হিল ট্রাক্টস ম্যানুয়েল

বাংলাদেশ সংবিধান |হিল নিউজ বিডি|

0
130

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান
[]
[ বিস্‌মিল্লাহির-রহ্‌মানির রহিম
(দয়াময়, পরম দয়ালু, আল্লাহের নামে)/
পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তার নামে।]
প্রস্তাবনা

আমরা, বাংলাদেশের জনগণ, ১৯৭১ খ্রীষ্টাব্দের মার্চ মাসের ২৬ তারিখে স্বাধীনতা ঘোষণা করিয়া [জাতীয় মুক্তির জন্য ঐতিহাসিক সংগ্রামের] মাধ্যমে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করিয়াছি;

[ আমরা অঙ্গীকার করিতেছি যে, যে সকল মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে আত্মনিয়োগ ও বীর শহীদদিগকে প্রাণোৎসর্গ করিতে উদ্বুদ্ধ করিয়াছিল -জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার সেই সকল আদর্শ এই সংবিধানের মূলনীতি হইবে ;]

আমরা আরও অঙ্গীকার করিতেছি যে, আমাদের রাষ্ট্রের অন্যতম মূল লক্ষ্য হইবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এমন এক শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রিক সমাজের প্রতিষ্ঠা- যেখানে সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত হইবে;

আমরা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করিতেছি যে, আমরা যাহাতে স্বাধীন সত্তায় সমৃদ্ধি লাভ করিতে পারি এবং মানবজাতির প্রগতিশীল আশা-আকাঙ্খার সহিত সঙ্গতি রক্ষা করিয়া আন্তর্জাতিক শান্তি ও সহযোগিতার ক্ষেত্রে পূর্ণ ভূমিকা পালন করিতে পারি, সেইজন্য বাংলাদেশের জনগণের অভিপ্রায়ের অভিব্যক্তিস্বরূপ এই সংবিধানের প্রাধান্য অক্ষুণ্ন রাখা এবং ইহার রক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তাবিধান আমাদের পবিত্র কর্তব্য;

এতদ্বারা আমাদের এই গণপরিষদে, অদ্য তের শত ঊনআশী বঙ্গাব্দের কার্তিক মাসের আঠারো তারিখ, মোতাবেক ঊনিশ শত বাহাত্তর খ্রীষ্টাব্দের নভেম্বর মাসের চার তারিখে, আমরা এই সংবিধান রচনা ও বিধিবদ্ধ করিয়া সমবেতভাবে গ্রহণ করিলাম।

 

প্রথম ভাগ
প্রজাতন্ত্র
প্রজাতন্ত্র
১৷ বাংলাদেশ একটি একক, স্বাধীন ও সার্বভৌম প্রজাতন্ত্র, যাহা “গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ” নামে পরিচিত হইবে৷
প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রীয় সীমানা

২৷ প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রীয় সীমানার অন্তর্ভুক্ত হইবে

(ক) ১৯৭১ খ্রীষ্টাব্দের মার্চ মাসের ২৬ তারিখে স্বাধীনতা-ঘোষণার অব্যবহিত পূর্বে যে সকল এলাকা লইয়া পূর্ব পাকিস্তান গঠিত ছিল [ এবং সংবিধান (তৃতীয় সংশোধন) আইন, ১৯৭৪-এ অন্তর্ভুক্ত এলাকা বলিয়া উল্লিখিত এলাকা, কিন্তু উক্ত আইনে বহির্ভূত এলাকা বলিয়া উল্লিখিত এলাকা তদ্‌বহির্ভূত; এবং]

(খ) যে সকল এলাকা পরবর্তীকালে বাংলাদেশের সীমানাভুক্ত হইতে পারে৷

রাষ্ট্রধর্ম
[ ২ক। প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, তবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টানসহ অন্যান্য ধর্ম পালনে রাষ্ট্র সমমর্যাদা ও সমঅধিকার নিশ্চিত করিবেন]
রাষ্ট্রভাষা
৩৷ প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রভাষা বাংলা৷
জাতীয় সঙ্গীত, পতাকা ও প্রতীক

৪৷ (১) প্রজাতন্ত্রের জাতীয় সঙ্গীত “আমার সোনার বাংলা”র প্রথম দশ চরণ৷

(২) প্রজাতন্ত্রের জাতীয় পতাকা হইতেছে সবুজ ক্ষেত্রের উপর স্থাপিত রক্তবর্ণের একটি ভরাট বৃত্ত৷

(৩) প্রজাতন্ত্রের জাতীয় প্রতীক হইতেছে উভয় পার্শ্বে ধান্যশীর্ষবেষ্টিত, পানিতে ভাসমান জাতীয় পুষ্প শাপলা, তাহার শীর্ষদেশে পাটগাছের তিনটি পরস্পর-সংযুক্ত পত্র, তাহার উভয় পার্শ্বে দুইটি করিয়া তারকা৷

(৪) উপরি-উক্ত দফাসমূহ-সাপেক্ষে জাতীয় সঙ্গীত, পতাকা ও প্রতীক সম্পর্কিত বিধানাবলী আইনের দ্বারা নির্ধারিত হইবে৷

জাতির পিতার প্রতিকৃতি
[ ৪ক। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পীকার ও প্রধান বিচারপতির কার্যালয় এবং সকল সরকারী ও আধা-সরকারী অফিস, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, সংবিধিবদ্ধ সরকারী কর্তৃপক্ষের প্রধান ও শাখা কার্যালয়, সরকারী ও বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস ও মিশনসমূহে সংরক্ষণ ও প্রদর্শন করিতে হইবে।]
রাজধানী

৫৷ (১) প্রজাতন্ত্রের রাজধানী ঢাকা৷

(২) রাজধানীর সীমানা আইনের দ্বারা নির্ধারিত হইবে৷

নাগরিকত্ব

[ ৬। (১) বাংলাদেশের নাগরিকত্ব আইনের দ্বারা নির্ধারিত ও নিয়ন্ত্রিত হইবে।

(২) বাংলাদেশের জনগণ জাতি হিসাবে বাঙালী এবং নাগরিকগণ বাংলাদেশী বলিয়া পরিচিত হইবেন।]

সংবিধানের প্রাধান্য

৭৷ (১) প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ; এবং জনগণের পক্ষে সেই ক্ষমতার প্রয়োগ কেবল এই সংবিধানের অধীন ও কর্তৃত্বে কার্যকর হইবে৷

(২) জনগণের অভিপ্রায়ের পরম অভিব্যক্তিরূপে এই সংবিধান প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন এবং অন্য কোন আইন যদি এই সংবিধানের সহিত অসমঞ্জস হয়, তাহা হইলে সেই আইনের যতখানি অসামঞ্জস্যপূর্ণ, ততখানি বাতিল হইবে৷

সংবিধান বাতিল, স্থগিতকরণ, ইত্যাদি অপরাধ

[ ৭ক। (১) কোন ব্যক্তি শক্তি প্রদর্শন বা শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে বা অন্য কোন অসাংবিধানিক পন্থায় –

(ক) এই সংবিধান বা ইহার কোন অনুচ্ছেদ রদ, রহিত বা বাতিল বা স্থগিত করিলে কিংবা উহা করিবার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ বা ষড়যন্ত্র করিলে ; কিংবা

(খ) এই সংবিধান বা ইহার কোন বিধানের প্রতি নাগরিকের আস্থা, বিশ্বাস বা প্রত্যয় পরাহত করিলে কিংবা উহা করিবার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ বা ষড়যন্ত্র করিলে-

তাহার এই কার্য রাষ্ট্রদ্রোহিতা হইবে এবং ঐ ব্যক্তি রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে দোষী হইবে।

(২) কোন ব্যক্তি (১) দফায় বর্ণিত-

(ক) কোন কার্য করিতে সহযোগিতা বা উস্কানি প্রদান করিলে; কিংবা

(খ) কার্য অনুমোদন, মার্জনা, সমর্থন বা অনুসমর্থন করিলে-

তাহার এইরুপ কার্যও একই অপরাধ হইবে।

(৩) এই অনুচ্ছেদে বর্ণিত অপরাধে দোষী ব্যক্তি প্রচলিত আইনে অন্যান্য অপরাধের জন্য নির্ধারিত দণ্ডের মধ্যে সর্বোচ্চ দণ্ডে দণ্ডিত হইবে।

সংবিধানের মৌলিক বিধানাবলী সংশোধন অযোগ্য
৭খ।সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সংবিধানের প্রস্তাবনা, প্রথম ভাগের সকল অনুচ্ছেদ, দ্বিতীয় ভাগের সকল অনুচ্ছেদ, নবম-ক ভাগে বর্ণিত অনুচ্ছেদসমূহের বিধানাবলী সাপেক্ষে তৃতীয় ভাগের সকল অনুচ্ছেদ এবং একাদশ ভাগের ১৫০ অনুচ্ছেদসহ সংবিধানের অন্যান্য মৌলিক কাঠামো সংক্রান্ত অনুচ্ছেদসমুহের বিধানাবলী সংযোজন, পরিবর্তন, প্রতিস্থাপন, রহিতকরণ কিংবা অন্য কোন পন্থায় সংশোধনের অযোগ্য হইবে।]
দ্বিতীয় ভাগ
রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি
মূলনীতিসমূহ

৮৷ [ (১) জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা- এই নীতিসমূহ এবং তৎসহ এই নীতিসমূহ হইতে উদ্ভূত এই ভাগে বর্ণিত অন্য সকল নীতি রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি বলিয়া পরিগণিত হইবে।]

(২) এই ভাগে বর্ণিত নীতিসমূহ বাংলাদেশ-পরিচালনার মূলসূত্র হইবে, আইন-প্রণয়নকালে রাষ্ট্র তাহা প্রয়োগ করিবেন, এই সংবিধান ও বাংলাদেশের অন্যান্য আইনের ব্যাখ্যাদানের ক্ষেত্রে তাহা নির্দেশক হইবে এবং তাহা রাষ্ট্র ও নাগরিকদের কার্যের ভিত্তি হইবে, তবে এই সকল নীতি আদালতের মাধ্যমে বলবৎযোগ্য হইবে না৷

জাতীয়তাবাদ
১০[ ৯। ভাষাগত ও সংস্কৃতিগত একক সত্তাবিশিষ্ট যে বাঙালী জাতি ঐক্যবদ্ধ ও সংকল্পবদ্ধ সংগ্রাম করিয়া জাতীয় মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অর্জন করিয়াছেন, সেই বাঙালী জাতির ঐক্য ও সংহতি হইবে বাঙালী জাতীয়তাবাদের ভিত্তি।]
সমাজতন্ত্র ও শোষণমুক্তি
১১[ ১০।মানুষের উপর মানুষের শোষণ হইতে মুক্ত ন্যায়ানুগ ও সাম্যবাদী সমাজলাভ নিশ্চিত করিবার উদ্দেশ্যে সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হইবে।]
গণতন্ত্র ও মানবাধিকার
১১৷ প্রজাতন্ত্র হইবে একটি গণতন্ত্র, যেখানে মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা থাকিবে, মানবসত্তার মর্যাদা ও মূল্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নিশ্চিত হইবে ১২[ * * *] ১৩[এবং প্রশাসনের সকল পর্যায়ে নির্বাচিত প্রতিনিধদের মাধ্যমে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হইবে]৷
ধর্ম নিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা

১৪[ ১২। ধর্ম নিরপেক্ষতা নীতি বাস্তবায়নের জন্য

(ক) সর্ব প্রকার সাম্প্রদায়িকতা,

(খ) রাষ্ট্র কর্তৃক কোন ধর্মকে রাজনৈতিক মর্যাদা দান,

(গ) রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মীয় অপব্যবহার,

(ঘ) কোন বিশেষ ধর্ম পালনকারী ব্যক্তির প্রতি বৈষম্য বা তাহার উপর নিপীড়ন,

বিলোপ করা হইবে।]

মালিকানার নীতি

১৩৷ উৎপাদনযন্ত্র, উৎপাদনব্যবস্থা ও বন্টনপ্রণালীসমূহের মালিক বা নিয়ন্ত্রক হইবেন জনগণ এবং এই উদ্দেশ্যে মালিকানা-ব্যবস্থা নিম্নরূপ হইবে:

(ক) রাষ্ট্রীয় মালিকানা, অর্থাৎ অর্থনৈতিক জীবনের প্রধান প্রধান ক্ষেত্র লইয়া সুষ্ঠু ও গতিশীল রাষ্ট্রায়ত্ত সরকারী খাত সৃষ্টির মাধ্যমে জনগণের পক্ষে রাষ্ট্রের মালিকানা;

(খ) সমবায়ী মালিকানা, অর্থাৎ আইনের দ্বারা নির্ধারিত সীমার মধ্যে সমবায়সমূহের সদস্যদের পক্ষে সমবায়সমূহের মালিকানা; এবং

(গ) ব্যক্তিগত মালিকানা, অর্থাৎ আইনের দ্বারা নির্ধারিত সীমার মধ্যে ব্যক্তির মালিকানা৷

কৃষক ও শ্রমিকের মুক্তি
১৪৷ রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব হইবে মেহনতী মানুষকে-কৃষক ও শ্রমিককে-এবং জনগণের অনগ্রসর অংশসমূহকে সকল প্রকার শোষণ হইতে মুক্তি দান করা৷
মৌলিক প্রয়োজনের ব্যবস্থা

১৫৷ রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব হইবে পরিকল্পিত অর্থনৈতিক বিকাশের মাধ্যমে উৎপাদনশক্তির ক্রমবৃদ্ধিসাধন এবং জনগণের জীবনযাত্রার বস্তুগত ও সংস্কৃতিগত মানের দৃঢ় উন্নতিসাধন, যাহাতে নাগরিকদের জন্য নিম্নলিখিত বিষয়সমূহ অর্জন নিশ্চিত করা যায়:

(ক) অন্ন, বস্ত্র, আশ্রয়, শিক্ষা ও চিকিৎসহ জীবনধারণের মৌলিক উপকরণের ব্যবস্থা;

(খ) কর্মের অধিকার, অর্থাৎ কর্মের গুণ ও পরিমাণ বিবেচনা করিয়া যুক্তিসঙ্গত মজুরীর বিনিময়ে কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তার অধিকার;

(গ) যুক্তিসঙ্গত বিশ্রাম, বিনোদন ও অবকাশের অধিকার; এবং

(ঘ) সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার, অর্থাৎ বেকারত্ব, ব্যাধি বা পঙ্গুত্বজনিত কিংবা বৈধব্য, মাতাপিতৃহীনতা বা বার্ধক্যজনিত কিংবা অনুরূপ অন্যান্য পরিস্থিতিজনিত আয়ত্তাতীত কারণে অভাবগ্রস্ততার ক্ষেত্রে সরকারী সাহায্যলাভের অধিকার৷

গ্রামীণ উন্নয়ন ও কৃষি বিপ্লব
১৬৷ নগর ও গ্রামাঞ্চলের জীবন যাত্রার মানের বৈষম্য ক্রমাগতভাবে দূর করিবার উদ্দেশ্যে কৃষিবিপ্লবের বিকাশ, গ্রামাঞ্চলে বৈদ্যুতীকরণের ব্যবস্থা, কুটিরশিল্প ও অন্যান্য শিল্পের বিকাশ এবং শিক্ষা, যোগাযোগ-ব্যবস্থা ও জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের আমূল রূপান্তরসাধনের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন৷
অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষা

১৭৷ রাষ্ট্র

(ক) একই পদ্ধতির গণমুখী ও সার্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য এবং আইনের দ্বারা নির্ধারিত স্তর পর্যন্ত সকল বালক-বালিকাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানের জন্য;

(খ) সমাজের প্রয়োজনের সহিত শিক্ষাকে সঙ্গতিপূর্ণ করিবার জন্য এবং সেই প্রয়োজন সিদ্ধ করিবার উদ্দেশ্যে যথাযথ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও সদিচ্ছাপ্রণোদিত নাগরিক সৃষ্টির জন্য;

(গ) আইনের দ্বারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিরক্ষরতা দূর করিবার জন্য;

কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন৷

জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতা

১৮৷ (১) জনগণের পুষ্টির স্তর-উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যের উন্নতিসাধনকে রাষ্ট্র অন্যতম প্রাথমিক কর্তব্য বলিয়া গণ্য করিবেন এবং বিশেষতঃ আরোগ্যের প্রয়োজন কিংবা আইনের দ্বারা নির্দিষ্ট অন্যবিধ প্রয়োজন ব্যতীত মদ্য ও অন্যান্য মাদক পানীয় এবং স্বাস্থ্যহানিকর ভেষজের ব্যবহার নিষিদ্ধকরণের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন৷

(২) গণিকাবৃত্তি ও জুয়াখেলা নিরোধের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন৷

পরিবেশ ও জীব-বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও উন্নয়ন
১৫[ ১৮ক। রাষ্ট্র বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নাগরিকদের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করিবেন এবং প্রাকৃতিক সম্পদ, জীব-বৈচিত্র্য, জলাভূমি, বন ও বন্যপ্রাণির সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধান করিবেন।]
সুযোগের সমতা

১৯৷ (১) সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা নিশ্চিত করিতে রাষ্ট্র সচেষ্ট হইবেন৷

(২) মানুষে মানুষে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অসাম্য বিলোপ করিবার জন্য, নাগরিকদের মধ্যে সম্পদের সুষম বন্টন নিশ্চিত করিবার জন্য এবং প্রজাতন্ত্রের সর্বত্র অর্থনৈতিক উন্নয়নের সমান স্তর অর্জনের উদ্দেশ্যে সুষম সুযোগ-সুবিধাদান নিশ্চিত করিবার জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন৷

১৬[ (৩) জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে মহিলাদের অংশগ্রহণ ও সুযোগের সমতা রাষ্ট্র নিশ্চিত করিবেন।]

অধিকার ও কর্তব্যরূপে কর্ম

২০৷ (১) কর্ম হইতেছে কর্মক্ষম প্রত্যেক নাগরিকের পক্ষে অধিকার, কর্তব্য ও সম্মানের বিষয়, এবং “প্রত্যেকের নিকট হইতে যোগ্যতানুসারে ও প্রত্যেককে কর্মানুযায়ী”-এই নীতির ভিত্তিতে প্রত্যেকে স্বীয় কর্মের জন্য পারিশ্রমিক লাভ করিবেন৷

(২) রাষ্ট্র এমন অবস্থাসৃষ্টির চেষ্টা করিবেন, যেখানে সাধারণ নীতি হিসাবে কোন ব্যক্তি অনুপার্জিত আয় ভোগ করিতে সমর্থ হইবেন না এবং যেখানে বুদ্ধিবৃত্তিমূলক ও কায়িক-সকল প্রকার শ্র্রম সৃষ্টিধর্মী প্রয়াসের ও মানবিক ব্যক্তিত্বের পূর্ণতর অভিব্যক্তিতে পরিণত হইবে৷

নাগরিক ও সরকারী কর্মচারীদের কর্তব্য

২১৷ (১) সংবিধান ও আইন মান্য করা, শৃঙ্খলা রক্ষা করা, নাগরিকদায়িত্ব পালন করা এবং জাতীয় সম্পত্তি রক্ষা করা প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য৷

(২) সকল সময়ে জনগণের সেবা করিবার চেষ্টা করা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির কর্তব্য৷

নির্বাহী বিভাগ হইতে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ
২২৷ রাষ্ট্রের নির্বাহী অঙ্গসমূহ হইতে বিচারবিভাগের পৃথকীকরণ রাষ্ট্র নিশ্চিত করিবেন৷
জাতীয় সংস্কৃতি
২৩৷ রাষ্ট্র জনগণের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকার রক্ষণের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন এবং জাতীয় ভাষা, সাহিত্য ও শিল্পকলাসমূহের এমন পরিপোষণ ও উন্নয়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন, যাহাতে সর্বস্তরের জনগণ জাতীয় সংস্কৃতির সমৃদ্ধিতে অবদান রাখিবার ও অংশগ্রহণ করিবার সুযোগ লাভ করিতে পারেন৷
উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি
১৭[ ২৩ক। রাষ্ট্র বিভিন্ন উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের অনন্য বৈশিষ্ট্যপূর্ণ আঞ্চলিক সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও বিকাশের ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।]
জাতীয় স্মৃতিনিদর্শন, প্রভৃতি
২৪৷ বিশেষ শৈল্পিক কিংবা ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন বা তাৎর্যমণ্ডিত স্মৃতিনিদর্শন, বস্তু বা স্থানসমূহকে বিকৃতি, বিনাশ বা অপসারণ হইতে রক্ষা করিবার জন্য রাষ্ট্র ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন৷
আন্তর্জাতিক শান্তি, নিরাপত্তা ও সংহতির উন্নয়ন

২৫৷ ১৮[ ***] জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও সমতার প্রতি শ্রদ্ধা, অন্যান্য রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা, আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং আন্তর্জাতিক আইনের ও জাতিসংঘের সনদে বর্ণিত নীতিসমূহের প্রতি শ্রদ্ধা-এই সকল নীতি হইবে রাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ভিত্তি এবং এই সকল নীতির ভিত্তিতে রাষ্ট্র

(ক) আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে শক্তিপ্রয়োগ পরিহার এবং সাধারণ ও সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণের জন্য চেষ্টা করিবেন;

(খ) প্রত্যেক জাতির স্বাধীন অভিপ্রায় অনুযায়ী পথ ও পন্থার মাধ্যমে অবাধে নিজস্ব সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা নির্ধারণ ও গঠনের অধিকার সমর্থন করিবেন; এবং

(গ) সাম্রাজ্যবাদ, ঔপনিবেশিকতাবাদ বা বর্ণবৈষম্যবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বের সর্বত্র নিপীড়িত জনগণের ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামকে সমর্থন করিবেন৷

১৯[ ***]

তৃতীয় ভাগ
মৌলিক অধিকার
মৌলিক অধিকারের সহিত অসমঞ্জস আইন বাতিল

২৬। (১) এই ভাগের বিধানাবলীর সহিত অসমঞ্জস সকল প্রচলিত আইন যতখানি অসামঞ্জস্যপূর্ণ, এই সংবিধান-প্রবর্তন হইতে সেই সকল আইনের ততখানি বাতিল হইয়া যাইবে।

(২) রাষ্ট্র এই ভাগের কোন বিধানের সহিত অসমঞ্জস কোন আইন প্রণয়ন করিবেন না এবং অনুরূপ কোন আইন প্রণীত হইলে তাহা এই ভাগের কোন বিধানের সহিত যতখানি অসামঞ্জস্যপূর্ণ, ততখানি বাতিল হইয়া যাইবে।

২০[ (৩) সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদের অধীন প্রণীত সংশোধনের ক্ষেত্রে এই অনুচ্ছেদের কোন কিছুই প্রযোজ্য হইবে না।]

আইনের দৃষ্টিতে সমতা
২৭। সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী।
ধর্ম, প্রভৃতি কারণে বৈষম্য

২৮। (১) কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারীপুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করিবেন না।

(২) রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারীপুরুষের সমান অধিকার লাভ করিবেন।

(৩) কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী পুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে জনসাধারণের কোন বিনোদন বা বিশ্রামের স্থানে প্রবেশের কিংবা কোন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে ভর্তির বিষয়ে কোন নাগরিককে কোনরূপ অক্ষমতা, বাধ্যবাধকতা, বাধা বা শর্তের অধীন করা যাইবে না।

(৪) নারী বা শিশুদের অনুকূলে কিংবা নাগরিকদের যে কোন অনগ্রসর অংশের অগ্রগতির জন্য বিশেষ বিধান-প্রণয়ন হইতে এই অনুচ্ছেদের কোন কিছুই রাষ্ট্রকে নিবৃত্ত করিবে না।

সরকারী নিয়োগ-লাভে সুযোগের সমতা

২৯। (১) প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ-লাভের ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা থাকিবে।

(২) কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিক প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ-লাভের অযোগ্য হইবেন না কিংবা সেই ক্ষেত্রে তাঁহার প্রতি বৈষম্য প্রদর্শন করা যাইবে না।

(৩) এই অনুচ্ছেদের কোন কিছুই-

(ক) নাগরিকদের যে কোন অনগ্রসর অংশ যাহাতে প্রজাতন্ত্রের কর্মে উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব লাভ করিতে পারেন, সেই উদ্দেশ্যে তাঁহাদের অনুকূলে বিশেষ বিধান-প্রণয়ন করা হইতে,

(খ) কোন ধর্মীয় বা উপ-সমপ্রদায়গত প্রতিষ্ঠানে উক্ত ধর্মাবলম্বী বা উপ-সমপ্রদায়ভুক্ত ব্যক্তিদের জন্য নিয়োগ সংরক্ষণের বিধান-সংবলিত যে কোন আইন কার্যকর করা হইতে,

(গ) যে শ্রেণীর কর্মের বিশেষ প্রকৃতির জন্য তাহা নারী বা পুরুষের পক্ষে অনুপযোগী বিবেচিত হয়, সেইরূপ যে কোন শ্রেণীর নিয়োগ বা পদ যথাক্রমে পুরুষ বা নারীর জন্য সংরক্ষণ করা হইতে,

রাষ্ট্রকে নিবৃত্ত করিবে না।

বিদেশী, খেতাব, প্রভৃতি গ্রহণ নিষিদ্ধকরণ
২১[ ৩০। রাষ্ট্রপতির পূর্বানুমোদন ব্যতীত কোন নাগরিক কোন বিদেশী রাষ্ট্রের নিকট হইতে কোন উপাধি, খেতাব, সম্মান, পুরস্কার বা ভূষণ গ্রহণ করিবেন না।]
আইনের আশ্রয়-লাভের অধিকার
৩১। আইনের আশ্রয়লাভ এবং আইনানুযায়ী ও কেবল আইনানুযায়ী ব্যবহারলাভ যে কোন স্থানে অবস্থানরত প্রত্যেক নাগরিকের এবং সাময়িকভাবে বাংলাদেশে অবস্থানরত অপরাপর ব্যক্তির অবিচ্ছেদ্য অধিকার এবং বিশেষতঃ আইনানুযায়ী ব্যতীত এমন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে না, যাহাতে কোন ব্যক্তির জীবন, স্বাধীনতা, দেহ, সুনাম বা সম্পত্তির হানি ঘটে।
জীবন ও ব্যক্তি-স্বাধীনতার অধিকাররক্ষণ
৩২। আইনানুযায়ী ব্যতীত জীবন ও ব্যক্তি-স্বাধীনতা হইতে কোন ব্যক্তিকে বঞ্চিত করা যাইবে না।
গ্রেপ্তার ও আটক সম্পর্কে রক্ষাকবচ

৩৩। (১) গ্রেপ্তারকৃত কোন ব্যক্তিকে যথাসম্ভব শীঘ্র গ্রেপ্তারের কারণ জ্ঞাপন না করিয়া প্রহরায় আটক রাখা যাইবে না এবং উক্ত ব্যক্তিকে তাঁহার মনোনীত আইনজীবীর সহিত পরামর্শের ও তাঁহার দ্বারা আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার হইতে বঞ্চিত করা যাইবে না।

(২) গ্রেপ্তারকৃত ও প্রহরায় আটক প্রত্যেক ব্যক্তিকে নিকটতম ম্যাজিস্ট্রেটের সম্মুখে গ্রেপ্তারের চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের স্থান হইতে ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে আনয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সময় ব্যতিরেকে) হাজির করা হইবে এবং ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ ব্যতীত তাঁহাকে তদতিরিক্তকাল প্রহরায় আটক রাখা যাইবে না।

(৩) এই অনুচ্ছেদের (১) ও (২) দফার কোন কিছুই সেই ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না,

(ক) যিনি বর্তমান সময়ের জন্য বিদেশী শত্রু, অথবা

(খ) যাঁহাকে নিবর্তনমূলক আটকের বিধান-সংবলিত কোন আইনের অধীন গ্রেপ্তার করা হইয়াছে বা আটক করা হইয়াছে।

(৪) নিবর্তনমূলক আটকের বিধান-সংবলিত কোন আইন কোন ব্যক্তিকে ছয় মাসের অধিককাল আটক রাখিবার ক্ষমতা প্রদান করিবে না যদি সুপ্রীম কোর্টের বিচারক রহিয়াছেন বা ছিলেন কিংবা সুপ্রীম কোর্টের বিচারকপদে নিয়োগলাভের যোগ্যতা রাখেন, এইরূপ দুইজন এবং প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত একজন প্রবীণ কর্মচারীর সমন্বয়ে গঠিত কোন উপদেষ্টা-পর্ষদ্ উক্ত ছয় মাস অতিবাহিত হইবার পূর্বে তাঁহাকে উপস্থিত হইয়া বক্তব্য পেশ করিবার সুযোগদানের পর রিপোর্ট প্রদান না করিয়া থাকেন যে, পর্ষদের মতে উক্ত ব্যক্তিকে তদতিরিক্তকাল আটক রাখিবার পর্যাপ্ত কারণ রহিয়াছে।

(৫) নির্বতনমূলক আটকের বিধান-সংবলিত কোন আইনের অধীন প্রদত্ত আদেশ অনুযায়ী কোন ব্যক্তিকে আটক করা হইলে আদেশদানকারী কর্তৃপক্ষ তাঁহাকে যথাসম্ভব শীঘ্র আদেশদানের কারণ জ্ঞাপন করিবেন এবং উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে বক্তব্য-প্রকাশের জন্য তাঁহাকে যত সত্বর সম্ভব সুযোগদান করিবেন:

তবে শর্ত থাকে যে, আদেশদানকারী কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় তথ্যাদি-প্রকাশ জনস্বার্থবিরোধী বলিয়া মনে হইলে অনুরূপ কর্তৃপক্ষ তাহা প্রকাশে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করিতে পারিবেন।

(৬) উপদেষ্টা-পর্ষদ কর্তৃক এই অনুচ্ছেদের (৪) দফার অধীন তদন্তের জন্য অনুসরণীয় পদ্ধতি সংসদ আইনের দ্বারা নির্ধারণ করিতে পারিবেন।]

জবরদস্তি-শ্রম নিষিদ্ধকরণ

৩৪। (১) সকল প্রকার জবরদস্তি-শ্রম নিষিদ্ধ; এবং এই বিধান কোনভাবে লংঘিত হইলে তাহা আইনতঃ দণ্ডনীয় অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে।

(২) এই অনুচ্ছেদের কোন কিছুই সেই সকল বাধ্যতামূলক শ্রমের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না, যেখানে

(ক) ফৌজদারী অপরাধের জন্য কোন ব্যক্তি আইনতঃ দণ্ডভোগ করিতেছেন; অথবা

(খ) জনগণের উদ্দেশ্যসাধনকল্পে আইনের দ্বারা তাহা আবশ্যক হইতেছে।

বিচার ও দন্ড সম্পর্কে রক্ষণ

৩৫। (১) অপরাধের দায়যুক্ত কার্যসংঘটনকালে বলবৎ ছিল, এইরূপ আইন ভঙ্গ করিবার অপরাধ ব্যতীত কোন ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করা যাইবে না এবং অপরাধ-সংঘটনকালে বলবৎ সেই আইনবলে যে দণ্ড দেওয়া যাইতে পারিত, তাঁহাকে তাহার অধিক বা তাহা হইতে ভিন্ন দণ্ড দেওয়া যাইবে না।

(২) এক অপরাধের জন্য কোন ব্যক্তিকে একাধিকবার ফৌজদারীতে সোপর্দ ও দণ্ডিত করা যাইবে না।

(৩) ফৌজদারী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তি আইনের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ আদালত বা ট্রাইব্যুনালে দ্রুত ও প্রকাশ্য বিচারলাভের অধিকারী হইবেন।

(৪) কোন অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে নিজের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে বাধ্য করা যাইবে না।

(৫) কোন ব্যক্তিকে যন্ত্রণা দেওয়া যাইবে না কিংবা নিষ্ঠুর, অমানুষিক বা লাঞ্ছনাকর দণ্ড দেওয়া যাইবে না কিংবা কাহারও সহিত অনুরূপ ব্যবহার করা যাইবে না।

(৬) প্রচলিত আইনে নির্দিষ্ট কোন দণ্ড বা বিচারপদ্ধতি সম্পর্কিত কোন বিধানের প্রয়োগকে এই অনুচ্ছেদের (৩) বা (৫) দফার কোন কিছুই প্রভাবিত করিবে না।

চলাফেরার স্বাধীনতা
৩৬। জনস্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধ- সাপেক্ষে বাংলাদেশের সর্বত্র অবাধ চলাফেরা, ইহার যে কোন স্থানে বসবাস ও বসতিস্থাপন এবং বাংলাদেশ ত্যাগ ও বাংলাদেশে পুনঃপ্রবেশ করিবার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকিবে।
সমাবেশের স্বাধীনতা
৩৭। জনশৃঙ্খলা বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধ-সাপেক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে ও নিরস্ত্র অবস্থায় সমবেত হইবার এবং জনসভা ও শোভাযাত্রায় যোগদান করিবার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকিবে।
সংগঠনের স্বাধীনতা

২২[ ৩৮।জনশৃঙ্খলা ও নৈতিকতার স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধা-নিষেধ সাপেক্ষে সমিতি বা সংঘ গঠন করিবার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকিবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, কোন ব্যক্তির উক্তরুপ সমিতি বা সংঘ গঠন করিবার কিংবা উহার সদস্য হইবার অধিকার থাকিবে না, যদি-

(ক) উহা নাগরিকদের মধ্যে ধর্মীয়, সামাজিক এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করিবার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়;

(খ) উহা ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষ, জন্মস্থান বা ভাষার ক্ষেত্রে নাগরিকদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করিবার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়;

(গ) উহা রাষ্ট্র বা নাগরিকদের বিরুদ্ধে কিংবা অন্য কোন দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী বা জঙ্গী কার্য পরিচালনার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়; বা

(ঘ) উহার গঠন ও উদ্দেশ্য এই সংবিধানের পরিপন্থী হয়।]

চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা এবং বাক্-স্বাধীনতা

৩৯। (১) চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার নিশ্চয়তাদান করা হইল।

(২) রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, বিদেশী রাষ্ট্রসমূহের সহিত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, জনশৃঙ্খলা, শালীনতা ও নৈতিকতার স্বার্থে কিংবা আদালত-অবমাননা, মানহানি বা অপরাধ-সংঘটনে প্ররোচনা সম্পর্কে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধ-সাপেক্ষে

(ক) প্রত্যেক নাগরিকের বাক্ ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের, এবং

(খ) সংবাদক্ষেত্রের স্বাধীনতার

নিশ্চয়তা দান করা হইল।

পেশা বা বৃত্তির স্বাধীনতা
৪০। আইনের দ্বারা আরোপিত বাধানিষেধ-সাপেক্ষে কোন পেশা বা বৃত্তি-গ্রহণের কিংবা কারবার বা ব্যবসায়-পরিচালনার জন্য আইনের দ্বারা কোন যোগ্যতা নির্ধারিত হইয়া থাকিলে অনুরূপ যোগ্যতাসম্পন্ন প্রত্যেক নাগরিকের যে কোন আইনসঙ্গত পেশা বা বৃত্তি-গ্রহণের এবং যে কোন আইনসঙ্গত কারবার বা ব্যবসায়-পরিচালনার অধিকার থাকিবে।
ধর্মীয় স্বাধীনতা

৪১। (১) আইন, জনশৃঙ্খলা ও নৈতিকতা-সাপেক্ষে

(ক) প্রত্যেক নাগরিকের যে কোন ধর্ম অবলম্বন, পালন বা প্রচারের অধিকার রহিয়াছে;

(খ) প্রত্যেক ধর্মীয় সম্প্রদায় ও উপ-সম্প্রদায়ের নিজস্ব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের স্থাপন, রক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার অধিকার রহিয়াছে।

(২) কোন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে যোগদানকারী কোন ব্যক্তির নিজস্ব ধর্ম-সংক্রান্ত না হইলে তাঁহাকে কোন ধর্মীয় শিক্ষাগ্রহণ কিংবা কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা উপাসনায় অংশগ্রহণ বা যোগদান করিতে হইবে না।

সম্পত্তির অধিকার

৪২। (১) আইনের দ্বারা আরোপিত বাধানিষেধ-সাপেক্ষে প্রত্যেক নাগরিকের সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর বা অন্যভাবে বিলি-ব্যবস্থা করিবার অধিকার থাকিবে এবং আইনের কর্তৃত্ব ব্যতীত কোন সম্পত্তি বাধ্যতামূলকভাবে গ্রহণ, রাষ্ট্রায়ত্ত বা দখল করা যাইবে না।

২৩[ (২) এই অনুচ্ছেদের (১) দফার অধীন প্রণীত আইনে ক্ষতিপূরণসহ বাধ্যতামূলকভাবে গ্রহণ, রাষ্ট্রায়ত্তকরণ বা দখলের বিধান করা হইবে এবং ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নির্ধারণ কিংবা ক্ষতিপূরণ নির্ণয় ও প্রদানের নীতি ও পদ্ধতি নির্দিষ্ট করা হইবে; তবে অনুরূপ কোন আইনে ক্ষতিপূরণের বিধান অপর্যাপ্ত হইয়াছে বলিয়া সেই আইন সম্পর্কে কোন আদালতে কোন প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।]

গৃহ ও যোগাযোগের রক্ষণ

৪৩। রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, জনশৃঙ্খলা, জনসাধারণের নৈতিকতা বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধ-সাপেক্ষে প্রত্যেক নাগরিকের

(ক) প্রবেশ, তল্লাশী ও আটক হইতে স্বীয় গৃহে নিরাপত্তালাভের অধিকার থাকিবে; এবং

(খ) চিঠিপত্রের ও যোগাযোগের অন্যান্য উপায়ের গোপনতারক্ষার অধিকার থাকিবে।

মৌলিক অধিকার বলবৎকরণ

২৪[ ৪৪। (১) এই ভাগে প্রদত্ত অধিকারসমূহ বলবৎ করিবার জন্য এই সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদের (১) দফা অনুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগের নিকট মামলা রুজু করিবার অধিকারের নিশ্চয়তা দান করা হইল।

(২) এই সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদের অধীন হাইকোর্ট বিভাগের ক্ষমতার হানি না ঘটাইয়া সংসদ আইনের দ্বারা অন্য কোন আদালতকে তাহার এখতিয়ারের স্থানীয় সীমার মধ্যে ঐ সকল বা উহার যে কোন ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষমতা দান করিতে পারিবেন।]

শৃঙ্খলামূলক আইনের ক্ষেত্রে অধিকারের পরিবর্তন
৪৫। কোন শৃঙ্খলা-বাহিনীর সদস্য-সম্পর্কিত কোন শৃঙ্খলামূলক আইনের যে কোন বিধান উক্ত সদস্যদের যথাযথ কর্তব্যপালন বা উক্ত বাহিনীতে শৃঙ্খলারক্ষা নিশ্চিত করিবার উদ্দেশ্যে প্রণীত বিধান বলিয়া অনুরূপ বিধানের ক্ষেত্রে এই ভাগের কোন কিছুই প্রযোজ্য হইবে না।
দায়মুক্তি-বিধানের ক্ষমতা
৪৬। এই ভাগের পূর্ববর্ণিত বিধানাবলীতে যাহা বলা হইয়াছে, তাহা সত্ত্বেও প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত কোন ব্যক্তি বা অন্য কোন ব্যক্তি জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের প্রয়োজনে কিংবা বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সীমানার মধ্যে যে কোন অঞ্চলে শৃঙ্খলা-রক্ষা বা পুনর্বহালের প্রয়োজনে কোন কার্য করিয়া থাকিলে সংসদ আইনের দ্বারা সেই ব্যক্তিকে দায়মুক্ত করিতে পারিবেন কিংবা ঐ অঞ্চলে প্রদত্ত কোন দণ্ডাদেশ, দণ্ড বা বাজেয়াপ্তির আদেশকে কিংবা অন্য কোন কার্যকে বৈধ করিয়া লইতে পারিবেন।
কতিপয় আইনের হেফাজত

৪৭। (১) নিম্নলিখিত যে কোন বিষয়ের বিধান-সংবলিত কোন আইনে (প্রচলিত আইনের ক্ষেত্রে সংশোধনীর মাধ্যমে) সংসদ যদি স্পষ্টরূপে ঘোষণা করেন যে, এই সংবিধানের দ্বিতীয় ভাগে বর্ণিত রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিসমূহের কোন একটিকে কার্যকর করিবার জন্য অনুরূপ বিধান করা হইল, তাহা হইলে অনুরূপ আইন এইভাগে নিশ্চয়কৃত কোন অধিকারের সহিত অসমঞ্জস কিংবা অনুরূপ অধিকার হরণ বা খর্ব করিতেছে, এই কারণে বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে নাঃ

(ক) কোন সম্পত্তি বাধ্যতামূলকভাবে গ্রহণ, রাষ্ট্রায়ত্তকরণ বা দখল কিংবা সাময়িকভাবে বা স্থায়ীভাবে কোন সম্পত্তির নিয়ন্ত্রণ বা ব্যবস্থাপনা;

(খ) বাণিজ্যিক বা অন্যবিধ উদ্যোগসম্পন্ন একাধিক প্রতিষ্ঠানের বাধ্যতামূলক সংযুক্তকরণ;

(গ) অনুরূপ যে কোন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক, ব্যবস্থাপক, এজেন্ট ও কর্মচারীদের অধিকার এবং (যে কোন প্রকারের) শেয়ার ও স্টকের মালিকদের ভোটাধিকার বিলোপ, পরিবর্তন, সীমিতকরণ বা নিয়ন্ত্রণ;

(ঘ) খনিজদ্রব্য বা খনিজ তৈল-অনুসন্ধান বা লাভের অধিকার বিলোপ, পরিবর্তন, সীমিতকরণ বা নিয়ন্ত্রণ;

(ঙ) অন্যান্য ব্যক্তিকে অংশতঃ বা সম্পূর্ণতঃ পরিহার করিয়া সরকার কর্তৃক বা সরকারের নিজস্ব, নিয়ন্ত্রণাধীন বা ব্যবস্থাপনাধীন কোন সংস্থা কর্তৃক যে কোন কারবার, ব্যবসায়, শিল্প বা কর্মবিভাগ-চালনা; অথবা

(চ) যে কোন সম্পত্তির স্বত্ব কিংবা পেশা, বৃত্তি, কারবার বা ব্যবসায়-সংক্রান্ত যে কোন অধিকার কিংবা কোন সংবিধিবদ্ধ সরকারী প্রতিষ্ঠান বা কোন বাণিজ্যিক বা শিল্পগত উদ্যোগের মালিক বা কর্মচারীদের অধিকার বিলোপ, পরিবর্তন, সীমিতকরণ বা নিয়ন্ত্রণ।

(২) এই সংবিধানে যাহা বলা হইয়াছে, তাহা সত্ত্বেও প্রথম তফসিলে বর্ণিত আইনসমূহ (অনুরূপ আইনের কোন সংশোধনীসহ) পূর্ণভাবে বলবৎ ও কার্যকর হইতে থাকিবে এবং অনুরূপ যে কোন আইনের কোন বিধান কিংবা অনুরূপ কোন আইনের কর্তৃত্বেযাহা করা হইয়াছে বা করা হয় নাই, তাহা এই সংবিধানের কোন বিধানের সহিত অসমঞ্জস বা তাহার পরিপন্থী, এই কারণে বাতিল বা বেআইনী বলিয়া গণ্য হইবে না;

২৫[ তবে শর্ত থাকে যে, এই অনুচ্ছেদের কোন কিছুই অনুরূপ কোন আইনকে সংশোধন, পরিবর্তন বা বাতিল করা হইতে নিবৃত্ত করিবে না।]

২৬[ (৩) এই সংবিধানে যাহা বলা হইয়াছে, তাহা সত্ত্বেও গণহত্যাজনিত অপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ বা যুদ্ধাপরাধ এবং আন্তর্জাতিক আইনের অধীন অন্যান্য অপরাধের জন্য কোন সশস্ত্র বাহিনী বা প্রতিরক্ষা বাহিনী বা সহায়ক বাহিনীর সদস্য ২৭[ বা অন্য কোন ব্যক্তি, ব্যক্তি সমষ্টি বা সংগঠন]কিংবা যুদ্ধবন্দীকে আটক, ফৌজদারীতে সোপর্দ কিংবা দন্ডদান করিবার বিধান-সংবলিত কোন আইন বা আইনের বিধান এই সংবিধানের কোন বিধানের সহিত অসমঞ্জস বা তাহার পরিপন্থী, এই কারণে বাতিল বা বেআইনী বলিয়া গণ্য হইবে না কিংবা কখনও বাতিল বা বেআইনী হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে না ।]

সংবিধানের কতিপয় বিধানের অপ্রযোজ্যতা

২৮[ ৪৭ক। (১) যে ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই সংবিধানের ৪৭ অনুচ্ছেদের (৩) দফায় বর্ণিত কোন আইন প্রযোজ্য হয়, সেই ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদ, ৩৫ অনুচ্ছেদের (১) ও (৩) দফা এবং ৪৪ অনুচ্ছেদের অধীন নিশ্চয়কৃত অধিকারসমূহ প্রযোজ্য হইবে না।

(২) এই সংবিধানে যাহা বলা হইয়াছে, তাহা সত্ত্বেও যে ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই সংবিধানের ৪৭ অনুচ্ছেদের (৩) দফায় বর্ণিত কোন আইন প্রযোজ্য হয়, এই সংবিধানের অধীন কোন প্রতিকারের জন্য সুপ্রীম কোর্টে আবেদন করিবার কোন অধিকার সেই ব্যক্তির থাকিবে না।]

চতুর্থ ভাগ
নির্বাহী বিভাগ
১ম পরিচ্ছেদ
রাষ্ট্রপতি
রাষ্ট্রপতি

৪৮। (১) বাংলাদেশের একজন রাষ্ট্রপতি থাকিবেন, যিনি আইন অনুযায়ী সংসদ-সদস্যগণ কর্তৃক নির্বাচিত হইবেন।

(২) রাষ্ট্রপ্রধানরূপে রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের অন্য সকল ব্যক্তির ঊর্ধ্বে স্থান লাভ করিবেন এবং এই সংবিধান ও অন্য কোন আইনের দ্বারা তাঁহাকে প্রদত্ত ও তাঁহার উপর অর্পিত সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কর্তব্য পালন করিবেন।

(৩) এই সংবিধানের ৫৬ অনুচ্ছেদের (৩) দফা অনুসারে কেবল প্রধানমন্ত্রী ও ৯৫ অনুচ্ছেদের (১) দফা অনুসারে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্র ব্যতীত রাষ্টপতি তাঁহার অন্য সকল দায়িত্ব পালনে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী কার্য করিবেন:

তবে শর্ত থাকে যে, প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতিকে আদৌ কোন পরামর্শদান করিয়াছেন কি না এবং করিয়া থাকিলে কি পরামর্শ দান করিয়াছেন, কোন আদালত সেই সম্পর্কে কোন প্রশ্নের তদন্ত করিতে পারিবেন না।

(৪) কোন ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হইবার যোগ্য হইবেন না, যদি তিনি-

(ক) পঁয়ত্রিশ বৎসরের কম বয়স্ক হন; অথবা

(খ) সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হইবার যোগ্য না হন; অথবা

(গ) কখনও এই সংবিধানের অধীন অভিশংসন দ্বারা রাষ্ট্রপতির পদ হইতে অপসারিত হইয়া থাকেন।

(৫) প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় ও পররাষ্ট্রীয় নীতি সংক্রান্ত বিষয়াদি সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত রাখিবেন এবং রাষ্ট্রপতি অনুরোধ করিলে যে−কোন বিষয় মন্ত্রিসভায় বিবেচনার জন্য পেশ করিবেন।

ক্ষমা প্রদর্শনের অধিকার
৪৯। কোন আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত যে−কোন দণ্ডের মার্জনা, বিলম্বন ও বিরাম মঞ্জুর করিবার এবং যে−কোন দণ্ড মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করিবার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকিবে।
রাষ্ট্রপতি-পদের মেয়াদ

৫০। (১) এই সংবিধানের বিধানাবলী সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি কার্যভার গ্রহণের তারিখ হইতে পাঁচ বৎসরের মেয়াদে তাঁহার পদে অধিষ্ঠিত থাকিবেন:

তবে শর্ত থাকে যে, রাষ্ট্রপতির পদের মেয়াদ শেষ হওয়া সত্ত্বেও তাঁহার উত্তরাধিকারী-কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত তিনি স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন।

(২) একাদিক্রমে হউক বা না হউক-দুই মেয়াদের অধিক রাষ্ট্রপতির পদে কোন ব্যক্তি অধিষ্ঠিত থাকিবেন না।

(৩) স্পীকারের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে রাষ্ট্রপতি স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন।

(৪) রাষ্ট্রপতি তাঁহার কার্যভারকালে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হইবার যোগ্য হইবেন না, এবং কোন সংসদ-সদস্য রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হইলে রাষ্ট্রপতিরূপে তাঁহার কার্যভার গ্রহণের দিনে সংসদে তাঁহার আসন শূন্য হইবে।

রাষ্ট্রপতির দায়মুক্তি

৫১। (১) এই সংবিধানের ৫২ অনুচ্ছেদের হানি না ঘটাইয়া বিধান করা হইতেছে যে, রাষ্ট্রপতি তাঁহার দায়িত্ব পালন করিতে গিয়া কিংবা অনুরূপ বিবেচনায় কোন কার্য করিয়া থাকিলে বা না করিয়া থাকিলে সেইজন্য তাঁহাকে কোন আদালতে জবাবদিহি করিতে হইবে না, তবে এই দফা সরকারের বিরুদ্ধে কার্যধারা গ্রহণে কোন ব্যক্তির অধিকার ক্ষুণ্ন করিবে না।

(২) রাষ্ট্রপতির কার্যভারকালে তাঁহার বিরুদ্ধে কোন আদালতে কোন প্রকার ফৌজদারী কার্যধারা দায়ের করা বা চালু রাখা যাইবে না এবং তাঁহার গ্রেফতার বা কারাবাসের জন্য কোন আদালত হইতে পরোয়ানা জারী করা যাইবে না।

রাষ্ট্রপতির অভিশংসন

৫২। (১) এই সংবিধান লংঘন বা গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগে রাষ্ট্রপতিকে অভিশংসিত করা যাইতে পারিবে; ইহার জন্য সংসদের মোট সদস্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের স্বাক্ষরে অনুরূপ অভিযোগের বিবরণ লিপিবদ্ধ করিয়া একটি প্রস্তাবের নোটিশ স্পীকারের নিকট প্রদান করিতে হইবে; স্পীকারের নিকট অনুরূপ নোটিশ প্রদানের দিন হইতে চৌদ্দ দিনের পূর্বে বা ত্রিশ দিনের পর এই প্রস্তাব আলোচিত হইতে পারিবে না এবং সংসদ অধিবেশনরত না থাকিলে স্পীকার অবিলম্বে সংসদ আহবান করিবেন।

(২) এই অনুচ্ছেদের অধীন কোন অভিযোগ তদন্তের জন্য সংসদ কর্তৃক নিযুক্ত বা আখ্যায়িত কোন আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা কর্তৃপক্ষের নিকট সংসদ রাষ্ট্রপতির আচরণ গোচর করিতে পারিবেন।

(৩) অভিযোগ বিবেচনাকালে রাষ্ট্রপতির উপস্থিত থাকিবার এবং প্রতিনিধি প্রেরণের অধিকার থাকিবে।

(৪) অভিযোগ বিবেচনার পর মোট সদস্য-সংখ্যার অন্যূন দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে অভিযোগ যথার্থ বলিয়া ঘোষণা করিয়া সংসদ কোন প্রস্তাব গ্রহণ করিলে প্রস্তাব গৃহীত হইবার তারিখে রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হইবে।

(৫) এই সংবিধানের ৫৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী স্পীকার কর্তৃক রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালনকালে এই অনুচ্ছেদের বিধানাবলী এই পরিবর্তন সাপেক্ষে প্রযোজ্য হইবে যে, এই অনুচ্ছেদের (১) দফায় স্পীকারের উল্লেখ ডেপুটি স্পীকারের উল্লেখ বলিয়া গণ্য হইবে এবং (৪) দফায় রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হইবার উল্লেখ স্পীকারের পদ শূন্য হইবার উল্লেখ বলিয়া গণ্য হইবে; এবং (৪) দফায় বর্ণিত কোন প্রস্তাব গৃহীত হইলে স্পীকার রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালনে বিরত হইবেন।

অসামর্থ্যের কারণে রাষ্ট্রপতির অপসারণ

৫৩। (১) শারীরিক বা মানসিক অসামর্থ্যের কারণে রাষ্ট্রপতিকে তাঁহার পদ হইতে অপসারিত করা যাইতে পারিবে; ইহার জন্য সংসদের মোট সদস্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের স্বাক্ষরে কথিত অসামর্থ্যের বিবরণ লিপিবদ্ধ করিয়া একটি প্রস্তাবের নোটিশ স্পীকারের নিকট প্রদান করিতে হইবে।

(২) সংসদ অধিবেশনরত না থাকিলে নোটিশ প্রাপ্তিমাত্র স্পীকার সংসদের অধিবেশন আহবান করিবেন এবং একটি চিকিৎসা-পর্ষদ (অতঃপর এই অনুচ্ছেদে “পর্ষদ” বলিয়া অভিহিত) গঠনের প্রস্তাব আহ্বান করিবেন এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তাব উত্থাপিত ও গৃহীত হইবার পর স্পীকার তৎক্ষণাৎ উক্ত নোটিশের একটি প্রতিলিপি রাষ্ট্রপতির নিকট প্রেরণের ব্যবস্থা করিবেন এবং তাঁহার সহিত এই মর্মে স্বাক্ষরযুক্ত অনুরোধ জ্ঞাপন করিবেন যে, অনুরূপ অনুরোধ জ্ঞাপনের তারিখ হইতে দশ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতি যেন পর্ষদের নিকট পরীক্ষিত হইবার জন্য উপস্থিত হন।

(৩) অপসারণের জন্য প্রস্তাবের নোটিশ স্পীকারের নিকট প্রদানের পর হইতে চৌদ্দ দিনের পূর্বে বা ত্রিশ দিনের পর প্রস্তাবটি ভোটে দেওয়া যাইবে না, এবং অনুরূপ মেয়াদের মধ্যে প্রস্তাবটি উত্থাপনের জন্য পুনরায় সংসদ আহ্বানের প্রয়োজন হইলে স্পীকার সংসদ আহ্বান করিবেন।

(৪) প্রস্তাবটি বিবেচিত হইবার কালে রাষ্ট্রপতির উপস্থিত থাকিবার এবং প্রতিনিধি প্রেরণের অধিকার থাকিবে।

(৫) প্রস্তাবটি সংসদে উত্থাপনের পূর্বে রাষ্ট্রপতি পর্ষদের দ্বারা পরীক্ষিত হইবার জন্য উপস্থিত না হইয়া থাকিলে প্রস্তাবটি ভোটে দেওয়া যাইতে পারিবে এবং সংসদের মোট সদস্য-সংখ্যার অন্যূন দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে তাহা গৃহীত হইলে প্রস্তাবটি গৃহীত হইবার তারিখে রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হইবে।

(৬) অপসারণের জন্য প্রস্তাবটি সংসদে উস্থাপিত হইবার পূর্বে রাষ্ট্রপতি পর্ষদের নিকট পরীক্ষিত হইবার জন্য উপস্থিত হইয়া থাকিলে সংসদের নিকট পর্ষদের মতামত পেশ করিবার সুযোগ না দেওয়া পর্যন্ত প্রস্তাবটি ভোটে দেওয়া যাইবে না।

(৭) সংসদ কর্তৃক প্রস্তাবটি ও পর্ষদের রিপোর্ট (যাহা এই অনুচ্ছেদের (২) দফা অনুসারে পরীক্ষার সাত দিনের মধ্যে দাখিল করা হইবে এবং অনুরূপভাবে দাখিল না করা হইলে তাহা বিবেচনার প্রয়োজন হইবে না) বিবেচিত হইবার পর সংসদের মোট সদস্য-সংখ্যার অন্যূন দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে প্রস্তাবটি গৃহীত হইলে তাহা গৃহীত হইবার তারিখে রাষ্ট্রপতি পদ শূন্য হইবে।

অনুপস্থিতি প্রভৃতির-কালে রাষ্ট্রপতি-পদে স্পীকার
৫৪। রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হইলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে ক্ষেত্রমত রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত কিংবা রাষ্ট্রপতি পুনরায় স্বীয় কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত স্পীকার রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করিবেন।
২য় পরিচ্ছেদ
প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভা
মন্ত্রিসভা

৫৫। (১) প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের একটি মন্ত্রিসভা থাকিবে এবং প্রধানমন্ত্রী ও সময়ে সময়ে তিনি যেরূপ স্থির করিবেন, সেইরূপ অন্যান্য মন্ত্রী লইয়া এই মন্ত্রিসভা গঠিত হইবে।

(২) প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক বা তাঁহার কর্তত্বে এই সংবিধান-অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী ক্ষমতা প্রযুক্ত হইবে।

(৩) মন্ত্রিসভা যৌথভাবে সংসদের নিকট দায়ী থাকিবেন।

(৪) সরকারের সকল নির্বাহী ব্যবস্থা রাষ্ট্রপতির নামে গৃহীত হইয়াছে বলিয়া প্রকাশ করা হইবে।

(৫) রাষ্ট্রপতির নামে প্রণীত আদেশসমূহ ও অন্যান্য চুক্তিপত্র কিরূপে সত্যায়িত বা প্রমাণীকৃত হইবে, রাষ্ট্রপতি তাহা বিধিসমূহ-দ্বারা নির্ধারণ করিবেন এবং অনুরূপভাবে সত্যায়িত বা প্রমাণীকৃত কোন আদেশ বা চুক্তিপত্র যথাযথভাবে প্রণীত বা সম্পাদিত হয় নাই বলিয়া তাহার বৈধতা সম্পর্কে কোন আদালতে প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।

(৬) রাষ্ট্রপতি সরকারী কার্যাবলী বন্টন ও পরিচালনার জন্য বিধিসমূহ প্রণয়ন করিবেন।

মন্ত্রিগণ

৫৬। (১) একজন প্রধানমন্ত্রী থাকিবেন এবং প্রধানমন্ত্রী যেরূপ নির্ধারণ করিবেন, সেইরূপ অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপ-মন্ত্রী থাকিবেন।

(২) প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপ-মন্ত্রীদিগকে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দান করিবেন:

তবে শর্ত থাকে যে, তাঁহাদের সংখ্যার অন্যূন নয়-দশমাংশ সংসদ-সদস্যগণের মধ্য হইতে নিযুক্ত হইবেন এবং অনধিক এক-দশমাংশ সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হইবার যোগ্য ব্যক্তিগণের মধ্য হইতে মনোনীত হইতে পারিবেন।

(৩) যে সংসদ-সদস্য সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের আস্থাভাজন বলিয়া রাষ্ট্রপতির নিকট প্রতীয়মান হইবেন, রাষ্ট্রপতি তাঁহাকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করিবেন।

(৪) সংসদ ভাংগিয়া যাওয়া এবং সংসদ-সদস্যদের অব্যবহিত পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মধ্যবর্তীকালে এই অনুচ্ছেদের (২) বা (৩) দফার অধীন নিয়োগ দানের প্রয়োজন দেখা দিলে সংসদ ভাংগিয়া যাইবার অব্যবহিত পূর্বে যাঁহারা সংসদ-সদস্য ছিলেন, এই দফার উদ্দেশ্যসাধনকল্পে তাঁহারা সদস্যরূপে বহাল রহিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন।

প্রধানমন্ত্রীর পদের মেয়াদ

৫৭। (১) প্রধানমন্ত্রীর পদ শূন্য হইবে, যদি-

(ক) তিনি কোন সময়ে রাষ্ট্রপতির নিকট পদত্যাগপত্র প্রদান করেন; অথবা

(খ) তিনি সংসদ-সদস্য না থাকেন।

(২) সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থন হারাইলে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করিবেন কিংবা সংসদ ভাংগিয়া দিবার জন্য লিখিতভাবে রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শদান করিবেন এবং তিনি অনুরূপ পরামর্শদান করিলে রাষ্ট্রপতি, অন্য কোন সংসদ-সদস্য সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের আস্থাভাজন নহেন এই মর্মে সন্তুষ্ট হইলে, সংসদ ভাংগিয়া দিবেন।

(৩) প্রধানমন্ত্রীর উত্তরাধিকারী কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীকে স্বীয় পদে বহাল থাকিতে এই অনুচ্ছেদের কোন কিছুই অযোগ্য করিবে না।

অন্যান্য মন্ত্রীর পদের মেয়াদ

৫৮। (১) প্রধানমন্ত্রী ব্যতীত অন্য কোন মন্ত্রীর পদ শূন্য হইবে, যদি-

(ক) তিনি রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করিবার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নিকট পদত্যাগপত্র প্রদান করেন;

(খ) তিনি সংসদ-সদস্য না থাকেন, তবে ৫৬ অনুচ্ছেদের (২) দফার শর্তাংশের অধীনে মনোনীত মন্ত্রীর ক্ষেত্রে ইহা প্রযোজ্য হইবে না;

(গ) এই অনুচ্ছেদের (২) দফা অনুসারে রাষ্ট্রপতি অনুরূপ নির্দেশ দান করেন; অথবা

(ঘ) এই অনুচ্ছেদের (৪) দফায় যেরূপ বিধান করা হইয়াছে তাহা কার্যকর হয়।

(২) প্রধানমন্ত্রী যে কোন সময়ে কোন মন্ত্রীকে পদত্যাগ করিতে অনুরোধ করিতে পারিবেন এবং উক্ত মন্ত্রী অনুরূপ অনুরোধ পালনে অসমর্থ হইলে তিনি রাষ্ট্রপতিকে উক্ত মন্ত্রীর নিয়োগের অবসান ঘটাইবার পরামর্শ দান করিতে পারিবেন।

(৩) সংসদ ভাংগিয়া যাওয়া অবস্থায় যেকোন সময়ে কোন মন্ত্রীকে স্বীয় পদে বহাল থাকিতে এই অনুচ্ছেদের (১) দফার (ক), (খ) ও (ঘ) উপ-দফার কোন কিছুই অযোগ্য করিবে না।

(৪) প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করিলে বা স্বীয় পদে বহাল না থাকিলে মন্ত্রীদের প্রত্যেকে পদত্যাগ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে; তবে এই পরিচ্ছেদের বিধানাবলী-সাপেক্ষে তাঁহাদের উত্তরাধিকারীগণ কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত তাঁহারা স্ব স্ব পদে বহাল থাকিবেন।

(৫) এই অনুচ্ছেদে “মন্ত্রী” বলিতে প্রতিমন্ত্রী ও উপ-মন্ত্রী অন্তভর্ুক্ত।

৫৮ক [বিলুপ্ত]
২৯[ ***]
২ক পরিচ্ছেদ
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার [সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ১৪ নং আইন)-এর ২১ ধারাবলে পরিচ্ছেদটি বিলুপ্ত।]
[ বিলুপ্ত]
সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ১৪ নং আইন)-এর ২১ ধারাবলে পরিচ্ছেদটি বিলুপ্ত
৩য় পরিচ্ছেদ
স্থানীয় শাসন
স্থানীয় শাসন

৫৯। (১) আইনানুযায়ী নির্বাচিত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত প্রতিষ্ঠানসমূহের উপর প্রজাতন্ত্রের প্রত্যেক প্রশাসনিক একাংশের স্থানীয় শাসনের ভার প্রদান করা হইবে।

(২) এই সংবিধান ও অন্য কোন আইন-সাপেক্ষে সংসদ আইনের দ্বারা যেরূপ নির্দিষ্ট করিবেন, এই অনুচ্ছেদের (১) দফায় উল্লিখিত প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান যথোপযুক্ত প্রশাসনিক একাংশের মধ্যে সেইরূপ দায়িত্ব পালন করিবেন এবং অনুরূপ আইনে নিম্নলিখিত বিষয় সংক্রান্ত দায়িত্ব অন্তর্ভুক্ত হইতে পারিবে:

(ক) প্রশাসন ও সরকারী কর্মচারীদের কার্য;

(খ) জনশৃংখলা রক্ষা;

(ক) জনসাধারণের কার্য ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্পর্কিত পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন।

স্থানীয় শাসন সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতা
৬০। এই সংবিধানের ৫৯ অনুচ্ছেদের বিধানাবলীকে পূর্ণ কার্যকরতাদানের উদ্দেশ্যে সংসদ আইনের দ্বারা উক্ত অনুচ্ছেদে উল্লিখিত স্থানীয় শাসন সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানসমূহকে স্থানীয় প্রয়োজনে কর আরোপ করিবার ক্ষমতাসহ বাজেট প্রস্তুতকরণ ও নিজস্ব তহবিল রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষমতা প্রদান করিবেন।]
৪র্থ পরিচ্ছেদ
প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগ
সর্বাধিনায়কতা
৩০[ ৬১। বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগসমূহের সর্বাধিনায়কতা রাষ্ট্রপতির উপর ন্যস্ত হইবে এবং আইনের দ্বারা তাহার প্রয়োগ নিয়ন্ত্রিত হইবে]
প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগে ভর্তি প্রভৃতি

৬২। (১) সংসদ আইনের দ্বারা নিম্নলিখিত বিষয়সমূহ নিয়ন্ত্রণ করিবেন:

(ক) বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগসমূহ ও উক্ত কর্মবিভাগসমূহের সংরক্ষিত অংশসমূহ গঠন ও রক্ষণাবেক্ষণ;

(খ) উক্ত কর্মবিভাগসমূহে কমিশন মঞ্জুরী;

(গ) প্রতিরক্ষা-বাহিনীসমূহের প্রধানদের নিয়োগদান ও তাঁহাদের বেতন ও ভাতা-নির্ধারণ; এবং

(ঘ) উক্ত কর্মবিভাগসমূহ ও সংরক্ষিত অংশসমূহ-সংক্রান্ত শৃঙ্খলামূলক ও অন্যান্য বিষয়।

(২) সংসদ আইনের দ্বারা এই অনুচ্ছেদের (১) দফায় বর্ণিত বিষয়সমূহের জন্য বিধান না করা পর্যন্ত অনুরূপ যে সকল বিষয় প্রচলিত আইনের অধীন নহে, রাষ্ট্রপতি আদেশের দ্বারা সেই সকল বিষয়ের জন্য বিধান করিতে পারিবেন।

যুদ্ধ

৬৩। (১) সংসদের সম্মতি ব্যতীত যুদ্ধ ঘোষণা করা যাইবে না কিংবা প্রজাতন্ত্র কোন যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করিবেন না।

৩১[ * * *]

৫ম পরিচ্ছেদ
অ্যাটর্ণি -জেনারেল
অ্যাটর্ণি-জেনারেল

৬৪। (১) সুপ্রীম কোর্টের বিচারক হইবার যোগ্য কোন ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের অ্যাটর্ণি-জেনারেল-পদে নিয়োগদান করিবেন।

(২) অ্যাটর্ণি-জেনারেল রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রদত্ত সকল দায়িত্ব পালন করিবেন।

(৩) অ্যাটর্ণি-জেনারেলের দায়িত্ব পালনের জন্য বাংলাদেশের সকল আদালতে তাঁহার বক্তব্য পেশ করিবার অধিকার থাকিবে।

(৪) রাষ্ট্রপতির সন্তোষানুযায়ী সময়সীমা পর্যন্ত অ্যাটর্ণি-জেনারেল স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন এবং রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নির্ধারিত পারিশ্রমিক লাভ করিবেন।

পঞ্চম ভাগ
আইনসভা
১ম পরিচ্ছেদ
সংসদ
সংসদ-প্রতিষ্ঠা

৬৫। (১) “জাতীয় সংসদ” নামে বাংলাদেশের একটি সংসদ থাকিবে এবং এই সংবিধানের বিধানাবলী-সাপেক্ষে প্রজাতন্ত্রের আইনপ্রণয়ন-ক্ষমতা সংসদের উপর ন্যস্ত হইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, সংসদের আইন দ্বারা যে কোন ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষকে আদেশ, বিধি, প্রবিধান, উপ-আইন বা আইনগত কার্যকরতাসম্পন্ন অন্যান্য চুক্তিপত্র প্রণয়নের ক্ষমতার্পণ হইতে এই দফার কোন কিছুই সংসদকে নিবৃত্ত করিবে না।

(২) একক আঞ্চলিক নির্বাচনী এলাকাসমূহ হইতে প্রত্যক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে আইনানুযায়ী নির্বাচিত তিন শত সদস্য লইয়া এবং এই অনুচ্ছেদের (৩) দফার কার্যকরতাকালে উক্ত দফায় বর্ণিত সদস্যদিগকে লইয়া সংসদ গঠিত হইবে; সদস্যগণ সংসদ-সদস্য বলিয়া অভিহিত হইবেন।

৩২[ (৩) সংবিধান (চতুর্দশ সংশোধন) আইন, ২০০৪ প্রবর্তনকালে বিদ্যমান সংসদের অব্যবহিত পরবর্তী সংসদের প্রথম বৈঠকের তারিখ হইতে শুরু করিয়া দশ বৎসর কাল অতিবাহিত হইবার অব্যবহিত পরবর্তীকালে সংসদ ভাংগিয়া না যাওয়া পর্যন্ত ৩৩[ পঞ্চাশটি আসন]কেবল মহিলা-সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত থাকিবে এবং তাঁহারা আইনানুযায়ী পূর্বোক্ত সদস্যদের দ্বারা সংসদে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির ভিত্তিতে একক হস্তান্তরযোগ্য ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হইবেন:

তবে শর্ত থাকে যে, এই দফার কোন কিছুই এই অনুচ্ছেদের (২) দফার অধীন কোন আসনে কোন মহিলার নির্বাচন নিবৃত্ত করিবে না]

৩৪[ (৩ক) সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ প্রবর্তনকালে বিদ্যমান সংসদের অবশিষ্ট মেয়াদে এই অনুচ্ছেদের (২) দফায় বর্ণিত প্রত্যক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত তিন শত সদস্য এবং (৩) দফায় বর্ণিত পঞ্চাশ মহিলা-সদস্য লইয়া সংসদ গঠিত হইবে।]
(৪) রাজধানীতে সংসদের আসন থাকিবে।

সংসদে নির্বাচিত হইবার যোগ্যতা ও অযোগ্যতা

৬৬। (১) কোন ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক হইলে এবং তাঁহার বয়স পঁচিশ বৎসর পূর্ণ হইলে এই অনুচ্ছেদের (২) দফায় বর্ণিত বিধান-সাপেক্ষে তিনি সংসদের সদস্য নির্বাচিত হইবার এবং সংসদ-সদস্য থাকিবার যোগ্য হইবেন।

(২) কোন ব্যক্তি সংসদের সদস্য নির্বাচিত হইবার এবং সংসদ-সদস্য থাকিবার যোগ্য হইবেন না, যদি

(ক) কোন উপযুক্ত আদালত তাঁহাকে অপ্রকৃতিস্থ বলিয়া ঘোষণা করেন;

(খ) তিনি দেউলিয়া ঘোষিত হইবার পর দায় হইতে অব্যাহতি লাভ না করিয়া থাকেন;

(গ) তিনি কোন বিদেশী রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করেন কিংবা কোন বিদেশী রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করেন;

(ঘ) তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোন ফৌজদারী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া অনূ্যন দুই বৎসরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তাঁহার মুক্তিলাভের পর পাঁচ বৎসরকাল অতিবাহিত না হইয়া থাকে;

৩৫[ ***]

৩৬[ (ঙ) তিনি ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ যোগসাজশকারী (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) আদেশের অধীন যে কোন অপরাধের জন্য দণ্ডিত হইয়া থাকেন;

(চ) আইনের দ্বারা পদাধিকারীকে অযোগ্য ঘোষণা করিতেছে না, এমন পদ ব্যতীত তিনি প্রজাতন্ত্রের কর্মে কোন লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত থাকেন; অথবা]

(ছ) তিনি কোন আইনের দ্বারা বা অধীন অনুরূপ নির্বাচনের জন্য অযোগ্য হন।

৩৭[ (২ক) এই অনুচ্ছেদের (২) দফার (গ) উপ-দফা তে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন ব্যক্তি জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক হইয়া কোন বিদেশী রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করিলে এবং পরবর্তীতে উক্ত ব্যক্তি-

(ক) দ্বৈত নাগরিকত্ব গ্রহণের ক্ষেত্রে, বিদেশী রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ত্যাগ করিলে; কিংবা

(খ) অন্য ক্ষেত্রে, পুনরায় বাংলাদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করিলে-

এই অনুচ্ছেদের উদ্দেশ্য সাধনকল্পে তিনি বিদেশী রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন না।]

৩৮[ (৩) এই অনুচেছদের উদ্দেশ্য সাধনকল্পে কোন ব্যক্তি কেবল রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পীকার, ডেপুটি স্পীকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপ-মন্ত্রী হইবার কারণে প্রজাতন্ত্রের কর্মে কোন লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত বলিয়া গণ্য হইবেন না।]

(৪) কোন সংসদ-সদস্য তাঁহার নির্বাচনের পর এই অনুচ্ছেদের (২) দফায় বর্ণিত অযোগ্যতার অধীন হইয়াছেন কিনা কিংবা এই সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুসারে কোন সংসদ-সদস্যের আসন শূন্য হইবে কিনা, সে সম্পর্কে কোন বিতর্ক দেখা দিলে শুনানী ও নিষ্পত্তির জন্য প্রশ্নটি নির্বাচন কমিশনের নিকট প্রেরিত হইবে এবং অনুরূপ ক্ষেত্রে কমিশনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে।

(৫) এই অনুচ্ছেদের (৪) দফার বিধানাবলী যাহাতে পূর্ণ কার্যকরতা লাভ করিতে পারে, সেই উদ্দেশ্যে নির্বাচন কমিশনকে ক্ষমতাদানের জন্য সংসদ যেরূপ প্রয়োজন বোধ করিবেন, আইনের দ্বারা সেইরূপ বিধান করিতে পারিবেন।

সদস্যদের আসন শূন্য হওয়া

৬৭। (১) কোন সংসদ-সদস্যের আসন শূন্য হইবে, যদি

(ক) তাঁহার নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম বৈঠকের তারিখ হইতে নব্বই দিনের মধ্যে তিনি তৃতীয় তফসিলে নির্ধারিত শপথ গ্রহণ বা ঘোষণা করিতে ও শপথপত্রে বা ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরদান করিতে অসমর্থ হন:

তবে শর্ত থাকে যে, অনুরূপ মেয়াদ অতিবাহিত হইবার পূর্বে স্পীকার যথার্থ কারণে তাহা বর্ধিত করিতে পারিবেন;

(খ) সংসদের অনুমতি না লইয়া তিনি একাদিক্রমে নব্বই বৈঠক-দিবস অনুপস্থিত থাকেন;

(গ) সংসদ ভাঙ্গিয়া যায়;

(ঘ) তিনি এই সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের (২) দফার অধীন অযোগ্য হইয়া যান; অথবা

(ঙ) এই সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে বর্ণিত পরিস্থিতির উদ্ভব হয়।

(২) কোন সংসদ-সদস্য স্পীকারের নিকট স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন, এবং স্পীকার- কিংবা স্পীকারের পদ শূন্য থাকিলে বা অন্য কোন কারণে স্পীকার স্বীয় দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে ডেপুটি স্পীকার- যখন উক্ত পত্র প্রাপ্ত হন, তখন হইতে উক্ত সদস্যের আসন শূন্য হইবে।

সংসদ-সদস্যদের৩৯[ পারিশ্রমিক] প্রভৃতি
৬৮। সংসদের আইন দ্বারা কিংবা অনুরূপভাবে নির্ধারিত না হওয়া পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি কর্তৃক আদেশের দ্বারা যেরূপ নির্ধারিত হইবে, সংসদ-সদস্যগণ সেইরূপ৪০[ পারিশ্রমিক], ভাতা ও বিশেষ-অধিকার লাভ করিবেন।
শপথ গ্রহণের পূর্বে আসন গ্রহণ বা ভোট দান করিলে সদস্যের অর্থদন্ড
৬৯। কোন ব্যক্তি এই সংবিধানের বিধান অনুযায়ী শপথ গ্রহণ বা ঘোষণা করিবার এবং শপথপত্রে বা ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরদান করিবার পূর্বে কিংবা তিনি সংসদ-সদস্য হইবার যোগ্য নহেন বা অযোগ্য হইয়াছেন জানিয়া সংসদ-সদস্যরূপে আসনগ্রহণ বা ভোটদান করিলে তিনি প্রতি দিনের অনুরূপ কার্যের জন্য প্রজাতন্ত্রের নিকট দেনা হিসাবে উসুলযোগ্য এক হাজার টাকা করিয়া অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
রাজনৈতিক দল হইতে পদত্যাগ বা দলের বিপক্ষে ভোটদানের কারণে আসন শূন্য হওয়া

৪১[ ৭০। কোন নির্বাচনে কোন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরুপে মনোনীত হইয়া কোন ব্যক্তি সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হইলে তিনি যদি-

(ক) উক্ত দল হইতে পদত্যাগ করেন, অথবা

(খ) সংসদে উক্ত দলের বিপক্ষে ভোটদান করেন,

তাহা হইলে সংসদে তাঁহার আসন শূন্য হইবে, তবে তিনি সেই কারণে পরবর্তী কোন নির্বাচনে সংসদ-সদস্য হইবার অযোগ্য হইবেন না।]

দ্বৈত-সদস্যতায় বাধা

৭১। (১) কোন ব্যক্তি একই সময়ে দুই বা ততোধিক নির্বাচনী এলাকার সংসদ-সদস্য হইবেন না।

(২) কোন ব্যক্তির একই সময়ে দুই বা ততোধিক নির্বাচনী এলাকা হইতে নির্বাচন প্রার্থী হওয়ায় এই অনুচ্ছেদের (১) দফায় বর্ণিত কোন কিছুই প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করিবে না, তবে তিনি যদি একাধিক নির্বাচনী এলাকা হইতে নির্বাচিত হন তাহা হইলে-

(ক) তাঁহার সর্বশেষ নির্বাচনের ত্রিশ দিনের মধ্যে তিনি কোন্ নির্বাচনী এলাকার প্রতিনিধিত্ব করিতে ইচ্ছুক, তাহা জ্ঞাপন করিয়া নির্বাচন কমিশনকে একটি স্বাক্ষরযুক্ত ঘোষণা প্রদান করিবেন এবং তিনি অন্য যে সকল নির্বাচনী এলাকা হইতে নির্বাচিত হইয়াছিলেন, অতঃপর সেই সকল এলাকার আসনসমূহ শূন্য হইবে;

(খ) এই দফার (ক) উপ-দফা মান্য করিতে অসমর্থ হইলে তিনি যে সকল আসনে নির্বাচিত হইয়াছিলেন, সেই সকল আসন শূন্য হইবে; এবং

(গ) এই দফার উপরি-উক্ত বিধানসমূহ যতখানি প্রযোজ্য, ততখানি পালন না করা পর্যন্ত নির্বাচিত ব্যক্তি সংসদ-সদস্যের শপথ গ্রহণ বা ঘোষণা করিতে ও শপথপত্রে বা ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরদান করিতে পারিবেন না।

সংসদের অধিবেশন

৭২। (১) সরকারী বিজ্ঞপ্তি-দ্বারা রাষ্ট্রপতি সংসদ আহ্বান, স্থগিত ও ভঙ্গ করিবেন এবং সংসদ আহ্বানকালে রাষ্ট্রপতি প্রথম বৈঠকের সময় ও স্থান নির্ধারণ করিবেন:

৪২[ তবে শর্ত থাকে ৪৩[ ১২৩ অনুচ্ছেদের (৩) দফার (ক) উপ-দফায় উল্লিখিত নব্বই দিন সময় ব্যতীত অন্য সময়ে]যে, সংসদের এক অধিবেশনের সমাপ্তি ও পরবর্তী অধিবেশনের প্রথম বৈঠকের মধ্যে ষাট দিনের অতিরিক্ত বিরতি থাকিবে না:

তবে আরও শর্ত থাকে যে, এই দফার অধীন তাঁহার দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক লিখিতভাবে প্রদত্ত পরামর্শ অনুযায়ী কার্য করিবেন।]

(২) এই অনুচ্ছেদের (১) দফার বিধানাবলী সত্ত্বেও সংসদ-সদস্যদের যে কোন সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষিত হইবার ত্রিশ দিনের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠানের জন্য সংসদ আহ্বান করা হইবে।

(৩) রাষ্ট্রপতি পূর্বে ভাঙ্গিয়া না দিয়া থাকিলে প্রথম বৈঠকের তারিখ হইতে পাঁচ বৎসর অতিবাহিত হইলে সংসদ ভাঙ্গিয়া যাইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, প্রজাতন্ত্র যুদ্ধে লিপ্ত থাকিবার কালে সংসদের আইন-দ্বারা অনুরূপ মেয়াদ এককালে অনধিক এক বৎসর বর্ধিত করা যাইতে পারিবে, তবে যুদ্ধ সমাপ্ত হইলে বর্ধিত মেয়াদ কোনক্রমে ছয় মাসের অধিক হইবে না।

(৪) সংসদ ভঙ্গ হইবার পর এবং সংসদের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পূর্বে রাষ্ট্রপতির নিকট যদি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, প্রজাতন্ত্র যে যুদ্ধে লিপ্ত রহিয়াছেন, সেই যুদ্ধাবস্থার বিদ্যমানতার জন্য সংসদ পুনরাহ্বান করা প্রয়োজন, তাহা হইলে যে সংসদ ভাঙ্গিয়া দেওয়া হইয়াছিল, রাষ্ট্রপতি তাহা আহবান করিবেন।

৪৪[ * * *]

(৫) এই অনুচ্ছেদের (১) দফার বিধানাবলী-সাপেক্ষে কার্যপ্রণালী-বিধি-দ্বারা বা অন্যভাবে সংসদ যেরূপ নির্ধারণ করিবেন, সংসদের বৈঠকসমূহ সেইরূপ সময়ে ও স্থানে অনুষ্ঠিত হইবে।

সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণ ও বাণী

৭৩। (১) রাষ্ট্রপতি সংসদে ভাষণদান এবং বাণী প্রেরণ করিতে পারিবেন।

(২) সংসদ-সদস্যদের প্রত্যেক সাধারণ নির্বাচনের পর প্রথম অধিবেশনের সূচনায় এবং প্রত্যেক বৎসর প্রথম অধিবেশনের সূচনায় রাষ্ট্রপতি সংসদে ভাষণ দান করিবেন।

(৩) রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রদত্ত ভাষণ শ্রবণ বা প্রেরিত বাণী প্রাপ্তির পর সংসদ উক্ত ভাষণ বা বাণী সম্পর্কে আলোচনা করিবেন।

সংসদ সম্পর্কে মন্ত্রীগণের অধিকার

৪৫[ ৭৩ক। (১) প্রত্যেক মন্ত্রী সংসদে বক্তৃতা করিতে এবং অন্যভাবে ইহার কার্যাবলীতে অংশগ্রহণ করিতে অধিকারী হইবেন, তবে যদি তিনি সংসদ-সদস্য না হন, তাহা হইলে তিনি ভোটদান করিতে পারিবেন না৪৬[ এবং তিনি কেবল তাঁহার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত বিষয় সম্পর্কে বক্তব্য রাখিতে পারিবেন]।

(২) এই অনুচ্ছেদে “মন্ত্রী” বলিতে প্রধানমন্ত্রী ৪৭[ * * *], প্রতিমন্ত্রী ও উপ-মন্ত্রী অন্তর্ভুক্ত।]

স্পীকার ও ডেপুটি স্পীকার

৭৪। (১) কোন সাধারণ নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম বৈঠকে সংসদ-সদস্যদের মধ্য হইতে সংসদ একজন স্পীকার ও একজন ডেপুটি স্পীকার নির্বাচিত করিবেন, এবং এই দুই পদের যে কোনটি শূন্য হইলে সাত দিনের মধ্যে কিংবা ঐ সময়ে সংসদ বৈঠকরত না থাকিলে পরবর্তী প্রথম বৈঠকে তাহা পূর্ণ করিবার জন্য সংসদ-সদস্যদের মধ্য হইতে একজনকে নির্বাচিত করিবেন।

(২) স্পীকার বা ডেপুটি স্পীকারের পদ শূন্য হইবে, যদি

(ক) তিনি সংসদ-সদস্য না থাকেন;

(খ) তিনি মন্ত্রী-পদ গ্রহণ করেন;

(গ) পদ হইতে তাঁহার অপসারণ দাবী করিয়া মোট সংসদ-সদস্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে সমর্থিত কোন প্রস্তাব (প্রস্তাবটি উত্থাপনের অভিপ্রায় জ্ঞাপন করিয়া অন্যূন চৌদ্দ দিনের নোটিশ প্রদানের পর) সংসদে গৃহীত হয়;

(ঘ) তিনি রাষ্ট্রপতির নিকট স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে তাঁহার পদ ত্যাগ করেন;

(ঙ) কোন সাধারণ নির্বাচনের পর অন্য কোন সদস্য তাঁহার কার্যভার গ্রহণ করেন; অথবা

(চ) ডেপুটি স্পীকারের ক্ষেত্রে, তিনি স্পীকারের পদে যোগদান করেন।

(৩) স্পীকারের পদ শূন্য হইলে বা তিনি ৪৮[ রাষ্ট্রপতিরূপে কার্য করিলে] কিংবা অন্য কোন কারণে তিনি স্বীয় দায়িত্ব পালনে অসমর্থ বলিয়া সংসদ নির্ধারণ করিলে স্পীকারের সকল দায়িত্ব ডেপুটি স্পীকার পালন করিবেন, কিংবা ডেপুটি স্পীকারের পদও শূন্য হইলে সংসদের কার্যপ্রণালী-বিধি-অনুযায়ী কোন সংসদ-সদস্য তাহা পালন করিবেন; এবং সংসদের কোন বৈঠকে স্পীকারের অনুপস্থিতিতে ডেপুটি স্পীকার কিংবা ডেপুটি স্পীকারও অনুপস্থিত থাকিলে সংসদের কার্যপ্রণালী-বিধি-অনুযায়ী কোন সংসদ-সদস্য স্পীকারের দায়িত্ব পালন করিবেন।

(৪) সংসদের কোন বৈঠকে স্পীকারকে তাঁহার পদ হইতে অপসারণের জন্য কোন প্রস্তাব বিবেচনাকালে স্পীকার (কিংবা ডেপুটি স্পীকারকে তাঁহার পদ হইতে অপসারণের জন্য কোন প্রস্তাব বিবেচনাকালে ডেপুটি স্পীকার) উপস্থিত থাকিলেও সভাপতিত্ব করিবেন না এবং এই অনুচ্ছেদের (৩) দফায় বর্ণিত ক্ষেত্রমত স্পীকার বা ডেপুটি স্পীকারের অনুপস্থিতিকালীন বৈঠক সম্পর্কে প্রযোজ্য বিধানাবলী অনুরূপ প্রত্যেক বৈঠকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে।

(৫) স্পীকার বা ডেপুটি স্পীকারের অপসারণের জন্য কোন প্রস্তাব সংসদে বিবেচিত হইবার কালে ক্ষেত্রমত স্পীকার বা ডেপুটি স্পীকারের কথা বলিবার ও সংসদের কার্যধারায় অন্যভাবে অংশগ্রহণের অধিকার থাকিবে এবং তিনি কেবল সদস্যরূপে ভোটদানের অধিকারী হইবেন।

(৬) এই অনুচ্ছেদের (২) দফার বিধানাবলী সত্ত্বেও ক্ষেত্রমত স্পীকার বা ডেপুটি স্পীকার তাঁহার উত্তরাধিকারী কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল রহিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে।

কার্যপ্রণালী-বিধি, কোরাম প্রভৃতি

৭৫। (১) এই সংবিধান-সাপেক্ষে

(ক) সংসদ কর্তৃক প্রণীত কার্যপ্রণালী-বিধি-দ্বারা এবং অনুরূপ বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রণীত কার্যপ্রণালী-বিধি-দ্বারা সংসদের কার্যপ্রণালী নিয়ন্ত্রিত হইবে;

(খ) উপস্থিত ও ভোটদানকারী সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে সংসদে সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে, তবে সমসংখ্যক ভোটের ক্ষেত্র ব্যতীত সভাপতি ভোটদান করিবেন না এবং অনুরূপ ক্ষেত্রে তিনি নির্ণায়ক ভোট প্রদান করিবেন;

(গ) সংসদের কোন সদস্যপদ শূন্য রহিয়াছে, কেবল এই কারণে কিংবা সংসদে উপস্থিত হইবার বা ভোটদানের বা অন্য কোন উপায়ে কার্যধারায় অংশগ্রহণের অধিকার না থাকা সত্ত্বেও কোন ব্যক্তি অনুরূপ কার্য করিয়াছেন, কেবল এই কারণে সংসদের কোন কার্যধারা অবৈধ হইবে না।

(২) সংসদের বৈঠক চলাকালে কোন সময়ে উপস্থিত সদস্য-সংখ্যা ষাটের কম বলিয়া যদি সভাপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়, তাহা হইলে তিনি অনূ্যন ষাট জন সদস্য উপস্থিত না হওয়া বৈঠক স্থগিত রাখিবেন কিংবা মুলতবী করিবেন।

সংসদের স্থায়ী কমিটিসমূহ

৭৬। (১) ৪৯[ * * *] সংসদ-সদস্যদের মধ্য হইতে সদস্য লইয়া সংসদ নিম্নলিখিত স্থায়ী কমিটিসমূহ নিয়োগ করিবেন:

(ক) সরকারী হিসাব কমিটি;

(খ) বিশেষ-অধিকার কমিটি; এবং

(গ) সংসদের কার্যপ্রণালী-বিধিতে নির্দিষ্ট অন্যান্য স্থায়ী কমিটি।

(২) সংসদ এই অনুচ্ছেদের (১) দফায় উলি্লখিত কমিটিসমূহের অতিরিক্ত অন্যান্য স্থায়ী কমিটি নিয়োগ করিবেন এবং অনুরূপভাবে নিযুক্ত কোন কমিটি এই সংবিধান ও অন্য কোন আইন-সাপেক্ষে

(ক) খসড়া বিল ও অন্যান্য আইনগত প্রস্তাব পরীক্ষা করিতে পারিবেন;

(খ) আইনের বলবৎকরণ পর্যালোচনা এবং অনুরূপ বলবৎকরণের জন্য ব্যবস্থাদি গ্রহণের প্রস্তাব করিতে পারিবেন;

(গ) জনগুরুত্বসম্পন্ন বলিয়া সংসদ কোন বিষয় সম্পর্কে কমিটিকে অবহিত করিলে সেই বিষয়ে কোন মন্ত্রণালয়ের কার্য বা প্রশাসন সম্বন্ধে অনুসন্ধান বা তদন্ত করিতে পারিবেন এবং কোন মন্ত্রণালয়ের নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধির মাধ্যমে প্রাসঙ্গিক তথ্যাদি সংগ্রহের এবং প্রশ্নাদির মৌখিক বা লিখিত উত্তরলাভের ব্যবস্থা করিতে পারিবেন;

(ঘ) সংসদ কর্তৃক অর্পিত যে কোন দায়িত্ব পালন করিতে পারিবেন।

(৩) সংসদ আইনের দ্বারা এই অনুচ্ছেদের অধীন নিযুক্ত কমিটিসমূহকে

(ক) সাক্ষীদের হাজিরা বলবৎ করিবার এবং শপথ, ঘোষণা বা অন্য কোন উপায়ের অধীন করিয়া তাঁহাদের সাক্ষ্যগ্রহণের;

(খ) দলিলপত্র দাখিল করিতে বাধ্য করিবার;

ক্ষমতা প্রদান করিতে পারিবেন।

ন্যায়পাল

৭৭। (১) সংসদ আইনের দ্বারা ন্যায়পালের পদ-প্রতিষ্ঠার জন্য বিধান করিতে পারিবেন।

(২) সংসদ আইনের দ্বারা ন্যায়পালকে কোন মন্ত্রণালয়, সরকারী কর্মচারী বা সংবিধিবদ্ধ সরকারী কর্তৃপক্ষের যে কোন কার্য সম্পর্কে তদন্ত পরিচালনার ক্ষমতাসহ যেরূপ ক্ষমতা কিংবা যেরূপ দায়িত্ব প্রদান করিবেন, ন্যায়পাল সেইরূপ ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালন করিবেন।

(৩) ন্যায়পাল তাঁহার দায়িত্বপালন সম্পর্কে বাৎসরিক রিপোর্ট প্রণয়ন করিবেন এবং অনুরূপ রিপোর্ট সংসদে উপস্থাপিত হইবে।

সংসদ ও সদস্যদের বিশেষ অধিকার ও দায়মুক্তি

৭৮। (১) সংসদের কার্যধারার বৈধতা সম্পর্কে কোন আদালতে প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।

(২) সংসদের যে সদস্য বা কর্মচারীর উপর সংসদের কার্যপ্রণালী নিয়ন্ত্রণ, কার্যপরিচালনা বা শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষমতা ন্যস্ত থাকিবে, তিনি সকল ক্ষমতা-প্রয়োগ সম্পর্কিত কোন ব্যাপারে কোন আদালতের এখতিয়ারের অধীন হইবেন না।

(৩) সংসদে বা সংসদের কোন কমিটিতে কিছু বলা বা ভোটদানের জন্য কোন সংসদ-সদস্যের বিরুদ্ধে কোন আদালতে কার্যধারা গ্রহণ করা যাইবে না।

(৪) সংসদ কর্তৃক বা সংসদের কর্তৃত্বে কোন রিপোর্ট, কাগজপত্র, ভোট বা কার্যধারা প্রকাশের জন্য কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোন আদালতে কোন কার্যধারা গ্রহণ করা যাইবে না।

(৫) এই অনুচ্ছেদ-সাপেক্ষে সংসদের আইন-দ্বারা সংসদের, সংসদের কমিটিসমূহের এবং সংসদ-সদস্যদের বিশেষ-অধিকার নির্ধারণ করা যাইতে পারিবে।

সংসদ-সচিবালয়

৭৯। (১) সংসদের নিজস্ব সচিবালয় থাকিবে।

(২) সংসদের সচিবালয়ে কর্মচারীদের নিয়োগ ও কর্মের শর্তসমূহ সংসদ আইনের দ্বারা নির্ধারণ করিতে পারিবেন।

(৩) সংসদ কর্তৃক বিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত স্পীকারের সহিত পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি সংসদের সচিবালয়ে কর্মচারীদের নিয়োগ ও কর্মের শর্তসমূহ নির্ধারণ করিয়া বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবেন এবং অনুরূপভাবে প্রণীত বিধিসমূহ যে কোন আইনের বিধান-সাপেক্ষে কার্যকর হইবে।

২য় পরিচ্ছেদ
আইন প্রনয়ন ও অর্থসংক্রান্ত পদ্ধতি
আইন প্রণয়ন পদ্ধতি

৮০। (১) আইনপ্রণয়নের উদ্দেশ্যে সংসদে আনীত প্রত্যেকটি প্রস্তাব বিল আকারে উত্থাপিত হইবে।

(২) সংসদ কর্তৃক কোন বিল গৃহীত হইলে সম্মতির জন্য তাহা রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করিতে হইবে।

৫০[ (৩) রাষ্ট্রপতির নিকট কোন বিল পেশ করিবার পর পনর দিনের মধ্যে তিনি তাহাতে সম্মতিদান করিবেন কিংবা অর্থবিল ব্যতীত অন্য কোন বিলের ক্ষেত্রে বিলটি বা তাহার কোন বিশেষ বিধান পুনর্বিবেচনার কিংবা রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নির্দেশিত কোন সংশোধনী বিবেচনার অনুরোধ জ্ঞাপন করিয়া একটি বার্তাসহ তিনি বিলটি সংসদে ফেরত দিতে পারিবেন; এবং রাষ্ট্রপতি তাহা করিতে অসমর্থ হইলে উক্ত মেয়াদের অবসানে তিনি বিলটিতে সম্মতিদান করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে।]

(৪) রাষ্ট্রপতি যদি বিলটি অনুরূপভাবে সংসদে ফেরত পাঠান, তাহা হইলে সংসদ রাষ্টপতির বার্তাসহ তাহা পুনর্বিবেচনা করিবেন; এবং সংশোধনীসহ বা সংশোধনী ব্যতিরেকে ৫১[ ***] সংসদ পুনরায় বিলটি গ্রহণ করিলে সম্মতির জন্য তাহা রাষ্ট্রপতির নিকট উপস্থাপিত হইবে এবং অনুরূপ উপস্থাপনের সাত দিনের মধ্যে তিনি বিলটিতে সম্মতিদান করিবেন; এবং রাষ্ট্রপতি তাহা করিতে অসমর্থ হইলে উক্ত মেয়াদের অবসানে তিনি বিলটিতে সম্মতিদান করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে।

(৫) সংসদ কর্তৃক গৃহীত বিলটিতে রাষ্ট্রপতি সম্মতিদান করিলে বা তিনি সম্মতিদান করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইলে তাহা আইনে পরিণত হইবে এবং সংসদের আইন বলিয়া অভিহিত হইবে।

অর্থবিল

৮১। (১) এই ভাগে “অর্থবিল” বলিতে কেবল নিম্নলিখিত বিষয়সমূহের সকল বা যে কোন একটি সম্পর্কিত বিধানাবলী-সংবলিত বিল বুঝাইবে:

(ক) কোন কর আরোপ, নিয়ন্ত্রণ, রদবদল, মওকুফ বা রহিতকরণ;

(খ) সরকার কর্তৃক ঋণগ্রহণ বা কোন গ্যারান্টিদান, কিংবা সরকারের আর্থিক দায়-দায়িত্ব সম্পর্কিত আইন সংশোধন;

(গ) সংযুক্ত তহবিলের রক্ষণাবেক্ষণ, অনুরূপ তহবিলে অর্থপ্রদান বা অনুরূপ তহবিল হইতে অর্থ দান বা নির্দিষ্টকরণ;

(ঘ) সংযুক্ত তহবিলের উপর দায় আরোপ কিংবা অনুরূপ কোন দায় রদবদল বা বিলোপ;

(ঙ) সংযুক্ত তহবিল বা প্রজাতন্ত্রের সরকারী হিসাব বাবদ অর্থপ্রাপ্তি, কিংবা অনুরূপ অর্থ রক্ষণাবেক্ষণ বা দান, কিংবা সরকারের হিসাব-নিরীক্ষা;

(চ) উপরি-উক্ত উপ-দফাসমূহে নির্ধারিত যে কোন বিষয়ের অধীন কোন আনুষঙ্গিক বিষয়।

(২) কোন জরিমানা বা অন্য অর্থদণ্ড আরোপ বা রদবদল, কিংবা লাইসেন্স-ফি বা কোন কার্যের জন্য ফি বা উসুল আরোপ বা প্রদান কিংবা স্থানীয় উদ্দেশ্যসাধনকল্পে কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক কোন কর আরোপ, নিয়ন্ত্রণ, রদবদল, মওকুফ বা রহিতকরণের বিধান করা হইয়াছে, কেবল এই কারণে কোন বিল অর্থবিল বলিয়া গণ্য হইবে না।

(৩) রাষ্ট্রপতির সম্মতির জন্য তাঁহার নিকট পেশ করিবার সময়ে প্রত্যেক অর্থবিলে স্পীকারের স্বাক্ষরে এই মর্মে একটি সার্টিফিকেটে থাকিবে যে, তাহা একটি অর্থবিল, এবং অনুরূপ সার্টিফিকেট সকল বিষয়ে চূড়ান্ত হইবে এবং সেই সম্পর্কে কোন আদালতে প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।

আর্থিক ব্যবস্থাবলীর সুপারিশ

৮২। ৫২[ কোন অর্থ বিল, অথবা সরকারী অর্থ ব্যয়ের প্রশ্ন জড়িত রহিয়াছে এমন কোন বিল] রাষ্ট্রপতির সুপারিশ ব্যতীত সংসদে উত্থাপন করা যাইবে না:

তবে শর্ত থাকে যে, ৫৩[ কোন অর্থ বিলে] কোন কর হ্রাস বা বিলোপের বিধান-সংবলিত কোন সংশোধনী উত্থাপনের জন্য এই অনুচ্ছেদের অধীন সুপারিশের প্রয়োজন হইবে না।

সংসদের আইন ব্যতীত করারোপে বাধা
৮৩। সংসদের কোন আইনের দ্বারা বা কর্তৃত্ব ব্যতীত কোন কর আরোপ বা সংগ্রহ করা যাইবে না।
সংযুক্ত তহবিল ও প্রজাতন্ত্রের সরকারী হিসাব

৮৪। (১) সরকার কর্তৃক প্রাপ্ত সকল রাজস্ব, সরকার কর্তৃক সংগৃহীত সকল ঋণ এবং কোন ঋণ পরিশোধ হইতে সরকার কর্তৃক প্রাপ্ত সকল অর্থ একটি মাত্র তহবিলের অংশে পরিণত হইবে এবং তাহা “সংযুক্ত তহবিল” নামে অভিহিত হইবে।

(২) সরকার কর্তৃক বা সরকারের পক্ষে প্রাপ্ত অন্য সকল সরকারী অর্থ প্রজাতন্ত্রের সরকারী হিসাবে জমা হইবে।

সরকারী অর্থের নিয়ন্ত্রণ
৮৫। সরকারী অর্থের রক্ষণাবেক্ষণ, ক্ষেত্রমত সংযুক্ত তহবিলে অর্থ প্রদান বা তাহা হইতে অর্থ প্রত্যাহার কিংবা প্রজাতন্ত্রের সরকারী হিসাবে অর্থ প্রদান বা তাহা হইতে অর্থ প্রত্যাহার এবং উপরি-উক্ত বিষয়সমূহের সহিত সংশ্লিষ্ট বা আনুষঙ্গিক সকল বিষয় সংসদের আইন-দ্বারা এবং অনুরূপ আইনের বিধান না হওয়া পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রণীত বিধিসমূহ-দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হইবে।
প্রজাতন্ত্রের সরকারী হিসাবে প্রদেয় অর্থ

৮৬। প্রজাতন্ত্রের সরকারী হিসাবে জমা হইবে-

(ক) রাজস্ব কিংবা এই সংবিধানের ৮৪ অনুচ্ছেদের (১) দফার কারণে যেরূপ অর্থ সংযুক্ত তহবিলের অংশে পরিণত হইবে, তাহা ব্যতীত প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত কিংবা প্রজাতন্ত্রের বিষয়াবলীর সহিত সংশ্লিষ্ট কোন ব্যক্তি কর্তৃক প্রাপ্ত বা ব্যক্তির নিকট জমা রহিয়াছে, এইরূপ সকল অর্থ; অথবা

(খ) যে কোন মোকদ্দমা, বিষয়, হিসাব বা ব্যক্তি বাবদ যে কোন আদালত কর্তৃক প্রাপ্ত বা আদালতের নিকট জমা রহিয়াছে, এইরূপ সকল অর্থ।

বার্ষিক আর্থিক বিবৃতি

৮৭। (১) প্রত্যেক অর্থ-বৎসর সম্পর্কে উক্ত বৎসরের জন্য সরকারের অনুমিত আয় ও ব্যয়-সংবলিত একটি বিবৃতি (এই ভাগে “বার্ষিক আর্থিক বিবৃতি” নামে অভিহিত) সংসদে উপস্থাপিত হইবে।

(২) বার্ষিক আর্থিক বিবৃতিতে পৃথক পৃথকভাবে

(ক) এই সংবিধানের দ্বারা বা অধীন সংযুক্ত তহবিলের উপর দায়রূপে বর্ণিত ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ, এবং

(খ) সংযুক্ত তহবিল হইতে ব্যয় করা হইবে, এইরূপ প্রস্তাবিত অন্যান্য ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ,

প্রদর্শিত হইবে এবং অন্যান্য ব্যয় হইতে রাজস্ব খাতের ব্যয় পৃথক করিয়া প্রদর্শিত হইবে।

সংযুক্ত তহবিলের উপর দায়

৮৮। সংযুক্ত তহবিলের উপর দায়যুক্ত ব্যয় নিম্নরূপ হইবে:

(ক) রাষ্ট্রপতিকে দেয় পারিশ্রমিক ও তাঁহার দপ্তর-সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যয়;

৫৪[ * * *]

(খ) (অ) স্পীকার ও ডেপুটি স্পীকার,

(আ) সুপ্রীম কোর্টের বিচারকগণ,

(ই) মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক,

(ঈ) নির্বাচন কমিশনারগণ,

(উ) সরকারী কর্ম কমিশনের সদস্যদিগকে,

দেয় পারিশ্রমিক;

(গ) সংসদ, সুপ্রীম কোর্ট, মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের দপ্তর, নির্বাচন কমিশন এবং সরকারী কর্ম কমিশনের কর্মচারীদিগকে দেয় পারিশ্রমিকসহ প্রশাসনিক ব্যয়;

(ঘ) সুদ, পরিশোধ-তহবিলের দায়, মূলধন পরিশোধ বা তাহার ক্রম-পরিশোধ এবং ঋণসংগ্রহ-ব্যপদেশে ও সংযুক্ত তহবিলের জামানতে গৃহীত ঋণের মোচন-সংক্রান্ত অন্যান্য ব্যয়সহ সরকারের ঋণ-সংক্রান্ত সকল দেনার দায়;

(ঙ) কোন আদালত বা ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রদত্ত কোন রায়, ডিক্রী বা রোয়েদাদ কার্যকর করিবার জন্য প্রয়োজনীয় যে কোন পরিমাণ অর্থ; এবং

(চ) এই সংবিধান বা সংসদের আইন দ্বারা অনুরূপ দায়যুক্ত বলিয়া ঘোষিত অন্য যে কোন ব্যয়।

বার্ষিক আর্থিক বিবৃতি সম্পর্কিত পদ্ধতি

৮৯। (১) সংযুক্ত তহবিলের দায়যুক্ত ব্যয়-সম্পর্কিত বার্ষিক আর্থিক বিবৃতির অংশ সংসদে আলোচনা করা হইবে, কিন্তু তাহা ভোটের আওতাভুক্ত হইবে না।

(২) অন্যান্য ব্যয়-সম্পর্কিত বার্ষিক আর্থিক বিবৃতির অংশ মঞ্জুরী-দাবীর আকারে সংসদে উপস্থাপিত হইবে এবং কোন মঞ্জুরী-দাবীতে সম্মতিদানের বা সম্মতিদানে অস্বীকৃতির কিংবা মঞ্জুরী-দাবীতে নির্ধারিত অর্থ হ্রাস-সাপেক্ষে তাহাতে সম্মতিদানের ক্ষমতা সংসদের থাকিবে।

(৩) রাষ্ট্রপতির সুপারিশ ব্যতীত কোন মঞ্জুরী দাবী করা যাইবে না।

নির্দিষ্টকরণ আইন

৯০। (১) সংসদ কর্তৃক এই সংবিধানের ৮৯ অনুচ্ছেদের অধীন মঞ্জুরী-দানের পর সংযুক্ত তহবিল হইতে নিম্নলিখিত ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রয়োজনীয় সকল অর্থ নির্দিষ্টকরণের বিধান-সংবলিত একটি বিল যথাশীঘ্র সংসদে উত্থাপন করা হইবে:

(ক) সংসদ কর্তৃক প্রদত্ত অনুরূপ মঞ্জুরী; এবং

(খ) সংসদে উপস্থাপিত বিবৃতিতে প্রদর্শিত অর্থের অনধিক সংযুক্ত তহবিলের দায়যুক্ত ব্যয়।

(২) অনুরূপ কোন বিল সম্পর্কে সংসদে এমন কোন সংশোধনীর প্রস্তাব করা হইবে না, যাহার ফলে অনুরূপভাবে প্রদত্ত কোন মঞ্জুরীর পরিমাণ বা উদ্দেশ্য কিংবা সংযুক্ত তহবিলের উপর দায়যুক্ত ব্যয়ের পরিমাণ পরিবর্তিত হইয়া যায়।

(৩) এই সংবিধানের বিধানাবলী-সাপেক্ষে সংযুক্ত তহবিল হইতে এই অনুচ্ছেদের বিধানাবলী অনুযায়ী গৃহীত আইনের দ্বারা নির্দিষ্টকরণ ব্যতীত কোন অর্থ প্রত্যাহার করা হইবে না।

সম্পূরক ও অতিরিক্ত মঞ্জুরী

৯১। কোন অর্থ-বৎসর প্রসঙ্গে যদি দেখা যায় যে,

(ক) চলিত অর্থ-বৎসরে নির্দিষ্ট কোন কর্মবিভাগের জন্য অনুমোদিত ব্যয় অপর্যাপ্ত হইয়াছে কিংবা ঐ বৎসরের বার্ষিক আর্থিক বিবৃতিতে অন্তর্ভুক্ত হয় নাই, এমন কোন নূতন কর্মবিভাগের জন্য ব্যয় নির্বাহের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়াছে, অথবা

(খ) কোন অর্থ-বৎসরে কোন কর্মবিভাগের জন্য মঞ্জুরীকৃত অর্থের অধিক অর্থ ঐ বৎসরে উক্ত কর্মবিভাগের জন্য ব্যয়িত হইয়াছে,

তাহা হইলে এই সংবিধানের দ্বারা বা অধীন সংযুক্ত তহবিলের উপর ইহাকে দায়যুক্ত করা হউক বা না হউক, সংযুক্ত তহবিল হইতে এই ব্যয় নির্বাহের কর্তৃত্ব প্রদান করিবার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকিবে এবং রাষ্ট্রপতি ক্ষেত্রমত এই ব্যয়ের অনুমিত পরিমাণ-সংবলিত একটি সম্পূরক আর্থিক বিবৃতি কিংবা অতিরিক্ত ব্যয়ের পরিমাণ সংবলিত একটি অতিরিক্ত আর্থিক বিবৃতি সংসদে উপস্থাপনের ব্যবস্থা করিবেন এবং বার্ষিক আর্থিক বিবৃতির ন্যায় উপরি-উক্ত বিবৃতির ক্ষেত্রে (প্রয়োজনীয় উপযোগীকরণসহ) এই সংবিধানের ৮৭ হইতে ৯০ পর্যন্ত অনুচ্ছেদসমূহ প্রযোজ্য হইবে।

হিসাব, ঋণ প্রভৃতির উপর ভোট

৯২। (১) এই পরিচ্ছেদের উপরি-উক্ত বিধানাবলীতে যাহা বলা হইয়াছে, তাহা সত্ত্বেও

(ক) মঞ্জুরীর উপর ভোটদান সম্পর্কে এই সংবিধানের ৮৯ অনুচ্ছেদে নির্ধারিত পদ্ধতি সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত এবং ঐ ব্যয় সম্পর্কিত ৯০ অনুচ্ছেদের বিধানাবলী অনুযায়ী আইন গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত কোন অর্থ বৎসরের কোন অংশের জন্য অনুমিত ব্যয়ের অগ্রিম মঞ্জুরীদানের ক্ষমতা সংসদের থাকিবে;

(খ) কোন কার্যের বিশালতা বা অনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের জন্য বার্ষিক আর্থিক বিবৃতিতে সাধারণভাবে প্রদত্ত বিস্তারিত বৃত্তান্তের সহিত অনুরূপ কার্য-সংক্রান্ত ব্যয়দাবী নির্ধারিত করা সম্ভব না হইলে প্রজাতন্ত্রের সম্পদ হইতে অনুরূপ অপ্রত্যাশিত ব্যয়নির্বাহের জন্য মঞ্জুরীদানের ক্ষমতা সংসদের থাকিবে;

(গ) কোন অর্থ-বৎসরের চলিত ব্যয়ের অংশ নয়, এইরূপ ব্যতিক্রমী মঞ্জুরীদানের ক্ষমতা সংসদের থাকিবে;

এবং যে উদ্দেশ্যে অনুরূপ মঞ্জুরীদান করা হইয়াছে, তাহা সাধনকল্পে সংযুক্ত তহবিল হইতে আইনের দ্বারা অর্থ প্রত্যাহারের কর্তৃত্ব প্রদানের ক্ষমতা সংসদের থাকিবে।

(২) বার্ষিক আর্থিক বিবৃতিতে উল্লিখিত কোন ব্যয়-সম্পর্কিত মঞ্জুরীদানের ক্ষেত্রে এবং অনুরূপ ব্যয় নির্বাহের উদ্দেশ্যে সংযুক্ত তহবিল হইতে অর্থ নির্দিষ্টকরণের কর্তৃত্ব প্রদানের জন্য প্রণীতব্য আইনের ক্ষেত্রে এই সংবিধানের ৮৯ ও ৯০ অনুচ্ছেদের বিধানাবলী যেরূপ সক্রিয় হইবে, বর্তমান অনুচ্ছেদের (১) দফার অধীন কোন মঞ্জুরীদানের ক্ষেত্রে এবং ঐ দফার অধীন প্রণীতব্য কোন আইনের ক্ষেত্রেও উক্ত অনুচ্ছেদদ্বয় সমভাবে কার্যকর হইবে।

৫৫[ (৩) এই পরিচ্ছেদের উপরি-উক্ত বিধানাবলীতে যাহা বলা হইয়াছে, তাহা সত্ত্বেও যদি কোন অর্থ-বৎসর প্রসঙ্গের সংসদ-

(ক) উক্ত বৎসর আরম্ভ হওয়ার পূর্বে এই সংবিধানের ৮৯ অনুচ্ছেদের অধীন মঞ্জুরীদান এবং ৯০ অনুচ্ছেদের অধীন আইন গ্রহণে অসমর্থ হইয়া থাকে এবং এই অনুচ্ছেদের অধীন কোন অগ্রিম মঞ্জুরীদান না করিয়া থাকে; অথবা

(খ) কোন ক্ষেত্রে এই অনুচ্ছেদের অধীন কোন মেয়াদের জন্য কোন অগ্রিম মঞ্জুরী দেওয়া হইয়া থাকিলে সেই মেয়াদ উত্তীর্ণ হইবার পূর্বে ৮৯ অনুচ্ছেদের অধীন মঞ্জুরীদানে এবং ৯০ অনুচ্ছেদের অধীন আইন গ্রহণে অসমর্থ হইয়া থাকে,

তাহা হইলে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে, আদেশের দ্বারা অনুরূপ মঞ্জুরীদান না করা এবং আইন গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত, ঐ বৎসরের অনধিক ষাট দিন মেয়াদ পর্যন্ত উক্ত বৎসরের আর্থিক বিবৃতিতে উল্লিখিত ব্যয় নির্বাহের জন্য সংযুক্ত তহবিল হইতে অর্থ প্রত্যাহারের কর্তৃত্ব প্রদান করিতে পারিবেন।]

৫৬[ বিলুপ্ত]
৯২ক। ৫৭[ কতিপয় ক্ষেত্রে ব্যয়ের কর্তৃত্ব প্রদান- সংবিধান (দ্বাদশ সংশোধন) আইন, ১৯৯১ (১৯৯১ সনের ২৮ নং আইন)- এর ১০ ধারাবলে বিলুপ্ত।]
৩য় পরিচ্ছেদ
অধ্যাদেশপ্রণয়ন-ক্ষমতা
অধ্যাদেশপ্রণয়ন-ক্ষমতা

৯৩। (১) ৫৮[ সংসদ ভাঙ্গিয়া যাওয়া অবস্থায় অথবা উহার অধিবেশনকাল ব্যতীত] কোন সময়ে রাষ্ট্রপতির নিকট আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রহিয়াছে বলিয়া সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হইলে তিনি উক্ত পরিস্থিতিতে যেরূপ প্রয়োজনীয় বলিয়া মনে করিবেন, সেইরূপ অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারী করিতে পারিবেন এবং জারী হইবার সময় হইতে অনুরূপভাবে প্রণীত অধ্যাদেশ সংসদের আইনের ন্যায় ক্ষমতাসম্পন্ন হইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, এই দফার অধীন কোন অধ্যাদেশে এমন কোন বিধান করা হইবে না,

(ক) যাহা এই সংবিধানের অধীন সংসদের আইন-দ্বারা আইনসঙ্গতভাবে করা যায় না;

(খ) যাহাতে এই সংবিধানের কোন বিধান পরিবর্তিত বা রহিত হইয়া যায়; অথবা

(খ) যাহার দ্বারা পূর্বে প্রণীত কোন অধ্যাদেশের যে কোন বিধানকে অব্যাহতভাবে বলবৎ করা যায়।

(২) এই অনুচ্ছেদের (১) দফার অধীন প্রণীত কোন অধ্যাদেশ জারী হইবার পর অনুষ্ঠিত সংসদের প্রথম বৈঠকে তাহা উপস্থাপিত হইবে এবং ইতঃপূর্বে বাতিল না হইয়া থাকিলে অধ্যাদেশটি অনুরূপভাবে উপস্থাপনের পর ত্রিশ দিন অতিবাহিত হইলে কিংবা অনুরূপ মেয়াদ উত্তীর্ণ হইবার পূর্বে তাহা অননুমোদন করিয়া সংসদে প্রস্তাব গৃহীত হইলে অধ্যাদেশটির কার্যকরতা লোপ পাইবে।

(৩) সংসদ ভাঙ্গিয়া যাওয়া অবস্থা কোন সময়ে রাষ্ট্রপতির নিকট ব্যবস্থা-গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রহিয়াছে বলিয়া সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হইলে তিনি এমন অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারী করিতে পারিবেন, যাহাতে সংবিধান-দ্বারা সংযুক্ত তহবিলের উপর কোন ব্যয় দায়যুক্ত হউক বা না হউক, উক্ত তহবিল হইতে সেইরূপ ব্যয়নির্বাহের কর্তৃত্ব প্রদান করা যাইবে এবং অনুরূপভাবে প্রণীত কোন অধ্যাদেশ জারী হইবার সময় হইতে তাহা সংসদের আইনের ন্যায় ক্ষমতাসম্পন্ন হইবে।

(৪) এই অনুচ্ছেদের (৩) দফার অধীন জারীকৃত প্রত্যেক অধ্যাদেশ যথাশীঘ্র সংসদে উপস্থাপিত হইবে এবং সংসদ পুনর্গঠিত হইবার তারিখ হইতে ত্রিশ দিনের মধ্যে এই সংবিধানের ৮৭, ৮৯ ও ৯০ অনুচ্ছেদসমূহের বিধানাবলী প্রয়োজনীয় উপযোগীকরণসহ পালিত হইবে।

ষষ্ঠ ভাগ
বিচারবিভাগ
১ম পরিচ্ছেদ
সুপ্রীম কোর্ট
সুপ্রীম কোর্ট প্রতিষ্ঠা

৯৪। (১) “বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট” নামে বাংলাদেশের একটি সর্বোচ্চ আদালত থাকিবে এবং আপীল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগ লইয়া তাহা গঠিত হইবে।

(২) প্রধান বিচারপতি (যিনি “বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি” নামে অভিহিত হইবেন) এবং প্রত্যেক বিভাগে আসন গ্রহণের জন্য রাষ্ট্রপতি যেরূপ সংখ্যক বিচারক নিয়োগের প্রয়োজন বোধ করিবেন, সেইরূপ সংখ্যক অন্যান্য বিচারক লইয়া সুপ্রীম কোর্ট গঠিত হইবে।

(৩) প্রধান বিচারপতি ও আপীল বিভাগে নিযুক্ত বিচারকগণ কেবল উক্ত বিভাগে এবং অন্যান্য বিচারক কেবল হাইকোর্ট বিভাগে আসন গ্রহণ করিবেন।

(৪) এই সংবিধানের বিধানাবলী-সাপেক্ষে প্রধান বিচারপতি এবং অন্যান্য বিচারক বিচারকার্য পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকিবেন।

বিচারক-নিয়োগ

৫৯[ ৯৫। (১) প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং প্রধান বিচারপতির সহিত পরামর্শ করিয়া রাষ্ট্রপতি অন্যান্য বিচারককে নিয়োগদান করিবেন।

(২) কোন ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক না হইলে, এবং

(ক) সুপ্রীম কোর্টে অন্যূন দশ বৎসরকাল এ্যাডভোকেট না থাকিয়া থাকিলে; অথবা

(খ) বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সীমানার মধ্যে অন্যূন দশ বৎসর কোন বিচার বিভাগীয় পদে অধিষ্ঠান না করিয়া থাকিলে; অথবা

(গ) সুপ্রীমকোর্টের বিচারক পদে নিয়োগলাভের জন্য আইনের দ্বারা নির্ধারিত যোগ্যতা না থাকিয়া থাকিলে ;

তিনি বিচারকপদে নিয়োগ লাভের যোগ্য হইবেন না।

(৩) এই অনুচ্ছেদে ‘‘সুপ্রীম কোর্ট’’ বলিতে এই সংবিধান প্রবর্তনের পূর্বে যে কোন সময়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সীমানার মধ্যে যে আদালত হাইকোর্ট হিসাবে এখতিয়ার প্রয়োগ করিয়াছে, সেই আদালত অন্তর্ভুক্ত হইবে।]

বিচারকের পদের মেয়াদ

৬০[ ৯৬। (১) এই অনুচ্ছেদের অন্যান্য বিধানাবলী সাপেক্ষে কোন বিচারক সাতষট্টি বৎসর বয়স পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন।

৬১[ (২) প্রমাণিত অসদাচরণ বা অসামর্থ্যের কারণে সংসদের মোট সদস্য-সংখ্যার অন্যূন দুই-তৃতীয়াংশ গরিষ্ঠতার দ্বারা সমর্থিত সংসদের প্রস্তাবক্রমে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতির আদেশ ব্যতীত কোন বিচারককে অপসারিত করা যাইবে না।

(৩) এই অনুচ্ছেদের (২) দফার অধীন প্রস্তাব সম্পর্কিত পদ্ধতি এবং কোন বিচারকের অসদাচরণ বা অসামর্থ্য সম্পর্কে তদন্ত ও প্রমাণের পদ্ধতি সংসদ আইনের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করিতে পারিবেন।

(৪) কোন বিচারক রাষ্ট্রপতিকে উদ্দেশ করিয়া স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন।]]

অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি নিয়োগ
৯৭। প্রধান বিচারপতির পদ শূন্য হইলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে প্রধান বিচারপতি তাঁহার দায়িত্বপালনে অসমর্থ বলিয়া রাষ্ট্রপতির নিকট সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হইলে ক্ষেত্রমত অন্য কোন ব্যক্তি অনুরূপ পদে যোগদান না করা পর্যন্ত কিংবা প্রধান বিচারপতি স্বীয় কার্যভার পুনরায় গ্রহণ না করা পর্যন্ত আপীল বিভাগের অন্যান্য বিচারকের মধ্যে যিনি কর্মে প্রবীণতম, তিনি অনুরূপ কার্যভার পালন করিবেন।
সুপ্রীম কোর্টের অতিরিক্ত বিচারকগণ

৯৮। সংবিধানের ৯৪ অনুচ্ছেদের বিধানাবলী সত্ত্বেও৬২[ * * *] রাষ্ট্রপতির নিকট সুপ্রীম কোর্টের কোন বিভাগের বিচারক-সংখ্যা সাময়িকভাবে বৃদ্ধি করা উচিত বলিয়া সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হইলে তিনি যথাযথ যোগ্যতাসম্পন্ন এক বা একাধিক ব্যক্তিকে অনধিক দুই বৎসরের জন্য অতিরিক্ত বিচারক নিযুক্ত করিতে পারিবেন, কিংবা তিনি উপযুক্ত বিবেচনা করিলে হাইকোর্ট বিভাগের কোন বিচারককে ৬৩[যে কোন অস্থায়ী মেয়াদের জন্য আপীল বিভাগের আসন গ্রহণের ব্যবস্থা করিতে পারিবেন]:

তবে শর্ত থাকে যে, অতিরিক্ত বিচারকরূপে নিযুক্ত (কোন ব্যক্তিকে এই সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদের অধীন বিচারকরূপে নিযুক্ত) হইতে কিংবা বর্তমান অনুচ্ছেদের অধীন আরও এক মেয়াদের জন্য অতিরিক্ত বিচারকরূপে নিযুক্ত হইতে বর্তমান অনুচ্ছেদের কোন কিছুই নিবৃত্ত করিবে না।

অবসর গ্রহণের পর বিচারগণের অক্ষমতা

৬৪[ ৯৯। (১) কোন ব্যক্তি (এই সংবিধানের ৯৮ অনুচ্ছেদের বিধানাবলী-অনুসারে অতিরিক্ত বিচারকরুপে দায়িত্ব পালন ব্যতীত) বিচারকরুপে দায়িত্ব পালন করিয়া থাকিলে উক্ত পদ হইতে অবসর গ্রহণের বা অপসারিত হইবার পর তিনি কোন আদালত বা কোন কর্তৃপক্ষের নিকট ওকালতি বা কার্য করিবেন না এবং বিচার বিভাগীয় বা আধা-বিচার বিভাগীয় পদ ব্যতীত প্রজাতন্ত্রের কর্মে কোন লাভজনক পদে নিয়োগ লাভের যোগ্য হইবেন না।

(২) (১) দফায় যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন ব্যক্তি হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক পদে বহাল থাকিলে উক্ত পদ হইতে অবসর গ্রহণের পর তিনি আপীল বিভাগে ওকালতি বা কার্য করিতে পারিবেন।]

সুপ্রীম কোর্টের আসন
৬৫[ ১০০। রাজধানীতে সুপ্রীম কোর্টের স্থায়ী আসন থাকিবে, তবে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন লইয়া প্রধান বিচারপতি সময়ে সময়ে অন্য যে স্থান বা স্থানসমূহ নির্ধারণ করিবেন, সেই স্থান বা স্থানসমূহে হাইকোর্ট বিভাগের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হইতে পারিবে।]
হাইকোর্ট বিভাগের এখতিয়ার
৬৬[ ১০১। এই সংবিধান বা অন্য কোন আইনের দ্বারা হাইকোর্ট বিভাগের উপর যেরুপ আদি, আপীল ও অন্য প্রকার এখতিয়ার ও ক্ষমতা অর্পিত হইয়াছে, উক্ত বিভাগের সেইরুপ এখতিয়ার ও ক্ষমতা থাকিবে।]
কতিপয় আদেশ ও নির্দেশ প্রভৃতি দানের ক্ষেত্রে হাইকোর্ট বিভাগের ক্ষমতা

৬৭[ ১০২।(১) কোন সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির আবেদনক্রমে এই সংবিধানের তৃতীয় ভাগের দ্বারা অর্পিত অধিকারসমূহের যে কোন একটি বলবৎ করিবার জন্য প্রজাতন্ত্রের বিষয়াবলীর সহিত সম্পর্কিত কোন দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তিসহ যে কোন ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষকে হাইকোর্ট বিভাগ উপযুক্ত নির্দেশাবলী বা আদেশাবলী দান করিতে পারিবেন।

(২) হাইকোর্ট বিভাগের নিকট যদি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, আইনের দ্বারা অন্য কোন সমফলপ্রদ বিধান করা হয় নাই, তাহা হইলে

(ক) যে কোন সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির আবেদনক্রমে-

(অ) প্রজাতন্ত্র বা কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বিষয়াবলীর সহিত সংশ্লিষ্ট যে কোন দায়িত্ব পালনে রত ব্যক্তিকে আইনের দ্বারা অনুমোদিত নয়, এমন কোন কার্য করা হইতে বিরত রাখিবার জন্য কিংবা আইনের দ্বারা তাঁহার করণীয় কার্য করিবার জন্য নির্দেশ প্রদান করিয়া, অথবা

(আ) প্রজাতন্ত্র বা কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বিষয়াবলীর সহিত সংশ্লিষ্ট যে কোন দায়িত্ব পালনে রত ব্যক্তির কৃত কোন কার্য বা গৃহীত কোন কার্যধারা আইনসংগত কর্তৃত্ব ব্যতিরেকে করা হইয়াছে বা গৃহীত হইয়াছে ও তাঁহার কোন আইনগত কার্যকরতা নাই বলিয়া ঘোষণা করিয়া

উক্ত বিভাগ আদেশদান করিতে পারিবেন; অথবা

(খ) যে কোন ব্যক্তির আবেদনক্রমে-

(অ) আইনসংগত কর্তৃত্ব ব্যতিরেকে বা বেআইনী উপায়ে কোন ব্যক্তিকে প্রহরায় আটক রাখা হয় নাই বলিয়া যাহাতে উক্ত বিভাগের নিকট সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হইতে পারে, সেইজন্য প্রহরায় আটক উক্ত ব্যক্তিকে উক্ত বিভাগের সম্মুখে আনয়নের নির্দেশ প্রদান করিয়া, অথবা

(আ) কোন সরকারি পদে আসীন বা আসীন বলিয়া বিবেচিত কোন ব্যক্তিকে তিনি কোন্ কর্তৃত্ববলে অনুরূপ পদমর্যাদায় অধিষ্ঠানের দাবী করিতেছেন, তাহা প্রদর্শনের নির্দেশ প্রদান করিয়া

উক্ত বিভাগ আদেশদান করিতে পারিবেন।

(৩) উপরি-উক্ত দফাসমূহে যাহা বলা হইয়াছে, তাহা সত্ত্বেও এই সংবিধানের ৪৭ অনুচেছদ প্রযোজ্য হয়, এইরুপ কোন আইনের ক্ষেত্রে বর্তমান অনুচ্ছেদের অধীন অন্তর্বর্তীকালীন বা অন্য কোন আদেশ দানের ক্ষমতা হাইকোর্ট বিভাগের থাকিবে না।

(৪) এই অনুচ্ছেদের (১) দফা কিংবা এই অনুচ্ছেদের (২) দফার (ক) উপ-দফার অধীন কোন আবেদনক্রমে যে ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী আদেশ প্রার্থনা করা হইয়াছে এবং অনুরুপ অর্ন্তবর্তী আদেশ

(ক) যেখানে উন্নয়ন কর্মসূচী বাস্তবায়নের জন্য কোন ব্যবস্থা কিংবা কোন উন্নয়নমূলক কার্যের প্রতিকূলতা বা বাধা সৃষ্টি করিতে পারে; অথবা

(খ) যেখানে অন্য কোনভাবে জনস্বার্থের পক্ষে ক্ষতিকর হইতে পারে সেইখানে অ্যাটর্নি-জেনারেলকে উক্ত আবেদন সম্পর্কে যুক্তিসঙ্গত নোটিশদান এবং অ্যাটর্নি-জেনারেলের (কিংবা এই বিষয়ে তাহার দ্বারা ভারপ্রাপ্ত অন্য কোন এ্যাডভোকেটের) বক্তব্য শ্রবণ না করা পর্যন্ত এবং এই দফার (ক) বা (খ) উপ-দফায় উল্লিখিত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করিবে না বলিয়া হাইকোর্ট বিভাগের নিকট সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান না হওয়া পর্যন্ত উক্ত বিভাগ কোন অন্তর্বর্তী আদেশদান করিবেন না।

(৫) প্রসংগের প্রয়োজনে অন্যরূপ না হইলে এই অনুচ্ছেদে ‘‘ব্যক্তি’’ বলিতে সংবিধিবদ্ধ সরকারী কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগসমূহ অথবা কোন শৃংখলা-বাহিনী সংক্রান্ত আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত কোন আদালত বা ট্রাইব্যুনাল ব্যতীত কিংবা এই সংবিধানের ১১৭ অনুচ্ছেদ প্রযোজ্য হয়, এইরুপ কোন ট্রাইব্যুনাল ব্যতীত যে কোন আদালত বা ট্রাইব্যুনাল অন্তর্ভুক্ত হইবে।]

আপীল বিভাগের এখতিয়ার

১০৩। (১) হাইকোর্ট বিভাগের রায়, ডিক্রী, আদেশ বা দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপীল শুনানীর ও তাহা নিষ্পত্তির এখতিয়ার আপীল বিভাগের থাকিবে।

(২) হাইকোর্ট বিভাগের রায়, ডিক্রী, আদেশ বা দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপীল বিভাগের নিকট সেই ক্ষেত্রে অধিকারবলে আপীল করা যাইবে, যে ক্ষেত্রে হাইকোর্ট বিভাগ

(ক) এই মর্মে সার্টিফিকেট দান করিবেন যে, মামলাটির সহিত এই সংবিধান-ব্যাখ্যার বিষয়ে আইনের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন জড়িত রহিয়াছে; অথবা

৬৮[ (খ) কোন মৃত্যুদণ্ড বহাল করিয়াছেন কিংবা কোন ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করিয়াছেন ; অথবা]

(গ) উক্ত বিভাগের অবমাননার জন্য কোন ব্যক্তিকে দণ্ডদান করিয়াছেন;

এবং সংসদে আইন-দ্বারা যেরূপ বিধান করা হইবে, সেইরূপ অন্যান্য ক্ষেত্রে।

(৩) হাইকোর্ট বিভাগের রায়, ডিক্রী, আদেশ বা দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে যে মামলায় এই অনুচ্ছেদের (২) দফা প্রযোজ্য নহে, কেবল আপীল বিভাগ আপীলের অনুমতিদান করিলে সেই মামলায় আপীল চলিবে।

(৪) সংসদ আইনের দ্বারা ঘোষণা করিতে পারিবেন যে, এই অনুচ্ছেদের বিধানসমূহ হাইকোর্ট বিভাগের প্রসঙ্গে যেরূপ প্রযোজ্য, অন্য কোন আদালত বা ট্রাইব্যুনালের ক্ষেত্রেও তাহা সেইরূপ প্রযোজ্য হইবে।

আপীল বিভাগের পরোয়ানা জারী ও নির্বাহ
১০৪। কোন ব্যক্তির হাজিরা কিংবা কোন দলিলপত্র উদ্ঘাটন বা দাখিল করিবার আদেশসহ আপীল বিভাগের নিকট বিচারাধীন যে কোন মামলা বা বিষয়ে সম্পূর্ণ ন্যায়বিচারের জন্য যেরূপ প্রয়োজনীয় হইতে পারে, উক্ত বিভাগ সেইরূপ নির্দেশ, আদেশ, ডিক্রী বা রীট জারী করিতে পারিবেন।
আপীল বিভাগ কর্তৃক রায় বা আদেশ পুনর্বিবেচনা
১০৫। সংসদের যে কোন আইনের বিধানাবলী-সাপেক্ষে এবং আপীল বিভাগ কর্তৃক প্রণীত যে কোন বিধি-সাপেক্ষে আপীল বিভাগের কোন ঘোষিত রায় বা প্রদত্ত আদেশ পুনর্বিবেচনার ক্ষমতা উক্ত বিভাগের থাকিবে।
সুপ্রীম কোর্টের উপদেষ্টামূলক এখতিয়ার
১০৬। যদি কোন সময়ে রাষ্ট্রপতির নিকট প্রতীয়মান হয় যে, আইনের এইরূপ কোন প্রশ্ন উত্থাপিত হইয়াছে বা উত্থাপনের সম্ভাবনা দেখা দিয়াছে, যাহা এমন ধরণের ও এমন জন-গুরুত্বসম্পন্ন যে, সেই সম্পর্কে সুপ্রীম কোর্টের মতামত গ্রহণ করা প্রয়োজন, তাহা হইলে তিনি প্রশ্নটি আপীল বিভাগের বিবেচনার জন্য প্রেরণ করিতে পারিবেন এবং উক্ত বিভাগ স্বীয় বিবেচনায় উপযুক্ত শুনানীর পর প্রশ্নটি সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে স্বীয় মতামত জ্ঞাপন করিতে পারিবেন।
সুপ্রীম কোর্টের বিধি-প্রণয়ন-ক্ষমতা

১০৭। (১) সংসদ কর্তৃক প্রণীত যে কোন আইন-সাপেক্ষে সুপ্রীম কোর্ট রাষ্ট্রপতির অনুমোদন লইয়া প্রত্যেক বিভাগের এবং অধঃস্তন যে কোন আদালতের রীতি ও পদ্ধতি-নিয়ন্ত্রণের জন্য বিধিসমূহ প্রণয়ন করিতে পারিবেন।

৬৯[ (২) সুপ্রীম কোর্ট এই অনুচ্ছেদের (১) দফা এবং এই সংবিধানের ১১৩ ও ১১৬ অনুচ্ছেদের অধীন দায়িত্বসমূহের ভার উক্ত আদালতের কোন একটি বিভাগকে কিংবা এক বা একাধিক বিচারককে অর্পণ করিতে পারিবেন।

(৩) এই অনুচ্ছেদের অধীন প্রণীত বিধিসমূহ-সাপেক্ষে কোন্ কোন্ বিচারককে লইয়া কোন্ বিভাগের কোন্ বেঞ্চ গঠিত হইবে এবং কোন্ কোন্ বিচারক কোন্ উদ্দেশ্যে আসন গ্রহণ করিবেন, তাহা প্রধান বিচারপতি নির্ধারণ করিবেন।]

(৪) প্রধান বিচারপতি সুপ্রীম কোর্টের যে কোন বিভাগের কর্মে প্রবীণতম বিচারককে সেই বিভাগে এই অনুচ্ছেদের (৩) দফা কিংবা এই অনুচ্ছেদের অধীন প্রণীত বিধিসমূহ-দ্বারা অর্পিত যে কোন ক্ষমতা প্রয়োগের ভার প্রদান করিতে পারিবেন।

“কোর্ট অব রেকর্ড” রূপে সুপ্রীম কোর্ট
১০৮। সুপ্রীম কোর্ট একটি “কোর্ট অব্ রেকর্ড” হইবেন এবং ইহার অবমাননার জন্য তদন্তের আদেশদান বা দণ্ডাদেশদানের ক্ষমতাসহ আইন-সাপেক্ষে অনুরূপ আদালতের সকল ক্ষমতার অধিকারী থাকিবেন।
আদালতসমূহের উপর তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ
১০৯। হাইকোর্ট বিভাগের অধঃস্তন সকল ৭০[ আদালত ও ট্রাইব্যুনালের] উপর উক্ত বিভাগের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ-ক্ষমতা থাকিবে।
অধস্তন আদালত হইতে হাইকোর্ট বিভাগে মামলা স্থানান্তর

১১০। হাইকোর্ট বিভাগের নিকট যদি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, উক্ত বিভাগের কোন অধঃস্তন আদালতের বিচারাধীন কোন মামলায় এই সংবিধানের ব্যাখ্যা-সংক্রান্ত আইনের এমন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বা এমন জন-গুরুত্বসম্পন্ন বিষয় জড়িত রহিয়াছে, সংশ্লিষ্ট মামলার মীমাংসার জন্য যাহার সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রয়োজন, তাহা হইলে হাইকোর্ট বিভাগ উক্ত আদালত হইতে মামলাটি প্রত্যাহার করিয়া লইবেন এবং

(ক) স্বয়ং মামলাটির মীমাংসা করিবেন; অথবা

(খ) উক্ত আইনের প্রশ্নটির নিষ্পত্তি করিবেন এবং উক্ত প্রশ্ন সম্বন্ধে হাইকোর্ট বিভাগের রায়ের নকলসহ যে আদালত হইতে মামলাটি প্রত্যাহার করা হইয়াছিল, সেই আদালতে (বা অন্য কোন অধঃস্তন আদালতে) মামলাটি ফেরত পাঠাইবেন এবং তাহা প্রাপ্ত হইবার পর সেই আদালত উক্ত রায়ের সহিত সঙ্গতি রক্ষা করিয়া মামলাটির মীমাংসা করিতে প্রবৃত্ত হইবেন।

সুপ্রীম কোর্টের রায়ের বাধ্যতামূলক কার্যকরতা
১১১। আপীল বিভাগ কর্তৃক ঘোষিত আইন হাইকোর্ট বিভাগের জন্য এবং সুপ্রীম কোর্টের যে কোন বিভাগ কর্তৃক ঘোষিত আইন অধঃস্তন সকল আদালতের জন্য অবশ্যপালনীয় হইবে।
সুপ্রীম কোর্টের সহায়তা
১১২। প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রীয় সীমানার অন্তর্ভুক্ত সকল নির্বাহী ও বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ সুপ্রীম কোর্টের সহায়তা করিবেন।
সুপ্রীম কোর্টের কর্মচারীগণ

১১৩। (১) প্রধান বিচারপতি কিংবা তাঁহার নির্দেশক্রমে অন্য কোন বিচারক বা কর্মচারী সুপ্রীম কোর্টের কর্মচারীদিগকে নিযুক্ত করিবেন এবং রাষ্ট্রপতির পূর্বানুমোদনক্রমে সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক প্রণীত বিধিসমূহ-অনুযায়ী এই নিয়োগদান করা হইবে।

(২) সংসদের যে কোন আইনের বিধানাবলী-সাপেক্ষে সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক প্রণীত বিধিসমূহে যেরূপ নির্ধারিত হইবে, সুপ্রীম কোর্টের কর্মচারীদের কর্মের শর্তাবলী সেইরূপ হইবে।

২য় পরিচ্ছেদ
অধস্তন আদালত
অধস্তন আদালত-সমূহ প্রতিষ্ঠা
১১৪। আইনের দ্বারা যেরূপ প্রতিষ্ঠিত হইবে, সুপ্রীম কোর্ট ব্যতীত সেইরূপ অন্যান্য অধস্তন আদালত থাকিবে।
অধস্তন আদালতে নিয়োগ
৭১[ ১১৫। বিচারবিভাগীয় পদে বা বিচার বিভাগীয় দায়িত্ব পালনকারী ম্যাজিষ্ট্রেট পদে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক উক্ত উদেশ্যে প্রণীত বিধিসমূহ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নিয়োগদান করিবেন।]
অধস্তন আদালতসমূহের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা
৭২[ ১১৬। বিচার-কর্মবিভাগে নিযুক্ত ব্যক্তিদের এবং বিচারবিভাগীয় দায়িত্বপালনে রত ম্যাজিষ্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ (কর্মস্থল- নির্ধারণ, পদোন্নতিদান ও ছুটি মঞ্জুরীসহ) ও শৃংখলাবিধান রাষ্ট্রপতির উপর ন্যস্ত থাকিবে এবং সুপ্রীম কোর্টের সহিত পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক তাহা প্রযুক্ত হইবে।]
বিচারবিভাগীয় কর্মচারীগণ বিচারকার্য পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন
৭৩[ ১১৬ক। এই সংবিধানের বিধানাবলী সাপেক্ষে বিচার-কর্মবিভাগে নিযুক্ত ব্যক্তিগণ এবং ম্যাজিষ্ট্রেটগণ বিচারকার্য পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকিবেন।]
৩য় পরিচ্ছেদ
প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল
প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালসমূহ

১১৭। (১) ইতঃপূর্বে যাহা বলা হইয়াছে, তাহা সত্ত্বেও নিম্নলিখিত ক্ষেত্রসমুহ সম্পর্কে বা ক্ষেত্রসমুহ হইতে উদ্ভূত বিষয়াদির উপর এখতিয়ার প্রয়োগের জন্য সংসদ আইনের দ্বারা এক বা একাধিক প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠিত করিতে পারিবেন-

(ক) নবম ভাগে বর্ণিত বিষয়াদি এবং অর্থদণ্ড বা অন্য দণ্ডসহ প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত ব্যক্তিদের কর্মের শর্তাবলী;

(খ) যে কোন রাষ্ট্রায়ত্ত উদ্যোগ বা সংবিধিবদ্ধ সরকারী কর্তৃপক্ষের চালনা ও ব্যবস্থাপনা এবং অনুরূপ উদ্যোগ বা সংবিধিবদ্ধ সরকারী কর্তৃপক্ষে কর্মসহ কোন আইনের দ্বারা বা অধীন সরকারের উপর ন্যস্ত বা সরকারের দ্বারা পরিচালিত কোন সম্পত্তির অর্জন, প্রশাসন, ব্যবস্থাপনা ও বিলি-ব্যবস্থা;

(গ) যে আইনের উপর এই সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদের৭৪[ (৩)] দফা প্রযোজ্য হয়, সেইরূপ কোন আইন।

(২) কোন ক্ষেত্রে এই অনুচ্ছেদের অধীন কোন প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠিত হইলে অনুরূপ ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ারের অন্তর্গত কোন বিষয়ে অন্য কোন আদালত কোনরূপ কার্যধারা গ্রহণ করিবেন না বা কোন আদেশ প্রদান করিবেন না:

তবে শর্ত থাকে যে, সংসদ আইনের দ্বারা কোন ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা বা অনুরূপ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপীলের বিধান করিতে পারিবেন।

ষষ্ঠ ক ভাগ-জাতীয়দল
[সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ১৪ নং আইন)-এর ৪১ ধারাবলে বিলুপ্ত।]
৭৫[ বিলুপ্ত]
সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ১৪ নং আইন)-এর ৪১ ধারাবলে বিলুপ্ত।
সপ্তম ভাগ
নির্বাচন
নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠা

৭৬[ ১১৮ ।(১) প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনধিক চার জন নির্বাচন কমিশনারকে লইয়া] বাংলাদেশের একটি নির্বাচন কমিশন থাকিবে এবং উক্ত বিষয়ে প্রণীত কোন আইনের বিধানাবলী-সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগদান করিবেন।

(২) একাধিক নির্বাচন কমিশনারকে লইয়া নির্বাচন কমিশন গঠিত হইলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার তাহার সভাপতিরূপে কার্য করিবেন।

(৩) এই সংবিধানের বিধানাবলী-সাপেক্ষে কোন নির্বাচন কমিশনারের পদের মেয়াদ তাঁহার কার্যভার গ্রহণের তারিখ হইতে পাঁচ বৎসরকাল হইবে এবং

(ক) প্রধান নির্বাচন কমিশনার-পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন, এমন কোন ব্যক্তি প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগলাভের যোগ্য হইবেন না;

(খ) অন্য কোন নির্বাচন কমিশনার অনুরূপ পদে কর্মাবসানের পর প্রধান নির্বাচন কমিশনাররূপে নিয়োগলাভের যোগ্য হইবেন, তবে অন্য কোনভাবে প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগলাভের যোগ্য হইবেন না।

(৪) নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকিবেন এবং কেবল এই সংবিধান ও আইনের অধীন হইবেন।

(৫) সংসদ কর্তৃক প্রণীত যে কোন আইনের বিধানাবলী-সাপেক্ষে নির্বাচন কমিশনারদের কর্মের শর্তাবলী রাষ্ট্রপতি আদেশের দ্বারা যেরূপ নির্ধারণ করিবেন, সেইরূপ হইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, সুপ্রীম কোর্টের বিচারক যেরূপ পদ্ধতি ও কারণে অপসারিত হইতে পারেন, সেইরূপ পদ্ধতি ও কারণ ব্যতীত কোন নির্বাচন কমিশনার অপসারিত হইবেন না।

(৬) কোন নির্বাচন কমিশনার রাষ্ট্রপতিকে উদ্দেশ করিয়া স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন।

নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব

১১৯। ৭৭[ (১) রাষ্ট্রপতি পদের ও সংসদের নির্বাচনের জন্য ভোটার-তালিকা প্রস্তুতকরণের তত্ত্বাবধান, নির্দেশ ও নিয়ন্ত্রণ এবং অনুরূপ নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের উপর ন্যস্ত থাকিবে এবং নির্বাচন কমিশন এই সংবিধান ও আইনানুযায়ী

(ক) রাষ্ট্রপতি পদের নির্বাচন অনুষ্ঠান করিবেন;

(খ) সংসদ-সদস্যদের নির্বাচন অনুষ্ঠান করিবেন;

(গ) সংসদে নির্বাচনের জন্য নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ করিবেন; এবং

(ঘ) রাষ্ট্রপতির পদের এবং সংসদের নির্বাচনের জন্য ভোটার-তালিকা প্রস্তুত করিবেন।]

(২) উপরি-উক্ত দফাসমূহে নির্ধারিত দায়িত্বসমূহের অতিরিক্ত যেরূপ দায়িত্ব এই সংবিধান বা অন্য কোন আইনের দ্বারা নির্ধারিত হইবে, নির্বাচন কমিশন সেইরূপ দায়িত্ব পালন করিবেন।

নির্বাচন কমিশনের কর্মচারীগণ
১২০। এই ভাগের অধীন নির্বাচন কমিশনের উপর ন্যস্ত দায়িত্ব পালনের জন্য যেরূপ কর্মচারীর প্রয়োজন হইবে, নির্বাচন কমিশন অনুরোধ করিলে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশনকে সেইরূপ কর্মচারী প্রদানের ব্যবস্থা করিবেন।
প্রতি এলাকার জন্য একটিমাত্র ভোটার তালিকা
১২১। সংসদের নির্বাচনের জন্য প্রত্যেক আঞ্চলিক নির্বাচনী এলাকার একটি করিয়া ভোটার-তালিকা থাকিবে এবং ধর্ম, জাত, বর্ণ ও নারী-পুরুষভেদের ভিত্তিতে ভোটারদের বিন্যস্ত করিয়া কোন বিশেষ ভোটার-তালিকা প্রণয়ন করা যাইবে না।
ভোটার-তালিকায় নামভুক্তির যোগ্যতা

১২২। (১) প্রাপ্ত বয়স্কের ভোটাধিকার-ভিত্তিতে ৭৮[ * * *] সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে।

(২) কোন ব্যক্তি সংসদের নির্বাচনের জন্য নির্ধারিত কোন নির্বাচনী এলাকায় ভোটার-তালিকাভু্ক্ত হইবার অধিকারী হইবেন, যদি

(ক) তিনি বাংলাদেশের নাগরিক হন;

(খ) তাঁহার বয়স আঠার বৎসরের কম না হয়;

৭৯[ (গ) কোন যোগ্য আদালত কর্তৃক তাঁহার সম্পর্কে অপ্রকৃতিস্থ বলিয়া ঘোষণা বহাল না থাকিয়া থাকে;
ঘ) তিনি ঐ নির্বাচনী এলাকার অধিবাসী বা আইনের দ্বারা ঐ নির্বাচনী এলাকার অধিবাসী বিবেচিত হন; এবং

(ঙ) তিনি ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ যোগসাজশকারী (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) আদেশের অধীন কোন অপরাধের জন্য দণ্ডিত না হইয়া থাকেন।]

[ * * *]

নির্বাচন-অনুষ্ঠানের সময়

১২৩। ৮১[ (১) রাষ্ট্রপতি-পদের মেয়াদ অবসানের কারণে উক্ত পদ শূন্য হইলে মেয়াদ-সমাপ্তির তারিখের পূর্ববর্তী নব্বই হইতে ষাট দিনের মধ্যে শূন্য পদ পূরণের জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, যে সংসদের দ্বারা তিনি নির্বাচিত হইয়াছেন সেই সংসদের মেয়াদকালে রাষ্ট্রপতির কার্যকাল শেষ হইলে সংসদের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত অনুরূপ শন্য পদ পূর্ণ করিবার জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে না, এবং অনুরূপ সাধারণ নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম বৈঠকের দিন হইতে ত্রিশ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতির শূন্য পদ পূর্ণ করিবার জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে।

(২) মৃত্যু, পদত্যাগ বা অপসারণের ফলে রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হইলে পদটি শূন্য হইবার পর নব্বই দিনের মধ্যে, তাহা পূর্ণ করিবার জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে।]

৮২[ (৩) সংসদ-সদস্যদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে

(ক) মেয়াদ-অবসানের কারণে সংসদ ভাংগিয়া যাইবার ক্ষেত্রে ভাংগিয়া যাইবার পূর্ববর্তী নববই দিনের মধ্যে; এবং

(খ) মেয়াদ-অবসান ব্যতীত অন্য কোন কারণে সংসদ ভাংগিয়া যাইবার ক্ষেত্রে ভাংগিয়া যাইবার পরবর্তী নববই দিনের মধ্যে:

তবে শর্ত থাকে যে, এই দফার (ক) উপ-দফা অনুযায়ী অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে নির্বাচিত ব্যক্তিগণ, উক্ত উপ-দফায় উল্লিখিত মেয়াদ সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত, সংসদ সদস্যরুপে কার্যভার গ্রহণ করিবেন না।]

(৪) সংসদ ভাঙ্গিয়া যাওয়া ব্যতীত অন্য কোন কারণে সংসদের কোন সদস্যপদ শূন্য হইলে পদটি শূন্য হইবার নব্বই দিনের মধ্যে উক্ত শূন্যপদ পূর্ণ করিবার জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে ৮৩[ :

তবে শর্ত থাকে যে, যদি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের মতে, কোন দৈব-দূর্বিপাকের কারণে এই দফার নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে উক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব না হয়, তাহা হইলে উক্ত মেয়াদের শেষ দিনের পরবর্তী নব্বই দিনের মধ্যে উক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে।]

নির্বাচন সম্পর্কে সংসদের বিধান প্রণয়নের ক্ষমতা
৮৪[ ১২৪। এই সংবিধানের বিধানাবলী সাপেক্ষে সংসদ আইনের দ্বারা নির্বাচনী এলাকার সীমা নির্ধারণ, ভোটার-তালিকা প্রস্তুতকরণ, নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং সংসদের যথাযথ গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য বিষয়সহ সংসদের নির্বাচন সংক্রান্ত বা নির্বাচনের সহিত সম্পর্কিত সকল বিষয়ে বিধান প্রণয়ন করিতে পারিবেন।
নির্বাচনী আইন ও নির্বাচনের বৈধতা

১২৫। এই সংবিধানে যাহা বলা হইয়াছে, তাহা সত্ত্বেও

(ক) এই সংবিধানের ১২৪ অনুচ্ছেদের অধীন প্রণীত বা প্রণীত বলিয়া বিবেচিত নির্বাচনী এলাকার সীমা নির্ধারণ, কিংবা অনুরূপ নির্বাচনী এলাকার জন্য আসন-বন্টন সম্পর্কিত যে কোন আইনের বৈধতা সম্পর্কে আদালতে প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না;

(খ) সংসদ কর্তৃক প্রণীত কোন আইনের দ্বারা বা অধীন বিধান-অনুযায়ী কর্তৃপক্ষের নিকট এবং অনুরূপভাবে নির্ধারিত প্রণালীতে নির্বাচনী দরখাস্ত ব্যতীত ৮৫[ রাষ্ট্রপতি ৮৬[ * * *] পদে] নির্বাচন বা সংসদের কোন নির্বাচন সম্পর্কে কোন প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।

৮৭[ (গ) কোন আদালত, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হইয়াছে এইরুপ কোন নির্বাচনের বিষয়ে, নির্বাচন কমিশনকে যুক্তিসংগত নোটিশ ও শুনানির সুযোগ প্রদান না করিয়া, অন্তর্বর্তী বা অন্য কোনরুপে কোন আদেশ বা নির্দেশ প্রদান করিবেন না।]

নির্বাচন কমিশনকে নির্বাহী কর্তৃপক্ষের সহায়তাদান
১২৬। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বপালনে সহায়তা করা সকল নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য হইবে।
অষ্টম ভাগ
মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক
মহা হিসাব-নিরীক্ষক পদের প্রতিষ্ঠা

১২৭। (১) বাংলাদেশের একজন মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (অতঃপর “মহা হিসাব-নিরীক্ষক” নামে অভিহিত) থাকিবেন এবং তাঁহাকে রাষ্ট্রপতি নিয়োগদান করিবেন।

(২) এই সংবিধান ও সংসদ কর্তৃক প্রণীত যে কোন আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে মহা হিসাব-নিরীক্ষকের কর্মের শর্তাবলী রাষ্ট্রপতি আদেশের দ্বারা যেরূপ নির্ধারণ করিবেন, সেইরূপ হইবে।

মহা-হিসাব নিরীক্ষকের দায়িত্ব

১২৮। (১) মহা হিসাব-নিরীক্ষক প্রজাতন্ত্রের সরকারী হিসাব এবং সকল আদালত, সরকারী কর্তৃপক্ষ ও কর্মচারীর সরকারী হিসাব নিরীক্ষা করিবেন ও অনুরূপ হিসাব সম্পর্কে রিপোর্টদান করিবেন এবং সেই উদ্দেশ্যে তিনি কিংবা সেই প্রয়োজনে তাঁহার দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত যে কোন ব্যক্তির দখলভুক্ত সকল নথি, বহি, রসিদ, দলিল, নগদ অর্থ, ষ্ট্যাম্প, জামিন, ভাণ্ডার বা অন্য প্রকার সরকারী সম্পত্তি পরীক্ষার অধিকারী হইবেন।

(২) এই অনুচ্ছেদের (১) দফায় বর্ণিত বিধানাবলীর হানি না করিয়া বিধান করা হইতেছে যে, আইনের দ্বারা প্রত্যক্ষভাবে প্রতিষ্ঠিত কোন যৌথ সংস্থার ক্ষেত্রে আইনের দ্বারা যেরূপ ব্যক্তি কর্তৃক উক্ত সংস্থার হিসাব নিরীক্ষার ও অনুরূপ হিসাব সম্পর্কে রিপোর্ট দানের ব্যবস্থা করা হইয়া থাকে, সেইরূপ ব্যক্তি কর্তৃক অনুরূপ হিসাব নিরীক্ষা ও অনুরূপ হিসাব সম্পর্কে রিপোর্ট দান করা যাইবে।

(৩) এই অনুচ্ছেদের (১) দফায় নির্ধারিত দায়িত্বসমূহ ব্যতীত সংসদ আইনের দ্বারা যেরূপ নির্ধারণ করিবেন, মহা হিসাব-নিরীক্ষককে সেইরূপ দায়িত্বভার অর্পণ করিতে পারিবেন এবং এই দফার অধীন বিধানাবলী প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি আদেশের দ্বারা অনুরূপ বিধানাবলী প্রণয়ন করিতে পারিবেন।

(৪) এই অনুচ্ছেদের (১) দফার অধীন দায়িত্বপালনের ক্ষেত্রে মহা হিসাব-নিরীক্ষককে অন্য কোন ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষের পরিচালনা বা নিয়ন্ত্রণের অধীন করা হইবে না।

মহা হিসাব-নিরীক্ষকের কর্মের মেয়াদ

১২৯। ৮৮[ (১) এই অনুচ্ছেদের বিধানাবলী-সাপেক্ষে মহা হিসাব-নিরীক্ষক তাঁহার দায়িত্ব গ্রহণের তারিখ হইতে পাঁচ বৎসর বা তাঁহার পঁয়ষট্টি বৎসর বয়স পূর্ণ হওয়া ইহার মধ্যে যাহা অগ্রে ঘটে, সেই কাল পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন।]

(২) সুপ্রীম কোর্টের কোন বিচারক যেরূপ পদ্ধতি ও কারণে অপসারিত হইতে পারেন, সেইরূপ পদ্ধতি ও কারণ ব্যতীত মহা হিসাব-নিরীক্ষক অপসারিত হইবেন না।

(৩) মহা হিসাব-নিরীক্ষক রাষ্ট্রপতিকে উদ্দেশ করিয়া স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন।

(৪) কর্মাবসানের পর মহা হিসাব-নিরীক্ষক প্রজাতন্ত্রের কর্মে অন্য কোন পদে নিযুক্ত হইবার যোগ্য হইবেন না।

অস্থায়ী মহা হিসাব-নিরীক্ষক
১৩০। কোন সময়ে মহা হিসাব-নিরীক্ষকের পদ শূন্য থাকিলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে তিনি কার্যভার পালনে অক্ষম বলিয়া রাষ্ট্রপতির নিকট সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হইলে ক্ষেত্রমত এই সংবিধানের ১২৭ অনুচ্ছেদের অধীন কোন নিয়োগদান না করা পর্যন্ত কিংবা মহা হিসাব-নিরীক্ষক পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব গ্রহণ না করা পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি কোন ব্যক্তিকে মহা হিসাব-নিরীক্ষকরূপে কার্য করিবার জন্য এবং উক্ত পদের দায়িত্বভার পালনের জন্য নিয়োগদান করিতে পারিবেন।
প্রজাতন্ত্রের হিসাব-রক্ষার আকার ও পদ্ধতি
১৩১। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে মহা হিসাব-নিরীক্ষক যেরূপ নির্ধারণ করিবেন, সেইরূপ আকার ও পদ্ধতিতে প্রজাতন্ত্রের হিসাব রক্ষিত হইবে।
সংসদে মহা হিসাব-নিরীক্ষকের রিপোর্ট উপস্থাপন
১৩২। প্রজাতন্ত্রের হিসাব সম্পর্কিত মহা হিসাব-নিরীক্ষকের রিপোর্টসমূহ রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করা হইবে এবং রাষ্ট্রপতি তাহা সংসদে পেশ করিবার ব্যবস্থা করিবেন।
নবম ভাগ
বাংলাদেশের কর্মবিভাগ
১ম পরিচ্ছেদ
কর্মবিভাগ
নিয়োগ ও কর্মের শর্তাবলী

১৩৩। এই সংবিধানের বিধানাবলী-সাপেক্ষে সংসদ আইনের দ্বারা প্রজাতন্ত্রের কর্মে কর্মচারীদের নিয়োগ ও কর্মের শর্তাবলী নিয়ন্ত্রণ করিতে পারিবেন:

তবে শর্ত থাকে যে, এই উদ্দেশ্যে আইনের দ্বারা বা অধীন বিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত অনুরূপ কর্মচারীদের নিয়োগ ও কর্মের শর্তাবলী নিয়ন্ত্রণ করিয়া বিধিসমূহ-প্রণয়নের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকিবে এবং অনুরূপ যে কোন আইনের বিধানাবলী-সাপেক্ষে অনুরূপ বিধিসমূহ কার্যকর হইবে।

কর্মের মেয়াদ
১৩৪। এই সংবিধানের দ্বারা অন্যরূপ বিধান না করা হইয়া থাকিলে প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তি রাষ্ট্রপতির সন্তোষানুযায়ী সময়সীমা পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন।
অসামরিক সরকারী কর্মচারীদের বরখাস্ত প্রভৃতি

১৩৫। (১) প্রজাতন্ত্রের কর্মে অসামরিক পদে নিযুক্ত কোন ব্যক্তি তাঁহার নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ-অপেক্ষা অধঃস্তন কোন কর্তৃপক্ষের দ্বারা বরখাস্ত বা অপসারিত বা পদাবনমিত হইবেন না।

(২) অনুরূপ পদে নিযুক্ত কোন ব্যক্তিকে তাঁহার সম্পর্কে প্রস্তাবিত ব্যবস্থা গ্রহণের বিরুদ্ধে কারণ দর্শাইবার যুক্তিসঙ্গত সুযোগদান না করা পর্যন্ত তাঁহাকে বরখাস্ত বা অপসারিত বা পদাবনমিত করা যাইবে না:

তবে শর্ত থাকে যে, এই দফা সেই সকল ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না, যেখানে

(অ) কোন ব্যক্তি যে আচরণের ফলে ফৌজদারী অপরাধে দণ্ডিত হইয়াছেন, সেই আচরণের জন্য তাঁহাকে বরখাস্ত, অপসারিত বা পদাবনমিত করা হইয়াছে; অথবা

(আ) কোন ব্যক্তিকে বরখাস্ত, অপসারিত বা পদাবনমিত করিবার ক্ষমতাসম্পন্ন কর্তৃপক্ষের নিকট সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, কোন কারণে- যাহা উক্ত কর্তৃপক্ষ লিপিবদ্ধ করিবেন- উক্ত ব্যক্তিকে কারণ দর্শাইবার সুযোগদান করা যুক্তিসঙ্গতভাবে সম্ভব নহে; অথবা

(ই) রাষ্ট্রপতির নিকট সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, রাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে উক্ত ব্যক্তিকে অনুরূপ সুযোগদান সমীচীন নহে।

(৩) অনুরূপ কোন ব্যক্তিকে এই অনুচ্ছেদের (২) দফায় বর্ণিত কারণ দর্শাইবার সুযোগদান করা যুক্তিসঙ্গতভাবে সম্ভব কি না, এইরূপ প্রশ্ন উত্থাপিত হইলে সেই সম্পর্কে তাঁহাকে বরখাস্ত, অপসারিত বা পদাবনমিত করিবার ক্ষমতাসম্পন্ন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে।

(৪) যে ক্ষেত্রে কোন ব্যক্তি কোন লিখিত চুক্তির অধীন প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত হইয়াছেন এবং উক্ত চুক্তির শর্তাবলী-অনুযায়ী যথাযথ নোটিশের দ্বারা চুক্তিটির অবসান ঘটান হইয়াছে, সেই ক্ষেত্রে চুক্তিটির অনুরূপ অবসানের জন্য তিনি এই অনুচ্ছেদের উদ্দেশ্যসাধনকল্পে পদ হইতে অপসারিত হইয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে না।

কর্মবিভাগ-পুনর্গঠন
১৩৬। আইনের দ্বারা প্রজাতন্ত্রের কর্মবিভাগসমূহের সৃষ্টি, সংযুক্তকরণ ও একত্রীকরণসহ পুনর্গঠনের বিধান করা যাইবে এবং অনুরূপ আইন প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত কোন ব্যক্তির কর্মের শর্তাবলীর তারতম্য করিতে ও তাহা রদ করিতে পারিবে।
২য় পরিচ্ছেদ
সরকারী কর্ম কমিশন
কমিশন-প্রতিষ্ঠা
১৩৭। আইনের দ্বারা বাংলাদেশের জন্য এক বা একাধিক সরকারী কর্ম কমিশন প্রতিষ্ঠার বিধান করা যাইবে এবং একজন সভাপতিকে ও আইনের দ্বারা যেরূপ নির্ধারিত হইবে, সেইরূপ অন্যান্য সদস্যকে লইয়া প্রত্যেক কমিশন গঠিত হইবে।
সদস্য-নিয়োগ

১৩৮। (১) প্রত্যেক সরকারী কর্ম কমিশনের সভাপতি ও অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন:

তবে শর্ত থাকে যে, প্রত্যেক কমিশনের যতদূর সম্ভব অর্ধেক (তবে অর্ধেকের কম নহে) সংখ্যক সদস্য এমন ব্যক্তিগণ হইবেন, যাঁহারা কুড়ি বৎসর বা ততোধিককাল বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সীমানার মধ্যে যে কোন সময়ে কার্যরত কোন সরকারের কর্মে কোন পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।

(২) সংসদ কর্তৃক প্রণীত যে কোন আইন-সাপেক্ষে কোন সরকারী কর্ম কমিশনের সভাপতি ও অন্যান্য সদস্যের কর্মের শর্তাবলী রাষ্ট্রপতি আদেশের দ্বারা যেরূপ নির্ধারণ করিবেন, সেইরূপ হইবে।

পদের মেয়াদ

১৩৯। (১) এই অনুচ্ছেদের বিধানাবলী-সাপেক্ষে কোন সরকারী কর্ম কমিশনের সভাপতি বা অন্য কোন সদস্য তাঁহার দায়িত্ব গ্রহণের তারিখ হইতে পাঁচ বৎসর বা তাঁহার ৮৯[পয়ষট্টি] বৎসর বয়স পূর্ণ হওয়া ইহার মধ্যে যাহা অগ্রে ঘটে, সেই কাল পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন।

(২) সুপ্রীম কোর্টের কোন বিচারক যেরূপ পদ্ধতি ও কারণে অপসারিত হইতে পারেন, সেইরূপ পদ্ধতি ও কারণ ব্যতীত কোন সরকারী কর্ম কমিশনের সভাপতি বা অন্য কোন সদস্য অপসারিত হইবেন না।

(৩) কোন সরকারী কর্ম কমিশনের সভাপতি বা অন্য কোন সদস্য রাষ্ট্রপতিকে উদ্দেশ করিয়া স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন।

(৪) কর্মাবসানের পর কোন সরকারী কর্ম কমিশনের সদস্য প্রজাতন্ত্রের কর্মে পুনরায় নিযুক্ত হইবার যোগ্য থাকিবেন না, তবে এই অনুচ্ছেদের (১) দফা-সাপেক্ষে

(ক) কর্মাবসানের পর কোন সভাপতি এক মেয়াদের জন্য পুনর্নিয়োগলাভের যোগ্য থাকিবেন; এবং

(খ) কর্মাবসানের পর কোন সদস্য (সভাপতি ব্যতীত) এক মেয়াদের জন্য কিংবা কোন সরকারী কর্ম কমিশনের সভাপতিরূপে নিয়োগলাভের যোগ্য থাকিবেন।

কমিশনের দায়িত্ব

১৪০। (১) কোন সরকারী কর্ম কমিশনের দায়িত্ব হইবে

(ক) প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগদানের জন্য উপযুক্ত ব্যক্তিদিগকে মনোনয়নের উদ্দেশ্যে যাচাই ও পরীক্ষা-পরিচালনা;

(খ) এই অনুচ্ছেদের (২) দফা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি কর্তৃক কোন বিষয় সম্পর্কে কমিশনের পরামর্শ চাওয়া হইলে কিংবা কমিশনের দায়িত্ব-সংক্রান্ত কোন বিষয় কমিশনের নিকট প্রেরণ করা হইলে সেই সম্বন্ধে রাষ্ট্রপতিকে উপদেশ দান; এবং

(গ) আইনের দ্বারা নির্ধারিত অন্যান্য দায়িত্ব পালন।

(২) সংসদ কর্তৃক প্রণীত কোন আইন এবং কোন কমিশনের সহিত পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রণীত কোন প্রবিধানের (যাহা অনুরূপ আইনের সহিত অসমঞ্জস নহে) বিধানাবলী-সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি নিম্নলিখিত ক্ষেত্রসমূহে কোন কমিশনের সহিত পরামর্শ করিবেন:

(ক) প্রজাতন্ত্রের কর্মের জন্য যোগ্যতা ও তাহাতে নিয়োগের পদ্ধতি সম্পর্কিত বিষয়াদি;

(খ) প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগদান, উক্ত কর্মের এক শাখা হইতে অন্য শাখায় পদোন্নতিদান ও বদলিকরণ এবং অনুরূপ নিয়োগদান, পদোন্নতিদান বা বদলিকরণের জন্য প্রার্থীর উপযোগিতা-নির্ণয় সম্পর্কে অনুসরণীয় নীতিসমূহ;

(গ) অবসর ভাতার অধিকারসহ প্রজাতন্ত্রের কর্মের শর্তাবলীকে প্রভাবিত করে, এইরূপ বিষয়াদি; এবং

(ঘ) প্রজাতন্ত্রের কর্মের শৃঙ্খলামূলক বিষয়াদি।

বার্ষিক রিপোর্ট

১৪১। (১) প্রত্যেক কমিশন প্রতি বৎসর মার্চ মাসের প্রথম দিবসে বা তাহার পূর্বে পূর্ববর্তী একত্রিশে ডিসেম্বরে সমাপ্ত এক বৎসরে স্বীয় কার্যাবলী সম্বন্ধে রিপোর্ট প্রস্তুত করিবেন এবং তাহা রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করিবেন।

(২) রিপোর্টের সহিত একটি স্মারকলিপি থাকিবে, যাহাতে

(ক) কোন ক্ষেত্রে কমিশনের কোন পরামর্শ গৃহীত না হইয়া থাকিলে সেই ক্ষেত্র এবং পরামর্শ গৃহীত না হইবার কারণ; এবং

(খ) যে সকল ক্ষেত্রে কমিশনের সহিত পরামর্শ করা উচিত ছিল অথচ পরামর্শ করা হয় নাই, সেই সকল ক্ষেত্র এবং পরামর্শ না করিবার কারণ;

সম্বন্ধে কমিশন যতদূর অবগত, ততদূর লিপিবদ্ধ করিবেন।

(৩) যে বৎসর রিপোর্ট পেশ করা হইয়াছে, সেই বৎসর একত্রিশে মার্চের পর অনুষ্ঠিত সংসদের প্রথম বৈঠকে রাষ্ট্রপতি উক্ত রিপোর্ট ও স্মারকলিপি সংসদে উপস্থাপনের ব্যবস্থা করিবেন।

নবম-ক ভাগ
জরুরী বিধানাবলী
জরুরী-অবস্থা ঘোষণা

১৪১ক। (১) রাষ্ট্রপতির নিকট যদি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, এমন জরুরী-অবস্থা বিদ্যমান রহিয়াছে, যাহাতে যুদ্ধ বা বহিরাক্রমণ বা অভ্যন্তরীণ গোলযোগের দ্বারা বাংলাদেশ বা উহার যে কোন অংশের নিরাপত্তা বা অর্থনৈতিক জীবন বিপদের সম্মুখীন, তাহা হইলে তিনি ৯০[অনধিক একশত কুড়ি দিনের জন্য] জরুরী-অবস্থা ঘোষণা করিতে পারিবে ৯১[ :

তবে শর্ত থাকে যে, অনুরূপ ঘোষণার বৈধতার জন্য ঘোষণার পূর্বেই প্রধানমন্ত্রীর প্রতি-স্বাক্ষর প্রয়োজন হইবে।]

৯২[ * * *]

(২) জরুরী-অবস্থার ঘোষণা

(ক) পরবর্তী কোন ঘোষণার দ্বারা প্রত্যাহার করা যাইবে;

(খ) সংসদে উপস্থাপিত হইবে;

(গ) একশত কুড়ি দিন ৯৩[***]সময়ের অবসানে কার্যকর থাকিবে না:

তবে শর্ত থাকে যে, যদি সংসদ ভাঙ্গিয়া যাওয়া অবস্থায় অনুরূপ কোন ঘোষণা জারী করা হয় কিংবা এই দফার (গ) উপ-দফায় বর্ণিত এক শত কুড়ি দিনের মধ্যে সংসদ ভাঙ্গিয়া যায়, তাহা হইলে তাহা পুনর্গঠিত হইবার পর সংসদের প্রথম বৈঠকের তারিখ হইতে ত্রিশ দিন অতিবাহিত হইবার পূর্বে ঘোষণাটি অনুমোদন করিয়া সংসদে প্রস্তাব গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত উক্ত ত্রিশ দিনের অবসানে ৯৪[ অথবা একশত কুড়ি দিন সময়ের অবসানে, যাহা আগে ঘটে,] অনুরূপ ঘোষণা কার্যকর থাকিবে না।

(৩) যুদ্ধ বা বহিরাক্রমণ বা অভ্যন্তরীণ গোলযোগের বিপদ আসন্ন বলিয়া রাষ্ট্রপতির নিকট সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হইলে প্রকৃত যুদ্ধ বা বহিরাক্রমণ বা অভ্যন্তরীণ গোলযোগ সংঘটিত হইবার পূর্বে তিনি অনুরূপ যুদ্ধ বা বহিরাক্রমণ বা অভ্যন্তরীণ গোলযোগের জন্য বাংলাদেশ বা উহার যে কোন অংশের নিরাপত্তা বিপন্ন বলিয়া জরুরী-অবস্থা ঘোষণা করিতে পারিবেন।

জরুরী-অবস্থার সময় সংবিধানের কতিপয় অনুচ্ছেদের বিধান স্থগিতকরণ
১৪১খ। এই সংবিধানের তৃতীয় ভাগের অন্তর্গত বিধানাবলীর কারণে রাষ্ট্র যে আইন প্রণয়ন করিতে ও নির্বাহী ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে সক্ষম নহেন, জরুরী-অবস্থা ঘোষণার কার্যকরতা-কালে এই সংবিধানের ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০ ও ৪২ অনুচ্ছেদসমূহের কোন কিছুই সেইরূপ আইন-প্রণয়ন ও নির্বাহী ব্যবস্থা গ্রহণ সম্পর্কিত রাষ্ট্রের ক্ষমতাকে সীমাবদ্ধ করিবে না; তবে অনুরূপভাবে প্রণীত কোন আইনের কর্তৃত্বে যাহা করা হইয়াছে বা করা হয় নাই, তাহা ব্যতীত অনুরূপ আইন যে পরিমাণে কর্তৃত্বহীন, জরুরী-অবস্থার ঘোষণা অকার্যকর হইবার অব্যবহিত পরে তাহা সেই পরিমাণে অকার্যকর হইবে।
জরুরী-অবস্থার সময় মৌলিক অধিকারসমূহ স্থগিতকরণ

১৪১গ। (১) জরুরী-অবস্থা ঘোষণার ৯৫[ কার্যকরতা-কালে প্রধানমন্ত্রীর লিখিত পরামর্শ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি] আদেশের দ্বারা ঘোষণা করিতে পারিবেন যে, আদেশে উল্লেখিত এবং সংবিধানের তৃতীয় ভাগের অন্তর্গত মৌলিক অধিকারসমূহ বলবৎকরণের জন্য আদালতে মামলা রুজু করিবার অধিকার এবং আদেশে অনুরূপভাবে উল্লেখিত কোন অধিকার বলবৎকরণের জন্য কোন আদালতে বিবেচনাধীন সকল মামলা জরুরী-অবস্থা ঘোষণার কার্যকরতা-কালে কিংবা উক্ত আদেশের দ্বারা নির্ধারিত স্বল্পতর কালের জন্য স্থগিত থাকিবে।

(২) সমগ্র বাংলাদেশ বা উহার যে কোন অংশে এই অনুচ্ছেদের অধীন প্রণীত আদেশ প্রযোজ্য হইতে পারিবে।

(৩) এই অনুচ্ছেদের অধীন প্রণীত প্রত্যেক আদেশ যথাসম্ভব শীঘ্র সংসদে উপস্থাপিত হইবে।]

দশম ভাগ
সংবিধান-সংশোধন
সংবিধানের বিধান সংশোধনের ক্ষমতা

৯৬[ ১৪২। এই সংবিধানে যাহা বলা হইয়াছে, তাহা সত্ত্বেও-

(ক) সংসদের আইন-দ্বারা এই সংবিধানের কোন বিধান সংযোজন, পরিবর্তন, প্রতিস্থাপন বা রহিতকরণের দ্বারা সংশোধিত হইতে পারিবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে,

(অ) অনুরুপ সংশোধনীর জন্য আনীত কোন বিলের সম্পূর্ন শিরনামায় এই সংবিধানের কোন বিধান সংশোধন করা হইবে বলিয়া স্পষ্টরুপে উল্লেখ না থাকিলে বিলটি বিবেচনার জন্য গ্রহণ করা যাইবে না;

(আ) সংসদের মোট সদস্য-সংখ্যার অন্যূন দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে গৃহীত না হইলে অনুরুপ কোন বিলে সম্মতিদানের জন্য তাহা রাষ্ট্রপতির নিকট উপস্থাপিত হইবে না;

(খ) উপরি-উক্ত উপায়ে কোন বিল গৃহীত হইবার পর সম্মতির জন্য রাষ্ট্রপতির নিকট তাহা উপস্থাপিত হইলে উপস্থাপনের সাত দিনের মধ্যে তিনি বিলটিতে সম্মতিদান করিবেন, এবং তিনি তাহা করিতে অসমর্থ হইলে উক্ত মেয়াদের অবসানে তিনি বিলটিতে সম্মতিদান করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে।]

একাদশ ভাগ
বিবিধ
প্রজাতন্ত্রের সম্পত্তি

১৪৩। (১) আইনসঙ্গতভাবে প্রজাতন্ত্রের উপর ন্যস্ত যে কোন ভূমি বা সস্পত্তি ব্যতীত নিম্নলিখিত প্রজাতন্ত্রের উপর ন্যস্ত হইবে:

(ক) বাংলাদেশের যে কোন ভূমির অন্তঃস্থ সকল খনিজ ও অন্যান্য মূল্যসম্পন্ন সামগ্রী;

(খ) বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় জলসীমার অন্তর্বর্তী মহাসাগরের অন্তঃস্থ কিংবা বাংলাদেশের মহীসোপানের উপরিস্থ মহাসাগরের অন্তঃস্থ সকল ভূমি, খনিজ ও অন্যান্য মূল্যসম্পন্ন সামগ্রী; এবং

(গ) বাংলাদেশে অবস্থিত প্রকৃত মালিকবিহীন যে কোন সম্পত্তি।

(২) সংসদ সময়ে সময়ে আইনের দ্বারা বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সীমানার এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় জলসীমা ও মহীসোপানের সীমা-নির্ধারণের বিধান করিতে পারিবেন।

সম্পত্তি ও কারবার প্রভৃতি-প্রসঙ্গে নির্বাহী কর্তৃত্ব
১৪৪। প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী কর্তৃত্বে সম্পত্তি গ্রহণ, বিক্রয়, হস্তান্তর, বন্ধকদান ও বিলি-ব্যবস্থা, যে কোন কারবার বা ব্যবসায়-চালনা এবং যে কোন চুক্তি প্রণয়ন করা যাইবে।
চুক্তি ও দলিল

১৪৫। (১) প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী কর্তত্বে প্রণীত সকল চুক্তি ও দলিল রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রণীত বলিয়া প্রকাশ করা হইবে এবং রাষ্ট্রপতি যেরূপ নির্দেশ বা ক্ষমতা প্রদান করিবেন, তাঁহার পক্ষে সেইরূপ ব্যক্তি কর্তৃক ও সেইরূপ প্রণালীতে তাহা সম্পাদিত হইবে।

(২) প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী কর্তৃত্বে কোন চুক্তি বা দলিল প্রণয়ন বা সম্পাদন করা হইলে উক্ত কর্তৃত্বে অনুরূপ চুক্তি বা দলিল প্রণয়ন বা সম্পাদন করিবার জন্য রাষ্ট্রপতি কিংবা অন্য কোন ব্যক্তি ব্যক্তিগতভাবে দায়ী হইবেন না, তবে এই অনুচ্ছেদ সরকারের বিরুদ্ধে যথাযথ কার্যধারা আনয়নে কোন ব্যক্তির অধিকার ক্ষুণ্ন করিবে না।

আন্তর্জাতিক চুক্তি

৯৭[ ১৪৫ক। বিদেশের সহিত সম্পাদিত সকল চুক্তি রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করা হইবে, এবং রাষ্ট্রপতি তাহা সংসদে পেশ করিবার ব্যবস্থা করিবেনঃ

তবে শর্ত থাকে যে, জাতীয় নিরাপত্তার সহিত সংশ্লিষ্ট অনুরুপ কোন চুক্তি কেবলমাত্র সংসদের গোপন বৈঠকে পেশ করা হইবে।]

বাংলাদেশের নামে মামলা
১৪৬। “বাংলাদেশ”-এই নামে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বা বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা যাইতে পারিবে।
কতিপয় পদাধিকারীর পারিশ্রমিক প্রভৃতি

১৪৭। (১) এই অনুচ্ছেদ প্রযোজ্য হয়, এইরূপ কোন পদে অধিষ্ঠিত বা কর্মরত ব্যক্তির পারিশ্রমিক, বিশেষ-অধিকার ও কর্মের অন্যান্য শর্ত সংসদের আইনের দ্বারা বা অধীন নির্ধারিত হইবে, তবে অনুরূপভাবে নির্ধারিত না হওয়া পর্যন্ত

(ক) এই সংবিধান প্রবর্তনের অব্যবহিত পূর্বে ক্ষেত্রমত সংশ্লিষ্ট পদে অধিষ্ঠিত বা কর্মরত ব্যক্তির ক্ষেত্রে তাহা যেরূপ প্রযোজ্য ছিল, সেইরূপ হইবে; অথবা

(খ) অব্যবহিত পূর্ববর্তী উপ-দফা প্রযোজ্য না হইলে রাষ্ট্রপতি আদেশের দ্বারা যেরূপ নির্ণয় করিবেন, সেইরূপ হইবে।

(২) এই অনুচ্ছেদ প্রযোজ্য হয়, এইরূপ কোন পদে অধিষ্ঠিত বা কর্মরত ব্যক্তির কার্যভারকালে তাঁহার পারিশ্রমিক, বিশেষ অধিকার ও কর্মের অন্যান্য শর্তের এমন তারতম্য করা যাইবে না, যাহা তাঁহার পক্ষে অসুবিধাজনক হইতে পারে।

(৩) এই অনুচ্ছেদ প্রযোজ্য হয়, এইরূপ কোন পদে নিযুক্ত বা কর্মরত ব্যক্তি কোন লাভজনক পদ কিংবা বেতনাদিযুক্ত পদ বা মর্যাদায় বহাল হইবেন না কিংবা মুনাফালাভের উদ্দেশ্যযুক্ত কোন কোম্পানী, সমিতি বা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনায় বা পরিচালনায় কোনরূপ অংশগ্রহণ করিবেন না:

তবে শর্ত থাকে যে, এই দফার উদ্দেশ্যসাধনকল্পে উপরের প্রথমোলি্লখিত পদে অধিষ্ঠিত বা কর্মরত রহিয়াছেন, কেবল এই কারণে কোন ব্যক্তি অনুরূপ লাভজনক পদ বা বেতনাদিযুক্ত পদ বা মর্যাদায় অধিষ্ঠিত বলিয়া গণ্য হইবেন না।

(৪) এই অনুচ্ছেদ নিম্নলিখিত পদসমূহে প্রযোজ্য হইবে:

(ক) রাষ্ট্রপতি,

৯৮[ * * *]

৯৯[ (খ) প্রধানমন্ত্রী ;]

(গ) স্পীকার বা ডেপুটি স্পীকার,

১০০[ (ঘ) মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী বা উপ-মন্ত্রী;]

(ঙ) সুপ্রীম কোর্টের বিচারক,

(চ) মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক,

(ছ) নির্বাচন কমিশনার,

(জ) সরকারী কর্ম কমিশনের সদস্য।

পদের শপথ

১৪৮। (১) তৃতীয় তফসিলে উল্লিখিত যে কোন পদে নির্বাচিত বা নিযুক্ত ব্যক্তি কার্যভার গ্রহণের পূর্বে উক্ত তফসিল-অনুযায়ী শপথগ্রহণ বা ঘোষণা (এই অনুচ্ছেদে “শপথ” বলিয়া অভিহিত) করিবেন এবং অনুরূপ শপথপত্রে বা ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরদান করিবেন।

১০১[ * * *]

(২) এই সংবিধানের অধীন নির্দিষ্ট কোন ব্যক্তির নিকট শপথগ্রহণ আবশ্যক হইলে১০২[ * * *] অনুরূপ ব্যক্তি যেরূপ ব্যক্তি ও স্থান নির্ধারণ করিবেন, সেইরূপ ব্যক্তির নিকট সেইরূপ স্থানে শপথগ্রহণ করা যাইবে।

১০৩[ ২(ক) ১২৩ অনুচ্ছেদের (৩) দফার অধীন অনুষ্ঠিত সংসদ সদস্যদের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপিত হইবার তারিখ হইতে পরবর্তী তিন দিনের মধ্যে এই সংবিধানের অধীন এতদুদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা তদুদ্দেশ্যে অনুরূপ ব্যক্তি কর্তৃক নির্ধারিত অন্য কোন ব্যক্তি যে কোন কারণে নির্বাচিত সদস্যদের শপথ পাঠ পরিচালনা করিতে ব্যর্থ হইলে বা না করিলে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার উহার পরবর্তী তিন দিনের মধ্যে উক্ত শপথ পাঠ পরিচালনা করিবেন, যেন এই সংবিধানের অধীন তিনিই ইহার জন্য নির্দিষ্ট ব্যক্তি।]

(৩) এই সংবিধানের অধীন যে ক্ষেত্রে কোন ব্যক্তির পক্ষে কার্যভার গ্রহণের পূর্বে শপথগ্রহণ আবশ্যক, সেই ক্ষেত্রে শপথ গ্রহণের অব্যবহিত পর তিনি কার্যভার গ্রহণ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে।

প্রচলিত আইনের হেফাজত
১৪৯। এই সংবিধানের বিধানাবলী-সাপেক্ষে সকল প্রচলিত আইনের কার্যকরতা অব্যাহত থাকিবে, তবে অনুরূপ আইন এই সংবিধানের অধীন প্রণীত আইনের দ্বারা সংশোধিত বা রহিত হইতে পারিবে।
ক্রান্তিকালীন ও অস্থায়ী বিধানাবলী

১০৪[ ১৫০।(১) এই সংবিধানের অন্য কোন বিধান সত্ত্বেও ১৯৭২ সালের ১৬ই ডিসেম্বর তারিখে এই সংবিধান প্রবর্তনকালে সংবিধানের চতুর্থ তফসিলে বর্ণিত বিধানাবলী ক্রান্তিকালীন ও অস্থায়ী বিধানাবলী হিসাবে কার্যকর থাকিবে।

(২) ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ তারিখ হইতে ১৯৭২ সালের ১৬ই ডিসেম্বর তারিখে এই সংবিধান প্রবর্তন হইবার অব্যবহিত পূর্ব পর্যন্ত সময়কালের মধ্যে সংবিধানের পঞ্চম তফসিলে বর্ণিত ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ তারিখে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে দেওয়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণ, ষষ্ঠ তফসিলে বর্ণিত ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ তারিখে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার টেলিগ্রাম এবং সপ্তম তফসিলে বর্ণিত ১৯৭১ সালের ১০ই এপ্রিল তারিখে মুজিবনগর সরকারের জারিকৃত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র হইল বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তি সংগ্রামের ঐতিহাসিক ভাষণ ও দলিল, যাহা উক্ত সময়কালের জন্য ক্রান্তিকালীন ও অস্থায়ী বিধানাবলী বলিয়া গণ্য হইবে।]

রহিতকরণ

১৫১। রাষ্ট্রপতির নিম্নলিখিত আদেশসমূহ এতদ্বারা রহিত করা হইল:

(ক) আইনের ধারাবাহিকতা বলবৎকরণ আদেশ (১৯৭১ সালের ১০ই এপ্রিল তারিখে প্রণীত);

(খ) ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ অস্থায়ী সংবিধান আদেশ;

(গ) ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ হাইকোর্ট আদেশ (১৯৭২ সালের পি.ও. নং ৫);

(ঘ) ১৯৭২ সালের বাংলদেশ মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক আদেশ (১৯৭২ সালের পি.ও. নং ১৫);

(ঙ) ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ গণপরিষদ আদেশ (১৯৭২ সালের পি.ও. নং ২২);

(চ) ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন আদেশ (১৯৭২ সালের পি.ও. নং ২৫);

(ছ) ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশনসমূহ আদেশ (১৯৭২ সালের পি.ও. নং ৩৪);

(জ) ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ (সরকারী কর্ম সম্পাদন) আদেশ (১৯৭২ সালের পি.ও. নং ৫৮)

ব্যাখ্যা

১৫২। (১) বিষয় বা প্রসঙ্গের প্রয়োজনে অন্যরূপ না হইলে এই সংবিধানে

“অধিবেশন” (সংসদ-প্রসঙ্গে) অর্থ এই সংবিধান-প্রবর্তনের পর কিংবা একবার স্থগিত হইবার বা ভাঙ্গিয়া যাইবার পর সংসদ যখন প্রথম মিলিত হয়, তখন হইতে সংসদ স্থগিত হওয়া বা ভাঙ্গিয়া যাওয়া পর্যন্ত বৈঠকসমূহ;

“অনুচ্ছেদ” অর্থ এই সংবিধানের কোন অনুচ্ছেদ;

১০৫[ ***]

“অবসর-ভাতা” অর্থ আংশিকভাবে প্রদেয় হউক বা না হউক, যে কোন অবসর-ভাতা, যাহা কোন ব্যক্তিকে বা ব্যক্তির ক্ষেত্রে দেয়; এবং কোন ভবিষ্য তহবিলের চাঁদা বা ইহার সহিত সংযোজিত অতিরিক্ত অর্থ প্রত্যর্পণ-ব্যপদেশে দেয় অবসরকালীন বেতন বা আনুতোষিক ইহার অন্তর্ভূ্ক্ত হইবে;

“অর্থ-বৎসর” অর্থ জুলাই মাসের প্রথম দিবসে যে বৎসরের আরম্ভ;

“আইন” অর্থ কোন আইন, অধ্যাদেশ, আদেশ, বিধি, প্রবিধান, উপ-আইন, বিজ্ঞপ্তি ও অন্যান্য আইনগত দলিল এবং বাংলাদেশে আইনের ক্ষমতাসম্পন্ন যে কোন প্রথা বা রীতি;

১০৬[ “আদালত” অর্থ সুপ্রীমকোর্টসহ যে কোন আদালত;]

“আপীল বিভাগ” অর্থ সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগ;

“উপ-দফা” অর্থ যে দফায় শব্দটি ব্যবহৃত, সেই দফার একটি উপ-দফা;

১০৭[ * * *]

“ঋণগ্রহণ” বলিতে বাৎসরিক কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য অর্থসংগ্রহ অন্তর্ভুক্ত হইবে; এবং “ঋণ” বলিতে তদনুরূপ অর্থ বুঝাইবে;

“করারোপ” বলিতে সাধারণ, স্থানীয় বা বিশেষ-যে কোন কর, খাজনা, শুল্ক বা বিশেষ করের আরোপ অন্তর্ভুক্ত হইবে; এবং “কর” বলিতে তদনুরূপ অর্থ বুঝাইবে;

“গ্যারান্টি” বলিতে কোন উদ্যোগের মুনাফা নির্ধারিত পরিমাণের অপেক্ষা কম হইলে তাহার জন্য অর্থ প্রদান করিবার বাধ্যবাধকতা-যাহা এই সংবিধান-প্রবর্তনের পূর্বে গৃহীত হইয়াছে-অন্তর্ভুক্ত হইবে;

“জেলা-বিচারক” বলিতে অতিরিক্ত জেলা-বিচারক অন্তর্ভুক্ত হইবেন;

“তফসিল” অর্থ এই সংবিদানের কোন তফসিল;

“দফা” অর্থ যে অনুচ্ছেদে শব্দটি ব্যবহৃত, সেই অনুচ্ছেদের একটি দফা;

“দেনা” বলিতে বাৎসরিক কিস্তি হিসাবে মূলধন পরিশোধের জন্য যে কোন বাধ্যবাধকতাজনিত দায় এবং যে কোন গ্যারান্টিযুক্ত দায় অন্তর্ভুক্ত হইবে; এবং “দেনার দায়” বলিতে তদনুরূপ অর্থ বুঝাইবে;

“নাগরিক” অর্থ নাগরিকত্ব-সম্পর্কিত আইনানুযায়ী যে ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক;

“প্রচলিত আইন” অর্থ এই সংবিধান-প্রবর্তনের অব্যবহিত পূর্বে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সীমানায় বা উহার অংশবিশেষে আইনের ক্ষমতাসম্পন্ন কিন্তু কার্যক্ষেত্রে সক্রিয় থাকুক বা না থাকুক, এমন যে কোন আইন;

“প্রজাতন্ত্র” অর্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ;

“প্রজাতন্ত্রের কর্ম” অর্থ অসামরিক বা সামরিক ক্ষমতায় বাংলাদেশ সরকার-সংক্রান্ত যে কোন কর্ম, চাকুরী বা পদ এবং আইনের দ্বারা প্রজাতন্ত্রের কর্ম বলিয়া ঘোষিত হইতে পারে, এইরূপ অন্য কোন কর্ম;

১০৮[ ***]

“প্রধান নির্বাচন কমিশনার” অর্থ এই সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদের অধীন উক্ত পদে নিযুক্ত কোন ব্যক্তি;

“প্রধান বিচারপতি” অর্থ বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি;

“প্রশাসনিক একাংশ” অর্থ জেলা কিংবা এই সংবিধানের ৫৯ অনুচ্ছেদের উদ্দেশ্য-সাধনকল্পে আইনের দ্বারা অভিহিত অন্য কোন এলাকা;

“বিচারক” অর্থ সুপ্রীম কোর্টের কোন বিভাগের কোন বিচারক;

“বিচার-কর্মবিভাগ” অর্থ জেলা-বিচারক-পদের অনূর্ধ্ব কোন বিচারবিভাগীয় পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিদের লইয়া গঠিত কর্মবিভাগ;

“বৈঠক” (সংসদ-প্রসঙ্গে) অর্থ মূলতবী না করিয়া সংসদ যতক্ষণ ধারাবাহিকভাবে বৈঠকরত থাকেন, সেইরূপ মেয়াদ;

“ভাগ” অর্থ এই সংবিধানের কোন ভাগ;

“রাজধানী” অর্থ এই সংবিধানের ৫ অনুচ্ছেদের রাজধানী বলিতে যে অর্থ করা হইয়াছে;

“রাজনৈতিক দল” বলিতে এমন একটি অধিসঙ্ঘ বা ব্যক্তিসমষ্টি অন্তর্ভুক্ত, যে অধিসঙ্ঘ বা ব্যক্তিসমষ্টি সংসদের অভ্যন্তরে বা বাহিরে স্বাতন্ত্র্যসূচক কোন নামে কার্য করেন এবং কোন রাজনৈতিক মত প্রচারের বা কোন রাজনৈতিক তৎপরতা পরিচালনার উদ্দেশ্যে অন্যান্য অধিসঙ্ঘ হইতে পৃথক কোন অধিসঙ্ঘ হিসাবে নিজদিগকে প্রকাশ করেন;

“রাষ্ট্র” বলিতে সংসদ, সরকার ও সংবিধিবদ্ধ সরকারী কর্তৃপক্ষ অন্তর্ভুক্ত;

“রাষ্ট্রপতি” অর্থ এই সংবিধানের অধীন নির্বাচিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি কিংবা সাময়িকভাবে উক্ত পদে কর্মরত কোন ব্যক্তি;

“শৃঙ্খলা-বাহিনী” অর্থ

(ক) স্থল, নৌ বা বিমান-বাহিনী;

(খ) পুলিশ-বাহিনী;

(গ) আইনের দ্বারা সংজ্ঞার অর্থের অন্তর্গত বলিয়া ঘোষিত যে কোন শৃঙ্খলা-বাহিনী;

“শৃঙ্খলামূলক আইন” অর্থ শৃঙ্খলা- বাহিনীর নিয়ন্ত্রণকারী কোন আইন;

“সংবিধিবদ্ধ সরকারী কতর্ৃপক্ষ” অর্থ যে কোন কর্তৃপক্ষ, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান, যাহার কার্যাবলী বা প্রধান প্রধান কার্য কোন আইন, অধ্যাদেশ, আদেশ বা বাংলাদেশে আইনের ক্ষমতাসম্পন্ন চুক্তিপত্র-দ্বারা অর্পিত হয়;

“সংসদ” অর্থ এই সংবিধানের ৬৫ অনুচ্ছেদ-দ্বারা প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের সংসদ;

“সম্পত্তি” বলিতে সকল স্থাবর ও অস্থাবর, বস্তুগত ও নির্বস্তগত সকল প্রকার সম্পত্তি, বাণিজ্যিক ও শিল্পগত উদ্যোগ এবং অনুরূপ সম্পত্তি বা উদ্যোগের সহিত সংশ্লিষ্ট যে কোন স্বত্ব বা অংশ অন্তর্ভুক্ত হইবে;

“সরকারী কর্মচারী” অর্থ প্রজাতন্ত্রের কর্মে বেতনাদিযুক্ত পদে অধিষ্ঠিত বা কর্মরত কোন ব্যক্তি;

“সরকারী বিজ্ঞপ্তি” অর্থ বাংলাদেশে গেজেটে প্রকাশিত কোন বিজ্ঞপ্তি;

“সিকিউরিটি” বলিতে স্টক অন্তর্ভুক্ত হইবে;

“সুপ্রীম কোর্ট” অর্থ এই সংবিধানের ৯৪ অনুচ্ছেদ-দ্বারা গঠিত বাংলাদেশের সুপ্রীম কোর্ট;

“স্পীকার” অর্থ এই সংবিধানের ৭৪ অনুচ্ছেদ-অনুসারে সাময়িকভাবে স্পীকারের পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তি;

“হাইকোর্ট বিভাগ” অর্থ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ।

(২) ১৮৯৭ সালের জেনারেল ক্লজেস্ অ্যাক্ট

(ক) সংসদের কোন আইনের ক্ষেত্রে যেরূপ প্রযোজ্য, এই সংবিধানের ক্ষেত্রে সেইরূপ প্রযোজ্য হইবে;

(খ) সংসদের কোন আইনের দ্বারা রহিত কোন আইনের ক্ষেত্রে যেরূপ প্রযোজ্য, এই সংবিধানের দ্বারা রহিত কিংবা এই সংবিধানের কারণে বাতিল বা কার্যকরতালুপ্ত কোন আইনের ক্ষেত্রে সেইরূপ প্রযোজ্য হইবে।

প্রবর্তন, উল্লেখ ও নির্ভরযোগ্য পাঠ

১৫৩। (১) এই সংবিধানকে “গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান” বলিয়া উল্লেখ করা হইবে এবং ১৯৭২ সালের ডিসেম্বর মাসের ১৬ তারিখে ইহা বলবৎ হইবে, যাহাকে এই সংবিধানে “সংবিধান-প্রবর্তন” বলিয়া অভিহিত করা হইয়াছে।

(২) বাংলায় এই সংবিধানের একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ ও ইংরাজীতে অনুদিত একটি নির্ভরযোগ্য অনুমোদিত পাঠ থাকিবে এবং উভয় পাঠ নির্ভরযোগ্য বলিয়া গণপরিষদের স্পীকার সার্টিফিকেট প্রদান করিবেন।

(৩) এই অনুচ্ছেদের (২) দফা-অনুযায়ী সার্টিফিকেটযুক্ত কোন পাঠ এই সংবিধানের বিধানাবলীর চূড়ান্ত প্রমাণ বলিয়া গণ্য হইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, বাংলা ও ইংরাজী পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।

কন্টেন্ট ক্রেডিট ঃLegislative and Parliamentary Affairs Division । Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs। লিঙ্কঃ মিনিস্ট্রি অব ল

সংগৃহীত

আগের পোস্টমাননীয় মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী মহোদয়গণের টেলিফোন নম্বরসমূহ
পরের পোস্টফের উত্তপ্ত, চট্টগ্রাম কলেজে অস্ত্র হাতে মহড়া

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন