অন্তরালে রয়ে গেলো খাগড়াছড়ি রামগড় গণহত্যার ইতিহাস।

0

মোঃ সোহেল রিগ্যান

পার্বত্য ইতিহাসে তথাকথিত শান্তিবাহিনী পাতাছড়া, ছিনছড়িপাড়া ও রামগড় বাজারে কলঙ্কজনক অধ্যায় রচিত করে। খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলায় ১৩-ই জুলাই থেকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত দফায় দফায় বাঙ্গালী নিধনের অংশ হিসেবে গণহত্যা পরিচালক করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় প্রথম ১৯৮৬ সালের ১৩’ই জুলাই (মঙ্গলবার) পাতাছড়া গণহত্যা করে এই দিনের গণহত্যায় নারী ও শিশুসহ ৭ নিরীহ বাঙ্গালীকে গুলি করে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও জলন্ত আগুনে নিক্ষেপ করে পুড়িয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সংহতি সমিতি (জেএসএস) সন্তু লারমার শান্তিবাহিনী।

এই ঘটনার ঠিক ১দিন পর ১৪’ ই জুলাই সিলেট থেকে বেড়াতে আসা মোঃ সাত্তার (৩৫) কে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে লাশ ফেলে যায় অজ্ঞাত স্থানে। সে লাশ পচে গন্ধ সৃষ্টি হওয়ার পর জানাজানি হয়।

এর ১ মাস পর ১৩’ই আগস্ট আবারো তথাকথিত শান্তিবাহিনী এই গ্রামটিতে নৃশংস গণহত্যা সংঘটিত করে। এই গণহত্যায় শফি উল্লাহ (৪৬) পিতা আব্দুল করিম নামে একজনকে হাত-পা ভেঙে পিলাক নদীর ওপারে নিয়ে যায়, এরপর থেকে আজ পর্যন্ত লাশ পাওয়া যায়নি৷

পাতাছড়া গণহত্যায় ঠিক কতজন বাঙালিকে হত্যা করেছে, তার সঠিক পরিসংখ্যানটি পাওয়া যায়নি। কারণ তৎকালীন গণহত্যার শিকার অনেক বাঙালি পরিবার প্রাণের ভয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছেড়ে পালিয়েছিলেন সমতলে। যায় কারণে অনেক বাঙালি গণহত্যার শিকার হলেও তাদের পরিসংখ্যান ও নাম উঠে আসেনি।

১৭-ই ডিসেম্বর ছিনছড়িপাড়া ও ২২-ই ডিসেম্বর রামগড় বাজারে নৃশংস গণহত্যা করে সন্তু লারমার তথাকথিত শান্তিবাহিনীর সদস্যরা। এই গণহত্যায় বাঙ্গালী নারী-পুরুষ ও আবাল-বৃদ্ধা-বনিতা কাউকে ছাড় দেয়নি। সবাইকে গুলি করে হত্যা করে। উপজাতি সন্ত্রাসীদের নারকীয় তাণ্ডব ও গণহত্যা পার্বত্য বাঙ্গালীকে নিধন করার প্রচেষ্ঠা ছিল।

পার্বত্য ইতিহাসে স্থান যায়নি উক্ত পাতাছড়া, ছিনছড়িপাড়া ও রামগড় বাজার গণহত্যাটি। রামগড় গণহত্যায় প্রায় শতাধিক বাঙ্গালী নিহত হয়েছে। অন্তরালে রয়ে যায় তথাকথিত গণমাধ্যমের নীরবতার কারণে, এবং প্রশাসনের কতিপয় কর্মকর্তাদের খামখেয়ালিপনায়।

আজও স্বজন হারা পরিবার গুলো বিচার চেয়ে অপেক্ষার পহর গুনছে। এই গণহত্যা গুলোর ৩৫ টি বছর অতিক্রম করলেও রাস্ট্র-প্রশাসনের বিবেকে নাড়া দেয়নি! বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে। তথাকথিত শান্তিবাহিনীর প্রধান সন্তু লারমা ও তার বাহিনীর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা এখনো প্রকাশ্যে দাপটে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More