চাঁদাবাজি ও অপহরণ বাণিজ্য টিকিয়ে রাখতে ইউপিডিএফ সেনা ক্যাম্প স্থাপনের বিরোধিতা করছে।

0

ইউপিডিএফ সন্ত্রাসী কর্তৃক পরিচালিত নিবন্ধন বিহীন তথাকথিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল Chtnews এ সেনা ক্যাম্প স্থাপন নিয়ে যে, প্রোপাগান্ডা মূলক সংবাদটি প্রকাশ করেছে, তার বিষয়ে সর্তক থাকার জন্য পাঠকদের উদ্দেশ্যে কিছু বিষয় স্পষ্ট করা উচিত৷ তারজন্যেই প্রতিবেদন আকারে লেখাটি তুলে ধরলাম।

ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের অভিযোগ, রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাট ইউনিয়নের কাঠালতলী মৌজাধীন নামেঅং (জাল্যা পাড়া) নামক স্থানে এক ব্যক্তির জায়গা দখল করে নতুন একটি সেনা ক্যাম্প স্থাপন করা হচ্ছে!

যে জায়গায় ক্যাম্পটি স্থাপন করা হচ্ছে সে জায়গাটির মালিকের নাম জ্যোতিলাল চাকমা (৭৫), পিতা-মৃত সুরেশ চন্দ্র চাকমা। সেখানে তার ২ একর বন্দোবস্তিসহ মোট ৭ একর পরিমাণ জায়গা রয়েছে!

গত বুধবার (২০ জানুয়ারি ২০২১) থেকে নান্যাচর জোন ও বুড়িঘাট ক্যাম্পের একদল সেনা সদস্য ক্যাম্পটি স্থাপনের কাজ শুরু করেছে!

এমনই মিথ্যা এ বানোয়াট অভিযোগ ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের।

ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীরা যে অভিযোগ করেছে, এ অভিযোগের বিন্দুমাত্র সত্যতা নেই৷ পাঠকমহল স্থানীয় জনসাধারণ থেকে খোঁজ নিলে জানতে পারবেন সন্ত্রাসীদের এ মিথ্যাচারের মূল কারণ সম্পর্কে। আমার লেখাটি ধৈর্য সহকারে শেষপর্যন্ত পড়লে প্রকৃত বাস্তব চিত্রও জানতে পারবেন, আসলে সেখানে কারোই ভূমি দখল করে সেনা ক্যাম্প স্থাপন করা হচ্ছে কিনা বা কি কারণে ক্যাম্প হচ্ছে, সে বিষয়ে বিশদভাবে উল্লেখ থাকছে প্রতিবেদনে।

রাঙামাটি নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান এড. শক্তিমান চাকমা সহ ৬ হত্যাকান্ডের পর সবাই নানিয়ারচরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। বলেছিলেন, যদি পর্যাপ্ত সেনা ক্যাম্প ও নিরাপত্তাবাহিনী নানিয়ারচর থাকতো তাহলে শক্তিমান সহ কাউকে এভাবে ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের হাতে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হতো না।

খোদ উপজাতিরা নিজেরাই তখন পাহাড়ে সেনা ক্যাম্প এবং সেনাবাহিনীর মাধ্যমে এ অঞ্চলে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে মানুষের জানমাল হেফাজত করা সহ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযানের জন্য অনুরোধ করেছিলেন। শুধু শক্তিমান চাকমা নয়, বিগত বছর গুলোতে শতাধিকের উপর সাধারণ মানুষকে ইউপিডিএফ প্রসিত চাঁদা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে অপহরণ করে হত্যা করে। নানিয়ারচর উপজেলার মানুষ যারা তারাই ভালো জানেন, ‘সেখানে সন্ত্রাসীরা কতটা বেপরোয়া।’ ইউপিডিএফ নানিয়ারচর কতটা মানুষকে নির্ঘুমে রেখেছে সে বিষয়টি উক্ত জনপদের মানুষের জানা। পার্বত্যকে দেশ থেকে ভাগের ষড়যন্ত্রও নানিয়ারচর হতে ইউপিডিএফ করে থাকে। মানুষের নিরাপত্তার জন্য সরকার নানিয়ারচর (সাময়িক-অস্থায়ী) সেনা ক্যাম্প স্থাপন করার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তারই অংশ হিসেবে সেনারা একটি ক্যাম্প স্থাপনের জন্য ভূমি লিজ নেন স্থানীয় উপজাতীয় লোক থেকে। তৃতীয় শ্রেণীর অনাবাদি ভূমি। যেটাতে চাষাবাদ করার মতো উপযুক্ত নয়। প্রথাগত নিয়মে দাবিকৃত ভূমির মালিকও স্বেচ্ছায় সেনাবাহিনীকে ভূমি দেন ক্যাম্প স্থাপনের জন্য৷ কারণ: তার এই ভূমিতে কোনো চাষাবাদ হয়না। ভূমির মালিক অনেক খুশি, অনাবাদি জমি লিজ দেওয়ার কারণে অন্ততপক্ষে কিছু অর্থ তিনি পাবেন বৃদ্ধ বয়সে। ভূমি হচ্ছে সম্পূর্ণ জঙ্গল ও অনাবাদি এবং ভবিষ্যতে এখানে চাষাবাদ করা অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। তাছাড়া এসব জঙ্গলে সন্ত্রাসীরা আশ্রয়ে থাকে। উপজাতি মানুষদের হতে মোটা অংকের চাঁদা না পেয়ে অপহরণ করে এ গভীর জঙ্গলে নিয়ে আসেন সন্ত্রাসীরা, এখানে নিয়ে এসে হত্যা করেন। এখানকার মানুষের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সেনারা এ গভীর জঙ্গল পরিষ্কার করে সেনা ক্যাম্প স্থাপনের কাজ শুরু করছে।

নানিয়ারচর উপজেলার মূল বাজারটি ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের হুমকির কারণেই সে ২০১৮ সাল হতে বন্ধ রয়েছে৷ স্থানীয় উপজাতি বাঙ্গালী জীবনের নিত্য দিনের প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র কেনাবেচা করতে পারেন না! খোঁজ নিলে পাঠকমহল জানতে পারবেন সেখানকার বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে।

সংযুক্ত করা ছবি গুলো পাঠকগণ দেখলে বুঝতে পারবেন, সত্য কোনটা আর মিথ্যা কোনটা। ছবিতে স্পষ্ট ভাবে দেখা যাচ্ছে ভূমির মালিকের সঙ্গে সেনাবাহিনীর চুক্তি স্বাক্ষরের পর্ব এবং চুক্তিপত্র আদান-প্রদানের মূহুর্ত। শেয়ারকৃত ছবিতে উপজাতীয় ছোট শিশুর সঙ্গে সেনাবাহিনীর এ গভীর মিতালী থেকে স্পষ্ট যে, সেনাবাহিনী কতটা মানবতাবাদী। শীতের সকালে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে কনকনে ঠান্ডা, এ ঠান্ডা হতে রক্ষার জন্য ছোট শিশুদেরকে শীতবস্ত্র তুলে দিয়েছেন সেনাবাহিনী। সুসম্পর্ক- মিতালী যেটা আমরা এদেশের পাহাড়ে দেখি তা বিশ্বের অন্য কোথায় তেমন দেখা যায় না। সেনাদের এমন উদারতা আমরা প্রায়ই সময় পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রত্যক্ষ করি। এখানে উপজাতি প্রসূতি নারী, গরীব অসহায় উপজাতিদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করা ও ঘর বানিয়ে দেওয়া সহ অসংখ্য মানবতার কাজে সেনাবাহিনীকে দেখা যায়। সেনারা নিজেদের বেতনের অর্ধেক টাকা হতদরিদ্র উপজাতি জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করে থাকে। এর ফলে সাধারণ উপজাতিরা সেনাদের…

কাজের জন্য এবং মানবতার জন্য নিজেদের বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষী মনে করে। এ বিষয় গুলো উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা সহ্য করতে পারে না। কারণ: উপজাতি ও সেনাবাহিনী সুসম্পর্ক স্থাপন হলে সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজি, অপহরণ বাণিজ্য ও হত্যাকান্ড সংগঠিত করা এবং রাষ্ট্র বিরোধী তৎপরতা সহ তাদের আধিপত্য বাধাপ্রাপ্ত হবে৷ সে হতে তারা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নানান কুৎসা রটিয়ে জনমতে সেনা সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করে।

সেনাবাহিনীর এ মানব সেবার কাজকে এবং জনস্বার্থে সেনা ক্যাম্প স্থাপনের বিষয়টিকে ভুল ব্যাখা দিয়ে সেনাদের বিতর্কিত করার জন্য দেশদ্রোহী বিশ্বাসঘাতক বিচ্ছিন্নতাবাদী ইউপিডিএফ তাদের পরিচালিত অনলাইন নিউজ পোর্টালে অপপ্রচারে লিপ্ত থাকে। ইউপিডিএফ সংবাদ প্রকাশ করেছে উপজাতি মালিকের চাষাবাদের ভূমি জোরপূর্বক সেনাবাহিনী কেড়ে নিয়ে সেনা ক্যাম্প স্থাপন করছে! অথচ এমন অভিযোগ একদম মিথ্যাচার, এবং জনমতে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে ইউপিডিএফ এধরণের প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে দিচ্ছে। Chtnews যে প্রোপাগান্ডা মূলক তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে এটা কোন সাংবাদিকতার মধ্যে পড়ে না। “ষড় ক” না মেনে সাংবাদিকতা! হলুদ সাংবাদিকতার অংশ হচ্ছে এধরণের প্রোপাগান্ডা।

স্থানীয় এক হেডম্যান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, তিনি জানান, এখানে সেনা ক্যাম্প হলে ইউপিডিএফের চাঁদাবাজি, অস্ত্রবাজি, মানুষ হত্যা ও অপহরণ বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাবে। যার কারণে লিজকৃত ভূমিতে সেনা ক্যাম্প স্থাপন কাজ সম্পর্কে জনমতে গুজব রটিয়ে দিচ্ছে ইউপিডিএফ। স্থানীয় এক পাড়া কার্বারী জানান, সাধারণ মানুষের জানমাল হেফাজতের জন্য এবং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য এখানে সেনা ক্যাম্প স্থাপন স্থানীয় মানুষদের বহুদিনের প্রাণের দাবি ছিল।

নানিয়ারচর সেনা ক্যাম্প স্থাপনের জন্য সরকার ও সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ দেন হেডম্যান ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজাতীয় কার্বারী।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More