লামায় রিসোর্ট ম্যানেজারকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ, গণধোলাইয়ের পর আটক ৩ সন্ত্রাসী।

0
ছবি সংগৃহীত: মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, জনতার হাতে আটক তিন সন্ত্রাসী

নিউজ ডেস্ক 

বান্দরবানের লামা উপজেলার মিরিঞ্জা প্যারাডাইস ভ্যালিতে বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) গভীররাতে চাঞ্চল্যকর এক অপহরণ চেষ্টার ঘটনা ঘটে। রিসোর্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত বাঙালি ম্যানেজার আব্দুল খালেককে (২০) অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে একদল উপজাতি সন্ত্রাসী। অপহরণের উদ্দেশ্য ছিল ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়।

ভিডিও

জানা যায়, খালেক রাতের বেলায় পরিবারের সঙ্গে রিসোর্টে অবস্থান করছিলেন। রাত আনুমানিক ২টায় ৮-১০ জন অস্ত্রধারী তার কক্ষে ঢুকে তাকে ও তার স্ত্রীকে জিম্মি করে। পরে চোখ বেঁধে তাকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে গভীর জঙ্গলের মাঝ দিয়ে চলাকালীন সুযোগ বুঝে তিনি পাহাড় বেয়ে নিচে লাফিয়ে পালিয়ে যান এবং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাছাকাছি এলাকায় গিয়ে স্থানীয়দের কাছে সাহায্য চান।

ছবি: অপহৃত খালেক

খালেকের কাছ থেকে বিস্তারিত শুনে উত্তেজিত জনতা ঐদিন দুপুরেই মিরিঞ্জা বাগানপাড়া এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে তিনজনকে ধরে ফেলে। ধৃতদের গণপিটুনির পর হস্তান্তর করা হয় ইয়াংছা সেনাক্যাম্পে। পরে সেখান থেকে সেনাবাহিনী তাদেরকে লামা থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।

পুলিশ জানায়, অভিযুক্তদের কাছ থেকে একটি ধারালো কিরিচ ও দুটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে, যেগুলো খালেকের রিসোর্ট থেকে ছিনতাই করা হয়েছিল। তবে অস্ত্র উদ্ধারে ব্যর্থ হয় জনতা, কারণ সন্ত্রাসীদের ঘেরাও করলে তারা অস্ত্রগুলো পাহাড়ের খাদে ফেলে দেয়।

আটক ব্যক্তিরা হলেন—টানিয়েল ত্রিপুরা (৩৮), রহিম ত্রিপুরা (৩০) ও হালিরাম ত্রিপুরা (২৮)। তারা যথাক্রমে লামা, রুমা ও থানচি উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে এলাকায় হত্যা, অপহরণ ও চাঁদাবাজির একাধিক অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সূত্র।

অপহৃত খালেক বলেন, “তারা চোখ বেঁধে আমাকে জিম্মি করে মালিকের কাছে ৬ লাখ টাকা চায়। ভাগ্য ভালো, আমি পালিয়ে এসেছি।”

রিসোর্ট মালিক মোঃ আইয়ুব আলী বলেন, “রাত ২টা ৩০ মিনিটে অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন দিয়ে মুক্তিপণ চাওয়া হয়। খালেক নিরাপদে ফিরেছে—এইটাই বড় কথা। আমরা অপরাধীদের কঠোর শাস্তি চাই।”

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) এনামুল হক। তিনি জানান, “বিকেলে তিনজনকে আটক করা হয় এবং সেনাবাহিনীর মাধ্যমে থানায় হস্তান্তর করা হয়। তদন্ত চলমান রয়েছে।”

স্থানীয়রা জানান, বাগানপাড়া ও আশপাশের এলাকায় নিয়মিত অভিযান চালানো হলে অবৈধ অস্ত্র ও আরো অপরাধীদের সন্ধান পাওয়া যেতে পারে।

আগের পোস্টসংরক্ষিত বনাঞ্চলে কলেজ প্রতিষ্ঠা, উন্নয়ন, বাস্তবতা ও দ্বন্দ্বের কৌশলে পরিবর্তিত এক চিত্র।
পরের পোস্টরাঙামাটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সশস্ত্র টহল, নিরাপত্তা নিয়ে তীব্র উদ্বেগ।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন