অনন্ত অসীম, পার্বত্য চট্টগ্রাম: বাংলাদেশ তথা বাঙালিরা কখনো অন্যান্য জাতি, ধর্মাবলম্বী বা উপজাতি জাতিসত্তার উপর বিদ্বেষমূলক আচরণ, হিংসাত্মক আক্রমণ, অধিকার হরণ ও ভাষা-সাংস্কৃতিক পালনে বাধা প্রদান করেনি, এমনকি ধর্ম পালনের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেন নি। বাঙালিরা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বা উপজাতি জনগোষ্ঠীর প্রতি সর্বদা আন্তরিক ছিল, উদারতা ও মানবিকতা প্রদর্শন করেছে; ১৯৭২ সাল থেকে ৯৭ সাল পর্যন্ত উপজাতি সংগঠন বিচ্ছিন্নতাবাদের মাধ্যমে বৈরী আচরণ করার পরও এখনো সহনশীল নীতি প্রয়োগ করে আসছে। ১৯৭২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি উপজাতীয়দের অধিকারের দাবিতে সৃষ্ট পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সংহতি সমিতি (জেএসএস) সংগঠন। এই উপজাতি সংগঠনটি ১১টি উপজাতি জনগোষ্ঠীর স্বঘোষিত প্রতিনিধি হিসেবে তৎকালীন রাষ্ট্র প্রধানের কাছে মোট ৪ দফা দাবি পেশ করেন আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের লক্ষ্যে। দীর্ঘ ২০ বছর রাষ্ট্রের সঙ্গে বৈরী আচরণ করেন। যা ছিল ক্ষমার অযোগ্য বিবেচিত অপরাধ। ১৯৯৭ সালের ২-রা ডিসেম্বর বাংলাদেশ সরকার উপজাতীয়দের দাবিদাওয়া পূরণের অংশ হিসেবে এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা রাজনৈতিক উপায়ে সমাধানের লক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি সম্পাদিত করেন জেএসএস এর সাথে। উপজাতি সংগঠনের রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরা, বাঙালি হত্যা, আলাদা স্বাধীনতার দাবিসহ রাষ্ট্রদ্রোহীতামূলক সকল অপরাধ পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়। এরপরও উপজাতিদের একটি উগ্রবাদী অংশ ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগ কালে পার্বত্য চট্টগ্রামকে পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত করার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তকে অ্যাকসিডেন্ট বা ভুল বলে পার্বত্য চট্টগ্রামে স্বাধীনতা চায়! উগ্রবাদী অংশ বরাবরই বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, সংবিধানকে অস্বীকার ও অবজ্ঞা করে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির সুফলভোগী উপজাতিদের একটি অংশের এই অকৃতজ্ঞতা ও বিশ্বাসঘাতকতা সময়ে সময়েই স্পষ্ট হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি জাতিসত্তার অধিকার, নিরাপত্তা, উন্নয়ন ও সংস্কৃতি বিকাশে সবসময় আমাদের নীতিনির্ধারণী মহল আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছে। উপজাতিদের বৈরী আচরণ সবসময় উদাসীনভাবে এবং ক্ষমার চোখে দেখেছে। এসবকে উপজাতি সন্ত্রাসী ও তাদের সমর্থক এবং পৃষ্ঠপোষকরা রাষ্ট্রের নমনীয়তা হিসেবে দেখেছে। যার কারণে তারা আজ পার্বত্য চট্টগ্রাম স্বাধীন চাচ্ছে।
করানালঙ্কার ভিক্ষু বা মনোগিত জুম্ম প্রকাশ জেএসএস-এর স্বঘোষিত কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও কল্পিত জুম্মল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিগত কয়েক বছর ধরে ভারতের নয়াদিল্লিতে অবস্থান করে বাংলাদেশ বিরোধী মিথ্যা প্রচারণার পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামে স্বাধীনতার দাবিতে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে আসছেন। এই করাণালঙ্কার একজন বৌদ্ধ ধর্মীয় ধর্মগুরু। লাল কাপড় বা লেবারের আড়ালে সে প্রতিনিয়ত ধর্মীয় উসকানি, জাতিগত ভেদাভেদ সৃষ্টি, মুসলিম বিদ্বেষমূলক আচরণ, বাঙালি বিরোধী মনোভাব পোষণ, এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাসবাদ প্রসারিত করার জন্য নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এই বৌদ্ধ ভিক্ষুর উগ্রবাদী চেতনা, সাম্প্রদায়িক মনোভাব দিনদিন পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি-সম্প্রীতি, উন্নয়ন, নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় যুব সমাজকে উগ্র জাতীয়তাবাদ লালনে ধাবিত করছে। মোটিভেট করে বিপ্লবের বাণী শুনিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনে যোগদান করতে বাধ্য করছে।
স্থানীয় অধিবাসীরা বলছেন, এই বিতর্কিত ধর্মগুরু বাঙালি, সেনাবাহিনী তথা বাংলাদেশ তীব্র বিরোধিতা থেকেই প্রতিনিয়ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে একের পর এক উসকানিমূলক স্ট্যাটাস দিচ্ছে৷ যার ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে জাতিগত সংঘাত, ধর্মীয় সংঘাত বেড়েই চলছে। উপজাতি যুবকের একটি উগ্র অংশ এই ধর্মগুরুর খপ্পরে পড়ে পার্বত্য চট্টগ্রামকে রাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ড থেকে পৃথকীকরণে আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনে যুক্ত হচ্ছে। গেরিলা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে প্রতিনিয়ত বাংলাদেশ ভেঙে আলাদা ‘জুম্মল্যান্ড’ নামক রাষ্ট্র গঠনের হুংকার দিচ্ছে।
সচেতন মহল ও বিশ্লেষকরা বলছেন, করুনালঙ্কার ভিক্ষু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাঙালি, সেনাবাহিনী সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে এমন সব কুরুচিপূর্ণ তথ্য ছড়িয়ে দিচ্ছে। মুসলিম বাঙালিরা সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় সংখ্যালঘু হিন্দু নির্যাতন, বাড়িঘরে হামলা, মন্দির ভাঙচুর ও উপজাতিদের ভূমি দখল, নারী ধর্ষণ, ভাষা- সংস্কৃতি পালনে বাধা ও জোরপূর্বক ধর্মান্তরিতকরণ করছে! এসব কুৎসা, বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচার করে আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক তথা কূটনৈতিক মহলকে ব্যবহার করে পার্বত্য চট্টগ্রামে স্বাধীনতার পক্ষে জনমত গঠন এবং জাতিসংঘের সহযোগিতা কামনায় স্বপ্নের জুম্মল্যান্ড গঠনের প্রচেষ্টা করছে। এজন্য বাংলাদেশ বিরোধী নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তার এই রাষ্ট্রদ্রোহীতামূলক কর্মকাণ্ড দিনদিন পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তির অন্তরায় বাধা হিসেবে দাঁড়িয়েছে।
জানা গেছে, এই বৌদ্ধ ভিক্ষু খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার দীঘিনালা উপজেলার বাসিন্দা৷ পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে যান। পরবর্তীতে সেখানকার নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন৷ ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক দল বিজেপির নেতাদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলে আন্তর্জাতিক সভা, সেমিনারে যুক্ত হয়ে বাংলাদেশ বিরোধী কাজে সম্পৃক্ত হন। মানবাধিকার সংস্থা ও কূটনৈতিক মহলের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা, পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ বাংলাদেশের সঙ্গে থাকতে চায়না, পৃথকভাবে রাষ্ট্র গঠন করতে চায়, এমন উদ্ভট দাবি পেশ করে জুম্মল্যাণ্ড গঠনে কাজ করছে।
বুধবার ১৮-ই ডিসেম্বর করুনালঙ্কর ভিক্ষু ফেইসবুকে একটি পোস্ট করে। পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হল:
““Those who forget history cannot make history” (যারা ইতিহাস ভুলে যায়, তারা ইতিহাস তৈরি করতে পারেনা) — ভারতের সংবিধান রচয়িতা ডঃ বি আর আম্বেদকর
ঐতিহাসিক কাল থেকে ১৮৫৯ পর্যন্ত পার্বত্য চট্রগ্রাম একটা স্বাধীন দেশ ছিল। ১৮৬০ সালে বৃটিশরা এই দেশ দখল করে নেয় আর তাকে বৃটিশ শাসিত ভারতের সঙ্গে সংযুক্ত করে দেয়। এটা অবৈধ এবং মেনে নেওয়া যায়না।
১৯৪৭ সালে ধর্মের ভিত্তিতে বৃটিশ শাসিত ভারত বিভাজন হয়েছিল আর পাকিস্তান ও ভারত স্বাধীনতা লাভ করেছিল। অর্থাৎ বৃটিশ শাসিত ভারত বিভাজনের নীতি হল ধর্ম। এই নীতি অনুসারে বৃটিশ শাসিত ভারতের মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চল নিয়ে পাকিস্তান আর অ-মুসলিম (অর্থাৎ হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ, খ্রীষ্টান ইত্যাদি) অধ্যুষিত অঞ্চল নিয়ে ভারত গঠিত হল।
১৯৪৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনসংখ্যার ৯৮.৫% ছিল বৌদ্ধ, হিন্দু ও খৃষ্টান।
বৃটিশ শাসিত ভারতের বিভাজন নীতি অনুসারে এবং সঙ্গত কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ স্নেহ কুমার চাকমার নেতৃত্বে ১৯৪৭ সালে ১৫ আগস্টে ভারতের সঙ্গে যোগ দেয় এবং রাঙামাটিতে ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে।
কিন্তু বেঙ্গল বাউন্ডারী কমিশনের চেয়ারম্যান রেডক্লিফের ভুল বা অজ্ঞতার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামকে পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়। এটা বৃটিশ শাসিত ভারত বিভাজন নীতি ও আইন অনুসারে অবৈধ। এটাও কোন মতে মেনে নেওয়া যায়না।
এর প্রতিবাদের স্নেহ বাবুরা দিল্লীর সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু যোগাযোগ ও অন্যান্য অসুবিধার কারণে তাঁরা ব্যর্থ হন। আজ স্বাধীনতাকামী স্নেহ বাবুরা আমাদের পাশে নেই — কালগত হয়েছেন, কিন্তু তাঁদের চেতনা ও স্বপ্ন এখনো আমাদের সঙ্গে আছে এবং চিরকালই আমাদের সঙ্গে থাকবে।
এখন দিল্লী আমাদের থেকে দূরে নয়, আমাদের থেকে দূরে নয় লন্ডনও। প্রয়োজন হলে দিল্লী ও লন্ডনে গিয়ে আমরা দাবী করবো : আমরা অত্যাচারী বাংলাদেশের অধীনে থাকবনা। আমাদের স্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম চাই। আমাদের স্বাধীন পার্বত্য চট্রগ্রাম লাগবে। এটা আমাদের আইনসঙ্গত ও ন্যায়সঙ্গত প্রাপ্য।”
বিতর্কিত ধর্মগুরুর আদিবাসী শব্দ প্রচার, অবিরত বাংলাদেশ বিরোধী বেপরোয়া কর্মকাণ্ড পার্বত্য চট্টগ্রামের সাধারণ উপজাতিদেরও চিন্তার কারণ। সাধারণ উপজাতিরা বাংলাদেশের সঙ্গে থাকতে চায়, তারা উপজাতি পরিচয়ে বাঁচতে চায় আদিবাসী হিসেবে নয়; তাদের অবস্থান পাহাড়ি বাঙালি সংঘাতের বিপক্ষে; সন্ত্রাসবাদ, হানাহানি ও সাম্প্রদায়িক হামলার পক্ষেই নয় তারা। বাংলাদেশ তথা বাঙালিরা যে তাদের প্রতি আন্তরিকতা, উদার মানবিকতা ও সহনশীল নীতি বরাবরই অবলম্বন করেন তা তারা অকপটে স্বীকার করেন। শুধু উপজাতিদের একটি উগ্রবাদী অংশ সাম্প্রদায়িক মনোভাব থেকে বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণা ও পার্বত্য চট্টগ্রামে স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করছে৷ উগ্রবাদী সন্ত্রাসী করানালঙ্কার পার্বত্য চট্টগ্রামকে নিয়ে জুম্মল্যান্ডের রাষ্ট্রের মানচিত্র, পতাকা, মুদ্রা ও প্রশাসনিক কাঠামো ঠিক করে আছেন! নিজেকে কল্পিত জুম্মল্যান্ডের স্বঘোষিত পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন। অস্ত্র, গোলাবারুদ ও জনবল সংগ্রহ করার তাগিদ দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে অদূর ভবিষ্যতে যুদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছেন। বাংলাদেশ সরকারের অস্ত্রভান্ডার ও নিজেদের শক্তিসামর্থ্য নিয়ে নিয়ে বিচার- বিশ্লেষণ করছেন।ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব তিমুর ও দক্ষিণ সুদানের রেফারেন্স দেখাচ্ছেন!
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রবেশ করলে দেখা যাচ্ছে, উগ্র উপজাতি সন্ত্রাসীরা অস্ত্র হাতে ছবি, ভিডিও শেয়ার করছে। এবং স্বপ্নের জুম্মল্যান্ডের গঠনে উপজাতি যুব সমাজকে বিপথগামী করতে তৎপরতা চালাচ্ছে৷
গত ১৬-ই ডিসেম্বর তথাকথিত ধর্মগুরু পার্বত্য চট্টগ্রাম স্বাধীন চেয়ে একটি ফেসবুক পোস্ট করেন। তার হুবহু:
“আমরা স্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম চাই
স্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাড়া আমাদের মুক্তি নাই
আমাদের চিন্তা, চেতনা, জাতি, ধর্ম, ভাষা, আচার-আচরণ, রীতি-নীতি, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও সভ্যতা বাঙ্গালী মুসলমানদের চিন্তা, চেতনা, জাতি, ধর্ম, ভাষা, আচার-আচরণ, রীতি-নীতি, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও সভ্যতা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। আমরা বৌদ্ধ, হিন্দু ও খ্রিষ্টান ধর্ম পালন করি। তারা ইসলাম ধর্ম পালন করে। তারা শিক্ষা-দীক্ষা, চাকরি, অফিস-আদলত, ব্যবসা-বাণিজ্য, সরকারি সুযোগ-সুবিধা ইত্যাদি সর্বক্ষেত্রে আমাদের বিরূদ্ধে বৈষম্য করে। শুধু তাই নয় — তারা জোরপূর্বক আমাদের ভূমি দখন করে, আমাদের বাড়ি-ঘরে, গ্রামে-গঞ্জে, মন্দিরে-গির্জায়, দোকানে, অফিসে আক্রমণ করে, আগুন লাগিয়ে দেয়, আমাদের উপর নির্যাতন চালায়, আমাদের নারী ধর্ষণ করে, আমাদের মানব ও মৌলিক অধিকার লংঘন করে। তাদের সঙ্গে থাকলে আমাদের নিরাপত্তা নেই, উন্নয়ন নেই, শান্তি নেই, ভবিষ্যৎ নেই। তাই আমাদের অধিকার, উন্নয়ন, নিরাপত্তা ও শান্তির জন্য আমরা তাদের সঙ্গে থাকবনা। আমাদের স্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম দরকার। আমরা স্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম চাই। এখন আমরা তাদের অধীনে আছি। এটা একটা কলোনিয়াল এক্সিডেন্ট বা ভুল। এটা আমাদের কপাল বা ভাগ্য বা নিয়তি নয়। আমাদের কপালে আইনত যা লেখা আছে যা হল স্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম।”
জেএসএস বিরোধী চুক্তি পক্ষ ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর লোকজনকে মাঝেমধ্যে ধর্মীয় লেবারের আড়ালে পার্বত্য চট্টগ্রাম সংঘাত বাঁধানোর জন্য করুনালঙ্কার জড়িত বলে তার সমালোচনা করতে দেখা যায়। তবে অধিকাংশ উপজাতিরা এই বৌদ্ধ ভিক্ষুকে ভণ্ড প্রতারক হিসেবে চিনেন।
জানা গেছে, বিতর্কিত ধর্মগুরু করুণালঙ্কার রং বস্ত্রের আড়ালে একজন সন্ত্রাসবাদী সংগঠক। ভারত থেকে জেএসএস-এর প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবে কাজ করেন।
গত ২০১৭/২০১৮ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম ব্লগারদের একটি প্ল্যাটফর্ম ‘হিল ব্লগার ফোরাম’ এই বৌদ্ধ ভিক্ষুকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে ব্যান করার দাবি তোলে সোচ্চার হলে সরকার তার ফেইসবুক অ্যাকাউন্টটি ব্লক করে দেন।
পরবর্তীতে নামে-বেনাম অসংখ্য আইডি পেইজ ও Monogget Jumma নামক একটি ফেইসবুক আইডি থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অবিরত মিথ্যাচার রটাতে থাকে। বর্তমানে চলছে বাংলাদেশের মুসলিম বাঙালি ও সেনাবাহিনী বিরোধী প্রচারণা, যা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে। এই ব্যাপারে বাংলাদেশি প্রশাসনের পক্ষ থেকে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেই।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, উপজাতি রাষ্ট্রদ্রোহীদের বিষদাঁত উপড়ে ফেলতে বাংলাদেশের সরকারের সহনশীল পার্বত্য নীতি মূল্যায়নের সময় এসেছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় এর বিকল্প নেই। তথ্য সন্ত্রাস বন্ধ করতে আইনের প্রয়োগ প্রয়োজন।