সন্তু লারমাকে দেখা যায়নি কোন ত্রাণ শিবিরে!

0

জুনায়েদ চৌধুরী, পার্বত্য চট্টগ্রাম:

স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় খাগড়াছড়িতে হাজার হাজার পরিবার আশ্রয়হীন হয়েছে। ৪৮ ঘন্টার বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে খাগড়াছড়ির জনজীবন। এই বন্যা পরিস্থিতি মানুষের জনমনে আশঙ্কা তৈরি করেছিল। গত বৃহস্পতিবার (২২ আগষ্ট) ভোর রাত থেকে জেলা জেলা সদরের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে জীবনযাত্রা। স্মরণকালে এমন বন্যা দেখা যায়নি আর।

স্থানীয়রা বলছেন, বন্যায় উপজাতিরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। নদীর কিনারায় ও নিচু এলাকার বসবাসরত উপজাতিরা পানিবন্দী হয়ে আশ্রয় শিবিরে আসেন। এসময় তাদের নানাভাবে সহায়তা প্রদান করেন, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, সেনাবাহিনী, বিজিবি, ছাত্র-ছাত্রী ও জাতীয় রাজনৈতিক দল। কিন্তু একটিবারও খাগড়াছড়ি জেলার ২৮টি আশ্রয় শিবিরে সন্তু লারমাকে দেখা যায়নি। এমনকি কোন ত্রাণ শিবিরে তার দেখা মিলেনি৷ সন্তু লারমার এই স্বার্থপরতা হতভম্ব করে উপজাতি জনগণকে।

জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে (সন্তু লারমা) পাহাড়ে পুরাতন আঞ্চলিক দল পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সংহতি সমিতি বা জেএসএস এর সভাপতি এবং তিনি আবার একাধারে দীর্ঘ ২৪ বছর পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে উপমন্ত্রী পদমর্যাদা ভোগকারী ব্যক্তি। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের ভিন্ন ভাষাভাষী উপজাতি জনগণের নেতা পরিচয় বহন করে ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি’ নামক একটি চুক্তিতে উপনীত হন। একজন অবিসংবাদিত নেতার মত ভূমিকা হওয়ার কথা তার কিন্তু তিনি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত উপজাতিদের জন্য ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা তো দূরের কথা এই নিয়ে তার দল জেএসএসের ভূমিকা নিয়েও যথেষ্ট প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। জাতির ক্লান্তিময় সময়ে দায়সারাভাবে একটা বিবৃতি দিতেও দেখা যায়নি! কতটা অমানবিক হলে এমন নীরবতার পথ বেছে নেন তা বোধগম্য নয়। স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় খাগড়াছড়িতে হাজার হাজার উপজাতিরা ঘরবাড়ি ত্যাগ করে আশ্রয় আর খাবারের সন্ধানে ছুটছিলেন তখনও সন্তু লারমার বোধশক্তি উদয় হয়নি! খাবারের জন্য অগ্নি চোখে তাকিয়ে থাকা উপজাতি মানুষগুলো আগে সন্তু লারমাকে ভালো করে চিনতে না পারলে এবারের বন্যায় নতুন করে চিনতে পেরেছেন।

খবংপুড়িয়া এলাকার সুপ্তি চাকমা বলেন, ‘কয়েক দিন আগেও আমাদের বাড়িতে পানি উঠেছিল। গত মঙ্গলবারেও পানি উঠেছে। এখন পর্যন্ত বাড়ি হাঁটুপানির নিচে। ভোরের দিকে হঠাৎ ঢল নেমে আসায় কোনো কিছুই রক্ষা করতে পারিনি। খাবার থেকে জিনিসপত্র সব পানির নিচে। এ বছর তিনবার বন্যাকবলিত হলাম। কোনোবারই কোনো ত্রাণ পেলাম না। এমনকি কেউ খোঁজও করেনি।’

এই থেকে প্রতিয়মান সন্তু লারমা তথা জেএসএস উপজাতি জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলনের নামে চুক্তির একক সুবিধাভোগী। পার্বত্য চুক্তির সুবিধাভোগী সন্তু লারমা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক। আরো আছে তার জেএসএসের চাঁদাবাজির হাজার কোটি টাকা। এত হাজার কোটি টাকা দিয়ে কী হবে? যদি মানবিক মূল্যবোধ না থাকে? জাতির ক্লান্তিময় সময়ে সন্তু লারমা মত বড় নেতার হাতে ত্রাণের ছিঁটেফোঁটা দেখা যায়নি! এই সন্তু লারমাকে মানুষের কাতারে আসতে কখন দেখা যাবে? সন্তু জীবনের বেশিরভাগ সময় লাশের রাজনৈতিক করেছেন সেখানে তার থেকে জাতিসত্তার মানুষগুলো কিছু আশা করা বোকামি ছাড়া কিছু নয়। পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি বা বাঙালি উভয় সম্প্রদায়ের নিরস্ত্র হাজার আবাল বৃদ্ধ-বনিতা সকলেই নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হয়েছে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএসের হাতে। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের নেতৃত্বদাতা সন্তু লারমার হাতে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বেমানান বলে তাকে কোন ত্রাণ শিবিরে দেখা যায়নি।

আজকে পাহাড়ে সন্তু লারমা একজন স্বার্থপর নেতা হিসেবে বিবেচিত হবে। তার এই স্বার্থপরতা ও জেএসএস উৎপীড়ন উপজাতি জনগণকে ভবিষ্যতে সন্তু লারমাকে নিয়ে নতুন করে ভাবতে শেখাবে।

আগের পোস্টভয়াবহ বন্যায় স্বজাতির পাশে নেই কোন আঞ্চলিক নেতা।
পরের পোস্টবন্যায় উপজাতিদের পাশে কেবলই সেনাবাহিনী।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন