চবি ছাত্রী ডালিয়া চাকমা সন্ত্রাসী কর্তৃক অপহৃত হননি!!

0
161

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের ২০১১-১২ সেশনের শিক্ষার্থী ডালিয়া চাকমা অপহৃত হননি বলে জানিয়েছেন তার স্বামী জিসান।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাত থেকে সামজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ে যে, ডালিয়া চাকমাকে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা অপহরণ করে নিয়ে গেছে। ঘটনার জন্য কেউ কেউ পাহাড়ি সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টকেও (ইউপিডিএফ) দায়ী করে বসেন।

এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা মধ্যে শুক্রবার সন্ধ্যায় ডালিয়ার স্বামী জিসান জানান, ডালিয়া চাকমা অপহৃত হননি।

তিনি বলেন, সাত বছর আগে আমরা বিয়ে করেছি। ডালিয়ার পরিবার এ বিয়ে মেনে না নিলেও আমার পরিবারের আপত্তি ছিল না। চাকরির প্রয়োজনে আমি ঢাকায় থাকি। ডালিয়া থাকেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। চাকরির কারণে ঢাকায় থাকায় ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছিল। এজন্য আমি চট্টগ্রামে চলে আসার চেষ্টা করছি।

‘স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তো কথা কাটাকাটি হতেই পারে। গত পরশুদিন ফোনে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছে। এরপর খাগড়াছড়িতে আমার বাড়িতে যাওয়ার জন্য বাসে উঠেছিলেন বলে জানান ডালিয়া। আমার সাথে শেষ কথা হয়েছে তখন বলেছে, আলুটিলায় আছে। আবার বাবার সাথে কথা বলার সময় বলেছে, মাটিরাঙ্গায় আছে। এরপর থেকে তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না।’

জিসান বলেন, অনেকে জানতে চেয়েছে, অপহরণ হয়েছে কিনা। আমি বলেছি, সেটা জানি না, তবে নিখোঁজ। এখন বিষয়টা নিয়ে এত বিশ্রী অবস্থা করে ফেলেছে মানুষ, আমার স্ত্রী এখন আমাকে দোষ দিচ্ছে। এত বেশী রাগান্বিত সে এখন আমার উপর, কথা বলতেও চাচ্ছে না। সে বলছে, আমিই সবাইকে এসব জানিয়েছি।

‘ফোনে একটু কথা কাটাকাটি থেকে যে এত বড় ঘটনা। আমি আর টেনশন নিতে পারছি না।’ বলতেই গলা ধরে আসে জিসানের।

এর আগে শুক্রবার সকাল থেকে ডালিয়ার ছবি পোস্ট করে পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইংরেজী বিভাগের প্রভাষক আসমা ইয়াসমিন সোমা সহ অনেকেই একটি স্ট্যাটাস দেন; যাতে লেখা ছিল, সন্ধান চাই চবির ইংরেজি বিভাগের ছাত্রী ডালিয়ার।

আমার ডিপার্টমেন্টের সহপাঠি চবি ইংরেজি বিভাগের ১১-১২ সেশনের শিক্ষার্থী, ডালিয়া চাকমাকে গতকাল রাতে (১১ এপ্রিল) খাগড়াছড়ি বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা পথে বাস থেকে রাত ৮.৩০ মিনিটে, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কে বা কারা অপহরণ করেছে।

এখনো পর্যন্ত তার সন্ধান মেলেনি। লাস্ট কলে যখন সে তার বাবার সাথে কথা বলে তখন মাটিরাঙ্গায় ছিলো,,,বাবাকে জানিয়ে ছিলো যে বাসের লোকগুলোকে ভালো মনে হচ্ছে না।

এরপর থেকে নাম্বার অফ।থানায় জিডিও নিচ্ছে না।এমনকি অপহরণকারীরা কোন দাবি দাওয়া চেয়ে অপহরণের স্বীকারোক্তিও দেয়নি।

তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে জানা যায়, প্রশাসনও নাকি তাদের জিডি গ্রহণ করেনি এবং এর যৌক্তিক কারণ‌ও জানায়নি। ডালিয়া চাকমা… তোকে হারাতে চাই না।’

তবে কয়েক ঘন্টা পর প্রভাষক আসমা ইয়াসমিন সোমার ফেইসবুক আইডিতে গিয়ে সেই স্ট্যাটাসটি আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এদিকে শুক্রবার বিকেলে খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান বলেন, ডালিয়া চাকমাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে যে অভিযোগটা তোলা হয়েছিল সেটা বানোয়াট, ডাহা মিথ্যা কথা।

প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা জেনেছি, রাত ৮টায় ডালিয়া মাটিরাঙ্গায় ছিল বললেও সে প্রকৃতপক্ষে ওই সময় চট্টগ্রামেই ছিল।

ইউপিডিএফ সমর্থক ও বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য রোনেল চাকমা বলেন, ডালিয়া চাকমা গোপা নামের তার বান্ধবীকে ম্যাসেজ দিয়েছে যে, সে ভালো আছে। সে পারিবারিক কিছু ঝামেলার কারণে আত্মগোপনে গেছে। তার স্বামী যেন টেনশন না করে।

‘এখন বিষয়টা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির অপচেষ্টা করা হচ্ছে। এটা তো ভালো লক্ষণ না। আমি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’

রোনেল চাকমা বলেন, ডালিয়া চাকমা তার বান্ধবীদের ম্যাসেজ না দিলে ক্যাম্পাসে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়ে যেত মনে হচ্ছে। এসব বিষয়ে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান রোনেল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here