মৃত শাসনবিধি বলবৎ করতে ইউপিডিএফ কর্মসূচী পালন করে অবরোধের ডাক দেয়!

0

খায়রুল বশর ও এ.ম.কে আনোয়ার, হিলনিউজবিডি- ব্রিটিশ কর্তৃক প্রণীত পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি বা পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন (চিটাগং হিল ট্র্যাক্ট ম্যানুয়েল ১৯০০) কে আইন হিসেবে ২০১৪ ও ২০১৬ সালে পৃথক দুই মামলার রায় দেয় সুপ্রীম কোর্টের পুর্ণ বেঞ্চ।

এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে সুপ্রীম কোর্টে রিভিউ করেছেন, বাঙ্গালীদের পক্ষে খাগড়াছড়ি জেলার বাসিন্দা আব্দুল আজিজ আখন্দ ও আব্দুল মালেক। একাধিক আপিল শুনানির পর রায়টি উচ্চ আদালত বাতিল করে মৃত আইন হিসেবে রায় দেওয়া চূড়ান্ত ধাপে পৌঁছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি মূলত পার্বত্য বাঙ্গালী তথা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে৷ এই তথাকথিত শাসনবিধি পার্বত্য চট্টগ্রামে রাষ্ট্রের ক্ষমতা খর্ব করেছে এবং দেশের প্রচলিত আইন অকার্যকর করেছে।

গত ৯ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের ফুল বেঞ্চে এই আইনকে মৃত আইন মর্মে ঘোষণা সংক্রান্ত রিভিউ শুনানি শুরু হয়েছে। ফুল বেঞ্চে প্রধান বিচারপতি সহ মোট আট জন বিচারপতি উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে। আগামী ১৬ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার মামলাটির চূড়ান্ত শুনানি হবে বলে জানানো হয়েছে। এই রায়টি চূড়ান্তভাবে বাতিল হলে পাহাড়ের জোরজুলুম ও বৈষম্যের হেডম্যান-কার্বারী ও সার্কেল চীপ প্রথার অবসান হবে। সেসাথে প্রথাগত অধিকারের দোহাই দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের সমগ্র ভূমির মালিকানা দাবিও অবসান হবে। তাই এই রায়টি বলবৎ রাখতে মরিয়া আঞ্চলিকদলসহ হেডম্যান-কার্বারী ও তিন চীপ সার্কেল।

স্থানীয় অধিবাসীরা জানায়, রায়টি বলবৎ করতে আঞ্চলিকদল ইউপিডিএফ পার্বত্য চট্টগ্রাম জুড়ে জনসমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচীর ডাক দেয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর কতুকছড়ি, কাউখালী, লংগদু বাঘাইছড়ি এবং খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি, দীঘিনালা, মাটিরাঙ্গা, মহালছড়ি, রামগড়, গুইমারা ও লক্ষ্মীছড়িতে সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৩ পর্যন্ত জনসমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করে। কর্মসূচী থেকে পার্বত্য দুইটি জেলায় আধাবেলা সড়ক অবরোধের ডাক দেয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনটি।

পালিত জনসমাবেশ কর্মসূচীতে ইউপিডিএফ ও তার সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি হেডম্যান-কার্বারী ও স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী এবং এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন। তবে অংশগ্রহণকারী সাধারণ মানুষ জানিয়েছেন, ইউপিডিএফ তাদেরকে জোরপূর্বক কর্মসূচীতে আসতে বাধ্য করেছে। তারা কর্মসূচীতে না আসলে ইউপিডিএফ তাদেরকে নির্যাতন ও মোটা অংকে জরিমানা করবে। এই ভয় থেকেই তারা অংশগ্রহণ করে।

অদ্যকার আয়োজিত কর্মসূচীতে পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি (রেগুলেশন ১৯০০) বাতিলের ষড়যন্ত্র বন্ধের দাবি জানান ইউপিডিএফ।

খাগড়াছড়ি জনসমাবেশ থেকে আগামী ১৫ মে ২০২৪, বুধবার খাগড়াছড়ি জেলায় আধাবেলা সড়ক অবরোধ ঘোষণা করা হয়েছে।

রাঙ্গামাটি জনসমাবেশে থেকে রেগুলেশন ১৯০০ বাতিলের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আগামী ১৫ মে রাঙামাটি জেলায় অর্ধদিবস সড়ক ও নৌপথ অবরোধের ডাক দেন।

একটি স্বাধীন সার্বভৌমত্ব ও সাংবিধানিক দেশে ব্রিটিশ প্রণীত প্রথাগত শাসনবিধি আধুনিক সভ্যতার যুগে বলবৎ রাখার দাবি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। ইউপিডিএফ প্রসীত, জেএসএস সন্তু এবং চাকমা সার্কেল চীপ ব্যারিষ্টার দেবাশীষসহ বোমাং ও মং সার্কেলের চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং আধিপত্য বিস্তার টিকিয়ে রাখার জন্য মূলত তারা এটি বহাল রাখার দাবিতে সোচ্চার বলে প্রতিয়মান হয়।

আগের পোস্টপার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি ১৯০০ বলবৎ করতে তৎপর হচ্ছে উপজাতিরা।
পরের পোস্টআলোচনার টেবিল থেকে সরে গিয়ে কেএনএফ প্রমাণ করেছে তারা পাহাড়ে শান্তি চায়না।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন