জনগণকে ধোঁকা দেওয়ার অংশ হিসেবে ইউপিডিএফের ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত প্রতিরোধ সভা!

0

প্রতিষ্ঠা যাত্রা শুরু থেকেই ইউপিডিএফ চাঁদাবাজি, অপহরণ ও খুন-গুমের সাথে জড়িত। এদেশের তথাকথিত বুদ্ধিজীবী ও জ্ঞানপাপী মহল এ কথাটি বিশ্বাস করতে চায় না! ২০০১ সালে তিন বিদেশী পর্যটককে অপহরণ করে ইউপিডিএফ ৩ কোটি টাকা মুক্তিপণ্য আদায়ের মাধ্যমেই সাংগঠনিক ভীত শক্ত করে! ৯৭-এর পার্বত্য চুক্তির বিরোধিতা করে ইউপিডিএফ স্বায়ত্তশাসন দাবি রেখে যাত্রা শুরু করে নিজেদেরকে স্বজাতির অধিকার আদায়ের অন্যতম কর্ণাধার দাবি করে আসছে। কিন্তু তারা গণতান্ত্রিক আন্দোলন হতে বিচ্ছিন্ন হবে জেনেই শুরু হতে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসবাদ বেছে নেয়, এটা বর্তমান তাদের কর্মকান্ড দেখে স্পষ্ট। মোদ্দা কথা হচ্ছে ইউপিডিএফ একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী ও স্বাধীনতাকামী উগ্র মনোভাবের সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে অস্বীকার করে পার্বত্য চট্টগ্রামে রাষ্ট্র বিরোধী তৎপরতা এবং একের পর এক হামলা অব্যাহত রেখেছে। ২১ – এ ফেব্রুয়ারী মাতৃভাষা দিবস বর্জন ও নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান শক্তিমান চাকমা ও তপন জ্যোতি চাকমা (বর্মা) হত্যাকান্ড পার্বত্য ইতিহাসে বর্বরোচিত জঘন্যতম হামলা। বাঘাইছড়ি নির্বাচনী সরঞ্জাম নিয়ে ফেরার পথিমধ্যে ব্রাশ ফায়ার করে সরকারী জানমালের ক্ষতিসাধন এবং ৭ টি তাজা লাশ ফেলানো তারই জলন্ত প্রমাণ। জাতির অধিকার আদায় করার জন্য মানুষ হত্যা গণতান্ত্রিক আন্দোলন বা আদর্শ আন্দোলনের পথ হতে পারে না। ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজি, অপহরণ ও হত্যাযজ্ঞের কারণেই মূলত স্থানীয় উপজাতি জনগোষ্ঠী ইউপিডিএফ সম্পর্কে নুন্যতম ধারণা অর্জন করে। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকাংশ উপজাতি নারী সন্তান হারা হয়েছে ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের হাতে। সুতরাং ইউপিডিএফকে আর উপজাতীয়রা অধিকার আদায়ের কর্ণাধার মানতে নারাজ। যার জবাব খাগড়াছড়ি সংসদ নির্বাচনে নতুন চাকমার পরাজয়ের মধ্য দিয়ে ইতোমধ্যে পার্বত্যবাসী দিয়েছেন।

অদ্য ১৭-০৩-২০২১ খ্রিঃ রাঙ্গামাটি বাঘাইছড়ি উপজেলার ৩৬নং সাজেক ইউনিয়নে ৫নং ওয়ার্ড গঙ্গারাম এলাকায় ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে উন্মুক্ত আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়েছে! প্রবীন চাকমার চঞ্চালনায় যুদ্ধ কুমার চাকমা (কার্বারীর) সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বীরসেন চাকমা, রত্নজোতি চাকমাও প্রান কুমার চাকমাসহ স্থানীয় এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তি বর্গ।

“তথাকথিত সুশীলদের দাবি ইউপিডিএফ’এর ডাকে সাড়া দিয়ে সাধারণ মানুষ অংশ নিয়ে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধের জন্য উন্মুক্ত আলোচনা সভা করেছে।” বিষয়টি তারা ইতিবাচক হিসেবেও দেখছে! এখন আমার কথা হল, ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে উন্মুক্ত আলোচনায় সভায় যারা অংশ নিয়েছে তারা সবাই কি স্বেচ্ছায় অংশগ্রহণ করেছে নাকি ইউপিডিএফ জোরপূর্বক অস্ত্র ধরে তাদেরকে অংশ নিতে বাধ্য করেছে?? আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি ইউপিডিএফ সাধারন জনগনকে এবং স্থানীয় উপজাতি নেতৃত্ব শ্রেণীকে জোরপূর্বক সভায় অংশ নিতে বাধ্য করেছে। ইউপিডিএফ বর্তমানে সাধারণ মানুষের কাছে মূর্তিমান আতঙ্কের নাম। পার্বত্যবাসী মনেপ্রাণে তাদেরকে ঘৃণা করে। জনসম্পৃক্ততা না থাকায় তারা বর্থ্য হয়ে সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দিতে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত প্রতিরোধ কমিটির মাধ্যমে উন্মুক্ত আলোচনা সভার ডামাডোল বাজাচ্ছে। ইউপিডিএফ-এর এ ভাঁওতাবাজি জনগণ বুজে গেছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম অস্থিতিশীল করার পেছনে ইউপিডিএফ কম দায়ী নয়। হানাহানি, স্বজাতি হত্যা, রক্তারক্তি সংঘর্ষ ইউপিডিএফ সৃষ্টি করেছিল। তা কারোরই অজানা নয়। ইউপিডিএফকে ভাঁওতাবাজি বন্ধ করে জনগণের কাতারে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাই। পরিশেষে বলতে চাই পাহাড়ের প্রতিটি মানুষের ঘাম জড়ানো টাকা হতে চাঁদাবাজি এবং সন্ত্রাসবাদ বন্ধ করতে হবে। আর যদি চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসবাদ বন্ধ না করে তাহলে তাদের তামিল টাইগারদের মত ভাগ্য বরণ করতে হবে।

লেখক টিটু চাকমা রাঙ্গামাটি সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, মাস্টার্স অধ্যায়নরত।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More