দাসত্বের শিকলে বন্দী উপজাতি নারীরা!!

0
44

||তাপস কুমার পাল||

বিশ্বায়নের এই যুগেও পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি নারীরা আদিম সমাজের সেই নিষ্ঠুর বর্বরোচিত সাংস্কৃতির যাঁতাকল থেকে মুক্ত হতে পারেনি।ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে পারিবারিক, সামাজিক এবং ধর্মীয় জীবনে উপজাতি মেয়েদের স্বাধীনতার প্রশ্ন সম্পূর্ণ দিবাস্বপ্ন ছাড়া কিছুই না।
উপজাতি একটি মেয়ে কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ের মত সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে অধ্যয়নকালে তার স্বাধীনতা বন্দী থাকে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সমর্থিত পিসিপি’র হাতে।
উপজাতি শিক্ষার্থী একজন মেয়ে কলেজে কার সাথে কথা বলবে, কার সাথে চলবে এবং কোথায় সে অবস্থান করবে তা সম্পূর্ণ নির্ধারণ করে দিবে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ তথা পিসিপির নেতা কর্মীরা।
পিসিপি’র নির্দেশের বাহিরে গিয়ে একজন উপজাতি মেয়ে শিক্ষার্থী নিজ পছন্দ অনুযায়ী যদি চলাফেরা এবং বন্ধুদের সাথে মেশার চেষ্টা করে থাকে তাহলে পাছার নেতা কর্মীরা মেয়েটিকে গুম-খুন অথবা চারিত্রিক বিষয়ে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে জীবনে বড় ধরনের একটি কলঙ্ক রটিয়ে দেয়।

উপজাতি মেয়েরা সব থেকে যেই বিষয়ে হায়রানির স্বীকার হয় তা হল যৌন নির্যাতনের।
উপজাতি বিভিন্ন সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্যরা সন্ত্রাসী কাজ অব্যাহত রাখতে বিয়ে করা থেকে বিরত থাকে। সেই অবিবাহিত উপজাতি সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্যরা তাদের স্বজাতি সুন্দরী মেয়েদের যৌনকর্মী হিসেবে ব্যবহার করে। কোন মেয়ে যদি যৌন কাজে সন্ত্রাসীদের ডাকে সাড়া না দেয় তাহলে মেয়েটি সহ তার পরিবারের সকলকে হত্যা কিংবা বিভিন্ন অপবাদ দিয়ে সমাজ থেকে আলাদা করে দেয়। যেটা রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজের ছাত্রী মিতালি চাকমার বেলায় ঘটেছিল। মিতালি চাকমাকে স্বজাতি সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যুক্ত না হওয়ার কারণে তাকে অপহরণ করে টানা ৩ মাস গণধর্ষণ করে রক্তাক্ত করে সন্ত্রাসীরা। মিতালি চাকমা নিজেই সাংবাদিক সম্মেলন করে খাগড়াছড়িতে তাকে ধর্ষণের বিষয়টি তুলে ধরে বিচার দাবি করেন। উপজাতি নারীরা যে, দাসত্বের শিকলে বন্দী সেটা মিতালি চাকমার ঘটনাটি তার জলন্ত প্রমাণ।

ধর্মীয় ভাবেও উপজাতি মেয়েরা অসহায়ত্বের চরম যাঁতাকলে পিষ্ট। কোন মেয়ে যদি ধর্ষিত হয় তাহলে একটি শুকর দিয়ে তার মিমাংসা করিয়ে দেয়া হয়।

মানব জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং আনন্দের বিষয় হল বিয়ে। আর উপজাতি মেয়েদের জন্য বিয়ে এক মহা আতঙ্কের নাম। উপজাতি যেই মেয়েটি বাবার বাড়িতে এতদিন রাণীর মত বড় হয়েছে সেই মেয়েটিকে বিয়ের পর সহ্য করতে হয় মহাযন্ত্রনা।

আন্তঃসত্তা একটি উপজাতি নববধু পারিবারিক সকল কাজ সমাপ্ত করার পর উপার্জনের জন্য জুম চাষ করতে এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে ছুটাছুটি করতে হয়। আর স্বামী মদ খেয়ে মাতাল হয়ে বউ পিটাবে কিংবা পাহাড়ে পাহাড়ে বানর অথবা কাঠবিড়ালি ধরার জন্য ছুটাছুটি করবে।
সামাজিক অবিচার এবং নির্যাতনের কবল থেকে মুক্তি পেতে উপজাতি মেয়েদেরকে আমরা দেখতে পাই বাঙালি ছেলেরদেরকে বিয়ে করার জন্য অনেকটা ব্যাকুল।
পরিতাপের বিষয় হচ্ছে তথাকথিত নারীবাদীরা উপজাতি নারীদের এরুপ অসহায়ত্বের জীবন যাপন নিয়ে কোন টু-শব্দও করেনা।
উপজাতিদের মধ্যে সন্ত্রাসীরা নিয়ম বেধে দিয়েছে সামাজিক বা পারিবারিক কোন বিষয়ে প্রশাসনের কাছে বিচার দেয়া বা মামলা করা যাবে না।
তাই উপজাতি মেয়েরা স্বজাতি পরুষ দ্বারা আক্রমনের স্বীকার হলেও প্রশাসনের কাছে জানাতে পারে না। ফলে ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়।

স্বজাতি কর্তৃক উপজাতি মেয়েদের নির্যাতনের বিষয়ে সকলকে সোচ্চার হওয়া জরুরী।
উপজাতি মেয়েদেরও উচিত সকল বাধাবিপত্তিকে উপেক্ষা করে স্বজাতি কর্তৃক নির্যাতনের করুণ পরিস্থিতি জাতীর সামনে উপস্থাপন করা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here