পার্বত্য বাঙ্গালীরা রোহিঙ্গাদের মত ভাগ্য বরণ করতে হবে!!

0
40

||হান্নান সরকার||

পার্বত্য চুক্তির অসাংবিধানিক ধারা ও ভূমি কমিশনের তথাকথিত আইন সংশোধন না হলে পার্বত্য বাঙ্গালীদের রোহিঙ্গাদের মত ভাগ্য বরণ করতে হবে। কথাটি বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে বললেও অনেকের কাছে হাসির খোরাক!

পার্বত্য বাঙ্গালীরা উদাসীন, নিজেদের অধিকার সম্পর্কে যেমন সচেতন নয় তেমনি পার্বত্য চুক্তির অসাংবিধানিক ধারা ও ভূমি কমিশনের তথাকথিত আইন সম্পর্কেও সচেতন নয়! এ কথাগুলো এ ভেবে বলছি যে, বিগত বছরগুলোতে বাঙ্গালীদের ঐক্যবদ্ধ গণজাগরণ উপলব্ধি হয়নি। উপজাতীয় জনগোষ্ঠী শত সুযোগ-সুবিধা পাওয়ান পরেও নিজেদের অধিকার নিয়ে যথেষ্ট সচেতন, সেভাবে পার্বত্য বাঙ্গালীরা সচেতন নয়। অধিকাংশ পার্বত্য বাঙ্গালী জানে না পার্বত্য চুক্তিতে ‘রাষ্ট্র ও নিজেদের জন্য ক্ষতিকর দিক কি রয়েছে?’ কি রয়েছে বিতর্কিত পার্বত্য ভূমি কমিশনের তথাকথিত আইনে তাও জানে না! এ উদাসীনতায় একসময় পার্বত্য চট্টগ্রাম হতে বিতাড়িত হতে হবে বাঙ্গালীদের। মায়ানমারের রোহিঙ্গারা রাখাইন হতে বিতাড়িত হয়েছে। বাংলাদেশের সহানুভূতি আচরণে তারা এদেশে আশ্রয় পেয়েছে৷ হতভাগা পার্বত্য বাঙ্গালীরা কোথাও আশ্রয় পাবেনা। তবে বেশি গভীরে না গিয়ে খুব সহজেই এটা বলা যায়, এদেশের পার্বত্য বাঙ্গালীরা খুব সন্নিকটে রোহিঙ্গাদের মত ভাগ্য বরণ করবে৷

আত্মস্বীকৃত রাজাকার ত্রিদিব রায়ের কুখ্যাত পুত্র দেবাশীষ রায় ও তাঁর পত্নী ইয়ের ইয়েন রাখাইনও জেএসএস-ইউপিডিএফ বিচ্ছিন্নতাবাদী সঙ্গে সুর মিলিয়ে দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীদের সঙ্গে আতাত করে পার্বত্য হতে বাঙ্গালী বিতাড়িত করতে গভীর ছক কষে আছে।
বলা বাহুল্য যে, পার্বত্য চুক্তিতে অবৈধ অস্ত্র আত্মসমর্পণ করার কথা থাকলেও চুক্তির ২২ বছর পরেও তারা এখনো অবৈধ অস্ত্র পরিহার করেনি! দুঃখজনক যে, রাষ্ট্রীয় সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একেরপর এক অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সমূহ। এদেরই অপতৎপরতার সাথে শামিল হয়েছে এদেশীয় ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী ও কতিপয় পার্বত্য বাঙ্গালী!

পার্বত্য চুক্তির শর্ত মোতাবেক ২৩৯ টি সেনা ক্যাম্প পার্বত্য হতে প্রত্যাহার করার ফলে এ অঞ্চলের নিরাপত্তা ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে চুক্তির মৌলিক শর্ত লংঘন করে সরকারের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরকারী জেএসএস এখনো অবৈধ অস্ত্র নিয়ে সক্রিয় রয়েছে। জেএসএস ভেঙে একাধিক সশস্ত্র উপদল সৃষ্টি হয়েছে। এরা সকলকেই লেবাসধারী, জাতির অধিকারের নিশ্চয়তার দোহাই দিয়ে স্বজাতি ও বাঙ্গালীদের থেকে চাঁদা উত্তোলন করে আসছে। প্রতিবেশী রাষ্ট্র হতে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নেয়া, এবং অস্ত্র সংগ্রহের মাধ্যমে বাংলাদেশ হতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিচ্ছিন্ন করতে উঠে পড়ে লেগেছে। তাদের এ দুঃসাহসিক কাজের সুযোগ সৃষ্টির পেছনের কারণ, পার্বত্য হতে সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার করার চরম ফল। সেনাদের অনুপস্থিতি উপজাতি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো লাগামহীনভাবে নির্ভয়ে সাংগঠনিক তৎপরতা পরিচালনার করছে৷ তাঁর পাশাপাশি এ অঞ্চল নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র করে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত নিশ্চিতকরণ, এবং বাঙ্গালীদের বিতাড়িত করে পার্বত্য চট্টগ্রামকে ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব তিমুরের মত আলাদা রাষ্ট্র গঠন করার পাঁয়তারা করছে। সরকারের উচিত রাষ্ট্রের অখন্ডতার স্বার্থেও এ অঞ্চলে সাধারণ উপজাতি বাঙালিদের নিরাপত্তার তাগিদে সেনাবাহিনীর ক্যাম্প পুনঃস্থাপন করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সরকার যদি যথা সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ না করে ভবিষ্যতে এ অঞ্চল নিয়ে সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।

জাতি ধর্ম নির্বিশেষে পার্বত্য চট্টগ্রাম রক্ষার্থে এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর দমনে সকলেরই দাবি এক হওয়া উচিত যে, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাক্যাম্প পুনঃস্থাপন করা।’

পার্বত্য বাঙ্গালীদের উদাসীনতার মনোভাব ও দালালী, চোগলখোরি স্বভাব বাদ দিয়ে একাট্টা হয়ে চুক্তির অসাংবিধানিক ধারা ও পার্বত্য ভূমি কমিশনের তথাকথিত আইনের বিরুদ্ধে গণজাগরণ সৃষ্টি করতে হবে। আর যদি এ গণজাগরণ সৃষ্টি করতে ব্যর্থতার পরিচয় বহন করে তাহলেই ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে
পার্বত্য চুক্তির অসাংবিধানিক ধারা ও ভূমি কমিশনের তথাকথিত আইনের মারপ্যাচে পড়ে রোহিঙ্গাদের মত ভাগ্য বরণ করতে হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here