হান্নান সরকার
পার্বত্য চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সদা সতর্ক সেনাবাহিনী আজ ২৬ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি সদরে নিয়মিত টহল পরিচালনা করছিল। কিন্তু সে সময় পার্বত্য চুক্তি বিরোধী সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফের প্ররোচনায় “জুম্ম ছাত্র জনতা” ব্যানারে আয়োজিত একটি সমাবেশ থেকে সেনাবাহিনীর টহল গাড়ির উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা গাড়িটি ভাংচুর করে এবং সেনাবাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়।
এমন পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী অত্যন্ত ধৈর্য, সংযম এবং মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ভূমিকা পালন করে। তারা পাল্টা ব্যবস্থা না নিয়ে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেয়। কারণ যেকোনো প্রতিক্রিয়া জানমালের ক্ষতি ও বড় ধরনের অস্থিতিশীলতা ডেকে আনতে পারত। এই নিয়ন্ত্রিত পদক্ষেপ সেনাবাহিনীর পেশাদারিত্ব ও জনগণের প্রতি দায়িত্বশীলতার অনন্য দৃষ্টান্ত।
এদিকে সম্প্রতি খাগড়াছড়ি সদর পৌরসভার সিঙ্গিনালা গ্রামে ঘটে যাওয়া নৃশংস ধর্ষণ ঘটনাকে ইউপিডিএফ অপব্যাখ্যা করে রাজনৈতিক হাতিয়ার বানানোর চেষ্টা করে। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাত আনুমানিক ১০টার দিকে প্রাইভেট পড়া শেষে বাড়ি ফেরার পথে মারমা সম্প্রদায়ের এক অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে কয়েকজন দুর্বৃত্ত অপহরণ করে পাশের জমিতে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করে। পরদিন (২৪ সেপ্টেম্বর) সেনাবাহিনীর সদর জোনের সহযোগিতায় পুলিশ মূল আসামি শয়ন শীলকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে। বাকিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এই পদক্ষেপ আবারও প্রমাণ করেছে—জনগণের নিরাপত্তা রক্ষায় সেনাবাহিনী সবসময় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।
কিন্তু দুঃখজনকভাবে ইউপিডিএফ এই জঘন্য ঘটনাকে ঘিরে জনগণকে উত্তেজিত করে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী তৎপরতা চালাচ্ছে। তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অপপ্রচার ছড়িয়ে পাহাড়ে অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
স্থানীয় সচেতন মহল মনে করে, সেনাবাহিনীর গাড়ির উপর এ ধরনের দুঃসাহসী হামলা শুধু রাষ্ট্রবিরোধী চক্রান্তই নয়, বরং পাহাড়ের শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে ধ্বংস করার একটি গভীর ষড়যন্ত্র। তারা হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে।
সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব ও জনগণের নিরাপত্তার জন্য নিরলসভাবে কাজ করছে। তাই খাগড়াছড়ির এই ঘটনা প্রমাণ করে, দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর বিপক্ষে দাঁড়ানো মানেই শান্তি ও স্থিতিশীলতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া। সন্ত্রাসীদের এই দুঃসাহস কোনভাবেই সহ্য করা যায় না। পাহাড়ের শান্তিপ্রিয় মানুষ আজ সেনাবাহিনীর পাশে রয়েছে এবং তারা বিশ্বাস করে, সন্ত্রাসী শক্তি যতই অরাজকতা ছড়াক না কেন, শেষ পর্যন্ত ন্যায় ও শৃঙ্খলাই জয়ী হবে।