আত্তাহী রুহি: দেবাশীষ রায় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধান থেকে বাদ দেয়ার প্রস্তাবনা দিয়েছে এটা একটা বড় ষড়যন্ত্র। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এখন সংবিধান সংশোধিত করার জন্য দেবাশীষ রায় এর প্রস্তাব গভীর ষড়যন্ত্রের আবাস বহন করে।
এবং রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার পায়তারা এটি।
সম্প্রতি দেবাশীষ রায় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধান থেকে বাদ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে একটি বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। এটি শুধু একটি মতামত নয়; বরং একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ। বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম অন্তর্ভুক্ত করার মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মীয় মূল্যবোধকে সম্মান জানানো এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা। এই প্রস্তাব দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং জনগণের অনুভূতির বিরুদ্ধে একটি বড় আঘাত এনেছে। যে কোন সময় এটি বিস্ফোরণ হয়ে উঠতে পারে। দেবাশীষ রায় এটির মাধ্যমে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করার পায়তারা করছে। ভিনদেশীদের দেয়া টোপে পা দিয়ে দেবাশীষ রায় এটি করেছে।
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও এর সাংবিধানিক গুরুত্ব
১৯৮৮ সালে সংবিধানের অষ্টম সংশোধনীতে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়। এর মাধ্যমে ৯২% মুসলিম দেশের জনগণের বিশ্বাস এবং ঐতিহ্য সংরক্ষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়। যদিও বাংলাদেশ একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র, এখানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম অন্তর্ভুক্ত করার মূল কারণ ছিল দেশের সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক পটভূমি। এটি শুধুমাত্র ধর্মীয় অনুভূতির বিষয় নয়; বরং এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে দেশের সামাজিক স্থিতিশীলতা এবং জাতীয় ঐক্যের প্রশ্ন। সম্প্রীতি উন্নয়নে ইসলাম ধর্ম সবচেয়ে বেশি ভুমিকা পালন করে থাকে। এটির বিপরীতে দেবাশীষ রায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার পায়তারায় প্রস্তাব দিয়েছে সেটি সুস্পষ্ট।
দেবাশীষ রায়ের প্রস্তাব: গভীর ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত
দেবাশীষ রায়ের এই প্রস্তাব একদিকে যেমন বিতর্ক উস্কে দিচ্ছে, অন্যদিকে এটি দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার একটি পাঁয়তারা। সংবিধান পরিবর্তন বা সংশোধনের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তা দেশের জনগণের সম্মতি ছাড়া হতে পারে না। কিন্তু এই প্রস্তাবের মাধ্যমে দেশের মধ্যে বিভাজন তৈরি করার একটি সুপরিকল্পিত প্রচেষ্টা দেখা যাচ্ছে।
এই প্রস্তাব দেশের মুসলিম জনগণের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার সমান এবং এটি সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করার মাধ্যমে দেবাশীষ রায় ভারতের প্রেসক্রিপসন অনুযায়ী কাজ করেছে তা স্পষ্ট হয়েছে। ইতিহাস সাক্ষী, যখনই ধর্মীয় বিষয় নিয়ে দেশের জনগণের অনুভূতিতে আঘাত এসেছে, তখনই দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। দেবাশীষ রায়ের প্রস্তাব সেই একই রকম একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে পারলেই তারা অনেক ফায়দা লোটে নিবে।
রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা
এমন একটি সময়ে, যখন বাংলাদেশ সংস্কার এবং স্থিতিশীলতার পথে অগ্রসর হচ্ছে, তখন এই ধরনের প্রস্তাব দেশকে পেছনে টেনে নেওয়ার অপপ্রয়াস। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেওয়ার মতো একটি বিতর্কিত বিষয় সামনে আনা মানে হলো দেশের জনগণের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা এবং একটি ঐক্যবদ্ধ জাতিকে বিভক্ত করা।
বিশ্বব্যাপী দেখা যায়, যেসব দেশে ধর্মীয় অনুভূতিকে অবহেলা করা হয়েছে, সেখানে সামাজিক অস্থিরতা এবং রাজনৈতিক সংকট বাড়তে শুরু করেছে। বাংলাদেশেও এমন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে কিছু মহল নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির চেষ্টা করছে ভারত ও বিভিন্ন ভীনদের সাথে তাল মিলিয়ে দেবাশীষ রায় এটি করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। তবে অভ্যুত্থান পর যুব সমাজ দেশ সুগঠিত করতে তার দেয়া প্রেসক্রিপশনে পা দেবেনা।
এছাড়াও তার প্রস্তাবনায় রাষ্ট্রীয় মূলনীতিসহ মৌলিক অধিকার, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা, আইন সংরক্ষন ও গুরুত্বপূর্ণ সংজ্ঞা সংক্রান্ত সংবিধানের সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ‘আদিবাসি’ শব্দের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি ঐতিহাসিক ও বাস্তবিক দিক দিয়ে সম্পূর্ণ অমূলক এবং অনেকাংশে একটি দুরভিসন্ধিমূলক অপপ্রয়াস বলে প্রতীয়মান। এটি বহির্বিশ্বের বিভিন্ন ইন্দনে দেবাশীষ রায় এগুলো করছে।
এর থেকে জনগণের করণীয় ও সজাগ দৃষ্টি
এই পরিস্থিতিতে দেশের জনগণকে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে। দেশের সংবিধান এবং ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি সম্মান বজায় রাখতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
সরকারের উচিত এই ধরনের প্রস্তাবের পেছনে থাকা ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করা এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া। একই সঙ্গে গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেন কোনো ধরনের বিভ্রান্তি করতে না পারে, এবং বিভ্রান্তি ছড়ানোকারীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন নোটিশ করে সতর্ক রাখতে হবে। সে বিষয়ে বিশেষ নজরদারি করা দরকার।
আলোকপাতের অন্তঃসার:
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেওয়ার প্রস্তাব একটি সুস্পষ্ট ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ। এটি দেশের জনগণের ধর্মীয় বিশ্বাস, ঐতিহ্য এবং জাতীয় সংহতির ওপর আঘাত। এই প্রস্তাব কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় এবং দেশের জনগণের উচিত এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। দেবাশীষ রায়সহ যারা এমন প্রস্তাবের মাধ্যমে দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার চেষ্টা করছেন, তাদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও ঐতিহ্যবাহী দেশ, এবং এখানে ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করার কোনো জায়গা নেই।
লেখক: আত্তাহী রুহি, লেখক, গবেষক ও ভ্রমণ প্রতিবেদনকারী, ১৪/১২/২০২৪