পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি বলবৎ করতে তৎপর কেন আঞ্চলিক দলগুলো?

0
8

ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসকরা পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি ১৯০০ জারি করেছিলেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলকে বিশেষ মর্যাদা দিয়ে ১৯০০ সালের ১ মে থেকে এই শাসনবিধি কার্যকর হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে পার্বত্যাঞ্চলে রাষ্ট্রীয় প্রচলিত আইন অকার্যকর। দেশের সাংবিধানিক বিধিবিধান তোয়াক্কা না করে চলছে এই তথাকথিত শাসনবিধি বা মৃত আইন। এই কারণেই একই দেশে দুইটি আইন বিদ্যমান।

ব্রিটিশ কর্তৃক প্রণীত পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি বা পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন (চিটাগং হিল ট্র্যাক্ট ম্যানুয়েল ১৯০০) কে আইন হিসেবে ২০১৪ ও ২০১৬ সালে পৃথক দুই মামলার রায় দেয় সুপ্রীম কোর্টের পুর্ণ বেঞ্চ। তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, ২০০৩ সালে রাঙামাটি ফুডস প্রোডাক্ট লি. এক মামলায় হাইকোর্ট বেঞ্চ পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি কে ডেট ল বা অকার্যকর আইন বলে রায় দেয়। এ রায়ের ফলে ১৯৯৭ সালের ২-রা ডিসেম্বরের পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির অংশ পার্বত্য জেলা পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদসহ এবং শাসনবিধির সৃষ্ট প্রথাগত প্রতিষ্ঠানসমূহ সংকটের মুখে পড়েছিল।
এ রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করা হলে সুপ্রীমকোর্ট ২০১৬ সালে ২২ নভেম্বর শাসনবিধিকে একটি কার্যকর ও বৈধ আইন বলে রায় দেয়।
অন্যদিকে সুপ্রীম কোর্ট বিচারধীন ওয়াগ্গা ছড়া টি স্টেট অপর এক মামলার ২০১৪ সালে ২ ডিসেম্বর রায় দেয়।
দুটি রায়ই শাসনবিধিকে কার্যকর বলে রায় দেয়।

উপরোক্ত এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে সুপ্রীম কোর্টে রিভিউ করেছেন বাঙ্গালীদের পক্ষে খাগড়াছড়ি জেলার বাসিন্দা আব্দুল আজিজ আখন্দ ও আব্দুল মালেক। একাধিক আপিল শুনানির পর পরবর্তীতে রায়টি উচ্চ আদালত বাতিল করে মৃত আইন হিসেবে রায় দেয়। এই শাসনবিধি মৃত আইন হিসেবে রায়টি পার্বত্য চট্টগ্রামে রাষ্ট্রীয় শক্তিকে মজবুত করে। শাসনবিধি কে আইন হিসেবে বলবৎ করার জন্য আঞ্চলিক দলগুলো সম্প্রতি বিশেষ তৎপর হয়ে উঠেছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে স্থানীয় উপজাতি হেডম্যান-কার্বারী দিয়ে জনসমাগম করার মাধ্যমে রায়টি বলবৎ রাখার প্রচেষ্ঠা করছে।

এদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি চীপ সার্কেল এই নিয়ে তৎপরতা চালাচ্ছে। তাদের নেতৃত্ব রয়েছে চাকমা চীপ সার্কেল ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়।

পার্বত্য বাঙ্গালীরা নেতৃত্বহীন হওয়ার কারণে শাসনবিধির লাভ ক্ষতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নয়। আদালত রায়টি যদি বলবৎ করে এর মারাত্মক প্রভাব পড়বে। এক বাঙ্গালী আরেক বাঙ্গালীর বিরুদ্ধে লেগে থাকে এসব নিয়ে বাঙ্গালীদের মধ্যে দিনদিন হানাহানি, অনৈক্য ও ভেদাভেদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা দিনদিন বাড়ছে সেসাথে বাঙ্গালীর শক্তি হ্রাস পাচ্ছে।

আগামীকাল ১১ জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে আইনটি নিয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

উল্লেখ যে, পার্বত্য শাসনবিধি (১৯০০) এমন একটি মৃত আইন যেটি এ অঞ্চলের সরকার ও বাঙ্গালীদের ভূমি অধিকার খর্ব করে এবং এ অঞ্চলের সেনাবাহিনীর কার্যক্রমের উপর প্রভাব ফেলে। তথাকথিত শাসনবিধির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের সবধরনের ভূমির মালিক উপজাতিরা। এই মৃত আইনের ক্ষমতাবলে হেডম্যান-কার্বারী ও সার্কেল চীপ সৃষ্টি। প্রথাগত ভূমি অধিকার উপজাতীয়দের এ অঞ্চলের সব ভূমির উপর অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে। এই শাসনবিধিকে আইন হিসেবে রায় বলবৎ করলে অচিরেই পার্বত্য চট্টগ্রামের সবধরনের ভূমির নিয়ন্ত্রণ হারাবে রাষ্ট্র এমনটা মনে করেন এখানকার বাঙ্গালীরা।

আগের পোস্টএনজিও কার্যক্রমের আড়ালে পাহাড়ে চলছে বাঙালি ও সেনাবিরোধী কর্মকাণ্ড
পরের পোস্টসর্বক্ষেত্রেই কী চাকমাদের একক প্রাধান্য ও আধিপত্য?

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন