নিউজ ডেস্ক
চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও এলাকায় একটি বেসরকারি টেক্সটাইল কারখানায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ চারজনকে আটক করেছে। সন্দেহ, এই কারখানায় পার্বত্য অঞ্চলের এক সশস্ত্র সংগঠনের জন্য পোশাক প্রস্তুত করা হচ্ছিল।
গতকাল সোমবার (২ জুন) রাত ৯টার দিকে এই অভিযান পরিচালিত হয় একটি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে। অভিযানটি পরিচালনা করা হয় ‘ওয়েল ফেব্রিক্স’ নামক একটি ফ্যাক্টরিতে, যার মালিক চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম।
বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, আটককৃতদের মধ্যে এক ব্যক্তি ছালামের ছোটভাই। তবে অভিযানে অংশগ্রহণকারী পুলিশ সদস্যরা এখনো তাদের বিস্তারিত পরিচয় প্রকাশ করেনি। কারখানা প্রাঙ্গণ থেকে রোল আকারে বিপুল পরিমাণ কাপড় এবং একটি পরিবহনযান জব্দ করা হয়েছে।
চান্দগাঁও থানার ওসি মো. আফতাব উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, “বিশেষ একটি দলের পোশাক তৈরি করা হচ্ছে সন্দেহে ফ্যাক্টরিটিতে অভিযান চালানো হয়। ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।”
এটি ছাড়াও, চলতি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে চট্টগ্রাম শহরে ধারাবাহিকভাবে তিনটি পৃথক অভিযানে প্রায় ৪৬ হাজার ইউনিফর্ম উদ্ধার করা হয়েছে, যা সন্দেহভাজন সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সদস্যদের জন্য তৈরি হচ্ছিল বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি।
গত ১৭ মে রাতে রিংভো অ্যাপারেলস নামের পোশাক কারখানা থেকে নগর গোয়েন্দা পুলিশ প্রথম দফায় ২০ হাজারের বেশি ইউনিফর্ম জব্দ করে। গ্রেফতার করা হয় কারখানার মালিক সাহেদুল ইসলামসহ গোলাম আজম ও নিয়াজ হায়দারকে, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা রাঙামাটি কাপ্তাইয়ের মং হ্লা সিন মারমার কাছ থেকে দুই কোটি টাকার অর্ডার নিয়েছিলেন।
এরপর ২৭ মে বায়েজিদ থানার অভিযানে উদ্ধার হয় আরও ১১ হাজার ইউনিফর্ম এবং গ্রেফতার করা হয় সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও অর্ডারদাতাদের। একই রাতে ডিটি রোডের নুর ফ্যাশন অ্যান্ড গার্মেন্টস থেকেও ১৫ হাজার ইউনিফর্ম জব্দ করে বায়েজিদ বোস্তামী থানা পুলিশ।
সম্প্রতি রিংভো অ্যাপারেলসের নারী মালিক সৈয়দা সালেহা পারভীনকেও ছয় দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়, যা পুরো ঘটনা তদন্তে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা অর্থের বিনিময়ে এ ধরনের পোশাক তৈরির কাজে যুক্ত হয়ে পড়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইতোমধ্যেই তদন্ত জোরদার করেছে এবং বলা হচ্ছে, এই চক্রের সঙ্গে আরও অনেকেই জড়িত থাকতে পারেন।