রাঙামাটি প্রতিনিধি
রাঙামাটি সদর উপজেলার সাপছড়ি ইউনিয়নের যৌথখামার কাউখালী ঘাগড়া মধ্যবর্তী টিভি মৌনপাড়া এলাকায় ফের সশস্ত্র উত্তেজনার ছায়া নেমে এসেছে। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল ২০২৫) বিকাল পৌনে ৫টার দিকে জেএসএস সন্তু গ্রুপের সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন ইউপিডিএফ-এর এক কালেক্টর। আহত এই কালেক্টরের নাম মনোযোগ চাকমা, দলীয় নাম ভাত্তে চাকমা (৪২)। তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সময় মনোযোগ চাকমা বাড়ির উঠানে অবস্থান করছিলেন। এ সময় আমছড়ির ডেপ্পোছড়ি এলাকা থেকে দুইটি সিএনজিতে করে আসা জেএসএস সন্তু গ্রুপের ছয়জনের একটি সশস্ত্র দল আচমকা তার বাড়িতে হানা দেয় এবং দেখা মাত্রই নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে তার কোমর ও হাতে গুলি লাগে।
ঘটনাস্থল যৌথখামার (টিভি মৌন পাড়া), যেখানে এর আগেও বিভিন্ন সময় সশস্ত্র তৎপরতা ও গোষ্ঠীগত সহিংসতার নজির রয়েছে। জানা গেছে, খাগড়াছড়ির গিরিফুল এলাকা থেকে গত ১৬ এপ্রিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী ইউপিডিএফ কর্তৃক অপহরণের শিকার হন। এরপর তাদের মুক্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে পাহাড়ের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে আসছিল জেএসএস সন্তু গ্রুপ। এরই মধ্যে গত ২২ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টায় জীবতলি মইন এলাকা থেকে ইউপিডিএফ নেতা উদয় চাকমার নেতৃত্বে শিক্ষার্থী দিব্যি চাকমাকে মুক্তি দেওয়া হয়। অপর শিক্ষার্থীদের পর্যায়ক্রমে অন্য স্থানে মুক্তি দেওয়া হয়।
অপহরণ, আধিপত্য বিস্তার এবং চুক্তি সংক্রান্ত বিরোধ—এই তিনটি ইস্যুই হামলার পেছনে মূল প্রেক্ষাপট হিসেবে উঠে আসছে।
তবে এখন পর্যন্ত জেএসএস সন্তু গ্রুপ এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বিবৃতি দেয়নি। অন্যদিকে, ইউপিডিএফ সংগঠক সচল চাকমা সরাসরি এই হামলার জন্য জেএসএস-কে দায়ী করেছে।
এই হামলার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এলাকাবাসীর মনে আবারও ভয় ফিরে এসেছে। উল্লেখ্য, এর আগে গত ১৬ মার্চ একই ইউনিয়নের খামারপাড়ায় ইউপিডিএফ কর্মী নির্মল খীসাকে গুলি করে হত্যা করে সন্তু গ্রুপের সন্ত্রাসীরা।
এখন প্রশ্ন উঠেছে—পাহাড়ে শান্তিপ্রক্রিয়া ব্যাহত করে কী উদ্দেশ্যে একের পর এক হামলা চালানো হচ্ছে? আধিপত্য বিস্তার এবং সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর লাগামহীন কর্মকাণ্ডে পাহাড়বাসীর নিরাপত্তা আজ প্রকটভাবে প্রশ্নের মুখে।