মোহাম্মদ আজিজ উল্লাহ | বান্দরবান
বান্দরবানে বম সম্প্রদায়ের লোকজন সেনাবাহিনীর সহায়তায় নতুনভাবে স্বাভাবিক জীবন যাপন শুরু করেছে।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় এক প্রেস ব্রিফিংএ এইসব সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন বান্দরবান সেনা রিজিয়ন।
প্রেসব্রিফিংয়ে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি, নৈসর্গিক বৈচিত্র্য, নানাবিধ সংস্কৃতি ও জনবিন্যাসে সমৃদ্ধ পাহাড়ের মনোমুগ্ধকর জেলা বান্দরবান। এই জেলার শান্তি, সম্প্রীতি ও উন্নয়ন ধারা অব্যাহত রাখতে সদর দপ্তর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের অধীনস্থ বান্দরবান সেনা রিজিয়ন নিরলসভাবে কাজ করে
যাচ্ছে, যাতে পাহাড়ের মানুষ নিরাপদ ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রা উপভোগ করতে পারে।
গত ০২ ও ০৩ এপ্রিল ২০২৪ তারিখ বান্দরবান জেলার রুমা ও থানচি উপজেলার দুটি ব্যাংকের তিনটি শাখায় কেএনএফ (কুকিচীন ন্যাশনাল পার্টি) এর সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্তৃক ব্যাংক ডাকাতি মামলায় আটককৃত ১৯৯ জন বম সদস্যদের মধ্যে সেনাবাহিনীর সহায়তায় এখন পর্যন্ত সর্বমোট ১০৪ জন বম সদস্য জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর অধিকাংশ সদস্যই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য বান্দরবান সেনা রিজিয়নে দেখা করতে আসেন।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ জামিন প্রাপ্ত সদস্যরা বান্দরবান সেনা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম রাকিব ইবনে রেজওয়ান, এএফডব্লিউসি, পিএসসি এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। রিজিয়ন কমান্ডার, বান্দরবান রিজিয়ন তাদেরকে স্বাগত জানিয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন করার জন্য প্রেষণাসহ প্রত্যেক’কে আর্থিক ও অন্যান্য সহায়তা এবং সুন্দর জীবনযাপনের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি বলেন, ধর্ম, বর্ণ ও জাতি নির্বিশেষে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি ও শৃংখলা বজায় রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বদ্ধপরিকর।
এছাড়াও, যে সকল বম সদস্যগণ বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে মিজোরামসহ বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে ছিল তারা অনেকেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় নিজ নিজ পাড়ায় প্রত্যাবর্তন করেছেন। ইতিমধ্যে মিজোরাম থেকে ১৬২ টি পরিবারের ৪১৩ জন নারী, পুরুষ ও শিশু তাদের নিজ পাড়ায় ফিরে এসেছেন। সেনাবাহিনী কর্তৃক প্রত্যাবর্তনকৃত বম সদস্যদের প্রত্যেক পরিবারকে খাদ্যশস্য (চাল, ডাল, তৈল, আলু, পিয়াজ, লবন, চিনি) প্রদান করা হয়েছে।এছাড়াও ঘরবাড়ি তৈরীর জন্য সরঞ্জামাদি, আত্মকর্মসংস্থান তৈরীর জন্য সেলাই মেশিন এবং বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়মূলক কর্মকান্ডে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সর্বদা সচেষ্ট।পাহাড়ের সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বজায় রাখা এবং উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নিতে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে এমন কর্মকান্ড সর্বদা অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি সকলকে আশ্বস্ত করেন।