সাজেক ভ্রমণে দুঃস্বপ্ন যাত্রা।

0

আমি মোহাম্মদ ইমরুল কায়েস। আমার দেশের বাড়ি ফরিদপুর। বর্তমানে আমি একটি কর্পোরেট কোম্পানিতে চাকরি করি৷ ১৭ ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে আমি পরিবারসহ সাজেকে ঘুরতে যাই। সাজেক ভ্যালি ঘোরাঘুরি শেষে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেই। ইতোমধ্যেই খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটির অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে সাজেকে থমথমে ভাব বিরাজমান। পরবর্তীতে পাহাড়ি বিক্ষুব্ধ ছাত্র জনতার ৩ দিনের হরতালে সাজেকে ঘুরতে আসা ১৪০০ জন পর্যটক আটকা পড়ি। ঘুরতে আসা পর্যটকদের সাথে পাহাড়ি উপজাতিদের এমন নৃশংস আচরণ আমি কোনদিন কল্পনাই করি নাই। হরতালে আটকে পড়া পর্যটকদেরকে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা বিভিন্নভাবে ভয় ভীতি, অত্যাচার, প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে যা স্বাধীন দেশে পাহাড়ি সন্ত্রাসবাদের বহিঃপ্রকাশ।

এমন পরিস্থিতিতে পরিবারসহ কোথায় থাকবো কি করব কিছুই ভেবে কুল পাচ্ছিলাম না। হরতালে পরিবারসহ মানবেতর জীবনযাপন করতে ছিলাম। অপরদিকে ঘুরতে আসা বাঙ্গালীদের সাথে পাহাড়িদের এমন আচরণে আমি দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম। এমনকি ফেরত আসার সময়ও পাহাড়ি সন্ত্রাসী কর্তৃক তিনজন পর্যটককে অপহরণ করে তাদের পরিবার নিকট থেকে ৫০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা। এতে করে আমি আমার পরিবার আরো দিশেহারা হয়ে পড়ি। না জানি আমাদের সাথে কি হয়, সবাই তখন মহান আল্লাহর নিকট দোয়া করতে ছিলাম।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সাজেক থাকাকালীন পর্যটকদেরকে নিরাপত্তা প্রদান, নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরিত করে থাকা-খাওয়া ও পানির ব্যবস্থা সহ পরবর্তীতে নিরাপদে আমাদেরকে সমতলে পৌঁছে দেয়। এতে আমার পরিবারের সবাই অনেকটা নিরাপত্তাবোধ করি।

 

সাজেকে ঘুরতে আসা পর্যটকদের বিপদকালীন সময়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যে সকল ধরনের সহায়তা প্রদান করেছে তা সত্যিই সেনাবাহিনীর প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও ভক্তি আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে। ইতিপূর্বে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের নিশংস আচরণ এর গল্প ফেইসবুক এ পড়েছি, কিন্তু কখনো বিশ্বাস হয়নি। বাঙ্গালীদের প্রতি পাহাড়িদের যে একটা বিরূপ মনোভাব তা আমি এবার স্বচক্ষে দেখেছি। তবে এর মূলে রয়েছে পাহাড়ি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো। এমনকি সাধারন পাহাড়িরাও তাদের ভয়ে আতঙ্কে থাকে। সাজেক থাকাকালীন বেশকিছু পাহাড়িদের সাথেও দেখা হয়েছে, তাদের সাহায্য আমরা চেয়েছি কিন্তু সন্ত্রাসী দল গুলোর ভয়ে তারাও নিরুপায় বলে আমাদের জানিয়েছেন। পার্বত্য অঞ্চলে শুধুমাত্র সেনাবাহিনী আছে বলেই ভ্রমন বিপাসু মানুষ কখনো বুঝতেই পারেনা যে পাহাড় বাঙ্গালী পর্যটকদের জন্য কতটা ভয়ঙ্কর। আমি আন্তরিকভাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কে অনেক ধন্যবাদ জানাই। পরিশেষে, আমি এবং আমার পরিবারের জন্য সবাই দোয়া করবেন। আর সম্ভব হলে চলমান পরিস্থিতিতে পাহাড়ে ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকুন।

আগের পোস্টপার্বত্য চট্টগ্রামের সাজেক ভ্যালিতে ভ্রমণ এসে নতুন অভিজ্ঞতার শিকার হলাম।
পরের পোস্টসাজেকের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন