মানিকছড়ি ও গুইমারা প্রতিনিধি:
খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারায় ইউপিডিএফ প্রসীত সন্ত্রাসীদের প্ররোচনায় নিরাপত্তা বাহিনীর গাড়িবহর ঘেরাও ও হামলার চেষ্টা চালানো হয়। রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কালাপানি নামক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নিরাপত্তা বাহিনী ফাঁকা গুলিবর্ষণ ও লাঠিচার্জ করে বেআইনী জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তবলা পাড়ায় দীর্ঘদিন অবস্থায় নিয়ে ইউপিডিএফ লক্ষ্মীছুড়ি, রামগড়, মানিকছড়ি ও গুইমারা এলাকায় চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে। এই খবরের অদ্য (রবিবার) ৭ সেপ্টেম্বর সকালে মানিকছড়ি উপজেলার বাটনাতলী ইউনিয়নের তবলা পাড়ায় ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের উপস্থিতির খবর পেয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী গোপন অভিযানে যায়। অভিযানে সম্ভাব্য কয়েকটি বাড়িতে তল্লাশির সময় ইউপিডিএফ প্রসীত সন্ত্রাসীরা ভয়ভীতি দেখিয়ে স্থানীয় গ্রামবাসী ও স্কুলশিক্ষার্থীদের মাধ্যমে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্যকে আটক করে রাখে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থলে গেলে ইউপিডিএফ নির্দেশে গ্রামবাসীরা আটক সদস্যদের উদ্ধারে বাধা প্রদান করে।

পরে একাধিক টিম অভিযান চালিয়ে তবলা পাড়া থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের উদ্ধার করে ফিরছিল। ফেরার পথে গুইমারার কালাপানি এলাকায় ইউপিডিএফের চাপের মুখে পড়া গ্রামবাসীরা পুনরায় নিরাপত্তা বাহিনীকে ঘেরাও ও হামলার চেষ্টা চালায়। এসময় নিরাপত্তা বাহিনী ফাঁকা গুলিবর্ষণ ও লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্র জানায়, ইউপিডিএফ নিয়ন্ত্রিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে পরিকল্পিতভাবে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। সেখানে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গ্রামবাসীর ওপর হামলা ও সরাসরি গুলি চালানোর মিথ্যা অভিযোগ তুলে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা চলছে। মূলত ইউপিডিএফ নিজেদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ডাকতে এসব করে থাকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন মারমা উপজাতি অভিযোগ করে বলেন, ইউপিডিএফ সবসময় পাহাড়ি সাধারণ মানুষকে বলির পাঁঠা বানায়। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও অস্ত্রবাজদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান ব্যর্থ করতে তারা জোরপূর্বক গ্রামবাসীদের সামনে ঠেলে দেয়। ইউপিডিএফের নির্দেশ অমান্য করলে সাধারণ মানুষকে নির্যাতন, জরিমানা এমনকি হত্যার শিকার হতে হয়। তাই ভয়ে মানুষ বাধ্য হয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কাজে বাধা দেয়।
তাদের অভিযোগ, ইউপিডিএফ বরাবরই নিজেদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আড়াল করতে জনগণকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করে, যা পাহাড়ের সাধারণ মানুষের জীবনে চরম নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করছে।