প্রবাদ আছে ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার। কালের বিবর্তনে প্রবাদটির হারিয়ে গেলেও বাস্তবতা রেখেছে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে। এই প্রবাদটি জিইয়ে রেখেছে আত্মস্বীকৃত রাজাকার ত্রিদিব রায়ের পুত্র কথিত রাজা ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায়। আসুন জেনে নেওয়া যাক রাজাকার ত্রিদিব রায় সম্পর্কে। ৭২ সালে দালাল আইনে তালিকায় নাম আসে ত্রিদিব রায়ের। ত্রিদিব রায় চাকমা জনগোষ্ঠীর অথাৎ চাকমা সার্কেলের ৫০ তম রাজা। ১৯৪৭ সালে বৃটিশরা ভারতীয় উপমহাদেশ ছেড়ে যাওয়ার সময় এবং ভারত ভাগ কালে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাকিস্তানের অংশে পড়ে। তৎকালীন পার্বত্য চট্টগ্রামে ভারতের পতাকা উত্তোলন করেন তথাকথিত রাজা ত্রিদিব রায়। এবং ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার যুদ্ধে সময় রাজাকার ত্রিদিব রায় বাংলাদেশের বিরোধিতা করে পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান করে। যুদ্ধে বাংলাদেশ স্বাধীন হলে কথিত রাজা পাকিস্তানে চলে যায়। পাকিস্তান রাষ্ট্রও তাকে অবমূল্যায়ন করেননি। আমৃত্যু দপ্তরবিহীন মন্ত্রীর মর্যাদা দান করেছিল তাকে। এজন্য তাকে বলা হতো পাকিস্তানের উজিরে খামাখা! ৪২ বছর ইসলামাবাদেই ছিল সে। পাকিস্তানের হয়ে আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূতও ছিলেন। ২০১২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানেই মারা যায় রাজা ত্রিদিব রায়। লাশ পাকিস্তানের মাটিতে সমাধি করা হয়। যুদ্ধ অপরাধের কারণে তার লাশ বাংলাদেশের মাটিতে আনা সম্ভব হয়নি। একজন আত্মস্বীকৃত রাজাকারের পুত্র বর্তমান ৫১ তম চাকমা সার্কেল চীপ ব্যারিষ্টার রাজা দেবাশীষ রায়। যার উত্তরসূরীরা বাংলাদেশ নামক অস্তিত্বকে অস্বীকার করেছে সেই কিভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে লালন করবেন? কথিত রাজা দেবাশীষ রায় দেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিচ্ছিন্ন করতে দীর্ঘদিন হতে বিশ্বজনমত গঠন ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বাংগালী, সেনাবাহিনীর উপস্থিতি নিয়ে মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়েছে। এদেশীয় ষড়যন্ত্রকারী রামবামদের সঙ্গে নিয়ে জঘন্যতম মিথ্যাচারে লিপ্ত রয়েছে। চট্টগ্রাম রাংগুনিয়ার বহুবছর আগের পরিত্যক্ত রাজপ্রসাদ হঠাৎ তড়িঘড়ি করে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে! বিষয়টি রহস্যজনক, উক্ত রাজপ্রসাদ হতে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করাও হতে পারে৷ রাংগুনিয়া রাজার হাট এলাকাটিতে প্রশাসনিকও গোয়েন্দা কার্যক্রম নেই৷ এ সুযোগে দেশী- বিদেশি দ্বাতা সংস্থা, মিশনারী, কথিত মানবাধিকার ও বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং বিদেশী কূটনীতিকদের নিয়ে রাংগুনিয়া পুরাতন রাজপ্রসাদে গোপন বৈঠক করাও হতে পারে। পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে একের পর এক নীল নকশার অন্ত শেষ নেই। খাগড়াছড়ি নৃতাত্ত্বিক সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট-এর অর্থায়নে চট্টগ্রাম রাংগুনিয়া রাজার হাট চাকমা রাজার কথিত রাজপ্রসাদ জীর্ণশীর্ণ কাঠামো, খসে খসে পড়ছে ইট বালির আস্তরণ, পুরো অবকাঠামো জুড়ে ঝোঁপঝাড় জঙ্গল ও স্থাপনা সমীক্ষা, মাপজোখ, অনুসন্ধান ও উৎখনন শুরু করেছে। রাংগুনিয়া এই রাজপ্রসাদ পরিত্যক্ত রেখে চাকমা কথিত রাজা দেবাশীষ রায় ও তার উত্তরসূরীরা রাঙামাটি সদরের রাজবাড়িতে থাকতেন। প্রাচীন বাংলা বলেন আর যে বাংলা বলেন কোন আমলে চাকমা রাষ্ট্রের রাজধানী রাজানগর ছিলো না। অথচ স্বঘোষিত লেখক Enayetur Rahim তাঁর ফেসবুক স্ট্যাটাসে প্রাচীন বাংলার চাকমা রাষ্ট্রের রাজধানী রাজানগরকে বলে দাবি করেন! ইতিহাসের অংশ টিকে রাখতে রাজপ্রসাদ রক্ষণাবেক্ষণ সংস্কার হোক কিন্তু তার আদতে যেনো রাষ্ট্র বিরোধী তৎপরতা সেখান হতে পরিচালনা না হয়। জুম্মল্যান্ড বাস্তবায়নের খসড়া মানচিত্রে চট্টগ্রাম ও রয়েছে সেই ষড়যন্ত্রের অংশ পরিত্যক্ত কথিত চাকমা রাজপ্রসাদের কাঠামো ঠিক করা।
নোট উক্ত রাজপ্রসাদ মোগল শাসন আমলে মোগল রাজারা করেন, মোগল শাসন আমল অবসান হওয়ার পরে চাকমা রাজারা দখল করে। মোগলদের ইতিহাস চাকমা রাজবংশের নামে চালিয়ে দেওয়া ইতিহাস বিকৃতি করার সামিল।
পাহাড়ের অপরাধ