নিউজ ডেস্ক
পার্বত্যাঞ্চলের উপজাতি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর দাপট প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে। এসব গোষ্ঠী এখন নিরাপত্তাহীনতার নতুন উপাখ্যান রচনা করছে সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ এলাকায়। সর্বশেষ হামলার শিকার হয়েছেন রাঙামাটির লংগদু উপজেলার বগাচতর ইউনিয়নের রাঙ্গীপাড়া (হেলিপ্যাড) এলাকার বাসিন্দা মোঃ আল-আমিন (৩৩)। তিনি বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
আল-আমিনের ভাষ্য অনুযায়ী, গত ১৪ জুন রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে প্রয়োজনীয় কাজে ঘরের বাইরে গেলে হঠাৎ দুইদিক থেকে সামরিক পোশাক পরিহিত ২০ থেকে ২৫ জনের একটি উপজাতি সশস্ত্র দল তাকে ঘিরে ফেলে। সন্ত্রাসীরা তাকে কিছু বলতে না দিয়েই অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। এরপর লাঠি, গাছের ডাল এবং অস্ত্রের বাট দিয়ে আঘাত করে মারাত্মক জখম করে। তার বৃদ্ধা মাকেও অস্ত্র ঠেকিয়ে ভয় দেখায়। সন্ত্রাসীরা জানিয়ে দেয়, পরদিন সকাল হতেই যদি বসতভিটা ছেড়ে না যায়, তবে তার প্রাণনাশ করা হবে।
আল-আমিন দাবি করেন, ঘটনাটির মূলে রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে চলমান ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ। ওই এলাকার নজু মিয়া চৌধুরীর ছেলে আলী আহমেদের সঙ্গে জমি নিয়ে তার আইনি বিরোধ রয়েছে, যা আদালতের রায়ে আল-আমিনের পক্ষে এসেছে। জমি দখলের উদ্দেশ্যে আলী আহমেদ পরিকল্পিতভাবে উপজাতি সশস্ত্র গ্রুপ দিয়ে এ হামলা করিয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
তিন বলেন, বিগত ২০২০ সালের ২ অক্টোবর ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে আলী আহমেদ গং মারমুখী আচরণ করলে তিনি তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন, যা বর্তমানে বিচারাধীন। এরপর বিজিবি জোরপূর্বক নির্মিত ঘর ভেঙে দেয়। সেই ঘটনার পাল্টা প্রতিশোধ নিতে আলী আহমেদ বর্তমানে মামলা চালু রেখেছে এবং এবার সশস্ত্র গোষ্ঠী ব্যবহার করে তাকে এলাকা ছাড়াতে চাচ্ছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ঘটনার সময় আল-আমিনের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলেও অস্ত্রের ভয়ে কেউ কিছু করতে পারেনি। তবে পরে তারা টর্চলাইট নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে সন্ত্রাসীরা পিছু হটে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ঘটনাস্থল থেকে মাত্র আধা কিলোমিটার দূরে আগে একটি অস্থায়ী নিরাপত্তা ক্যাম্প (৯নং পোস্ট) ছিল, যা পার্বত্য চুক্তির অংশ হিসেবে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এই নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টির সুযোগেই উপজাতি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো বাঙালি অধ্যুষিত এলাকায় হামলার সাহস পাচ্ছে।
স্থানীয়রা জননিরাপত্তার স্বার্থে অস্থায়ী ক্যাম্প পুনঃস্থাপনের দাবি জানিয়েছেন। ঘটনার বিষয়ে এখনো পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা বা লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।