ইউপিডিএফ-এর অভিযোগ সেনাবাহিনীর সিন্দুকছড়ি জোন তাদের মেসঘর ভাংচুর করেছে! যদিও ইউপিডিএফ-এর এ অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে প্রাথমিক অবস্থায় প্রতিয়মান। যুক্তির খাতিরে তাদের মেসঘর ভাংচুরের অভিযোগ মেনে নিলাম কিন্তু তারা কোনপ্রকার অনুমতি ছাড়া সাংগঠনিক কার্যক্রমের জন্য মেসঘর নির্মাণ করতে পারে কি? প্রশাসনের কোন অনুমতি ছাড়া যদি নাশকতার কাজে ব্যবহারিত মেসঘর আদলে অফিস গড়ে তোলার নিয়মকানুন থাকে তাহলে রাষ্ট্র বিরোধী তৎপরতার মেসঘর ভেঙে দেওয়া চরম অন্যায়। আমরা জানি যে একটি সামাজিক সংগঠন গঠন ও পরিচালনা করতেও নিবন্ধন করার নিয়ম বিধিবিধান রয়েছে। রাজনৈতিক গণতান্ত্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করা অথবা অাঞ্চলিক সংগঠন হিসেবে ইউপিডিএফ যে কোন সাংগঠনিক কাজের জন্য অফিস নির্মাণ ও কার্যক্রম পরিচালনার জন্যে অবশ্যই প্রশাসনের অনুমতির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আর অনুমতি ও নিবন্ধন ছাড়া ইউপিডিএফ এসকল মেসঘর করে সাংগঠনিক অপতৎপরতা করে থাকে তার জন্য সেনাবাহিনী রাষ্ট্র ও জনগণের কল্যাণে মেসঘর ভেঙে দেওয়া চরম যৌক্তিক। জগাখিচুরির ঘর বা মেসঘর আদলে অফিস ঘর ইউপিডিএফ এসব ঘরে সাধারণ উপজাতি নারীদের তুলে এনে ধর্ষণ করে। অবৈধ অস্ত্র ও জনবল নিয়ে নানান অপরাধ সংগঠিত করার পরিকল্পনাও কথিত ঘর গুলোতে হয়।
ইউপিডিএফ সবসময় দাবি করে আসছে তারা গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাসী। তাদের আন্দোলন গণতান্ত্রিক। আদলে তারা গণতান্ত্রিক আন্দোলন করে নাকি রাষ্ট্র বিরোধী অপতৎপরতা করে তার সত্যতা অনুসন্ধানে একটু গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের দিকে দৃষ্টি দিলে হবে। ইউপিডিএফ-এর বেপরোয়া বাংগালী, সেনা বিদ্বেষী মনোভাব, নাশকতা ও বিশৃঙ্খলা তৎপরতা ইউপিডিএফ’কে উগ্রবাদী দেশদ্রোহী বিশ্বাসঘাতক হিসেবে প্রতিয়মান করে। ইউপিডিএফ প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি প্রসিত বিকাশ খিসার বিরুদ্ধে বাঘাইছড়ি, নানিয়ারচর সহ পার্বত্যাঞ্চলের বিভিন্ন থানায় অন্ততপক্ষে ২৫টি হত্যা ও অস্ত্র মামলা রয়েছে পায়। ইউপিডিএফ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৫০০ শতাধিক মামলা রয়েছে প্রায়। তবুও কি বলবেন ইউপিডিএফ দুধে ধোয়া তুলসীপাতা? আর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্তৃক ইউপিডিএফ-এর আটককৃত সশস্ত্র অস্ত্রধারী জনবলদের জবানবন্দি গুলো একটু ঘাটলে ইউপিডিএফ সম্পর্কে সচ্ছল একটা ধারণা পাওয়া যেতে পারে। তাদের মূল ধাঁচ সম্পর্কেও বটেই। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানকালে আটককৃত তাদের জনবলের জবানবন্দিও উদ্ধারকৃত অবৈধ অস্ত্র, চাঁদার টাকা, টোকন সহ তাদের বিগত বছরগুলোর গুলো সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিচার বিশ্লেষণ করলে এটা অনুমেয় যে ইউপিডিএফ পার্বত্যাঞ্চলের একটি সন্ত্রাসী সংগঠন এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপ। তাদের নেতাকর্মীদের যেখানে পাওয়া যাবে সেখানে গ্রেফতার ও রাষ্ট্র বিরোধী তৎপরতার অজুহাতে মামলা দেওয়া বাধ্যগতা হিসেবে নেওয়া আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রয়োজন। প্রকাশ্যে দিবালোকে তারা রাষ্ট্র বিরোধী তৎপরতায় জড়িত। কোন আইনে ইউপিডিএফ-এর লোকজন সাধারণ পার্বত্যবাসীদের হয়রানি করতে মামলা করার সুযোগ পায়? ইউপিডিএফ জাতির অধিকারের দোহাই দিয়ে বছরে ৩০০ কোটি টাকার অধিক চাঁদাবাজি করে। এ টাকা সংগঠনের শীর্ষ নেতারা ঢাকা-চট্টগ্রাম ও বিদেশে বসে আরাম-আয়েশে ভোগ করে তাদের পরিবার সন্তান সন্তানাদি নিয়ে। চাঁদাবাজির টাকার অর্ধেক অংশ দিয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্র গুলো থেকে অবৈধ অস্ত্র ক্রয় ও প্রশিক্ষণ নিয়ে রাষ্ট্রের প্রশাসনও নাগরিকদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে। কিছু চাঁদার ভাগ এদেশীয় তথাকথিত সুশীল ও প্রগতিশীল, রাম-বামদের নিকটও যায়। ইউপিডিএফ-এর বিরুদ্ধে আনিত এসব অভিযোগ বাস্তবসত্য যেমন তেমনি উন্মোচিত ও প্রমাণিত। ইউপিডিএফ দল ত্যাগ করা অনেক নেতাকর্মী প্রকাশ্যে তা সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ করেছে। ইউপিডিএফ যে একটি নারী নিপীড়ক ও ধর্ষকদের সংগঠন তা ইউপিডিএফ কর্তৃক অপহৃত রাংগামাটি সরকারী কলেজের ছাত্রী মিতালী চাকমার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে প্রমাণিত। ইউপিডিএফ-এর নারী সংগঠন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের যোগদান না করার কারণে মিতালী চাকমাকে ইউপিডিএফ অপহরণ করে তিনমাস গণধর্ষণ করে মুমূর্ষু অবস্থায় সেনাবাহিনীর টহলদলের উপস্থিতি টের পেয়ে ফেলে যায়।গত ২০১৭ নভেম্বর-এর সময় সেনাবাহিনী মিতালী চাকমাকে উদ্ধার করে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে। ইউপিডিএফ কর্তৃক সংগঠিত এমন সব জঘন্য অপরাধ বিশ্লেষণ করলে এটা অনুমেয় যে ইউপিডিএফ একটি সন্ত্রাসবাদী বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গ্রুপ।সুতরাং সেনাবাহিনীর সিন্দুকছড়ি জোন যদি ইউপিডিএফ-এর মেসঘর ভেঙে দিয়েও থাকে আমি মনে করি সেনাবাহিনীকে এজন্য সাধুবাদ দেওয়া উচিত পার্বত্যবাসীর।পার্বত্যাঞ্চলে ইউপিডিএফ-এর মতো সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর রাষ্ট্র বিরোধী অপতৎপরতা বন্ধের জন্য সেনাবাহিনীর এ পদক্ষেপ প্রশংসনীয়।
ইউপিডিএফ বারবার গণতান্ত্রিক পথে আন্দোলন করে বাধা প্রাপ্ত হওয়ার অজুহাত তোলে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে!এমনকি তারা নিজেদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনকারী রাজনৈতিক দল-সংগঠন হিসেবে দাবি করে আসছে!ইউপিডিএফ-এর এসব ভাঁওতাবাজি দাবির বিষয়ে আমার প্রশ্ন ইউপিডিএফ কি ইসি কর্তৃক নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল? সত্য এটা যে ইউপিডিএফ ইসি কর্তৃক কোন রাজনৈতিক দল নয়,এটা সকলের জানা।তাহলে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিকও আন্দোলনের দোহাই দিয়ে পার্বত্যাঞ্চলে ইউপিডিএফ কিসের ভিত্তিতে অফিস-মেসঘর প্রতিষ্ঠিত করে?নিবন্ধিত কোন রাজনৈতিক দল বা সংগঠনও ইউপিডিএফ নয়, তাহলে সাংগঠনিক কার্যক্রম কোন ভিত্তিতে পরিচালনা করে?এমন প্রশ্ন কি কেউ ইউপিডিএফ-এর নিকট করে?অনুমতি ছাড়া যত্রতত্র অফিস, কথিত মেসঘর- জগাখিচুরি ঘর নির্মাণ করে রাষ্ট্র বিরোধী কার্যক্রম কতটুকু আইন সম্মত? আর রাষ্ট্রের জন্য নিরাপত্তা সূলভ কি?রাষ্ট্র বিরোধী তৎপরতা করার পাশাপাশি অবৈধ অস্ত্র নিয়ে চাঁদাবাজিও সাধারণ মানুষ খুন-গুম ও আধ্যিপত বিস্তারকে কেন্দ্র করে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ জড়িয়ে একে অপরের মেসঘর ভাংচুর করে তার দায়ীভার সেনাবাহিনীর উপর আরোপিত করে ইউপিডিএফ!সেনাবাহিনী কি দা, রামদা কুড়াল নিতে চলাফেরায় করে নাকি উপরে নিচে টিনের ছাউনি ঘর কেটে টুকরো টুকরো করবে?পার্বত্যাঞ্চলে প্রতিটি হত্যাকান্ডের জন্য ইউপিডিএফ দায়ী। চাঁদাবাজি, অস্ত্রবাজি করার পাশাপাশি সাধারণ উপজাতি-বাংগালীর জীবন অতিষ্ঠ করে ফেলছে ইউপিডিএফ। ভবিষ্যতেও পাহাড়ে সকল ধ্বংসাত্মক কাজ ইউপিডিএফ সংগঠিত করবে।এখানকার মানুষের জন্য চরম হুমকিও ভয়ভীতিকর মূর্তিমান নাম ইউপিডিএফ। বৌদ্ধ বিহার-এর নামে পাহাড়ে ভূমি দখলও ইউপিডিএফ করে। বৌদ্ধ বিহারও ভাংচুর করে, এমনকি সাধারণ উপজাতিদের ঘরে আগুন দিয়েও তার দায়ভার বাংগালীও সেনাবাহিনী উপর চাপিয়ে মিডিয়া সরগরম করিয়ে ব্যাপক সুবিধা ভোগ করে। পাহাড়ি-বাংগালী দাঙ্গা, জাতিগত বিভেদ সৃষ্টি, বিদ্বেষও ইউপিডিএফ সৃষ্টি করে। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মতো জঘন্য মিথ্যা অপবাদ ইউপিডিএফ দেয় শুধু রাজনৈতিকও সাংগঠনিক সুবিধা পেতে। এখানকার প্রশাসনকে বেকায়দা ফেলা ইউপিডিএফ-এর কাছে পান্তা ভাত।যেমন ডিসি, এসপি, ইউএনও, ওসি, সেনা অফিসারদেরও ইউপিডিএফ নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য মিথ্যা অপবাদে জড়িয়ে গুজব রটিয়ে ফায়দা লুটে নেওয়া ইউপিডিএফ-এর অন্যতম অর্জন। বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের স্বাধীনতাকেও ইউপিডিএফ অস্বীকার করে পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলার ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করার তাগিদে নীল নকশা বাস্তবায়নে কাজ করছে। বাংগালী, সেনাবাহিনীও সাধারণ উপজাতিদের পক্ষে যারা কথা বলে তাদের টার্গেট করে ইউপিডিএফ কিলিং মিশন পরিচালনা করে পার্বত্য জুড়ে৷এখানকার মানবসভ্যতার জন্য মারাত্মক হুমকি ইউপিডিএফ-জেএসএস সহ সকল সন্ত্রাসী গ্রুপ গুলো। এদের মূলত লক্ষ্য জাতির অধিকার নয়, এরা জাতির অধিকারের দোহাই দিয়ে সাধারণ মানুষের রক্ত চুষে খায় ভয়ংকর চাঁদাবাজির মাধ্যমে। অনেক সময় স্বজাতি উপজাতিদেরও নিজেদের প্রয়োজনে বলি দেয় ইউপিডিএফ৷ নতুন নতুন ইস্যু সৃষ্টি করার লক্ষ্যেও ইউপিডিএফ অনেক সুসংগঠিত।
পার্বত্য জনপদের নিরাপত্তা, জীবনমান রক্ষায়ও ভবিষ্যত পার্বত্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার আলোকে বিবেচনা করে বলতে গেলে ইউপিডিএফ-এর কার্যক্রমে বাধাও মেসঘর ভাংচুর বিষয়ে ইউপিডিএফ কর্তৃক অভিযোগ করার কোন অধিকার নেই৷ তারা অবৈধ এবং নিবন্ধন বিহীন একটি সংগঠন। তাদের পার্বত্যাঞ্চলে রাজনৈতিক চর্চা করারও কোন অধিকার নেই। হরতাল কর্মসূচীর নামে মানুষ হত্যা, চাঁদা আদায়ের জন্য মানুষ হত্যা, সংগঠনে যোগদান না করায় নারীকে গণধর্ষণ এসব কি ইউপিডিএফ-এর জাতির অধিকার? রাজনৈতিক দল হিসেবে তো তারা নিবন্ধিত নয় এমনকি সংগঠন হিসেবেও তাদের নিবন্ধন নেই। তারা কোন ক্ষমতা বলে পাহাড়ের আনাচে কানাচে নামে বেনামে অফিস ও অস্ত্রধারী থাকার নিমিত্তে মেসঘর, কথিত জগাখিচুরি ঘর নির্মাণ করে?তাদের সকল অফিস গুটিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন।তাদের অফিস গুলো হতে সেনাবাহিনীও বাংগালী সহ সাধারণ উপজাতিদের বিরুদ্ধে কার্যক্রম পরিচালিত হয়। যদিও ইউপিডিএফ সত্য স্বীকার করে নেওয়ার মতো সংগঠন না।মিথ্যা বানোয়াট উদ্দেশ্য প্রণোদিত অপপ্রচার হচ্ছে ইউপিডিএফ-এর অন্যতম ভিত্তি।আদতে প্রকৃত সত্য হচ্ছে ইউপিডিএফ-এর কোন মেসঘর সেনাবাহিনী ভেঙে দেয়নি,এটা সম্পূর্ণ গুজব এবং ভিত্তিহীন বানোয়াট অভিযোগ।চাঁদাবাজির টাকা ভাগাভাগি নিয়ে নিজেরা নিজেদের অবৈধ কাজে ব্যবহারিত এসব ঘর ভাংচুর করে তার দায়ভার সেনাবাহিনী উপর দিয়ে সুযোগ-সুবিধা আদায় করার চেষ্টা করছে। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে পূর্বেও ইউপিডিএফ অবৈধ পন্থা অবলম্বন করে নানান রকম ভিত্তিহীন অভিযোগ রটিয়ে দিয়ে ছিলো।
উল্লেখ্য যে, গত ১৭ অক্টোবর সেনাবাহিনী উক্ত মেসঘর থেকে অবৈধ অস্ত্র ও টাকা চাঁদার রশিদ সহ এক সন্ত্রাসীকে আটক করে।