পারভেজ মারুফ | রাজস্থলী
পার্বত্য রাঙ্গামাটির রাজস্থলী থেকে বান্দরবনগামী সড়কে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দ্বারা এক চাঞ্চল্যকর জিম্মি ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি ঘটে গত ১১ জুন সকাল ৯টার সময়, ডাক বাংলোর পরে একটি নির্জন সড়কে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, একটি অচেনা বাইকে থাকা তিনজনের মধ্যে একজন চালক হিসেবে বসা ছিলেন এবং বাকি দুইজনের হাতে ছিলো আগ্নেয়াস্ত্র। তারা অস্ত্রের মুখে একটি বাইক থামিয়ে জিম্মি করে।
ভিডিও-
একজন স্থানীয় ব্যক্তি সেই মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করছিলেন মোবাইলে, যা সম্ভবত সন্ত্রাসীরা বুঝতে পারেনি। ভিডিওতে দেখা যায়, সশস্ত্র এক সন্ত্রাসী তাকে হাত ইশারায় চলে যেতে বলে। ধারণা করা হচ্ছে, যদি তারা ভিডিওটি বুঝতে পারত, তাহলে তাকেও জিম্মি করে রাখতে পারত।
এই ভিডিও ধারণকারী ব্যক্তি পরবর্তীতে সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে ভিডিওটি নিকটবর্তী সেনা ক্যাম্পে হস্তান্তর করেন এবং জিম্মি হওয়া ব্যক্তিদের উদ্ধারে সাহায্যের জন্য আকুতি জানান। তার এই উদ্যোগের ফলে বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনির নজরে আসে।
ঘটনার ভিডিওটি ১৪ জুন রাত আনুমানিক ৮টার সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। “Aqib Kabir” নামের একটি ফেসবুক প্রোফাইল থেকে পোস্টটি শেয়ার করা হয়।
🔗 পোস্ট লিংক: facebook.com/share/1Lr4Q5TEn6
🔗 আইডি লিংক: facebook.com/share/v/168xJ1HyA9
ভিডিওটির ক্যাপশনে Aqib Kabir লিখেছেন: “সারা বাংলাদেশের সকল বাহিনীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সদস্যের উপস্থিত আমাদের তিন পার্বত্য জেলায়। চিন্তা করলে কিলোমিটার অন্তর অন্তর প্রায় প্রত্যেক বাহিনীর একটি করে নিরাপত্তা চৌকি আছে। তাদের নাকের ডগায় বসে কিভাবে নিরীহ জনগণ সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে হেনস্তার শিকার হতে হয়??!!
সত্যি কথা বলতে, আমি এখন নিজের জন্মভূমি পার্বত্য এলাকা থেকে সমতলের এলাকাকে নিরাপদ মনে করি।
সন্ত্রাসী সেই যেই দল/সম্প্রদায়ের হোক না কেন তারা সন্ত্রাসীই।
আমি মনে করি নিরাপত্তা বাহিনির উচিত দেশের সকল সন্ত্রাসীদের শায়েস্তা করে জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনা।”
স্থানীয়দের ক্ষোভ ও নিরাপত্তা প্রশ্ন—
এই ভিডিও প্রকাশের পর স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও স্থানীয় ফোরামে মানুষ বারবার প্রশ্ন তুলেছে—”এইসব নিরাপত্তা চৌকিগুলো ঠিক কী কাজ করে?”
একজন বাসিন্দা মন্তব্য করেছেন,
“পাহাড়ে এত বাহিনী থাকার পরও যদি প্রকাশ্যে এমন ঘটনা ঘটে, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়?”
স্থানীয়রা মনে করেন, এই ঘটনা পাহাড়ি অঞ্চলের দীর্ঘদিনের নিরাপত্তাহীনতার বাস্তব প্রতিচ্ছবি। যখন মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্বে থাকা বাহিনীর উপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও সন্ত্রাসীরা নির্ভয়ে অস্ত্র হাতে পথরোধ করে, তখন প্রশ্ন উঠে—এই সিস্টেমে গলদ কোথায়? স্থানীয়রা এখন সরকারের দৃশ্যমান পদক্ষেপ ও জবাবদিহিতা কামনা করছে।
