নিউজ ডেস্ক: পার্বত্য চট্টগ্রামের বৈষম্য বিষয়ে মুখ খুলতে একত্রিত হয়েছেন বাঙালি নেতারা। পার্বত্য চট্টগ্রামে বিরাজমান বৈষম্য, সংকট ও সমাধানে করনীয় শীর্ষক মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ শনিবার ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিষ্ট্রাব্দ সকাল ১০টায় রাঙামাটি চেম্বার অব কমার্স মিলনায়তনে বৈষম্য বিরোধী পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐক্য পরিষদ, রাঙামাটি জেলার আয়োজনে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অ্যাডভোকেট আলাল উদ্দিন এর পরিচালনায় এবং সম- অধিকারের আন্দোলনের সাবেক রাঙামাটি জেলা সভাপতি পেয়ার আহম্মেদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদের সাবেক সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এয়াকুব আলী চৌধুরী, এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি জেলা বার এসোসিয়েশন এর সাবেক সভাপতি আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোখতার আহমেদ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জেলা নায়েবে আমীর মাওলানা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, জেলা ইমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা মাহতাব উদ্দিন, পার্বত্য নাগরিক পরিষদ বান্দরবান জেলার সাবেক সভাপতি আতিকুর রহমান, জেলা বারের সদস্য অ্যাডভোকেট শহীদুল ইসলাম পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোঃ ছাদেকুর রহমান, পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদ বান্দরবান জেলার সাবেক সভাপতি এইচ এম সম্রাট, পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদ সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলাম সেলিম, বাঙালি ছাত্র পরিষদের সাবেক রাঙামাটি জেলা সভাপতি মোঃ আলমগীর হোসেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক মোঃ আহাদ আলী প্রমূখ।
এসময় বক্তারা বলেন, শিক্ষা, চাকরি, ব্যবসা ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বৈষম্য করে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালিদের তৃতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত করা হচ্ছে। এতে করে পার্বত্য এলাকায় বসবাস করে বর্তমানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীগুলো থেকেও পিছিয়ে রয়েছে বাঙালিরা। বক্তারা আরো বলেন, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মধ্যে শুধুমাত্র চাকমারা পার্বত্য চট্টগ্রামে মোট জনগোষ্ঠীর ২৭% আর সারাদেশের মূল জনগোষ্ঠীর থেকে ১% এর কম হয়েও চাকমা জনগোষ্ঠীর শিক্ষার হার ৭৪% আর সারা বাংলাদেশের শিক্ষার হার ৭৩%। তাহলে চাকমারা সারা বাংলাদেশের শিক্ষার হারের চাইতেও তারা এগিয়ে গিয়েছে শুধু মাত্র কোটা সুবিধার কারণে।
অন্যদিকে বাঙালিরা পার্বত্য চট্টগ্রামে মোট জনগোষ্ঠীর ৫১% হয়েও শিক্ষার হার ২৪%। তাই শিক্ষা ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রকৃত পক্ষে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী হলো বাঙালিরা। সরকারের উচিত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের মধ্যে যারা এগিয়ে গিয়েছে বেশী তাদের সকল কোটা বাতিল করে বাঙালিসহ অন্যান্য পিছিয়ে পড়া ক্ষুদ্র জাঁতি গোষ্ঠী, খেয়াং, গুর্খা, চাক, বম, লুসাই, পাংখোয়াদের জন্য শিক্ষাবৃত্তি, কোটা ও চাকরি সুবিধা দেওয়া।
তাই অবিলম্বে সকল ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করে জনসংখ্যানুপাতে সকল সুযোগ-সুবিধা বণ্টন এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডে একজন বাঙালি চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয়া এবং আঞ্চলিক পরিষদ ও জেলা পরিষদে নির্বাচন দিতে হবে বলে দাবী করেন বক্তারা।
এছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রামের ৮০% জনগণের স্বার্থকে উপেক্ষা করে যে শান্তি চুক্তি করা হয়েছে সে চুক্তি বাতিলের এখন সময় এসেছে তাই বর্তমান বিপ্লবী সরকারকে শান্তি চুক্তি বাতিল করে বৈষম্য মুক্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম গড়ার জোর দাবি জানানো হয়েছে।