||রাজন বড়ুয়া, মাটিরাঙ্গা খাগড়াছড়ি||
একটি স্বাধীন সার্বভৌমত্ব দেশে অবৈধ অস্ত্রধারী দেশদ্রোহী বিশ্বাসঘাতক উপজাতিরা রাষ্ট্রের মূল জনগোষ্ঠী বাঙ্গালিকে নির্যাতন-নিপীড়ন, অপহরণ, খুন-গুম ও গুলি করে নিধন করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত বাঙ্গালিদের ধরে স্বজনের আর্তনাদ।
আজকের ঘটনার ভয়াবহতা সম্পর্কে ছোট এ লেখায় বর্ণনা করা কোনভাবেই সম্ভব নয়। তবুও স্থানীয় সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য সোর্স ও হামলার ছবি গুলোর উৎস থেকে কিছু কথা না লিখলে নয়। অদ্য (রবিবার) ৪ এপ্রিল সকাল ১০ ঘটিকার সময় খাগছাছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার ২ নং তবলছড়ি ইউনিয়নের লাইফু কার্বারী পাড়া ও তাইন্দং ইউনিয়নের পংবাড়ী নামক স্থানে একই সময়ে উপজাতি সন্ত্রাসী অবৈধ অস্ত্রধারী নিরীহ বাঙ্গালি কচু চাষীদের উপর হামলা করেছে।
এলাকাবাসী ও আহতদের পরিবারের সদস্যরা জানান, চাঁদা না দেওয়ায়ই নৃশংস ভাবে ১৫/২০ জন বাঙ্গালির উপর হামলা করে। আর জায়গা গুলো উপজাতিরা দীর্ঘদিন হতে জোর করে দখলের চেষ্টা করে। কিন্তু এ জায়গা গুলো আমাদের। আমরা চাষাবাদ করে চলি। আমাদের রেকর্ডীয় জায়গা। উপজাতিদের কোন কাগজপত্র নেই। অস্ত্রের জোর দেখিয়ে দখল করতে চায়। তাই হামলা করেছে।
সন্ত্রাসীদের হামলার শিকারদের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদেরকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। বাকিদের তাইন্দং বাজারে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা যাওয়ার সময় এলোপাতাড়ি বেশকয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে। তখন তাইন্দং মুসলিম পাড়ায় সুরুজ মিয়ার ছেলে মনির পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়।
৫০/৬০ জন বাঙ্গালীদের খোঁজাখুঁজি করে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরবর্তীতে স্থানীয় শিক্ষক, শ্রমজীব সহ বিভিন্ন পেশাজীবির মানুষরা বাকি বাঙ্গালিদের খুঁজে বাহির করে। আহতরা বেশিরভাগ মুসলিমপাড়া ও শুকনাছড়ির। হামলার খবর পেয়ে স্থানীয় বাঙ্গালিরা জিম্মি থাকা বাঙ্গালিদের উদ্ধার করতে গেলে তাদেরও হামলা করে।
হামলার ঘটনায় চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয় বাঙ্গালিদের মধ্যে। ঘটনার স্থলে আইন- শৃঙ্খলা বাহিনী পৌছেছে সন্ত্রাসীরা ঘটনারস্থল ত্যাগ করার পরে।
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল আজিজ বলেন,খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত করে এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
বারবার বাঙ্গালিদের উপর হামলার প্রতিবাদে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাঙ্গালিরা। বেলা ৩ টার সময় বাঙ্গালিরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এ সময় বিজিবি একটি গাড়ি থেকে দাঁড়িয়ে বাঙ্গালিদের উত্তেজনা সৃষ্টি না করতে অনুরোধ করলে বাঙ্গালিরা তীব্র ক্ষোভে বলেন, আপনারা কি করেন? আপনাদের কাজ কি? এভাবে প্রতিনিয়ত বাঙ্গালিদের উপর হামলা করা হয় আপনারা নীরব থাকেন। আবার এখন আসছেন আমাদের বুঝাতে। কিভাবে বলেন আমরা তাদের ধরে আপনাদের দিতাম? তাহলে আপনাদের কাজ কি? এভাবে বিজিবির কথার জবাব দেন প্রতিবাদরত বাঙ্গালি যুবকরা। বিজিবি বলেন, আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি, আমরা ব্যবস্থা নেব! বাঙ্গালিরা বলেন, কোথায় ব্যবস্থা নিয়েছে তা একটু বলেন।
এর পূর্বে Ibrahim Khalil নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ঘটনার সময় প্রশাসনের সাহায্য চেয়ে লাইভ প্রচার করে।
প্রশাসনের সাহায্য চেয়ে লাইভ করে Ibrahim Khalil
সে লাইভটি প্রতিবেদন তৈরি করার সময় দেখা যায় ১০ হাজার + লাইক পড়েছে, ১২ শত + কমেন্ট পড়েছে এবং ১৮ হাজার + শেয়ার হয়েছে। লাইভ ভিডিও’টি মূহুর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়। Ibrahim Khalil এর ফেসবুক লাইভ পোস্টের লিংক…
সবচেয়ে অবাক হওয়ার বিষয় হল, এ হামলাটি দিনে-দুপুরে হয়েছে! উপরোক্ত স্থানে সন্ত্রাসীরা ২ ঘন্টা ব্যাপী সময় অবস্থান নিয়ে নৃশংস হামলা পরিচালনা করে। এর থেকে প্রমাণ হয় যে পাহাড়ে আইনের শাসন নেই।
বাঙ্গালি নারী- পুরুষ জীবিকার তাগিদে নিজেদের খেতে খামারে কাজ করতে গিয়েছে। মোটা অংকের চাঁদার টাকা পরিশোধ করতে না পারার কারণেই পরিকল্পিত ভাবে সন্ত্রাসী হামলা করা হয় হতদরিদ্র বাঙ্গালিদের উপর। সন্ত্রাসীদের গুলির শব্দে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বেশকয়েক রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে নিরিহ বাঙ্গালিদের উপর। গুলিবর্ষণ বাঙ্গালিদের এবং হামলায় আহত বাঙ্গালিদের পাশে কেউ নেই। পরিবার গুলোর আহাজারি পুরো এলাকার বাতাস ভারী হয়েছে। যখন যেভাবে ইচ্ছা তখন সেভাবেই নির্যাতন করে সন্ত্রাসীরা। দিনে-দুপুরে প্রকাশ্যে হামলা হয় বাঙ্গালিদের উপর। এখানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সহ প্রশাসন শুধু নামেই মাত্র আছে। পাহাড়ে এতো বাঙ্গালি হত্যা, অপহরণ, খুন-গুম ও চাঁদাবাজির শিকার হয় প্রশাসনের পক্ষ হতে তৎপরতা নেই। কখনো প্রশাসনকে এসবের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না। পার্বত্য বাঙ্গালি হত্যা কিংবা নির্যাতনের একটি বিচারও পার্বত্য বাঙ্গালিরা পায়নি। প্রশাসনের নতজানু নীতি এখানকার বাঙ্গালিদের উপর হামলা তীব্র করতে সহায়ক হয়েছে সন্ত্রাসীদের জন্য। প্রশাসন নীরব ভূমিকায় অবতীর্ণ!!! আর কত পার্বত্য বাঙ্গালির প্রাণ যাবে? আর কতকাল পার্বত্য বাঙ্গালিরা অভিভাবকহীন থাকবে?