোছবে?

0
প্রতিবাদে বিক্ষোভে বাঙালিরা

বুলবুল আহসান, হিল নিউজ বিডি: সরকার ১৯৭৯ সনে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালি পুর্নবাসন করার পর জাতিগতভাবে নিধন করার অংশ হিসেবে গণহত্যা চালায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সংহতি সমিতি বা জেএসএস। এই নিধন হত্যাযজ্ঞের শিকার হয় হাজার হাজার বাঙালি। অপ্রস্তুত বাঙালিদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। নির্বিচারে নির্যাতন-অত্যাচার, হামলা লুটপাট, খুন-গুম এবং গণহত্যা চালানো হয়। রাষ্ট্রের স্বপক্ষের শক্তি বাঙালিরা পাহাড়ে হয়ে যায় অসহায়। ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৯৭ সনের ২-রা ডিসেম্বর পর্যন্ত চলে বাঙালি ও সেনাবাহিনীর উপর আক্রমণ। পরবর্তীতে ১৯৯৭ সনের ২-রা ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি সম্পাদিত হয় সরকার এবং জেএসএস মধ্যকার। এই চুক্তির পূর্বে পাহাড়ের বাঙালিদের জীবন ছিল অনেক বিষাদময়। ১৯৯৭ সালের পরে নবাগত বাঙালিরা দেখেনি পাহাড়ে বাঙালি টিকে থাকার সংগ্রাম, তারা দেখেনি সেনাবাহিনীর আত্মত্যাগ! নবাগত বাঙালির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আদু বাঙালি এবং সমতলের সুশীল সমাজ। যারা সবসময় ১৯৭৯ সনের পার্বত্য বাঙালিকে সেটেলার আর ভূমি দখলদার হিসেবে সম্বোধন করে! কী করে বুঝবে তারা এখানকার চরম দুঃখদুর্দশা করুণ চিত্র? তারা তো সুশীল এবং সন্ত্রাসীদের পদলেহনে ব্যস্ত। আজ যে, বাঙালি, সেনাবাহিনীর আত্মত্যাগ ও রক্তের বিনিময় পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাস করার অধিকার পেয়েছে সে বাঙালি ও সেনাবাহিনীর প্রতি তাদের বিন্দুমাত্র শ্রদ্বা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ নেই।

স্থানীয়দের অধিবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালিরা বৈষম্য, অন্যায় ও অবিচারের শিকার। নবাগত বাঙালিরা এসব নিয়ে মোটেও চিন্তিত নয়। পাহাড়ের পরিস্থিতি দিনদিন খারাপের দিকে ধাবিত হচ্ছে। যার প্রধান সমস্যা ও কারণগুলো শনাক্ত হলেও বাঙালী নেতৃত্ব শূন্য থাকায় এর থেকে পরিত্রাণ সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশের সংবিধানে এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা থাকলেও আঞ্চলিকতার ঠাঁই নেই। কিন্তু পার্বত্যাঞ্চলে আঞ্চলিকতার ঠাঁই বৈধতা পেয়েছে ১৯৯৭ সনের পার্বত্য চুক্তির পর! এ আঞ্চলিকতা এখানকার জনগোষ্ঠীকে বিভক্ত করে দিয়েছে৷ জাতি বর্ণ- নাগরিক শনাক্ত, কোটা, সুযোগ-সুবিধা, আধিপত্য বিস্তার সবকিছু একটি গোষ্ঠীকে দিয়েছে৷ যার কারণে এখানকার বাঙালি জনগোষ্ঠী চরমভাবে নাগরিক অধিকার হতে বঞ্চিত হয়েছে। বসবাসরত জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিভক্তি, বৈষম্য, হানাহানি ও ক্ষোভ সৃষ্টি শুরু হয় ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে সম্পাদিত পার্বত্য চুক্তির মাধ্যমে৷ চুক্তিতে একতরফাভাবে উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর আধিপত্য বিস্তার নিশ্চিত করে! চুক্তির বেশিরভাগ ধারা-উপধারা বাংলাদেশ সংবিধান বিরোধী৷ চরম অবহেলা, বৈষম্য, অনিয়মের মাধ্যমে বাঙালিকে অবজ্ঞা করার নীল নকশা তৈরি হয়েছে। এর থেকে পরিক্রাণ পেতে হলে চুক্তির বৈষম্যমূলক অসাংবিধানিক ধারাগুলোর বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তা না করে রাজনৈতিক ব্যক্তি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপর দোষারোপ করে লাভ হবেনা৷

আজ পার্বত্য চুক্তি ২৭ বছরে দাঁড়িয়ে। এই ২৭ বছরে পার্বত্য বাঙালি তথা রাস্ট্রের প্রাপ্তি কতটুকু চুক্তি থেকে তা মূল্যায়নের সময় এসেছে। আজকে এই আলোচনা সমালোচনা চুক্তিকে ঘিরে নয় বরং এ অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া বাঙালি জাতি তথা রাস্ট্রকে নিয়ে।

আইনজ্ঞরা বলছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামকে উপজাতি অধ্যুষিত অঞ্চল হিসেবে পার্বত্য চুক্তিতে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। সুশীল, বুদ্ধিজীবি বা বাঙালির মাথা বিক্রি করে চলা ব্যক্তিরা পার্বত্য চুক্তির বৈষম্যমূলক অসাংবিধানিক ধারাগুলো সংশোধন করার জোর দাবীতে আন্দোলন করছে না। আইনী প্রক্রিয়াও গ্রহণ করছে না। মাঝেমধ্যে আঞ্চলিক পরিষদ, জেলা পরিষদ ও উন্নয়ন বোর্ডের বিরুদ্ধে দুই-চারটা কথা বলে সীমাবদ্ধ থাকছে। যে কোন সমস্যা থেকে উত্তরণ হতে হলে গোড়ায় যেতে হয় সেটা বাঙালিরা করতে ব্যর্থ হচ্ছে।

স্থানীয় বাঙালি জনগোষ্ঠীর অভিযোগ:
হাজার হাজার বাঙালি ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিহতের পর এবং দীর্ঘ পার্বত্য সংঘাত ১৯৯৭ সনে শেষ হওয়ার পর সমতল থেকে কিছু বাঙালি এবং ভারত, মায়ানমারের উপজাতিরা অনুপ্রবেশ করে পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি নাজুক করেছে। এর ফলে এখানকার জীববৈচিত্র্য, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও উপজাতি বাঙালি উভয় সম্প্রদায়ের উপর প্রবল চাপ পড়েছে। পাহাড়ে এ কয়েক বছরে ভারত ও মায়ানমার থেকে হাজার হাজার উপজাতির অনুপ্রবেশ ঘটেছে। তা রোধে রাস্ট্রীয় পদক্ষেপ চোখে পড়েনি! এদিকে ১৯৭৯ সনের বাঙালিদের পার্বত্য জীবন কতটা কষ্ট ও দুঃখদায়ক ছিল তা অনুভব করেনা নবাগত বাঙালিরা। তারা বাঙালিদের স্বার্থে বা রাষ্ট্রের স্বার্থে কথা বলেনা। সুযোগ সন্ধানী, মীরজাফর, বেইমান, মোনাফেকি মার্কা বাঙালি পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা সংকটময় করে তুলছে। এ প্রকৃতির বাঙালি পার্বত্য পরিস্থিতি নাজুক করেছে। তারা আঞ্চলিক সন্ত্রাসীদের কাজ করছে। ১৯৭৯ সনের বাঙালিদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে। তাদের বাঙালির প্রতি শ্রদ্ধা নেই৷ তারা স্বার্থপর এবং অকৃতজ্ঞ প্রকৃতির। চুক্তির পরে যেসকল বাঙালি পাহাড়ে এসেছে পার্বত্য নিয়ে তাদের অবদান কী?? নিশ্চিত বলা যায় তাদের কোন অবদান নেয়। বরং তারা পার্বত্য চট্টগ্রামে এসে এখানকার উপজাতি বাঙালি ফারাক সৃষ্টি করেছে। ১৯৭৯ হতে ১৯৯৭ সময়কালের বাঙালি আর পরবর্তী সময়ে অনুপ্রবেশকারী বাঙালির চিন্তা চেতনা পাহাড় নিয়ে এক নয়। তারা উপজাতি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হত্যাযজ্ঞ, হামলা, নারীদের গণধর্ষণ ও মায়ের কোল হতে সন্তানকে হত্যা করার নির্মমতা দেখেনি। তারা দেখেনি তৎকালীন পাহাড়ে বাঙালির টিকে থাকার সংগ্রাম এবং দুঃখদুর্দশা। তারা দেখেনি পাহাড়ের সেনাবাহিনীর আত্মত্যাগ। কত বাঙালি, সেনাবাহিনী সন্ত্রাসী হামলা এবং ম্যালেরিয়াতে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ দিয়েছে তার সঠিক হিসাব নেই। পাহাড় জুড়ে শান্তিবাহিনীর সন্ত্রাসীদের নারকীয় হত্যাযজ্ঞ ৭১ সালকেও হার মানিয়েছে! সরকারী বিভিন্ন দপ্তরে চাকরি করতে আসা বাঙালিরা পাহাড়ে জায়গা জমি ক্রয় করে এ অঞ্চলের উপজাতি বাঙালির মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করেছে৷ এরা হচ্ছে চাটুকার এদের ২০০ টাকা দিয়ে কেনা যায়৷ ডিসি অফিস ও ইউএনও এবং অন্যান্য অফিসে চাকরি করতে এসে এরা অবৈধভাবে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে উপজাতি ও বাঙালিদের ভূমি গুলো হাতিয়ে নিয়েছে৷ সুযোগ বুঝে উপজাতি ও বাঙালি নেতাদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে নিজের ছেলে-মেয়েদের প্রতিষ্ঠিত করেছে৷ উপজাতি বাঙালি কোন ঝামেলা সৃষ্টি হলে তারা বলে পাহাড়ে সমস্যার মূল সেটেলার বাঙালিরা! সেটেলার বাঙালি পাহাড়ের সমস্যা আর তারা উড়ে এসে জুড়ে বসে সুশীল! ১৯৯৭/২০০০ সালের পরে এসে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাসিন্দা হয়ে যাওয়া বাঙালি গুলোর কী অবদান রয়েছে পার্বত্য নিয়ে? ১৯৭৯/৮৬ সালের বাঙালিরা এখনো নিজস্ব ভূমি গুলো দখলে নিতে পারেনি। প্রায় ভূমি উপজাতি কর্তৃক বেদখল। গুচ্ছগ্রামের বন্দিশালায় কাটছে তাদের জীবন। তো এই বাঙালিদের উপজাতি সন্ত্রাসী বা উপজাতিদের প্রতি ক্ষোভ থাকাটাই তো স্বাভাবিক৷ এই নিয়ে প্রতিবাদ করলে নবাগত বাঙালিরা বলে পার্বত্য বাঙালিরা সেটেলার, ভূমি দখলদার! এদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সমতলের সুশীল সমাজ। সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালিরা উপজাতি বিচ্ছিন্নতাবাদী ৫/৬টি সন্ত্রাসী সংগঠন কর্তৃক হামলা, মামলা, চাঁদাবাজি এবং অপহরণ ও খুন-গুমের শিকার। ভূমি হারা বাঙালিরা চরম দুঃখদুর্দশার মধ্যে মানবেতর জীবনযাপন করছে। তাদের এই দুঃখদুর্দশা ঠিক কবে গোছাবে তা বলা কঠিন৷ কারণ তাদের পক্ষে সাফাই গাওয়া লোক পাওয়া দুষ্কর।

প্রবীণ বাঙালি নেতারা বলছেন,
পার্বত্য বাঙালিরা ঐকবদ্ধ নয়। তাদের মধ্যে বিভাজন, হানাহানি ও অনৈক্য বিদ্যমান। পূর্বের বাঙালিরা আন্দোলন সংগ্রামে কিছু টা যুক্ত হতে চাইলেও কাজে নবাগতদের খুঁজে পাওয়া যায়না। বৈষম্যমূলক, অসাংবিধানিক ধারার পার্বত্য চুক্তির বিরুদ্ধে নবাগত বাঙালিদের কোন আন্দোলন সংগ্রামে পাওয়া গেছে? বলবেন কি? পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালিকে টিকে থাকতে হলে কর্মসূচী, হরতাল, অবরোধ, মানববন্ধন ও লেখালেখি করার প্রয়োজন হয়। এসকল কাজে সুশীল নবাগত বাঙালিদের খুজে পাওয়া যায় কী? এই প্রকৃতির বাঙালির সঙ্গে আবার পূর্বের কিছু বাঙালিও মিলিত হয়েছে। তারা এখন সুশীল। বেশ করে কিছু বাঙালি রয়েছে তারা নাকি পাহাড়ে ‘আদু!’ এরা সব সময় উপজাতিদের পদলেহন করে থাকে আবার বাকি বাঙালিদের সেটেলারও বলে! নবাগত বাঙালি আর এরা এ অঞ্চলে কোনো ঘটনা নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বা মন্তব্য করেনা, কারণ যদি উপজাতি নেতারা মনে কষ্ট পায়! কিন্তু এরা সংগোপনে উপজাতীদের পদলেহন করে! এরা পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রকৃত ঘটনা, অনিয়ম ও বৈষম্য গুলো অনুভব করতে পারে না! পার্বত্য চুক্তির উপজাতি কোটা, চাকরিতে উপজাতিদের অগ্রাধিকার দেয়া, সবকিছুতে উপজাতি আধিপত্য বিস্তার এসব চোখে দেখেও না দেখার ভান করে।
যেমন: বাঙালিরা পার্বত্য জেলা পরিষদ পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান হতে পারে না এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হতে পারেনা। এরপরও বাঙালিদের একটি অংশের এই নিয়ে লজ্জা বোধ হয়না!

জায়গা ক্রয়-বিক্রি ও বিভিন্ন প্রয়োজনের জন্য স্থানীয় বাসিন্দা সনদ প্রয়োজন। তা নিতে হেডম্যান রিপোর্ট, চীপ সনদ প্রয়োজনীয়তা যে বাঙালিকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে তা তারা অনুভব করেনা!

বিশ্লেষকরা বলছেন, ১৯৭৯ ও ১৯৯৭ পূর্বেকার বাঙালির সঙ্গে চুক্তির পরবর্তী সময়ে অনুপ্রবেশকারী সুযোগ সন্ধানী চাটুকার, চোগলখোর টাইপ মার্কা বাঙালিকে একত্রিত করে বাঙালিকে পার্বত্যাঞ্চলে সংখ্যাগরিষ্ঠ বলা হাস্যকর! আপনারা পাহাড়ে বাঙালি সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেখাতে গিয়ে সুশীল, প্রগতিশীল ও বামদল গুলোকে সুযোগ করে দেন, তারা যেনো বলতে পারে পার্বত্য চট্টগ্রামে ইসলামীকরণ হচ্ছে৷ দীর্ঘদিন ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামে ইসলামীকরণ হচ্ছে বলে মিথ্যা ও বানোয়াট প্রোপ্রাগান্ডা রটিয়ে আসছে। আঞ্চলিকদল গুলো কূটনীতিক মাধ্যমে উপজাতি অধ্যুষিত অঞ্চলকে চুক্তি লঙ্ঘনের ধুয়ো তুলে পার্বত্য চট্টগ্রামে ইসলামামীকরণ হচ্ছে বলে প্রতিবেদন পাঠাচ্ছে। আর হুজুগে বাঙালিরা প্রচার করছে পার্বত্য চট্টগ্রামে সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালি৷ সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালি হলে পার্বত্য চট্টগ্রামে কতজন জনপ্রতিনিধি উপজাতিদের বিপরীতে বাঙালি আছে তার পরিসংখ্যান দেন?

পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে কাজ করে এমন ব্যক্তি ও গবেষকরা বলছেন,
বাঙালিরা যদি পার্বত্যাঞ্চলে সরকারী অনুদান কিংবা সাহায্য সহযোগীতা পেতে চান কিংবা সকল প্রকার বৈষম্যের অবসান চান তাহলে সর্ব প্রথম পার্বত্য চুক্তির অসাংবিধানিক ধারা গুলো সংশোধন করার জন্য তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলুন৷ বৈষম্য সৃষ্টির মূল জায়গাতে হাত না দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সহায়তা বিতরণে বৈষম্য, পার্বত্য জেলা পরিষদে নিয়োগে বৈষম্য, পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের উন্নয়নমূলক প্রকল্প বিতরণে বৈষম্য ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের বিভিন্ন পদক্ষেপ বৈষম্য হিসাব কষে লাভ কী? এ অনিয়ম বৈষম্য গুলোর সৃষ্টি কোথায় থেকে হয়েছে তা আগে খুজে বাহির করুন৷ যেখান থেকে বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়েছে সেখানে গিয়ে বৈষম্য অবসানের চেষ্টা করুন৷ শুধু শুধু পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, পার্বত্য জেলা পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয় ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের কার্যক্রম নিয়ে অভিযোগ তুলে বিন্দুমাত্র লাভ হবে না৷ আপনাদের এ ধরনের অভিযোগের জবাব না দিয়েও উল্লেখিত কর্তৃপক্ষ নিশ্চুপ থাকতে পারবে। কারণ রাষ্ট্র তাদের সে ধরনের অধিকার, ক্ষমতাবল প্রদান করেছে৷ যে কারণে তারা বাঙালিদের প্রতি বৈষম্য, অনিয়ম করার সুযোগ পেয়েছে৷ আগে মূল গোড়া উপড়ে ফেলুন দেখবেন বৈষম্য সৃষ্টি করার প্রতিষ্ঠান গুলো এমনিতেই বিলুপ্ত হবে৷ সবকিছুতে সুস্থ বন্টন নিশ্চিত হবে এবং নিশ্চিত হবে সমঅধিকার।

জানা গেছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদে মোট ২২ জন সদস্যের মধ্যে ৭ জন তো বাঙালি সদস্যও আছে। তারা কি কখনো বাঙালির প্রতি যে বৈষম্য মূলক আচরণ করা হয় তা নিয়ে প্রতিবাদ করেছে? একইভাবে বাকি প্রতিষ্ঠান গুলোতেও বাঙালি সদস্যরা আছে তারা কি কখনো বাঙালির প্রতি যে অন্যায়, অবিচার, নিয়োগে বৈষম্য ও বিতরণে বৈষম্য করা হয় তার ব্যাপারে প্রতিবাদ করেছে?
নিশ্চিত ভাবে বলা যায় বাঙালিদের প্রতি যে বৈষম্য হয় তা নিয়ে তারা কখনো কোন প্রতিবাদ করেনি। বরং তারা নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে প্রতিষ্ঠান গুলোতে অবস্থান নিয়েছে।

বাঙালি সংগঠনের নেতাদের অভিযোগ,
পার্বত্য চট্টগ্রামে অবৈধ অস্ত্রধারীরা প্রতিনিয়ত সাধারণ উপজাতি বাঙালির রক্ত চুষে খাচ্ছে। নিত্যপণ্য সকল প্রকার প্রয়োজনীয় জিনিস হতে চাঁদা আদায় করে অবৈধ অস্ত্রধারী উপজাতি সন্ত্রাসীরা। পাহাড়ের অনাচে-কানাচে সর্বত্র অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়না। সড়কে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করে। কেউ যদি চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে তাকে হত্যা করা হয়! পার্বত্য চট্টগ্রামে চুক্তির পূর্বে যেমন হত্যা করা হত মানুষদের সেসময়কার ন্যায় এখনো মানুষ হত্যা করা হয়। এর কোন বিচার হয়না। রক্তাক্ত পাহাড়, চারদিকে মানুষ মানবেতরে জীবনযাপন করছে তবুও বাঙালিরা নিশ্চুপ। এসমস্ত বিষয়গুলো নিয়ে কোন পক্ষই কথা বলেনা উপজাতি দাদা বাবুরা অখুশি হবে বলে! পার্বত্য চট্টগ্রামে চাকরি বাকরি সহ সবকিছুতে উপজাতীয়দের আধিপত্য। তবুও ঘুম ভাংগে না বাঙালিদের। বৈষম্য অনিয়ম আর কত?

পার্বত্য চট্টগ্রামের বিরাজমান পরিস্থিতি হতে উত্তীর্ণ হতে হলে চুক্তির সংবিধান বিরোধী ধারাগুলো সংশোধন করতে হবে। চুক্তিতে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালিদের যুক্ত করতে হবে। দেশের সংবিধান যেখানে বাঙালিদের পরিচয় স্বীকৃতি দিয়েছে সেখানে পার্বত্য চুক্তি বাঙালিদের অ-উপজাতি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে বাঙালিদের পরিচয় মুছে চরম অবজ্ঞা করতে পারেনা।

আগের পোস্টচট্টগ্রামে বিদেশি পিস্তলসহ ৩ উপজাতি অস্ত্র কারবারি গ্রেপ্তার।
পরের পোস্টকেএনএফ’র আস্তানায় সেনা অভিযানে ৩ কেএনএফ সদস্য নিহত অস্ত্র সরঞ্জাম উদ্ধার।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন