বান্দরবানে ৬ লাখ টাকা-চাঁদার রসিদসহ ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক ছয় গ্রেপ্তার।

0

বান্দরবান প্রতিনিধি

বান্দরবানে পরিচালিত এক যৌথ অভিযানে সেনাবাহিনী ও পুলিশ প্রকাশ্যে চাঁদাবাজির অভিযোগে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-গণতান্ত্রিক বর্মা দলের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। অভিযানে উদ্ধার হয়েছে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ ও চাঁদা আদায়ের প্রমাণস্বরূপ রসিদ বই।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২৪ জুন) গভীর রাতে জেলা সদরস্থ নীলাচল, ইসলামপুর, উজানীপাড়া ও বালাঘাটা এলাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে মোট ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৪৮৮ টাকা, চাঁদা তোলার ২০টি রসিদ বই, একটি ছুরি ও বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা টাকার সঠিক উৎস সম্পর্কে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে ব্যর্থ হন। ফলে তাঁদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করে আজ বুধবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন:
১.প্রদীপ চাকমা (৩৯), তৈচাং, মহালছড়ি, খাগড়াছড়ি, ২. রিপন চাকমা (৪৪), দীঘিনালা, খাগড়াছড়ি, ৩. অনিয়ন চাকমা (৩১), বড় মেরুং, খাগড়াছড়ি, ৪. বীরকুমার ত্রিপুরা (১৯), সীতারাম, বিলাইছড়ি, রাঙামাটি, ৫. ওয়াইসে মারমা (২৮), বালাঘাটা আমবাগান, বান্দরবান, ৬. সুখেন তঞ্চঙ্গ্যা (২৫), টাইগারপাড়া, বান্দরবান।

পুলিশের দায়ের করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গ্রেপ্তারকৃতরা ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিক নাম ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে জেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে যানবাহন চালক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগণের কাছ থেকে জোরপূর্বক অর্থ আদায় করে আসছিলেন।

উদ্ধার হওয়া রসিদ বইগুলো থেকে ধারণা করা হচ্ছে, একটি সুসংগঠিত চাঁদা আদায়ের কাঠামো দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় ছিল। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শুধু চাঁদাবাজিই নয়, রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রমে সম্পৃক্ততার বিষয়েও তদন্ত শুরু হয়েছে।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পাহাড়ি অঞ্চলে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে জনজীবনকে জিম্মি করে রাখার চেষ্টা কখনোই সহ্য করা হবে না। এই অভিযানে প্রমাণিত হয়েছে, অপতৎপরতা রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদা সচেষ্ট রয়েছে।

স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া—স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন নামে-বেনামে পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠনগুলো সাধারণ মানুষের ওপর অর্থনৈতিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। তাঁদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে হয়তো কিছুটা স্বস্তি মিলবে, তবে পুরো নেটওয়ার্ক ধ্বংস না হলে সন্ত্রাসের ছায়া পুরোপুরি কাটবে না।

বান্দরবানে এই অভিযান প্রশাসনিক দৃঢ়তার একটি নিদর্শন। চাঁদাবাজি, সহিংসতা ও জনজীবন ব্যাহতকারী অপশক্তির বিরুদ্ধে এরূপ পদক্ষেপ পাহাড়ে স্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে—এমনটাই আশা করছেন সচেতন মহল।

আগের পোস্টরক্তমাখা প্রভাত, পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্ত্রবাজ ইউপিডিএফ-এর বিপজ্জনক পুনরুত্থান।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন