পার্বত্য বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলার দুর্গম ইউনিয়ন হচ্ছে ৪নং গ্যালেংগ্যা। উপজেলা সদর হতে এই ইউনিয়নের দূরত্ব প্রায় ১২ কিলোমিটার। দূর্গম এলাকা হওয়াই গ্যালেংগ্যাতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা একদম নেই বললে চলে৷ এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে উপজাতি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা এখানে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য করেছে৷ পান্তলা, সেপ্রু ও কেংগু এলাকার প্রায় গ্রামগুলোতে অবৈধ অস্ত্রধারীদের বিচরণ লক্ষণীয়। সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য এতটাই বেড়েছে স্থানীয় মানুষ প্রতিটি মূহুর্তে আতঙ্কে থাকে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, পাড়াগুলোতে দিনে দুপুরে প্রকাশ্যে সন্ত্রাসীরা অবৈধ ভারী অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়ান। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ইচ্ছে মত প্রান্তিক জনগোষ্ঠী থেকে চাঁদা দাবি করে আর পাড়ার প্রতিটি ঘর থেকে মোটা অংকের চাঁদা উত্তোলন করে। এছাড়া ঘর থেকে নিত্যপ্রয়োজনী জিনিসপত্র লুটপাট করে।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক উপজাতি বলেন, সন্ত্রাসীরা রাত্রে যে ঘরে ঘুমায় সেই ঘর তাদের জন্য কয়েকটি আইটের সুস্বাদু খাবার রান্না পরিবেশন করতে হয়। দেশী মোরগ, মাছ, বিভিন্ন তরকারি ও শুটকি ভর্তা বাধ্যতামূলক রাখতে হয়। এ সুস্বাদু খাবার ছাড়া সন্ত্রাসীরা ভাত খায়না। কেউ যদিও সন্ত্রাসীদের কথার বিরুদ্ধে অপারগতা প্রকাশ করে তাকে কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হয়। এজন্য তাকে মোটা অংকের টাকা জরিমানা করা হয়। বিগত বছরগুলোতে এখানে কয়েকজন অপহরণের ঘটনাও ঘটছে প্রতিবাদ করার কারণেই। এখানে উপজাতিদের কোনপ্রকার অধিকার নেই। অবৈধ অস্ত্রের কাছে জিম্মি কয়েকটি পাড়া।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে সন্ত্রাসীরা রাত্রে যে বাড়িতে ঘুমান, সেই বাড়ির যুবতী মেয়েদের ভোগ করতে দিতে হয়। পরিবারগুলো অন্যায়, অত্যাচার ও অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারেন না। একদম বোবার নীরব কান্নার মত। অসহায় উপজাতিদের দেখার যেনো কেউ নেই। তারা হত্যা, অপহরণ ও চাঁদাবাজির জাঁতাকলে পিষ্ট এবং তাদের মেয়েগুলো ভোগ্যপণ্য হিসেবে ব্যবহারিত হচ্ছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের রাজত্ব কায়েম চলে। এ রাজত্ব কায়েম বন্ধ করার যেন কেউ নেই। পার্বত্য চট্টগ্রামে অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি, বারুদের গন্ধ আর পাহাড়ের আঁকে বাঁকে লাশের সারি তো নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি মোকাবেলা করে বেঁচে থাকতে হচ্ছে পাহাড়ি জনপদের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে।
লেখক: প্রণব বড়ুয়া, বান্দরবান, ১০/১২/২০২৪