সাজেকে ইউপিডিএফের অত্যাচারের প্রতিবাদে বাঙালি চালকদের বিক্ষোভ।

0

নিজস্ব প্রতিবেদক | হিলনিউজবিডি.ডটকম

রাঙামাটি পার্বত্য জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক পর্যটন রুটে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীগোষ্ঠী ইউপিডিএফ (প্রসীত বিকাশ খীসা) সন্ত্রাসীদের লাগাতার চাঁদাবাজি, মারধর ও হুমকির প্রতিবাদে বাঘাইহাট-সাজেক রুটে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় চালক ও পরিবহন মালিকরা। এর প্রতিবাদে আজ বাঘাইছড়ি উপজেলার বাঘাইহাট বাজার এলাকায় চালক ও পরিবহন শ্রমিকদের আয়োজনে এক বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

বাঘাইহাট জীপ মালিক সমিতির একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ মে সাজেক যাওয়ার পথে উপজেলার রেতকাবা নামক এলাকায় সমিতির একটি চাঁদের গাড়ি ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীরা আটক করে। চালক মো. জাকির হোসেনের গাড়িটি চার দিন ধরে জোরপূর্বক আটকে রাখা হয় এবং পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়া হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে সমিতির সব গাড়ি রুটে চলাচল বন্ধ করে দেয় এবং সড়ক অবরোধ করে। ফলে সাজেক ও বাঘাইহাটের মধ্যকার সড়কে যান চলাচল সম্পূর্ণরূপে স্থবির হয়ে পড়ে।

এদিকে, ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীরা চাঁদার পরিমাণ ক্রমাগত বৃদ্ধি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি পাঁচ শিক্ষার্থী অপহরণের ঘটনার পর ইউপিডিএফ ও জেএসএস-এর মধ্যে সংঘাত তীব্রতর হয়। প্রতিপক্ষ জেএসএস এবং তাদের সমর্থকদের উপর চাপ প্রয়োগ করতে ইউপিডিএফ সাজেকের একাধিক বাজার বয়কট করতে সাধারণ জনগণকে বাধ্য করছে। এর আগে বাঘাইছড়ি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার জের ধরে সাজেক গঙ্গারাম বাজার, উজো বাজার, দুরছড়ি বাজার বন্ধ করে দেয় ইউপিডিএফ। বাঙালি মালিকানাধীন দোকানেও ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ ঘোষণা করে এবং পাহাড়িদের কেনাকাটা থেকে বিরত রাখে।

এছাড়া ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীরা প্রতিনিয়ত বাঙালি চালকদের মারধর ও মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে আসছে, যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বাঙালি গাড়িচালকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এর আগেও, গত ২ মে সন্ধ্যায় মারিশ্যা-দীঘিনালা সড়কের ১১ কিলোমিটার এলাকায় ইউপিডিএফ (মূল) এর নেতা সুবল চাকমা ও সোহেল চাকমার নেতৃত্বে একটি যাত্রীবাহী গাড়ি (চট্ট মেট্রো-ল ১১-৯০৭৮) থামিয়ে চালক মো. জিন্নাত আলীকে (৩২) জোরপূর্বক নামিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। জিন্নাত বাঘাইছড়ির পশ্চিম মুসলিম ব্লক এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। এই ঘটনার পরও পরিবহন শ্রমিকরা একদিনের জন্য যান চলাচল বন্ধ রেখেছিল।

স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, সাজেককে পর্যটকদের জন্য ভয়ংকর ও অনিরাপদ অঞ্চল হিসেবে গড়ে তুলতেই ইউপিডিএফ চক্রান্ত করছে। তারা বিভিন্ন সময় সাজেকে পর্যটক প্রবেশে বাধা দিচ্ছে, খাবার-পানিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করছে।

বিক্ষুব্ধ চালক ও ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের কাছে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, “এভাবে চলতে থাকলে সাজেক পর্যটন কেন্দ্র সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে, যা স্থানীয় অর্থনীতি ও নিরাপত্তার জন্য ভয়ংকর পরিণতি ডেকে আনবে।”

প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয়দের দাবি, ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে পার্বত্য অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্বাভাবিক জীবনব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়বে।

আগের পোস্টবান্দরবান-চট্টগ্রাম সীমান্তে অস্থিরতা, জেএসএস সশস্ত্র টহল, চাঁদাবাজি ও হামলা।
পরের পোস্টবান্দরবান জেলা ফার্নিচার সমিতির নির্বাচনে সভাপতি ফরিদুল আলম, সাধারণ সম্পাদক আবু কাশেম।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন