জেএসএস এর প্রতি কেএনএফের হুমকি নোটিশ।

0

বান্দরবান প্রতিনিধি

কেএনএফ-এর নতুন হুমকি, জেএসএসকে সর্তকবার্তা – “অভিযান চলবে, দায় নেবে না।”

আজ সোমবার (৩০ জুন ২০২৫) সকালে বান্দরবানের আলোচিত ও সমালোচিত সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) একটি নতুন হুমকিস্বরূপ নোটিশ প্রকাশ করেছে। স্থানীয়ভাবে ‘বম পার্টি’ হিসেবে পরিচিত এই সংগঠনটি তাদের ফেসবুক পেজ Vat te kuki থেকে নোটিশটি জারি করে। এতে তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রভাবশালী আঞ্চলিক দল জন সংহতি সমিতি (জেএসএস) কে সরাসরি হুমকি দিয়েছে।

কেএনএফ-এর নোটিশে বলা হয়—

“কেএনএ -এর পক্ষ থেকে বিশেষ নোটিশ জারি করা হলো:
বুড়োগ্যছড়া, মাটিংগ্যছড়া, কবছড়ি ও লডিছড়া এসব এলাকায় আজ রাত থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কেএনএ কমান্ডো বাহিনী হেড হান্টার (Head Hunter Comando Team) ও ওয়াইল্ড-বোয়ার (Wild-Boar Comando Team) টিম কয়েকটা সেকশনে বিভক্ত হয়ে যৌথ অভিযান পরিচালনা করার ঘোষণা করেছে।
অত্রাঞ্চলের সাধারণ জনগনের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে যে, অনির্দিষ্টকালের জন্য এসব এলাকায় যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলো। যদি কেউ অমান্য করে কোন দূর্ঘটনা কবলিত হলে এবং অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে কেএনএ-এর উপর কোন দায় বর্তাবে না।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, ইদানিং জেএসএস-এর সশস্ত্র শাখা সরকারের টাকায় তথা আঞ্চলিক পরিষদের বরাদ্ধ অর্থে অস্ত্র-বারুদ এই পথে আনাগেনা করছে যা দিয়ে পাহাড়ে শান্তি বিনষ্টের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তাই এই পথ তথা উপরোল্লিখিত ঐসব এলাকাগুলোতে রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে।

মিডিয়া উইং
কেএনএফ।”

উল্লেখ্য, জেএসএস হলো পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির অন্যতম দল, যারা ১৯৯৭ সালে সরকারের সঙ্গে পার্বত্য চুক্তি করলেও তাদের সশস্ত্র কার্যক্রম এখনও অব্যাহত রয়েছে বিশেষত খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির বিভিন্ন অংশে। এক সময় বান্দরবানের রুমা, থানচি, রোয়াংছড়িও জেএসএস এর নিয়ন্ত্রণে থাকলেও বর্তমানে সেসব এলাকায় কেএনএফ এর প্রভাব বিস্তৃত।

২০০৮ সালে নাথান বম-এর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা সামাজিক সংগঠন কেএনডি পরবর্তী সময়ে কেএনএফ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ২০২২ সালের পর থেকে সংগঠনটি নিজেদের উপস্থিতি সোশ্যাল মিডিয়ায় জানান দিতে শুরু করে। যদিও ২০২৪ এপ্রিলে দু’টি ব্যাংক ডাকাতিসহ নানা ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানের পর কেএনএফ সীমান্তবর্তী ভারতের মিজোরাম ও মায়ানমার এলাকায় আশ্রয় নিয়েছিল। তবে অভিযান শিথিল হতেই তারা পুনরায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে।

এখন কেএনএফ-এর এই নতুন নোটিশ থেকে স্পষ্ট যে তারা জেএসএস-এর অস্ত্র-বারুদ সরবরাহের অভিযোগকে কেন্দ্র করে সরাসরি প্রতিরোধমূলক অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি জেএসএস-এর জন্য বড় ধরনের মনস্তাত্ত্বিক চ্যালেঞ্জ। তবে কেএনএফ-এর এই হুমকি কতটুকু বাস্তবায়িত হবে, নাকি এটি শুধুমাত্র চাপ সৃষ্টির কৌশল – তা সময়ই বলে দিবে।

অন্যদিকে, আঞ্চলিক পরাশক্তি জেএসএস এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কেএনএফ-এর এই হুমকির বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে পার্বত্য অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে নতুন করে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।

 

আগের পোস্টইউপিডিএফ এর উগ্র রাজনীতি: পার্বত্য শান্তির প্রধান অন্তরায়।
পরের পোস্টবিলাইছড়ি জোন কর্তৃক আর্থিক সহায়তা প্রদান।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন