তাপস কুমার পাল, রাঙামাটি
হত্যা, গুম-খুন ও অপহরণে স্বর্গরাজ্য হিসেবে পরিচিত পার্বত্য চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতার চরম শিখরে আরোহণ করছে।
উপজাতি সশস্ত্র সন্ত্রসী সংগঠনগুলোর বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে যখন কেউ প্রতিবাদ করতে যায় তখন তাকে সহযোগিতা করার জন্য প্রশাসনের কাছ থেকে তেমন কোন আশ্বাস পাওয়া যায়না।
বিশেষ করে পুলিশ প্রশাসন অনেকটা নির্বিকার হয়ে সাধারণ দর্শকের ভূমিকা পালন করে।
বাঘাইছড়িতে থানার পাশে ইউএনও’র অফিসে ঢুকে সন্ত্রাসীরা জনপ্রতিনিধি মেম্বার সমিরন চাকমাকে গুলি করে হত্যা করলেও পুলিশ তাৎক্ষণিক খুনিদেরকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
অবস্থা এতটা ভায়ানক যে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাও স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি নিয়ে জীবন যাপন করতে পারছেনা।
নানিয়াচরে নির্বাচিত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব এডঃ শক্তিমান চাকমাকে থানার পাশেই গুলি করে হত্যা করেছে স্বজাতীয় সন্ত্রাসীরা।
রাঙামাটি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা শহিদুজ্জামান মোহসিন রোমানকে চাঁদার জন্য টেলিফোন করে উপজাতি সন্ত্রাসীরা। চাঁদা না দেয়ার কারণে তাকে বিভিন্ন ধরণের হুমকি সম্মুখীন হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
এই যদি হয় জনপ্রতিনিধিদের পরিণতি সাধারণ মানুষের কি অবস্থা তা সহজেই অনুমেয়।
পার্বত্য চট্টগ্রামে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণতে রয়েছে নও মুসলিমরা। বৌদ্ধ কিংবা খ্রীষ্টান ধর্ম থেকে যদি কেউ স্বেচ্ছায় ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয় তাহলে তাকে হত্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। যার জলন্ত প্রমান শহীদ ওমর ফারুক ত্রিপুরা। বাংলাদেশ সংবিধানের ৪১ নং ধারার ক অনুচ্ছেদে যে কোন ধর্ম পালন এবং প্রচারের অধিকার দিয়েছে।
কিন্তু পাহাড়ে নওমুসলিমরা সে অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
অপর দিকে হাজার হাজার উপজাতি বৌদ্ধ ধর্ম ত্যাগ করে খ্রীষ্টান হলেও তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো নিরব ভূমিকা পালন করে।
এর মাধ্যমে অনুমান করতে স্বক্ষম উপজাতি সন্ত্রাসীরা চরম মুসলিম বিদ্বেষী এবং ভীনদেশি খ্রীষ্টানদের দালাল।
সুতরাং উপজাতি সন্ত্রাসীদের আতংকে দিশেহারা পাহাড়ের জনগণ। চাঁদা না দেয়া কিংবা জায়গা দখলের মিথ্যা অভিযোগে যে কাউকে গুম করে হত্যা করা উপজাতি সন্ত্রাসীদের দৈনন্দিন রুটিনে পরিণত হয়েছে।
পাহাড়ের মানুষ এই হত্যাযজ্ঞ থেকে বাচতে চায়।সরকারের কাছে স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চায়।
উপজাতি সন্ত্রাসীদের দমন এবং পাহাড়ের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য নিম্নোক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা খুবই জরুরি।
১.পাহাড় থেকে প্রত্যাহারকৃত সেনা ক্যাম্প গুলো পুনঃস্থাপন করা এবং ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে নতুন করে সেনা ক্যাম্প বসানো।
২.সমতলে যাদের বসতভূমি নেই তাঁদেরকে পাহাড়ের
পরিত্যাক্ত খাস ভূমিতে স্থানান্তর করা।
৩.পাহাড়ের সকল জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যন্ত সংযোগ সড়ক স্থাপন করা।
৪.বিদেশী দাতাসংস্থা গুলোর প্রতি নজরদারি বাড়ানো।
৫ সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর প্রতি জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা।