হান্নান সরকার, রাঙামাটি
সবকিছু দখল করে আছে উপজাতীয়রা। তিন পার্বত্য জেলার ৩ জন এমপি সহ সংরক্ষিত নারী আসনের এমপিকে নিয়ে সর্বমোট ৪জন এমপি উপজাতি। ৩ পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উপজাতি। পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান উপজাতি। ৩ সার্কেলের ৩ জন সার্কেল চীফ (তথাকথিত রাজা) উপজাতি। হেডম্যান, কার্বারী উপজাতি। শরণার্থী পুর্নবাসন ট্রাস্টের চেয়ারম্যানও উপজাতি। পার্বত্য চুক্তি দেখবাল করার জন্য যে কয়জন প্রতিনিধি আছে পার্বত্যাঞ্চল থেকে তারা সবাই উপজাতি। পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের সদস্যরা সবাই উপজাতি। সবকিছুতে উপজাতি!
ডিসি অফিস, ইউএনও অফিস, মৎস অফিস, শিক্ষা অফিস, সমাজ সেবা অফিস, কৃষি অফিস, কৃষি ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকেও উপজাতি। সর্ব ক্ষেত্রেই কোটা সুবিধা রয়েছে উপজাতিদের। পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের জন্য কাজ করছে সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও দেশি-বিদেশি এনজিও, এবং দাতা সংস্থাগুলো সহ নানান সংস্থা। বাঙ্গালীদের সাহায্য সহযোগীতা করার জন্যেই কেউ নেই! অথচ পার্বত্য চট্টগ্রামে জনসংখ্যা অনুপাতে উপজাতি বাঙ্গালী সমান। ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড’ চেয়ারম্যান সাবেক এমপি ফিরোজ বেগম চিনুকে করা হোক। ফিরোজা বেগম চিনু সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি থাকাকালীন পার্বত্য চট্টগ্রামের অবৈধ অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। সবসময় পাহাড় হতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি জানিয়ে আসছেন। প্রত্যাহারকৃত সেনা ক্যাম্প পুনঃস্থাপনের জন্য কথা বলেছেন।
অবৈধ অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র ফিরোজ বেগম চিনু সরব রয়েছে৷ বাকী সবাই অবৈধ অস্ত্রধারী নিয়ে নিশ্চুপ। সরকারের নিকট দাবি পার্বত্য চট্টগ্রাম হতে বৈষম্য, অনিয়ম ও সাম্প্রদায়িকতা দূর করতে এবং অবৈধ অস্ত্রধারী, চাঁদাবাজ ও দেশদ্রোহীদের লাগাম টেনে ধরতে ফিরোজ বেগম চিনুকে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান করা হোক। এর ফলে এ অঞ্চলের উপজাতি বাঙ্গালী উভয় জনগোষ্ঠীর মানুষদের জীবনমানে ছোঁয়া লাগবে। বর্তমানে পার্বত্য বাঙ্গালীদের নিজ দেশে পরবাসীর মত রাখা হয়েছে। এখানে বাঙ্গালীদের প্রতিনিধি নেই কথা বলার মত। নেই বিন্দুমাত্র অধিকার। অনেক বাঙ্গালীর বাসস্থানও নেই৷ যুগের পর যুগ পাহাড়ের বাঙ্গালীদের নিজ দেশে পরবাসী করে রাখা এটা গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ৷
১৯৯৭–২রা, ডিসেম্বরের অসাংবিধানিক পার্বত্য চুক্তিতেও বলা হয়নি ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড’ চেয়ারম্যান যে, উপজাতি হইতে হতে হবে। এমন কথা কোথাও বলা হয়নি। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান উপজাতি বাঙ্গালী যে কোন সম্প্রদায় হতে পারবে, এতে বাধা নেই৷ পার্বত্য জেলা পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয় তো পার্বত্য চুক্তির শর্ত মোতাবেক উপজাতি শিকলে বাঁধা।
সবকিছু উপজাতীয় নেতৃত্ব শ্রেণীর হাতে থাকার ফলে দেশদ্রোহী বিশ্বাসঘাতক মতবাদের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করা সহ প্রশাসনিক সহযোগিতা নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে৷
পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলা পরিষদ গুলো সহ সব প্রতিষ্টানে চাকমাদের একক আধিপত্য থাকলেও এবার তিন পার্বত্য জেলার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কিন্তু মারমা সম্প্রদায় হতে নিযুক্ত করেছে সরকার৷ এবার সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান বাঙ্গালী নিযুক্ত করলে তাতে সমস্যা কি?
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের শিক্ষা বৃত্তি, জীবনমান্নোয়নের প্রকল্প বিতরণ সহ জনহিতকর বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণে বৈষম্য সৃষ্টির ভয়ংকর নমুনার ইতোমধ্যে আমরা জেনেছি৷ এর থেকে পরিত্রান পেতে হলে অবশ্যই আমাদের ঐকবদ্ধ হয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের সরকারী দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে বাঙ্গালী প্রবেশ বৃদ্ধি করতে হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠীর মৌলিক অধিকার হতে বঞ্চিত৷ রাষ্ট্র, প্রশাসন বাঙ্গালীকে প্রাপ্য অধিকার দিতে ব্যর্থ ! এখনই সময় নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে আওয়াজ তোলার। পার্বত্য চট্টগ্রামে সবকিছু সমোঝোতার ভিত্তি যদি না হয় তবুও বলবো অন্ততপক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান বাঙ্গালী হইতে নিযুক্ত করা হোক। এতে কিছুটা হলেও বৈষম্য, অনিয়ম, অবিচার, এবং বাঙ্গালীর প্রতি চরম ঘৃণা ও অফিস আদালতে হয়রানি হ্রাস পাবে।