অপূর্ব সাচিং হিল নিউজ বিডি: বাংলাদেশের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন যখন বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব, তখন পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যতম আঞ্চলিক সন্ত্রাসী সংগঠন জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) ছিল সম্পূর্ণ নীরব। এই নীরবতা অনেকের মধ্যে বিস্ময় ও কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে। সাধারণত পার্বত্য অঞ্চলের অধিকার নিয়ে সংগ্রামী এই সংগঠন বৈষম্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কেন কোনো বক্তব্য দেয়নি বা সক্রিয় ভূমিকা পালন করেনি, তা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে।
জেএসএস-এর নীরবতার কারণসমূহ
জেএসএস-এর এই নীরবতার পেছনে বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে। প্রথমত, জেএসএস বরাবরই পার্বত্য অঞ্চলের স্বায়ত্তশাসন ও উপজাতি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জনগোষ্ঠীর অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে , এটিকে মূলত আঞ্চলিক ইস্যু তৈরি করে বিভিন্ন স্থানেবিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মাধ্যমে নিজেদের স্বার্থ হাছিল করছে। তাদের নীতি সাধারণত আঞ্চলিক বিষয়গুলোতেই সীমাবদ্ধ, ফলে জাতীয় পর্যায়ে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে তারা দূরত্ব বজায় রেখেছে। এবং তারা নিজেদের ৭১ এর রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রের মধ্যে থেকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল।
দ্বিতীয়ত, জেএসএস পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের জন্য সরকারের সাথে আলোচনায় রয়েছে, এবং জাতীয় আন্দোলনে অংশগ্রহণ করলে তা এই আলোচনায় প্রভাব ফেলতে পারে বলে তাদের আশঙ্কা থাকতে পারে। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে সরাসরি অংশগ্রহণ করলে সরকারের সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটতে পারে, যা পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বার্থের বিপরীত হবে বলে তারা ধারণা করে। ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত না হয়ে তারা আওয়ামী দোসর হিসেবে সবার কাছে ঘৃণিত হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
তৃতীয়ত, জেএসএস-এর বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হলে আওয়ামী লীগের বিরোধিতা হবে তাই তারা এতে অংশ গ্রহণ করেনি। যাতে পরবর্তীতে তারা বিতর্কিত বিষয়াদি আওয়ামী লীগের থেকে সুবিধা নিতে পারে।
ছাত্রসমাজের প্রতিক্রিয়া
জেএসএস-এর নীরবতা ছাত্রসমাজে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। অনেক তরুণ মনে করেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তারা একটি নৈতিক ভূমিকা পালন করতে পারত, যা তাদের আঞ্চলিক দাবির বাইরে গিয়ে জাতীয় ইস্যুতেও ভূমিকা রাখতে সহায়ক হত। অন্যদিকে, অনেকে মনে করেন, জেএসএস এর সম্পৃক্ততা হলে তাদের ভাগে অন্য কেহ ভাগ বসাবে। এবং আওয়ামী লীগের অপরাধ মতো তাদের অপরাধ ও কম নেই। সেগুলো এখন দিনদিন প্রকাশ পাবে।
জেএসএস-এর ভবিষ্যৎ অবস্থান
জেএসএস-এর এই নীরবতা তাদের ভবিষ্যৎ অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তারা কি জাতীয় পর্যায়ে বৈষম্য বিরোধী ইস্যুতে সোচ্চার হয়ে ভূমিকা রাখতে আগ্রহী, নাকি নিজেদের আঞ্চলিক সীমারেখায় রেখে তারা নিজেদের অপরাধ জগৎ কে আরো তরান্বিত করবে? জাতীয় পর্যায়ে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করলে সংগঠনটি পার্বত্য চট্টগ্রামের তাদের স্বচ্ছতা জানান দিতে পরতো। তারা তা করেনি কারণ তাদের অপরাধ সম্পর্কে সারাদেশের জনগণ জেনে যাবে তাই। তবে, শুধুমাত্র আঞ্চলিক ইস্যুতে কেন্দ্রীভূত থেকে তারা নিজেদের অপরাধ জগৎ যে পরিমাণ নীতি নৈতিকতা হারাচ্ছে অতিস্বত্তর পার্বত্য চট্টগ্রামের জনসাধারণ তাদের প্রতিহত করবে।
উপসংহার
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় জেএসএস-এর নীরব থাকা তাদের অবস্থানকে ঘিরে প্রশ্ন তৈরি করেছে। আঞ্চলিক ইস্যুগুলোর পাশাপাশি জাতীয় ইস্যুগুলোতেও অংশগ্রহণ করে তাদের স্বচ্ছতা জানান দিতে পারে। তারা যে সন্ত্রাসী নয় তার প্রমাণ হবে সর্ব ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের কল্যাণমূলক বিষয়ে ঐক্যমত পোষণ করা।