আদিবাসী একটি জোট শব্দ, যার ভেতরে লুকিয়ে আছে বাঙালী বিদ্বেষ।

0
ছবি সংগৃহীত - উপজাতি নারী

নয়ন চ্যাটার্জি

অনেকেই হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ নিয়ে বিষ্ময় প্রকাশ করেন। বলেন-এখানে মুসলমান গেলো কোথায়? আসলে ঐ জোটটি করাই হয়েছে মুসলমানদের বিরুদ্ধে।

ঠিক একইভাবে আদিবাসী বলতে প্রায় ৫০টি জাতিগোষ্ঠীর জোটকে বোঝায়। যেমন-চাকমা, মারমা, বম, হাজং, কোচ, গাড়ো, ত্রিপুরা, মণিপুরি ইত্যাদি। তাদের হিসেব মতে বাংলাদেশে ৫১টি জাতিগোষ্ঠী আছে। এর মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালীদের বাদ দিয়ে বাকি ৫০টি জাতিগোষ্ঠীকে একত্র করে তারা নাম দিয়েছে আদিবাসী।

কথা হচ্ছে, ৫০টি জাতিগোষ্ঠীকে যদি আদিবাসী বলা হয়, তাহলে বাকি ১টি জাতিগোষ্ঠী মানে বাঙালীকে কী বলা হবে?

এক্ষেত্রে তাদের ভাষ্য হচ্ছে- বাঙালীকে বলা হবে সেটেলার। সেটেলার শব্দের অর্থ দখলদার। ফিলিস্তিনের ক্ষেত্রে আমরা ইস৥রাই#লীদের জন্য এ সে৳টেলার শব্দ ব্যবহার করি। বলি ইস৥রাই#লী দখলদার, যারা ইউরোপ থেকে এসে ফিলিস্তিনের ভূমি দখল করেছে। ঠিক তেমনি কথিত আদিবাসীরাও আমাদেরকে ইস৥রাই#লীদের মত দখলদার মনে করে। তারমানে আপনি যদি বাংলাদেশে তাদেরকে আদিবাসী বলে মেনে নেন, তবে সাথে সাথে আপনার নিজ নামের সাথে দ৳খলদার শব্দ যুক্ত করে নিলেন।

বাংলাদেশের হয়ত অধিকাংশ মানুষ হয়ত জানে না, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ৫৪ বছর হয়ে গেলেও বাংলাদেশের ৬১ জেলার জন্য এক ধরনের আইন, এবং বাকি ৩ জেলা মানে খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দারবান জেলার জন্য ভিন্ন আইন চলে। মূলত ব্রিটিশরা ১৮৭০ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে মং সার্কেল, চাকমা সার্কেল ও বোমাং সার্কেল নামে ৩টি পৃথক রাজা প্রথার সূচনা করেছিলো। বর্তমানেও ঐ তিন জেলায় পৃথক ৩ রাজার অফিসিয়াল শাসন চলে। মানে ঐ তিন জেলার বসবাসকারীদের ঐ রাজাদের অফিসিয়ালী খাজনা দিতে হয়।

লক্ষণীয়, ব্রিটিশরা তাদের খাজনা আদায়ের সুবিধার্থে পার্বত্য জেলায় রাজা শাসন চালু করে, অপরদিকে বাংলার অন্য অংশে জমিদারী শাসন চালু করে। এর মধ্যে অধিকাংশ জমিদার ছিলো হিন্দু। সম্প্রতি হিন্দু জাগরনী জোট যে ৮ দফা দাবী নিয়ে চট্টগ্রামে আন্দোলন করলো, অতঃপর বাংলাদেশের পতাকার উপর গেরুয়া পতাকা বাধলো, অতঃপর ইসকনের বিরুদ্ধে মামলা, চিন্ময় গ্রেফতার, অতঃপর চট্টগ্রামে আইনজীবি হত্যা, এগুলো আসলে কেন ? এর মূল কারণ ঐ ৮ দফা দাবীর মধ্যে আছে, সেটা হলো- ব্রিটিশরা হি!!ন্দুদের যে জমিদারী ছিলো, সেই ভূমিগুলো তারা ফেরত চায়। এক্ষেত্রে তারা অর্পিত সম্পত্তি টার্মটা ব্যবহার করে। ভারতে ময়ুখ নামে এক টিভি চ্যানেল উপস্থাপক কিন্তু বার বার সে কথাটা বলে। বলে- অমুখ জেলা, তমুক জেলা হিন্দুদের, সেগুলো ফেরত দিক, নয়ত টাকা দিক। তার কথা বলার ভঙ্গিতে জোকারি আছে, কিন্তু কথাগুলো তারা হিসেব করেই বলে।

কথা হচ্ছে, সংবিধানে যদি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীগুলোকে আদিবাসী স্বীকৃতি দিয়ে দেয়া হয়, তবে বাঙালীরা কিন্তু এমনিতেই সেটেলার বা দখলদার উপাধি পেয়ে যাবে। তখন যদি ভারত থেকে আসা হিন্দু জমিদারদের পরপুরুষ এসে বলে, আমরাও এই এলাকার আদিবাসী। দলিল- ব্রিটিশদের থেকে প্রাপ্ত জমিদারী। তখন কী বলবেন ?

গত কয়েকদিন ধরে স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টির এনসিটিবির সামনে ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর সাথে সংঘর্ষ নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। সবাই আটকে গেছে, ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর মাথার র!ক্ত আর বাঙালীদের ভায়োডিন মাখা ব্যান্ডেজের মধ্যে। কিন্তু পুরো জিনিসটা কেউ চিন্তা করছে না। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সেই দিনের দাবী কী ছিলো ? তাদের দাবী ছিলো- বইয়ে আদিবাসী শব্দ ফিরিয়ে আনা এবং তাদের সাংবিধানিক আদিবাসী স্বীকৃতি দেয়া। সেক্ষেত্রে বাঙালীরা যদি তাদের পিটিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়, তবে তো ঠিকই করেছে। তারা তো দেশের স্বার্থেই কাজ করেছে, এখানে ভুলটা কোথায় ? তাদের লক্ষ্য উদ্দেশ্য তো ভালো।

আজকে সীমান্তে কৃষকের হাতে যখন ধারালো কাঁচি থাকে, তখন কেন সবাই বাহবা দেন ? তখন তো বলেন না, কৃষি কাজে ব্যবহৃত জিনিস মানুষ মারার জন্য নিয়ে আসছে কেন ? কিন্তু স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টির হাতে স্টাম্পে বাধা পতাকা থাকলে কেন ঘৃণা করেন ? আজকে কেউ যদি আপনার পৈত্রিক সম্পত্তি দখল করতে আসে, তখন ঠিকই লাঠি শোটা নিয়ে মারামারি করতে যান, সেটাকে কেউ খারাপ বলে না। কিন্তু কেউ দেশের ভূমি দখল করতে আসে, তখন যারা লাঠি-কাচি হাতে দৌড়ে যায়, তাদেরকে আপনি খারাপ বলতে পারবেন না। তারাই তো প্রকৃত দেশপ্রেমিক। কাচি হাতের সেই কৃষককে যেভাবে স্যেলুট জানিয়েছিলেন, ঠিক তেমনি স্টাম্পে পতাকা বাধা যুবককেও তেমনি স্যেলুট জানান। দেশের স্বার্থে সঠিক সময়ে এগিয়ে গিয়েছে সেই মহৎ এটা মেনে নিন।

সূত্রNoyon Chatterjee
আগের পোস্টবামপন্থী সংগঠনগুলোকে মাঠে নামাচ্ছে খ্রিস্টান মিশনারীরা
পরের পোস্টProtected: এনসিটিবি’র ঘটনার রেশ টেনে পাহাড়ে বাঙালির ওপর সাম্প্রদায়িক হামলা।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন