জিহান মোবারক- রাঙামাটি
সেনাবাহিনী কর্তৃক রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার রাঙ্গামাটি সদর উপজেলাধীন বালুখালি ইউনিয়ন এলাকায় টহল অভিযান চালানো হয় অবৈধ অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে৷ ওই এলাকায় সেনাবাহিনী পূর্বেও বিভিন্ন ধাপে সফল অভিযান পরিচালনা করে। বালুর যাওয়ার অন্যতম মাধ্যম নৌপথ। যে কারণে ওই এলাকায় সবসময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি থাকে না। আর সুযোগকে কাজে লাগিয়ে জেএসএস সন্তুর সশস্ত্র সন্ত্রাসী সেখানে নিজেদের সন্ত্রাসী তৎপরতা পরিচালনার অভয়রণ্য গড়ে তুলেছে। বালুখালি থেকে জেএসএস বিভিন্ন অপরাধ সংঘটিত করার পরিকল্পনা করেছিলো, এবং বিভিন্ন সময় হত্যা, অপহণ ও চাঁদাবাজির মত মারাত্মক অপরাধ সংঘটিত করেছে। সবচেয়ে অবাক করা তথ্য হলো- প্রায়শই জেএসএস গোপনে বালুখালী থেকে নানান দেশদ্রোহী তৎপরতা চালায়। তারা একটি টং ঘরে ঘাঁটি গড়ে তুলে দীর্ঘদিন থেকে অবস্থান নিয়েছে, ‘এমনই গোপন তথ্য আসে সেনাবাহিনীর নিকট।’
সূত্রে জানা যায়, গত ৯ জুলাই ২০২১ খ্রিস্টাব্দে জুরাছড়ি উপজেলার জুরাছড়ি সেনা জোনের অধীন কুকী পাড়া সেনা ক্যাম্পের ২৪ জনের একটি সেনাদল রাঙ্গামাটির বালুখালি ইউনিয়নের বাদলছড়ি, দুত্তাং, কাইন্দ্যা, এগুজ্যাছড়ি ইত্যাদি এলাকায় টহল অভিযানে যায়। সেনাবাহিনীর অতর্কিত গোপন অভিযান দেখে সন্ত্রাসীরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়। টং ঘরে ঘাঁটি করে অবস্থান নেওয়া সন্ত্রাসীরা সেখান থেকে ফালিয়ে যায়। সন্ত্রাসীদের ধরতে এক পর্যায়ে দুপুরে বালুখালী ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড সহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। এসময় একটি বাড়িতে সন্ত্রাসীরা অবস্থান নিয়েছে বিষয়টি সূত্রের তথ্য মতে জানতে পারে সেনারা। যে বাড়িতে অবস্থান নিয়েছে সন্ত্রাসীরা, সে বাড়িতে সেনাবাহিনী অভিযানের চেষ্টা করে। তখন জেএসএস সন্ত্রাসীরা নারীদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে সেনা অভিযান ঠেকানো সহ বিতর্কিত করার জন্য ভয়কর ফাঁদ পাতে। সেনাবাহিনী সন্ত্রাসীদের ধরতে বাড়িটির চতুরপাশ থেকে ঘেরাও করে। এসময় উগ্রবাদী নারীরা চিৎকার-চেঁচামেচি করতে থাকে যে, “সেনাবাহিনী কর্তৃক ১৩ বছরের একটি শিশুকে যৌন নিপীড়ন করা হচ্ছে!” সেনাবাহিনী আচমকা এমন পরিস্থিতি দেখে হতবিহ্বল হয়।
যেমনটি আমরা বিলাইছড়ি ফারুয়া গ্রামে সেনা অভিযান ঠেকাতে দেখিছিলাম; সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মারমা দুই কিশোরী বোনকে ধর্ষণের ধুয়ো তুলে সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা করেছিল জেএসএস। পরবর্তীতে কিশোরী দুই বোন-কে ডাক্তারি পরীক্ষা-নিরিক্ষা করে দেখা যায় ধর্ষণের মত কোন ঘটনাই ঘটেনি সেদিন। অথচ এর মধ্যেই দেশ পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সেনাবাহিনী কর্তৃক মারমা দু’জন কিশোরী বোনকে ধর্ষণের কথিত অভিযোগ পৌছে যায়!
আরো একটি ঘটনা আপনাদের বুঝার সুবিধার্থে স্মরণ করে দিতে চাই-
আপনাদের হয়তো মনে আছে, বিগত ৩ বছর পূর্বে রাঙামাটি রাঙাপানিতে দেখেছিলেন, সেনাবাহিনী যখন জেএসএস সন্ত্রাসীদেরকে চাঁদাবাজিকালে হাতেনাতে আটক করেছিল, ‘তখন একদল জেএসএস সন্ত্রাসীদের উশৃংখল নারী সেনাবাহিনীর উপর চড়া হয়ে অনাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি করার অপচেষ্টা করেছিল। পরিস্থিতি অস্বাভাবিক দেখার পরেও সেদিন সেনাবাহিনী সাধারণ মানুষের ক্ষতিসাধন হবে ভেবে গুলি চালাননি, এবং নিজেদের উপর আঘাত আসার পরেও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে নারীদের উপর আঘাত করেন নি। ঠিক গত ৯ তারিখেও সে একই ধরনের ঘটনা সংঘটিত করার অপচেষ্টা করেছিল উশৃংখল নারীদের দিয়ে জেএসএস সন্তুর সন্ত্রাসীরা। গত-৯ তারিখে সন্ত্রাসীদের পাতানো ফাঁদে না জড়িয়ে সেনাবাহিনী চরম ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে, সে সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছে। সন্ত্রাসীরা চেষ্টা করেছিল সেনা অভিযান ঠেকাতে, এবং সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করতে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আরো একটি মিথ্যা ধর্ষণ অভিযোগ রচিত করবেন; নারীদের ব্যবহার করে সেনাবাহিনীকে উত্তেজিত করে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি করবেন; যাতে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। কিন্তু আমাদের বিশ্বাস ভরসার দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী তা হতে দেননি।
সন্ত্রাসীরা এমন ঘৃণিত কাজে ব্যর্থ হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যে, গুজব ও কুৎসা রটিয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলার অপচেষ্টা করছে। তার পাশাপাশি ১৩ বছরের এক কন্যা শিশু নিজ বাড়িতে জনৈক সেনা সদস্য কর্তৃক যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে বলে মিথ্যাচার করে আসছে তাদের পরিচালিত #hillvoice & #Chtnews নামের নিবন্ধন বিহীন ভুঁইফোড় অনলাইন মাধ্যমেই।
সন্ত্রাসীদের অভিযোগ যৌন হয়রানির শিকার হওয়া শিশুটি কাইন্দ্যা জুনিয়র হাই স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। কিন্তু স্থানীয় গ্রামবাসির সঙ্গে কথা বলে এমন অভিযোগের বিন্দুমাত্র সত্যতা পাওয়া যায়নি৷
এই থেকে, এবং উপর্যুক্ত বিষয়াদি বিচার বিশ্লেষণ করে অনুমেয় যে, সেনাবাহিনী কর্তৃক কাইন্দ্যা জুনিয়র হাই স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী যৌন হয়রানির শিকার হয়নি কোনভাবেই। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যাচার ও উদ্দেশ্যপ্রণোদীত সাজানো অভিযোগ, যার কোন সত্যতা ও অস্তিত্ব নেই।