খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের বাজার ফান্ডে নিয়োগ বৈষম্য।

0

নিউজ ডেস্ক 

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার বাজার ফান্ড প্রশাসকের কার্যালয় হতে গত ১২ জুন ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত এক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নতুন করে জাতিগত বৈষম্যের প্রশ্ন তুলেছে। উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, নিয়োগে উপজাতিদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে, যার মাধ্যমে প্রায় ৯০-৯৫ শতাংশ পদে উপজাতি প্রার্থীদের নিয়োগ নিশ্চিত করা হতে পারে — এমনটি আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাঙালি সম্প্রদায়। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার পর থেকে বাঙালিরা এই নিয়ে তীব্র নিন্দা ও সমালোচনা করে বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার দাবি জানিয়েছে।

এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে মোট ৮টি পদে ১১ জনকে নিয়োগের ঘোষণা এসেছে। সকল পদেই “উপজাতিদের অগ্রাধিকার প্রদান” শর্ত যুক্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ—পদের জন্য যোগ্য বাঙালি প্রার্থী থাকলেও শুধুমাত্র জাতিগত পরিচয়ের ভিত্তিতে তাকে বাদ দেওয়া হতে পারে, যা স্পষ্টতই সংবিধানের ২৭, ২৮ ও ২৯ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

বাংলাদেশের সংবিধান সব নাগরিককে সমান অধিকারের নিশ্চয়তা দিলেও এই বিজ্ঞপ্তিতে স্থানীয় বাঙালি জনগোষ্ঠীর প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ প্রতিফলিত হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থায়ী বাঙালি নাগরিকরা শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও চাকরি ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে প্রান্তিককরণের শিকার। এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সেই বৈষম্যের এক বাস্তব উদাহরণ।

আইনি অস্পষ্টতা ও একপেশে সিদ্ধান্ত—

পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইন বা জেলা পরিষদ আইন কোথাও এমন কোনো বাধ্যতামূলক ধারা নেই যে, উপজাতিদের অগ্রাধিকার দিয়ে বাঙালিদের বঞ্চিত করতে হবে। তবে প্রশাসনিক ছত্রছায়ায় এই ধরনের প্রথা চালু থাকায় তা অঘোষিত একটি একতরফা নিয়োগ নীতিতে রূপ নিয়েছে। ফলে, সরকারি চাকরি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সমতার নীতি কার্যত ভেঙে পড়েছে।

বিশেষ সুবিধা নয়, প্রয়োজন ‘ন্যায্য সুযোগ’—

যদিও অনেক উপজাতি সম্প্রদায় সমাজে পিছিয়ে আছে, তবে সেটি সমাধানের জন্য প্রয়োজন প্রশিক্ষণ, শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন। কিন্তু শুধুমাত্র জাতিগত পরিচয়ের ভিত্তিতে চাকমা, মারমা ও ত্রিুপুরা একপাক্ষিক অগ্রাধিকার ব্যবস্থা গঠন ‘সামাজিক ন্যায্যতা’র বিপরীতমুখী একটি পথ।

নাগরিক সমাজ বলছে—এই ধারা বন্ধ না হলে পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থায়ী বিভাজন তৈরি হবে:

সুশীল সমাজের মতে, এই ধরনের নিয়োগ ব্যবস্থার মাধ্যমে বাঙালি জনগোষ্ঠীকে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত করা হচ্ছে, যা দীর্ঘমেয়াদে শুধু সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা নয়, প্রশাসনিক অনাস্থা এবং নিরাপত্তাহীনতার জন্ম দেবে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি স্থানীয় বাঙালি সম্প্রদায়ের দাবি:

  • ১. সংবিধানের আলোকে সকল জাতিগোষ্ঠীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
    ২. “অগ্রাধিকার” শব্দের অপব্যবহার করে একটি জাতিকে একচেটিয়া সুযোগ না দেওয়ার জন্য নিয়োগ নীতিমালা পর্যালোচনা করতে হবে।
    ৩. নতুন করে সার্কুলার জারি করে সমতা ও মেধাভিত্তিক নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

 

আগের পোস্টবরকলে পিসিসিপি’র নেতৃত্বে সভাপতি তসলিম সম্পাদক ইসমাঈল গাজী
পরের পোস্টকাউখালীতে কথিত হামলা: ইউপিডিএফের প্রপাগান্ডা নাকি বাস্তব?

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন