পানছড়ি প্রতিনিধি
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার পানছড়ি উপজেলার লোগাং ইউনিয়নের জগপাড়া ও মধুরঞ্জন পাড়ায় আঞ্চলিক দুই সশস্ত্র সংগঠন—ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস)—মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১০ আগস্ট থেকে ১১ আগস্ট দুপুর পর্যন্ত কয়েক দফায় দুই পক্ষের মধ্যে হাজারের অধিক রাউন্ড গুলিবিনিময় হয়। এ সময় ইউপিডিএফের গুলিতে জেএসএসের এক সশস্ত্র সদস্য রুপেস তংচঙ্গ্যা (রাজস্থলী, রাঙামাটি) নিহত হন। সম্প্রতি তিনি পানছড়ি লোগাং ও দুধুকছড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ে যোগ দেন।
জেএসএস দাবি করেছে, তারা গত ১০ জুলাইয়ের সংঘর্ষে ইউপিডিএফের দুই সদস্যকে হত্যা করেছে। তবে এ দাবির কোনো স্বাধীন সূত্রে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। স্থানীয়রা জানান, টানা গুলিবর্ষণের কারণে এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কে পালিয়ে যান। গুলিতে বহু গৃহপালিত পশু ও বসতবাড়ির সামগ্রী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইউপিডিএফ জেএসএস সংঘর্ষের স্থান থেকে পিছুহটলে তল্লাশি চালিয়ে রুপেস চাকমার লাশ, অস্ত্র, টাকা এবং বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় দুই পক্ষের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় পাল্টাপাল্টি প্রচার চলছে। হতাহতের সংখ্যা নিয়ে উভয় পক্ষই ভিন্ন তথ্য দিচ্ছে এবং একে অপরকে মিথ্যাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত করছে।
পানছড়িতে রুপেস তংচঙ্গ্যার মৃত্যুর বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিশ্চিত করতে পারেনি।
উল্লেখ্য, পার্বত্য চুক্তি–সমর্থক জেএসএস এবং চুক্তি–বিরোধী স্বায়ত্তশাসন দাবিকারী ইউপিডিএফ ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বরের চুক্তির পর থেকেই আধিপত্য বিস্তার ও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে আছে। এসব সংঘর্ষে সাধারণ পাহাড়ি ও বাঙালিরাও প্রাণ হারাচ্ছে, যা স্থানীয়দের কাছে এই সংগঠনগুলোর ‘অধিকার আন্দোলন’কে ভাঁওতাবাজি হিসেবে প্রতীয়মান করছে।