পাহাড়ি নারীর গোসলের ছবি তোলে হেনস্তার মুখে প্রগতিশীল মুক্তচিন্তার নারী।

0
ছবিটি ব্লার করা হয়েছে

বাম, সুশীল ও মুক্তচিন্তার প্রগতিশীল মানুষদের কাছে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালিরা এক বড়ো অপরাধী হিসেবে অভিহিত। পাহাড়ে বাঙালি পুনর্বাসন করাকে অন্যায়ের চোখে দেখেন তারা। তাদের কাছে পাহাড়ের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জাতিসত্তা নিষ্পাপ আদিবাসী হিসেবে অভিহিত। আমরা বা আমাদের সংবিধান যাদের উপজাতি হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে তাদের সাংবিধানিক ভাবে আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ে সবসময় তৎপর থাকে বাম, সুশীল ও মুক্তচিন্তার প্রগতিশীলরা। পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালিদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে গিয়ে তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন করে আসছে। একচেটিয়া পার্বত্য চট্টগ্রামের সন্ত্রাসবাদ ও উপজাতিদের পক্ষাবলম্বন করে পাহাড়ের বাঙালি ও সেনাবাহিনীকে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত করে। মহলটি কখনো অনুভব করে না পাহাড়ের উপজাতিদের একটি অংশ যে দেশদ্রোহী, তারা যে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চায়, তারা কখনো মুসলিম ও হিন্দু তথা বাঙালিকে গ্রহণ করতে পারে না। এটি কখনো এই চেতনার মানুষদের বোঝানো সম্ভব হয়নি। ভবিষ্যৎ হবে বলেও মনে হয় না।

ZR Rupa (প্রোফাইল লিংক: https://www.facebook.com/zr.rupaa) নামে মুক্তচিন্তার নারীবাদী বান্দরবান ভ্রমণে গিয়ে সাঙ্গু নদীর তীরে পাহাড়ি নারী ও বাচ্চার গোসলের একটি ছবি তোলেন। ছবিটি Mr. momentwala নামক একটি ফেইসবুক পেইজ (প্রোফাইল লিংক: https://www.facebook.com/mr.momentwala) থেকে শেয়ার করে।

Pragati Chakam ভার্চুয়াল আর্টিস্ট  (প্রোফাইল আইডি: https://www.facebook.com/pragati.chakma.161) থেকে উপজাতি নারীর গোসল করার ছবি তোলার প্রতিবাদ জানিয়ে ২৮ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে একটি পোস্ট করে। পোস্টটি উগ্র উপজাতি ও উপজাতি সংগঠনের নজরে আসলে তারা দ্রুত ছড়িয়ে দেয়। উপজাতিদের একটি ছবিটি তোলা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করার বিষয়টি সমালোচনার ঝড় তোলে। তারা নানান যুক্তি ও পর্যটকদের বিরোধীরা করে। Pragati Chakam পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো:

” আমি এক যুগ পিছনে যাবো না বিগত ৬,৭ বছর  আগেও পাহাড়ের নারীরা অর্ধনগ্ন হয়ে একসাথে ঝিরি ঝর্নায় গোসল করতো । নারী , পুরুষ, গ্রামের লোক একসাথে কাজ থেকে ফিরে গোসল করতো কারোর কোনো সমস্যা ছিল না । পার্বত্য অঞ্চলের রিমোট এরিয়াতে গেলেই এখন এই দৃশ্যগুলো দেখা সম্ভব।

তারপর পর্যটন কেন্দ্র বাড়ানো হলো । পাহাড়ের ঝিরি ঝর্না এক এক করে  আবিস্কৃত হতে লাগলো । এরপর বস্তির পোলাপান গাড়ি ভর্তি করে পর্যটক হিসেবে আগমন করলো । শুরু হয়ে গেল দ্বন্দ্ব কারণ তারা  ক্যামেরার ব্যবহার কোন জায়গায় করবে আর কোন জায়গায় করবে না তার কমন সেন্স নিয়ে জন্মায় না। জুমে সারাদিন কাজ করে  একসাথে গোসল করার দৃশ্য দিনদিনই সংকীর্ণ হলো । ঢাকা থেকে আগত পর্যটক একটারে  ৭,৮ বছর আগে ধরছিলাম  হাজাছড়া ঝর্ণায়। নারীদের গোসল করার ছবি তুলেছিল ক্যামেরায় । পরে কিছুটা হাতাহাতির পর্যায়ে চলে গিয়েছিল।
আমার আসলে সন্দেহ হয় আমরা সভ্য হচ্ছি না সভ্যতার বিকাশ থেকে প্রতিনিয়ত পিছিয়ে যাচ্ছি।”

Pragati Chakam আইডি থেকে দ্বিতীয় আরেকটি পোস্ট করা হয়েছে ২৯ ডিসেম্বর বিকালে:

“একটা ছবিকে কেন্দ্র করে ব্যক্তিগত পারস্পেকটিভ থেকে পোস্ট দিয়েছিলাম এখন তা পরিণত হচ্ছে জাতিগত ইস্যুতে।
কি একটা অবস্থা অথচ সেখানে আমি নির্দিষ্ট করে কোন জাতিগোষ্ঠীর নাম পর্যন্ত উল্লেখ করিনি বা ইঙ্গিত করিনি ।  যারা জাতিগতভাবে মন্তব্য করছে তাদের ও বারণ করেছি। একটি কমেন্ট পর্যন্ত ডিলিট করিনি।  কারণ আমার সেই সৎ সাহস রয়েছে।  আপনি কোন কিছু পাবলিকভাবে পোষ্ট করার পর যদি অন্য কাউকে কিছু বলতেই না দেন । আপনি যেটা বলছেন সেটা সঠিক হিসেবে ধরে নেন তাহলে তো আপনি সরাসরি ভিন্ন মতাদর্শ ও বৈচিত্র্যতাকে অস্বীকার করলেন। বিষয়টি অন্তত জাতিগত দৃষ্টিকোণ থেকে না দেখে একজন সাধারণ মানুষ হিসেবেই দেখতে পারেন।”

পরবর্তীতে ZR RUPA Pragati Chakam পোস্টকে কেন্দ্র করে তিনি কথিত আদিবাসী প্রেমী এবং অধিকারের পক্ষের মানুষ দাবি করে তার ছবি তোলার ব্যাখা দিয়ে ২৯ ডিসেম্বর সকালে একটি বড় স্ট্যাটাস দেন।

“আমার একটাই প্রবলেম আমি মিথ্যা কথা সইতে পারিনা।

জনাব  Pragati Chakma পপুলার হবার যদি এতই শখ জেগে উঠে তবে ভালো কাজ করুন অটো পপুলার হয়ে যাবেন। ইচ্ছে করে, প্ল্যান করে ভুল ইনফরমেশন দিয়ে বাঙালীদেরকে ছোট করে হয়তো একদিনের জন্যে পপুলার হতে পারবেন। এতো লাইক, শেয়ার পাবার ইচ্ছে আপনার, সঠিক তথ্য দিয়ে পোস্ট তৈরী করেন লাইক শেয়ার পাবেন। আপনার কি মনে হয়েছিলো আমাকে ব্লক করে রাখলে আপনার এই পোস্ট আমার কাছে পৌঁছাবেনা ? খুবই ভুল ভাবনা। আপনাকেতো আমি চিনিও না, তাহলে আমাকে ব্লক করেছেন কেনো ?
আমি সারাজীবন আদিবাসীদের অধিকার, সমস্যা নিয়ে কথা বলি এটা সবার জানা। আপনারও জানা তাই আমাকে ব্লক করেছেন। কারণ আপনি মিথ্যা বলেছেন আপনার পোস্টে।
আমার ধারণা আমার বন্ধু লিস্টের অনেকেই হয়তোবা বিরক্ত হয় আমি আদিবাসীদের নিয়ে এত পোস্ট দেই কেন। আমার আইডি ভর্তি আপনাদের অধিকার নিয়ে পোস্ট।
কারণ আমি আদিবাসীদের অনেক ভালবাসি তারাও আমাকে আমার চাইতেও অনেক বেশি ভালোবাসে এটা আমি অনুভব করতে পারি।
আমি ২০০৭ সাল থেকে বান্দরবান যাই প্রতিবছর। ১৭ বছর। বান্দরবান আমার সেকেন্ড হোম। তারা আমার আত্মীয় হয়ে গেছেন। রক্তের সম্পর্কের চাইতেও বেশি আপন হয়ে গেছেন।
আপনি যে ছবিটা নিয়ে কথা বলেছেন ওটা আমার ট্যুর। আমরা ইঞ্জিনের নৌকায় করে সাঙ্গু নদী দিয়ে রিজুক ঝর্ণায় যাচ্ছিলাম। ছবিটা চলন্ত নৌকায় বসে তোলা। আমি নিয়ে গেছি আমার গ্রুপ কে। মুন লাই পাড়া, রুমা বাজার। টুরিস্ট হিসেবেও যাইনি, ওই বাড়ির মেয়ে হিসেবে গেছি সাথে মেহমান নিয়ে। এই আপ্যায়নটাই পাই আমি মুন লাই পাড়াতে। এই ছবিটা সাঙ্গু নদীতে তোলা। কোনো ঝিরি বা ঝর্ণা না। বান্দরবানে ঝিরি প্রাইভেট প্লেস, অনেকটা গোসলখানা বা বাথরুম এর মতো।
সেখানে ছবি তোলা যায় না এটা আপনার চাইতেও আমার ভালো জানা আছে। এই ছবিটা ঝিরি বা ঝর্ণার না, নদীর। আপনার নিজের নদী আপনি নিজে চেনেন না ? নদী পাবলিক প্লেস, প্রাইভেট প্লেস না।
ঝিরি আর ঝর্ণা বলে চালিয়ে দিলেন। কত্ত ভালো মানুষ আপনি। আপনার মতো এইসব এক দুজন মানুষের জন্যে পুরো জাতির দোষ হয়।
ইচ্ছে করে বাঙালিদের অন্যায় ভাবে পচিয়ে পোস্ট করবেন আর লাইক শেয়ারের বন্যা বয়ে যাবে ভেবেছেন।
নৌকায় আমাদের সাথে আদিবাসীরাও ৩ জন ছিলেন। এমনকি নাজমুল পোস্টে দিয়েছেন এটা সাঙ্গু নদী।

আবার লিখেছেন বস্তির পোলাপান গাড়ি ভর্তি করে পাহাড়ে বেড়াতে চলে যায়। আমি বস্তিতে থাকিনা। ধানমন্ডিতে নিজের বাড়িতে থাকি। পাহাড় আপনার বাপ দাদার না। পাহাড় পুরো বাংলাদেশের মানুষের।
আপনার মতো আমিও বলতে পারি আপনারা বস্তির পোলাপান পাহাড় থেকে বাস ভর্তি করে ঢাকা শহর চলে আসেন কাজে, পড়তে, সব কিছুর জন্যে। কিন্তু আমি এটা বলবোনা। কারণ আমি আপনার মতো ছোটলোক না, মিথ্যাবাদী না। পুরো বাংলাদেশ এই দেশের সব মানুষের, হোক সে আদিবাসী বা বাঙালী।
আপনি অন্যায় করেছেন।
এই অন্যায়ের ফল অবশ্যেই আপনাকে একদিন সৃষ্টিকর্তা দ্বিগুণ ফেরত দেবেন। যেমন কর্ম করবেন তেমন ফল পাবেন। আমার তো মনে হয় এটা যে সাঙ্গু নদী, নদীর পারে মানুষগুলা গোসল করছে এটাই আপনার জানা নাই। তারমধ্যে আমার চারুকলার আমার ডিপার্টমেন্ট ওরিয়েন্টাল আর্ট এর ছাত্র আপনি। এটা দেখে আরও বিরক্ত হয়েছি।
আপনারা নিজেরাই নিজেদেরকে ভাগ করেন, আলাদা করেন। দুঃখজনক।
আপনার ভাষা, পরিচয় দেয় আপনি কেমন মানুষ।

নিচে এই মানুষটার প্রোফাইল লিঙ্ক দিয়ে দিলাম।

https://www.facebook.com/share/JRzg8HcQtKpo2uFN/?mibextid=wwXIfr

উক্ত স্ট্যাটাস দেওয়ার পর থেকে উগ্র উপজাতিদের একটি অংশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুক্তচিন্তার নারীবাদী ZR RUPA কে হেনস্তা, হুমকি প্রদর্শন এবং তার মেয়ের ব্যক্তিগত ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়!

Mong Ching নামের (প্রোফাইল আইডি: https://www.facebook.com/mong.ching.508675) ব্যক্তিগত ৩টি ছবি শেয়ার করে ক্যাপশন লিখেছেন, “ZR Rupa সেXy কন্যা !”

পরে ZR RUPA mong Ching আইডির পোস্টটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লিখেন, ” মানুষ নিজের অজান্তেই নিজের পরিচয় কখন দিয়ে দেয় জানেন ?
– সে যখন মুখ খুলে কথা বলার জন্যে, কথা বলে তখন।”

এসময় পোস্টটিকে ঘিরে তার ফ্রেন্ড লিস্টের বন্ধুরা মন্তব্য করে বলেন,  মায়ের বিষয় নিয়ে মেয়ের ব্যক্তিগত ছবি ছড়িয়ে দেওয়া অন্যায়। তারা এর প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, এই জঘন্য চিন্তার মানুষদের জন্যই আপনি কতকিছু করলেন। এদের তবুও পরিবর্তন আসে না। আপনি খুবই নর্মালি ডিল করতেছেন দেখে ভালো লাগলো। ওর লজ্জাবোধ থাকলে , ওর নিজের জন্যই ভালো হতো। আপনি আরো বুজবেন তাদের বেশি বেশি প্রেম দেখান। আমি তার আইডি দেখলাম খুব নোংরা মানসিকতার মানুষ ।কি সব বাজে পোস্ট দেয় । আপু এগুলো পাত্তা দিয়েন না ।আইনের সহায়তা নিন ।দেশে যদি আমাদের বাচ্চারা কাজ না করতে পারে তাহলে আইনের দরজায় অবশ্যই যেতে হবে। এই ফালতু টাকা অনেক আগেই আমি লিস্ট থেকে বিদায় করেছি। ছোট মানসিকতার না হলে এমন টা করতে পারেনা। আজো এরা ড্রেজ দিয়ে নারীর সম্মান বিচার করে। এর আধুনিক শিক্ষার দরকার। আপনার মেয়ে আসলে অনেক সুন্দরী। খুবই নোংরা আর জঘন্য।

একই ভাবে Mong Ching এর পোস্টে অনেকেই গিয়ে মন্তব্য করে বলেন, আপনি যেটা করছেন সেটা সাইবার বুলিং ও কারো পোশাক নিয়ে কটাক্ষ করা। আপনাকে মনে করিয়ে দিতে চাই রিসেন্টলি এটা নিয়ে আইন পাশ হয়েছে। তার উপর আপনি ছবিগুলো বিকৃত করছেন। মেয়েটা কোরিয়ান ড্যান্সার। এখন সে কি বোরকা পড়ে ড্যান্স করবে? ছোটলোকের পরিচয় দিলেন আপনি। তার মায়ের কারণে মেয়েকে টানা একদমই উচিত নয় । সে যেই ভুল করেছে আমরা ও তাই করছি তফাত থাকলো কোথায়?
প্রতিবাদ সুন্দর সাবলীলভাবে ও করা যায়(১)।
এখানে একজন মেয়েকে তুলে ধরেছেন সে বাঙালি হোক কিন্তু মেয়ে তো। আপনার কাছে অনুরোধ রইল দয়া করে এইভাবে প্রতিবাদ করবেন না দাদা। এইটা কোন সমাধান নয়। প্রতিবাদের ভাষা এ রকম হতে পারে! দাদা এমন একটি ছবি আফলোড দিলেন যার মাধ্যমে ওনার আর আপনার মধ্যে কোন তফাত থাকলো না। ওনারা নোংরা কাজ করেছে বলে আপনিও করবেন এমনটি তো হতে পারে না। তার মায়ের কারণে মেয়েকে টানা একদমই উচিত নয় । সে যেই ভুল করেছে আমরা ও তাই করছি তফাত থাকলো কোথায়?
প্রতিবাদ সুন্দর সাবলীলভাবে ও করা যায়। ভাই আপনি কে আমি জানি না।
প্রতিবাদ করতে না জানলে চুপ থাকবেন।
প্রতিবাদ ভাষা এভাবে হতে পারে না।
পারলে যুক্তি দিয়ে লিখেন।
আমাদের সবার মা বোন আছে।একজনে জন্য অন্যজনকে ক্ষতি আমরা করবো না।
ওরে করছে বলে আমরা করতে পারি না।
আশা আপনি পোস্টটা ডিলেট করে দিবেন। আপনি নিজেও কাজটা ভালো করেন নাই, বরং এহেন কাজ করে আপনার নোংরা মানসিকতার পরিচয় দিলেন। সুখী হন এবার। আপনি মূর্খতার পরিচয় দিলেন। এটা না করলে ও পারতেন। এটা প্রতিবাদের ভাষা নাকি বিকৃত মন-মানসিকতার পরিচয়??? শালা ছোটলোক! কে তুই রে? এইটা বেশিই করে ফেলেছেন। পুরাই থার্ড ক্লাস মেন্টালিটি
আপনার মতো লোকের জন্যই আমাদের কমিউনিটির নাম খারাপ হয়।
সময় থাকতে ছবিটা ডিলেট মারেন। বিকৃত চিন্তার পরিচয় দিলেন! তার মেয়ের ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ড নিয়ে উনাকে এভাবে মেনশন দেওয়া মূর্খতার পরিচয় বহন করে। তাছাড়া তার মেয়ের ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় কারো হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। আপনার পরিবারের কেউ এমন প্রতিভার মডেলিং করলে আমিও হস্তক্ষেপ করবো না। ব্রাদার এইটা অন্যায়। যে অপরাধ করবে তাকে নিয়ে সমালোচনা করা যায় কিন্তু এরকম মন্তব্য থেকে বিরত থাকুন। মেয়েটি একজন হিপহপ ড্যান্সার তার পোশাক নিয়ে মন্তব্য করা অযৌক্তিক। বরং এইটা বিকৃত মন মানসিকতার প্রকাশ।মায়ের সাথে মতের মিল না হলে তার মেয়েকে নিয়ে এভাবে পোস্ট দেওয়া মূর্খতা এবং চরম নিকৃষ্টতার পরিচয় | রুপা নামের মেয়েটির সাথে তর্ক হতে পারে কিন্তু আপনি তার সাথে তর্কে জেতার জন্য যেটি করেছেন তার জন্য আপনাকে শাস্তি দেওয়া উচিত | এভাবে আরেকজনের মেয়েকে নিয়ে ফালতু পোস্ট দিতে লজ্জা লাগেনা!
এসব অসভ্যতার লিমিট থাকা উচিত। খুব বাজে মনমানসিকতার পরিচয় আপনার পোস্ট, মানুষ উচ্চশিক্ষিত হলেই যে তার খোলস থেকে বের হতে পারেনা তার উদাহরণ হয়ে থাকবেন। কীসের সাথে কি মেলাচ্ছেন? একটা খারাপ বিষয়ের প্রতিবাদে আরেকটা নোংরা কাণ্ড করছেন! এগুলো তো যেচে গালি খাওয়ার কাজ করা।
ঐ মহিলার কথার সাথে একমত না, ইথিক্যালি সমালোচনা করুন। এগুলো করে আপনার নিজের নিম্ন মানসিকতার পরিচয় দেয়া ছাড়া আর কিছুই হচ্ছে না।

পাহাড়ি নারী ও শিশুর গোসলের ছবি পরে তা শেয়ার করা নিয়ে ZR RUPA ও উগ্র উপজাতিদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তর্কবিতর্ক ও জাতিগত ও বর্ণগত আক্রমণ শুরু হয়।

উপজাতিদের যুক্তি হচ্ছে নারীর গোসলের ছবি অনুমতি ছাড়া কেন তুলবে এবং কেন তা ফেসবুকে দিবে। এটা নিয়ে ZR RUPA ও পোস্টকারী Mr. Momentwala কমনসেন্স ও পর্যটকদের উপজাতিদের সঙ্গে অন্যায় করেন বলে বিভিন্ন যুক্তি উপস্থাপন করেন উপজাতি ও কিছু বাঙালি। এবং ছবিটি তোলা নিয়ে পক্ষ-বিপক্ষের মধ্যে মতভেদ তৈরি হয়।

জানা গেছে, পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি জনগোষ্ঠীর একটি অংশ তারা বাম, সুশীল ও মুক্তচিন্তার প্রগতিশীল মানুষদের সঙ্গে শুধুমাত্র নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ আদায়ে সম্পর্ক রেখেছে। স্রেফ এতটুকুই এর বাহিরে কিছু নয়। কিন্তু বাম, সুশীল ও মুক্তচিন্তার প্রগতিশীল কখনো বোঝেনা। তারা উপজাতি প্রীতি ও অধিকারের কথা বলতে গিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালি ও সেনাবাহিনীর বড়ো ক্ষতিসাধন করে আসছে। যা রাষ্ট্রের জন্য মারাত্মক ক্ষতি। আজকেও দেখা গেছে অনেক প্রগতিশীল নারীবাদীকে ZR RUPA বিরুদ্ধে লিখতে। অথচ ZR RUPA নিজেও একজন নারীবাদী।

এর আগে নারীবাদী লেখক, রোকেয়া লিটা পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি পুরুষদের পাহাড়ি নারী ধর্ষণ নিয়ে ডুমুর ফুলের নামের একটি বই প্রকাশ করেন। এরপর রোকেয়া লিটাকে ধর্ষণ করে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন উপজাতি পুরুষেরা।

একইভাবে হুমকি না পেলেও সামাজিক ভাবে অপদস্থ হচ্ছেন ZR RUPA নামের মধ্যবয়সী মুক্তচিন্তার প্রগতিশীল এই নারী। কিন্তু বাঙালিদের সবাইকে ভয়ংকর ভাবে এবং নোংরা ভাষায় হুমকি দেওয়া হয়েছে।

জানি না, এই নারীবাদী ZR RUPA উপজাতিদের এই আচরণ থেকে তাদের প্রতি যে প্রীতি ও অধিকার প্রশ্নে সোচ্চার ছিলেন তার পরিবর্তন হয় কিনা। নাকি পূর্বের ন্যায় পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালি ও সেনাবাহিনীর প্রতি বিদ্বেষ থেকেই যাবে?

উপর্যুক্ত বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে এই বিষয়ে কিছু বলা উচিত: আমি অবাক হয়েছি, ছবিটি তোলা ও শেয়ার করা নিয়ে ZR RUPA ও বাঙালি পর্যটক কে নিয়ে উপজাতিরা অনেক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। কিন্তু Mr. Momentwala ছবিটি যতটা প্রচার করেনি তার চেয়ে ব্যাপক প্রচারে ভূমিকা রেখেছে উপজাতিরা। Momentwala গত ২৬ ডিসেম্বর পোস্টটি করার পর সমালোচনার মুখে সরিয়ে নেয়। ছবির প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রতিটি পোস্টে ছবিটি ব্যবহার করেছে। অথচ ছবিটি কিনা তাদের চোখে দৃষ্টিকটু! তারা এসব করে বাঙালিদের কী বোঝাতে চায়?
একটি ছবি তোলা ও শেয়ার করাকে কেন্দ্র করে যেভাবেই বাঙালি ও পর্যটক বিদ্বেষী মনোভাব পোষণ করেছে তা কোনোভাবেই সভ্য জাতির পরিচয় বহন করে না। যেভাবে বাঙালিদের খারাপ জাতি হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন, সে হিসেবে বলতে হবে উপজাতি পুরুষদের একটি অংশকে বর্বর। তারা যে পাহাড়ে বছরের পর বছর ধরে নারী নির্যাতন করে এবং নারীদের ভোগ্যপণ্য হিসেবে ব্যবহার করে তা এখনো আর অজানা নয়। সুন্দরী উপজাতি মেয়েরা বাঙালির সঙ্গে কথা ও সম্পর্ক করলে তাদের গণধর্ষণ পূর্বক হত্যা করা হয়। নিলামে তোলার অভিযোগও আছে। প্রথাগত অজুহাত দিয়ে অনেক সময় উপজাতি নারীকে একটি শুকুর দান করে ঘটনা মীমাংসা করা হয়। পাহাড়ে চলে অনেক বর্বরতা। নিজেদের এত এতো উচ্চ আসনে আসীন করার কিছু নেই। আজকে যেটা নিয়ে বাঙালিদের আধিপত্য বা চরিত্র খারাপ বলছেন, এই বিষয় নিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার আগে গুগুলে অনুসন্ধান করলে দেখবেন, বিভিন্ন দেশের উপজাতি (ট্রাইবাল) জনগোষ্ঠীর নারীদের খোলা ছবি। আমি কয়েক বছর আগে বান্দরবানের একটি উপজাতি নারীর স্তনের ছবি গুগুল ও সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখেছি। তা নিয়ে উপজাতি কাউকে কথা বলতে দেখিনি। তখন কিন্তু উপজাতি নারীর মাচাং ঘরে উঠার নগ্ন ছবি নিয়ে আমরা বাঙালিরা কিছু বললে নিশ্চিত উল্টা বলা হতো বাঙালিদের মাইন্ড খারাপ! আজ শুধু এটাই বলবো, একজন নারী নারীর ছবি তুলেছেন। এটি যদি টপলেস ছবি হইয়ে থাকে বা অনুমতি ছাড়া তোলা হয় কিংবা দৃষ্টিকূট হয়ে থাকে তাহলে আইনের চোখে তিনি অপরাধী। তারজন্য তাকে আইনের মুখামুখি করা যেতে পারে। কিন্তু তা না করে এবং যাদের ছবি তোলা হয়েছে তাদের পক্ষ থেকে অভিযোগ ছাড়া বাঙালি বিদ্বেষী মনোভাব থেকে এবং সাম্প্রদায়িক উগ্রতা থেকে হেয় প্রতিপন্ন, সামাজিকভাবে আঘাত ও ব্যক্তিগত আক্রমণ করা খুবই দুঃখজনক। উপজাতিরা সকল কিছুকেই তাদের কালচার হিসেবে বাঙালিদের কাছে উপস্থাপন করে। উপজাতি ব্লগাররা বাথরুমে হাগু থেকে বেডরুম পর্যন্ত ব্লগে শেয়ার করে। আমরা পাহাড়ে অনেক সময় দেখি উপজাতি মেয়েরা এমনভাবে চলাফেরা করে যেটা এর চেয়ে বেশি দৃষ্টিকটু। উপজাতি মেয়ে বা ছেলেদের ফেসবুক আইডি ঘেঁটে দেখলে পাবেন, তাদের বুক খোলা ছবি, ভিডিও ও অশালীন ভাষা। যেটার কারণেই তাদের প্রাইভেসি  নষ্ট হয় না অথচ গোসলের ছবি তোলার কারণে মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে গেছে। তারা সবকিছুই তাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, জীবনধারণ ও কালচার হিসেবে বাঙালিদের কাছে তুলে ধরে। সবকিছু যদি কালচার হয়ে থাকে তাহলে যে কালচারের অংশ হিসেবে গোসলের ছবি লিমিটেশন বজায় রেখে তোলা অপরাধ কি করে হয়? মোদ্দাকথা হলো: সবকিছু যদি কালচার না বলে থাকেন তাহলে গোসলের ছবি তোলা নিঃসন্দেহে অপরাধ।

রেফারেন্স সংযুক্ত পোস্ট লিংক সমূহ:
১। ZR RUPA
https://www.facebook.com/100008169909910/posts/pfbid02FKbEW8b3WNNFbkiy9HZDkHA38guApaV2bJhEePX7AMaEiR5oJzgH7yye5pcdsyzkl/?app=fbl

২। Pragati Chakma
https://www.facebook.com/100073599049535/posts/pfbid0LfCgngXB2ezUssfnupygpj6TV8KCBWdaF7VMHeASzMKkKJj7MFZjZBJBRDqaNdGKl/?app=fbl

https://www.facebook.com/100073599049535/posts/pfbid027Xa1e46m9SRsA3MtFtuecA5dJFzzZbVjikncLeqJYwsz5p31y8B9nevRV3yrbZQrl/?app=fbl

৩। Mong Ching
https://www.facebook.com/100076386371171/posts/pfbid02DYAkzCrULp8vnqkhcc3Hdi1pfAaH5JLT9BKfgA4u5yontJ88UHjjYjfxPMQhbqpxl/?app=fbl

৪। জুম্ম সৈনিক
https://www.facebook.com/61556964640894/posts/pfbid0d5qnzZ5FCQgTZSDset68bWHt7Mw2oqk4mXSBCaJvDUWFq9FxbEjUf64zeR9qusuAl/

লেখক: অনন্ত অসীম, পার্বত্য চট্টগ্রাম, মানবাধিকার কর্মী।

পোস্ট স্কিনশট:

আগের পোস্টমাথা গোঁজার ঠাই পেল বান্দরবানের শহিদ ওমর ফারুক ত্রিপুরার পরিবার।
পরের পোস্টলংগদু জোনের উদ্যোগে অসহায় ও দরিদ্র মানুষদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন