কথিত ধর্ষণ চেষ্টার ধুয়ো তুলে ইউপিডিএফের নির্দেশে শিক্ষকের উপর মব চেষ্টার অভিযোগ।

0

|| গুইমারা প্রতিনিধি ||

গুইমারা কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত শিক্ষক জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) কর্তৃক পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তথাকথিত ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইউপিডিএফ দীর্ঘদিন ধরে জসিম উদ্দিনকে বিদ্যালয় থেকে বিতাড়িত করার লক্ষ্যে ষড়যন্ত্র করে আসছিল। তিনি একজন ধার্মিক, সৎ ও নিষ্ঠাবান বিচক্ষণ শিক্ষক। তাকে সরাতে ইউপিডিএফ বিদ্যালয়ের বাহিরে ভিতরে ষড়যন্ত্র তৈরি করেছিল। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৭ জুলাই অষ্টম শ্রেণির এক পাহাড়ি ছাত্রীকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এবং তার অভিভাবকদের ব্যবহার করে ২৮ জুলাই প্রধান শিক্ষকের কাছে এই মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করা হয়।

ইউপিডিএফ পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের উস্কে দিয়েছে বাঙালি শিক্ষকের বিরুদ্ধে

প্রধান শিক্ষক চাপের মুখে অভিযুক্ত শিক্ষক জসিম উদ্দিনকে বহিষ্কারের আশ্বাস দেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিষয়টি জানার পর শিক্ষক ও ছাত্রীর অভিভাবকদের নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের উদ্যোগ নেন। কিন্তু ইউপিডিএফ তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের উস্কে দিয়ে এবং নিজেদের নেতাকর্মীদের স্কুলে জড়ো করে শিক্ষকের বিরুদ্ধে মব সৃষ্টির চেষ্টা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিরাপত্তা বাহিনীর টহল দল তাৎক্ষণিকভাবে জসিম উদ্দিনকে উদ্ধার করে গুইমারা বিগ্রেডে নিয়ে যায়। সূত্র জানায়, বিষয়টি ইতোমধ্যে কোনপ্রকার তদন্ত ছাড়া বহিষ্কারের মাধ্যমে সমাধান করা হয়েছে!

দুপুর থেকে থমথমে বিরাজ করেছিল গুইমারা কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়

গুইমারা কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়ের জনপ্রিয় ও অভিজ্ঞ শিক্ষক জসিম উদ্দিনকে ঘিরে ইউপিডিএফ একটি গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে, যা নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জানা গেছে, বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষকের চাকরির মেয়াদ শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে, আর চাকরি বিধি অনুযায়ী সবচেয়ে সিনিয়র ও যোগ্য হিসেবে জসিম উদ্দিনের নতুন প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু ইউপিডিএফ চায়, এই পদে তাদের অনুগত এক উপজাতি শিক্ষক আসুক, যাতে ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠানটি তাদের প্রভাববলয়ে চলে যায়। এই উদ্দেশ্যেই তারা জসিম উদ্দিনকে অপসারণের জন্য এক মিথ্যা ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ সাজিয়ে তার সম্মান ক্ষুণ্ন ও চাকরিজীবন ধ্বংসের পাঁয়তারা করছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ইউপিডিএফ দীর্ঘদিন ধরেই বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষা পরিবেশে হস্তক্ষেপ করছে—শিক্ষার্থীদের ক্লাস থেকে জোরপূর্বক তুলে কর্মসূচিতে নিয়ে যাওয়া, পাঠদান ব্যাহত করা, ভয়ভীতি দেখানো এসব এখন নিয়মিত চিত্র। এই অপকর্মের প্রতিবাদ করে জসিম উদ্দিন ইউপিডিএফ-এর রোষানলে পড়েন। বর্তমানে যেসব শিক্ষার্থীর নাম ব্যবহার করে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তাদের ভয়ভীতি ও ধর্ষণের হুমকি দিয়ে জোর করে শিক্ষকবিরোধী অবস্থানে দাঁড় করানো হয়েছে। অথচ তারাও প্রকাশ্যে কিছু বলতে সাহস করছে না। ইউপিডিএফ গণমাধ্যমে তাদের নাম প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এবং অভিভাবকদেরও চাপে রাখছে বলে জানা গেছে।

এদিকে, ইউপিডিএফ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিলে ঠেলে দিয়েছে এবং বাঙালি শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ঘৃণ্য তথ্য ছড়িয়ে জনমনে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করছে। এর আগে ২০২৪ সালের অক্টোবরে খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল কলেজের শিক্ষক সোহেল রানার বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ তুলে ইউপিডিএফ-এর সহযোগী সংগঠন পুলিশের সামনে মব সৃষ্টি করে তাকে হত্যা করে।

আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা টহল

পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ইউপিডিএফ তথাকথিত ধর্ষণ বা ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। এর ফলে সাধারণ মানুষ, শিক্ষক ও বিভিন্ন পেশাজীবী নির্মমতার শিকার হচ্ছেন। স্থানীয়রা এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়েছেন এবং ইউপিডিএফ এর মত সন্ত্রাসী সংগঠনকে নিষিদ্ধের দাবি করেছেন।

আগের পোস্টপানছড়িতে আধিপত্য বিস্তারে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, নিহত ১
পরের পোস্টদীঘিনালায় সেনাবাহিনীর ‘স্বাস্থ্য সেতুবন্ধন’: একদিনেই সেবা পেলেন পাঁচ শতাধিক মানুষ।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন