চন্দনাইশের পাহাড়ি জনপথ ধোপাছড়ি ইউনিয়নে দিনেদুপুরে প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে অর্ধশতাধিক পাহাড়ি সন্ত্রাসী মহড়া দিয়েছে। গত শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বান্দরবানের ডলুপাড়া দিয়ে তিনটি ছাদখোলা পিকআপে করে সমতল চট্টগ্রামের চন্দনাইশের ধোপাছড়িতে প্রবেশ করে। পরে তারা ধোপাছড়ি বাজার হয়ে উত্তর ধোপাছড়ি চিরিংঘাটা পর্যন্ত হেঁটে যায়। এ সময় ধোপাছড়ি এলাকার সাধারণ মানুষ ও ক্ষেত-খামারে কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়দের অনেকেই ভয়ে এদিক-সেদিক পালিয়ে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উত্তর ধোপাছড়ি চিরিংঘাটা এলাকার বেশ কয়েকজন জানান, পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা ধোপাছড়ি বাজার থেকে উত্তর চিরিংঘাটা পর্যন্ত মহড়া দেয়। যার কারণে এলাকাবাসী আতংকিত হয়ে পড়েছেন। সন্ত্রাসীরা উত্তর চিরিংঘাটা এলাকায় এসে দিয়াকুল-চিরিংঘাটা-রাঙ্গুনিয়া সড়ক প্রশস্তকরণ কাজে নিয়োজিত ঠিকাদার ও কাজের লোকদের খোঁজ করে। পরে তাদের কাউকে না পেয়ে ঠিকাদার মো. সোহেলের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলে চলে যায়। এ সময় তারা ঠিকাদারকে আগামী ৩ দিনের মধ্যে দেখা করার নির্দেশ প্রদান করে। তাদের সাথে দেখা না করা পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখারও নির্দেশ দেয় বলে জানান গ্রামবাসী। এসময় তারা প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ধোপাছড়িতে অবস্থান করে বলে জানা যায়। কার্যাদেশ প্রাপ্ত ঠিকাদার মো. সোহেল জানান, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তার মোবাইল ফোনে কল দিয়ে তাকে কাজ বন্ধ রাখতে বলে এবং ওয়ার্ক অর্ডার নিয়ে দেখা করতে বলে। তিনি বিষয়টি চন্দনাইশ উপজেলা প্রকৌশলী মুহাম্মাদ জুনাইদ আবছার চৌধুরীকে অবহিত করেছেন বলে জানিয়েছেন।
ধোপাছড়ি ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. মোজাম্মেল হক জানান, তিনি ও ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মুজিবুল হক খোকা বিকেলে ধোপাছড়ি বাজারে চা-দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। এসময় তারা দোকান থেকে বের হলে তাদের সামনে পড়ে যান। তখন বাধ্য হয়ে তাদের সাথে যেতে হয়। তারা উত্তর ধোপাছড়ি চিরিংঘাটা পর্যন্ত এসে দিয়াকুল-চিরিংঘাটা- ধোপাছড়ি-রাঙ্গুনিয়া সড়ক প্রশস্তকরণ কাজে নিয়োজিত ঠিকাদার ও লেবারদের খোঁজ করে। পরে কাউকে না পেয়ে ঠিকাদারকে ফোন করে তাদের সাথে দেখা করতে বলে চলে যায়।
স্থানীয় সূত্র বলছে, এরা জেএসএস সন্তু গ্রুপের সদস্য। এরা প্রায় চাঁদার জন্য জনমতে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। তারই ধারাবাহিকতায় মহড়া দিতে আসেন। এদের প্রত্যকের হাতে ভারী অস্ত্র ছিল। মূলত উন্নয়নমূলক কাজ থেকে চাঁদা আদায় করতে তারা মহড়া দিয়েছেন।
চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমরান আল হোসাইন জানান, শনিবার বিকেলে একদল পাহাড়ি সন্ত্রাসী ধোপাছড়িতে এসেছিল বলে জানতে পেরেছেন। তারা সড়ক প্রশস্তকরণ কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারের খোঁজ নিয়েই কিছুক্ষণের মধ্যে চলে গেছে। তারা কারো কোনো ক্ষতি করেনি। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে।