পার্বত্য বাঙ্গালি জনগণের সাথে রাস্ট্র, প্রশাসন কানামাছি খেলেছে!

0

জিহান মোবারক, রাঙ্গামাটি

রাস্ট্রের বৃহৎ জনগোষ্ঠী বাঙ্গালী। অনেকেই মনে করেন সংখ্যাগুরু হিসেবে রাস্ট্রের সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন বাঙ্গালি এমনকি রাস্ট্রের বৃহৎ জনগোষ্ঠী হিসেবে প্রাধান্য থাকে। কিন্তু এ কথাটি বরাবরই ভুল প্রমাণিত হয়েছে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙ্গালিদের ক্ষেত্রেই। কারণ, পার্বত্য বাঙ্গালি জনগণ মৌলিক অধিকার হতে প্রায় তিন যুগ ধরে বঞ্চিত। সংখ্যালঘু ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কিংবা উপজাতি তারা রাস্ট্রের মূল ধারার জনগোষ্ঠীর চেয়ে অধিক অধিক সুযোগ-সুবিধা ও মৌলিক এবং নাগরিক অধিকার ভোগ করছে। যেটা কখনোই এদেশের তথাকথিত সুশীল মহলের দৃষ্টি গোচর হয় না! দুঃখজনক যে, তথাকথিত মহলটি সর্বাঙ্গে বলে থাকে “উপজাতি জনগোষ্ঠী পিছিয়ে, “তাদের রাষ্ট্র, প্রশাসন নিপীড়ন করছে এবং মৌলিক অধিকার হতে বঞ্চিত ও শাসন শোষণ করে আসছে!” বাস্তবতার নিরিখে বলতে গেলে তাদের এ অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই। কারণ, তারা সবসময় কাল্পনিক অস্তিত্বহীন অভিযোগ করে থাকেন। তাদের এসমস্ত অভিযোগ অবান্তর। মূলত একতরফা মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ এটা। প্রকৃত সত্য হচ্ছে এদেশীয় উপজাতি থেকেও বহুগুণ পিছিয়ে আছে বাঙ্গালি জনগণ। অপ্রিয় হলেও সত্য যে, পার্বত্যাঞ্চলের অধিকাংশ বাঙ্গালি রাস্ট্রের অবহেলার শিকার। সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভাবে অনেকটাই পিছিয়ে আছে। এ পিছিয়ে থাকার মূল কারণ রাস্ট্র, প্রশাসন পার্বত্য বাঙ্গালির সঙ্গে কানামাছি খেলেছে। বাঙ্গালিদের রাস্ট্র প্রশাসন শুধুমাত্র নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করেছে৷ রাস্ট্র বাঙ্গালি জনগণের নিরাপত্তা ও জীবনমান উন্নয়ন সহ যেসমস্ত বিষয়ে কথা দিয়েছিল তার ২০ ভাগও পূরণ করে নি! রাস্ট্র কথা দিয়ে কথা রাখে নি। রাস্ট্রের অবহেলায় এবং বাঙ্গালির প্রতি রাষ্ট্রের ভিন্ন দৃষ্টি এ অঞ্চলের বাঙ্গালি জনগোষ্ঠীকে মৌলিক অধিকার হতে অনেকটাই দূরে ঠেলে দিয়েছে। রাস্ট্র যতটাই উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর অধিকার সম্পর্কে সচেতন এবং যতটাই তাদের এগিয়ে নিতে দৃঢ় অঙ্গীকারবদ্ধ ততটাই বাঙ্গালি জনগণের বেলায়ই ছিল না। রাস্ট্রীয় বৈষম্যের শিকার পার্বত্য বাঙ্গালি জনগণ। রাস্ট্রের এ কানামাছি খেলা এবং বাঙ্গালি জনগণের সঙ্গে ধোঁকাবাজি একপ্রকার বাঙ্গালিদের দমিয়ে রাখার কৌশল।

আরেকটি বিষয় স্পষ্ট করা জরুরী তা হল; পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা সংকট বাঙ্গালি ও সেনাবাহিনী প্রবেশের বহু আগে হতে। পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার জন্য বাঙ্গালি ও সেনাবাহিনীকে দায়ী করা বন্ধ করতে হবে।

পার্বত্য চট্টগ্রামের বসবাসরত উপজাতি জনগোষ্ঠী কোনক্রমেই বাঙ্গালি জনগোষ্ঠীর চেয়ে খারাপ নেই। শিক্ষা-দীক্ষা, চাকরী, সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভাবে অনেকটাই এগিয়ে উপজাতীয়রা।
পার্বত্য চট্টগ্রামের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে গেলে দেখা মেলে উপজাতি বাঙ্গালি বৈষম্যের চিত্রটা কতটাই ফারাক। চাকরিজীবীদের মধ্যে বাঙ্গালি উপজাতি অনেক ফারাক রয়েছে। নিঃসন্দেহে বলা বাহুল্য যে, বৈষম্যের অপর নাম পার্বত্য চট্টগ্রাম।

পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে রাস্ট্র আর কতকাল বাঙ্গালি জনগণকে নিজের মৌলিক অধিকার হতে বঞ্চিত রাখবে এবং কতকাল বা দমিয়ে রাখবে? রাস্ট্রের স্বপক্ষে থেকেই এখানকার নিবেদিত বাঙ্গালি প্রাণ গুলো রাস্ট্র ও সন্ত্রাসীদের রক্তচক্ষুর শিকার হতে হয়। অন্য দিকে রাস্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এবং সন্ত্রাসবাদে উদ্বুদ্ধ থাকার পরেও তাদের প্রতি রাস্ট্র নমনীয়তা দেখাচ্ছে। এর ফলে এখানকার বাঙ্গালি সম্প্রদায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠছে। এটা রাস্ট্রের জন্য অশনী সংকেত। রাস্ট্রকে কানামাছি খেলা বন্ধ করতে হবে। অন্যাথায় পার্বত্য বাঙ্গালি অচিরেই নিজেদের অধিকার বুঝে নিতে মাঠে নামবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More