নিজস্ব প্রতিনিধি: ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মিজোরামে বাংলাদেশে পাচারের জন্য প্রস্তুত বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করেছে মিজোরাম পুলিশ। রাজ্য পুলিশের বরাতে, এই ঘটনার সাথে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) এবং মিয়ানমার ভিত্তিক বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ‘চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট’ (সিএনএফ) এর সরাসরি সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।
মিজোরামের মামিত জেলার পশ্চিম ফাইলেং থানার আওতাধীন সাইথাহ গ্রামের উপকণ্ঠে গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশের যৌথ অভিযানে ধরা পড়ে অস্ত্রের এই বিশাল চালান। অভিযানে উদ্ধার হওয়া সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে ৬টি একে-৪৭ রাইফেল, ১০ হাজার ৫০ রাউন্ড গোলাবারুদ এবং ১৩টি ম্যাগাজিন। অভিযানে পাঁচজন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে এর একজন শীর্ষস্থানস্থানীয় নেতাও রয়েছেন। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাজ্য পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার (১৫ জানুয়ারি) মিয়ানমার সীমান্ত থেকে অস্ত্রের এই চালান উত্তরপূর্ব ভারত হয়ে বাংলাদেশে পাচার হওয়ার কথা ছিল।
উল্লেখ্য, ইপিডিএফ পার্বত্য চট্টগ্রাম ভিত্তিক একটি আঞ্চলিক উপজাতীয় সংগঠন যাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও এর আশেপাশের অঞ্চলে চাঁদাবাজি, অপহরণ, গুম, খুন ও মাদক ব্যবসা সহ নানাবিধ সশস্ত্র সন্ত্রাসী কার্যকলাপ পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি দুর্গম অঞ্চলের ভাবনা কেন্দ্রগুলোকেও তারা সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য ব্যবহার করছে
অতি সম্প্রতি, গত ০১ জনুয়ারি ২০২৫ তারিখে, রাঙ্গামাটি জেলার দুর্গম বন্দুকভাঙা রেঞ্জের উপরে ইউপিডিএফ এর বেশ কিছু গোপন আস্তানায় অভিযান পরিচালনা করে বিপুল পরিমান অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। অভিযানের নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে গুলি বিনিময়ের ঘটনায় ইপিডিএফ এর একজন সশস্ত্র সদস্য নিহতও হন।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, ইউপিডিএফ সহ পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যান্য সশস্ত্র সংগঠনগুলো সন্ত্রাসী কার্যকলাপ এবং চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে নিজেদের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় রাখতে এ ধরনের অস্ত্র চোরাচালানের সাথে যুক্ত হচ্ছে। ইতোমধ্যে পাহাড়ি অঞ্চলে চাঁদাবাজি, অপহরণ, এবং সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা বেড়েছে, যা এই অস্ত্র পাচারের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত হতে পারে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে ।