অদ্য ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ রোজ সোমবার পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ রাঙ্গামাটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শাখার উদ্যোগে “মহান শিক্ষা দিবস -২০১৮” উপলক্ষ্যে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ রাঙ্গামাটি জেলা কার্যালয়ে সকাল ১০ ঘটিকা সময়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভার স্লোগান ছিল ‘‘আদিবাসীদের স্ব-স্ব মাতৃভাষায় মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত সহ পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়ন কর”।
সভায় বক্তারা বলেন, সরকার দিন দিন শিক্ষা খাতে বরাদ্দ কমিয়ে দিচ্ছে। উচ্চ শিক্ষা ক্ষেত্রে যে গবেষণা দরকার তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। উচ্চ শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষা বৃত্তি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণা নেই বললেই চলে। সরকার বিভিন্ন মৌলবাদী চিন্তা পাঠ্যপুস্তকে অর্ন্তভূক্ত করছে যা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়।শিক্ষাকে শুধু জিপিএ-৫ দ্বারা মূল্যায়ন করা হচ্ছে। বর্তমান শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের টাকা উর্পাজনের হাতিয়ার তৈরি করা হচ্ছে। শিক্ষাকে প্রতিনিয়ত বানিজ্যিকিকরণ করা হচ্ছে। শিক্ষাকে বিজ্ঞানভিত্তিক এবং একমূখী না করে বহুমূখী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে এমন ক্সবষম্য কোনমতে গ্রহণযোগ্য নয়।
হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক, আশিকা চাকমা বলেন, আজকের এই দিনটি হলো শিক্ষা ক্ষেত্রে বিপ্লবের দিন। মে․লবাদী শিক্ষা থেকে প্রগতিশীল শিক্ষা অর্জনের দাবির দিন। এই দিনটিকে প্রতিটি ছাত্রকে গভীর থেকে উপলদ্ধি করতে হবে এবং অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে। শিক্ষার্থীদের অবশ্যই ভালো কিছুকরার মানসিকতা রাখতে হবে।
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রামবাই পাংখোয়া বলেন, দেশে আজ প্রগতিশীল শিক্ষা ব্যবস্থা নেই। শিক্ষাকে পণ্য হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বর্তমান শিক্ষার মাধ্যমে মানুষকে স্বার্থপর করা হচ্ছে। বর্তমানে দেশে বেকার সমস্যা সর্বোচ্চ সংকটে নিমজ্জিত। সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মূল ধারাগুলো বাস্তবায়ন না করে অপপ্রচার করছে। ভূমি কমিশন আইন কার্যকর করা হচ্ছে না। আঞ্চলিক পরিষদকে অর্থব করে রাখা হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় রাখা হয়েছে। জেলা পরিষদ গুলোর মাধ্যমে অদক্ষ, অযোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে ঘুষ, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে। উন্নয়নের নাম করে
জুম্মদের ভূমি দখলের জন্য মেডিকেল কলেজ এবং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। যেখানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে সমস্যা সেখানে কিভাবে এই প্রতিষ্ঠান স্থানীয় জনগণের উপকারে আসবে তা
প্রশ্নবিদ্ধ? তিনি জোর দাবি করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত মেডিকেল কলেজ ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন কার্যক্রম স্থগিত রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পিপিসি শহর শাখার দপ্তর সম্পাদক জিকো চাকমা, পিসিপি জেলা শাখার সদস্য জুমবি চাকমা আর সভায় সভাপতিত্ব করেন রাঙ্গামাটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শাখার সভাপতি
জগদীশ চাকমা।
পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের দাবিনামা-
১. স্ব স্ব মাতৃভাষায় আদিবাসীদের প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
২. উচ্চ শিক্ষায় আদিবাসীদের ৫% শিক্ষা কোটা নিশ্চিত করতে হবে।
৩. শিক্ষাকে বিজ্ঞানভিত্তিক এবং কর্মমূখী করতে হবে।
৪. শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি বন্ধ করতে হবে।
৫. পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে হবে।
বার্তা প্রেরক
নান্টু চাকমা
তথ্য প্রচার সম্পাদক
পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ,
রাঙ্গামাটি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শাখা।