নিয়োগ ইতিহাসের সব রেকর্ড ভেঙে শতভাগ স্বজাতি চাকমা উপজাতিদের নিয়োগ দিলেন, সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত কৃষিবিদ কাজল তালুকদার চেয়ারম্যান রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ ও সভাপতি সংশ্লিষ্ট নিয়োগ ও বাছাই কমিটি।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের RHDC ও ILO -এর যৌথ বাস্তবায়নাধীন ProGRESS প্রকল্পের বিভিন্ন পদে জনবল নিয়োগের নিমিত্ত ২০/১২/২৪ খ্রি : তারিখে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন পদে ৮জন চাকমা স্বজাতিকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার সাক্ষরিত একটি চূড়ান্ত ফলাফল বিবরণী (শুক্রবার) ২০ ডিসেম্বর রাত্রে প্রকাশ করে। তাতে দেখা যায় ভয়ংকর বৈষম্যের চিত্র। এই অপ্রত্যাশিত বৈষম্য চিত্র দেখার জন্য পাহাড়ি কিংবা বাঙালি কেউ প্রস্তুত ছিল না। প্রতিবারই নিয়োগে ৯০% চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা ও অন্যান্য উপজাতি জাতিসত্তা থেকে নিয়োগ প্রদান করে: অবশিষ্ট ১০% বাঙালি নিয়োগ করা হত। পার্বত্য জেলা পরিষদগুলো সৃষ্টি হওয়ার পর থেকে এমনটা দেখা গেছে। কিন্তু এবার পূর্বের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে নিজেদের সাম্প্রদায়িকতা ও হীন মানসিকতা প্রকাশ করলেন সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত জেলা পরিষদের এই বাঙালি বিদ্বেষী চেয়ারম্যান৷
পদ ও নিয়োগকৃত ব্যক্তিরা হলো:
কর্মসূচি সমন্বয়কারী-
১. সবুজ চাকমা
২. হিল্লোল চাকমা
মনিটরিং এবং ডকুমেন্টেশন অফিসার- ১. ১.রিতেশ দেওয়ান
২ মদন চাকমা
প্রোগ্রাম অফিসার-
১.অন্তেনা চাকমা
২. ত্যানি দেওয়ান
অ্যাকাউন্টস অফিসার-
১. সুপ্তি দেওয়ান
২. তুহিন চাকমা
স্থানীয় পাহাড়ি বাঙালিরা বলছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পূর্বের জেলা পরিষদ বিলুপ্ত করে নতুন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নিয়োগ দেন। একজন সাম্প্রদায়িক, তীব্র বাঙালি বিরোধী ও স্বজন প্রীতি ব্যক্তিতে নিয়োগ দিয়ে জেলার মানুষের কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন ধূলিসাৎ করা হয়েছে। ৮জন নিয়োগের মধ্যে একজন, মারমা, ত্রিপুরা, তংচঙ্গ্যা ও অন্যান্য জাতিসত্তা ও বাঙালিও নেই। বিষয়টি দেখে স্পষ্ট বোঝা যায়, নিয়োগের ইতিহাসের সব রেকর্ড ভেঙে পার্বত্য জেলা পরিষদকে বৈষম্য, অনিয়মের আঁতুড়ঘর বানাচ্ছেন সদ্য নিযুক্ত জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার।
এই নিয়োগ নিয়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা ও প্রতিক্রিয়া:
স্থানীয় বাঙালি মাহতাব উদ্দিন বলছেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সুফল ভোগ করে ক্ষমতায় এসেই বৈষম্য শুরু করে দিলেন?
মুহাম্মদ শাহ এমরান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখছেন, সবইতো চাকমাদের মিলন মেলা।
হুমায়ুন কবির হুমায়ুন লিখেছেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সুফল ভোগ করে ক্ষমতায় এসেই বৈষম্য শুরু করে দিলেন?
পার্বত্য এলাকায় কি শুধু চাকমারাই বসবাস করে?
ইঞ্জিনিয়ার নাছির উদ্দিন বলছেন, দেখে তো মনে হচ্ছে না এখানে কোন নিয়োগ পরীক্ষা হয়েছে,,, মনে হচ্ছে একটা গুষ্টি কে সব চাকরি দেওয়া হয়েছে।
নাজিম বিন আজম, বলেছেন, চাকমার মেলা।
তালুকদার সম্রাট লিখছেন, বরাবরের মতোই কমিনুয়াল।
স্থানীয় মানুষদের প্রতিক্রিয়া থেকে স্পষ্ট নিয়োগ নিয়ে মানুষ সন্তুষ্ট নয়। বৈষম্য, দুর্নীতি ও স্বজন প্রীতির মাধ্যমে একতরফা শতভাগ চাকমা নিয়োগ দিয়েছেন চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার। এই নিয়োগকে পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি-সম্প্রীতি ও উন্নয়নের পথে বড়ো বাধা হিসেবে দেখেছেন স্থানীয় পাহাড়ি বাঙালিরা। এটি অবসান যেমন প্রয়োজন তেমনি এই নিয়োগ কর্তাকে যথাযথ জবাবদিহির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
পাইচিং মারমা নামে আসামবস্তি এলাকার বাসিন্দা বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সুফল হিসেবে জেলা পরিষদ সদ্য পুনর্গঠন হয়েছে৷ আর সুযোগে ঠাঁই পেয়েছেন কাজল তালুকদার। ১ মাস গত হতেই তিনি যদি তার এই অবস্থানে আসার অবদান ভুলে যান তাহলে কী বা করার আছে?
লেখক: অনন্ত অসীম, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক লেখক, গবেষক। ২১/১২/২০২৪