তাপস কুমার পাল, রাঙ্গামাটি
একাত্তরের পর থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী উপজাতিরা যখনই সাধারণ জনগনের উপর গণহত্যা, রক্তপাত, অস্ত্রবাজী ও বল প্রয়োগের মাধ্যমে পাহাড়কে অস্থিতিশীল করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে সচেষ্ট হয়েছে তখনই প্রাণান্তকর প্রচেষ্টার মাধ্যমে পাহাড়ে শান্তির সুবাতাস বয়ে এনেছে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে আজ অবধি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও দেশের মানচিত্র রক্ষা করতে দেশদ্রোহী উপজাতি শসস্ত্র সন্ত্রাসীদের গুলিতে পাহাড়ের বাকে বাকে কত সেনা সদস্যের লাশ পড়েছে তার কোন হিসেব নেই।
পার্বত্য চট্টগ্রামে জাতীয় পতাকার মর্যাদা সমুন্নত রাখতে যেসব বীরেরা জীবন দিয়েছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল,ল্যাফঃ মুশফিক (বীর উত্তম), ল্যাফঃ আহসান,সার্জন মুকুল চাকমা সহ অনেক দক্ষ, সাহসী, সমরকৌশলী ও দেশপ্রেমিক সেনা অফিসার।
দুর্গম পাহড়ি জানপদকে মানুষের বসবাসের উপযোগী করে তোলে সভ্যতা ফিরিয়ে এনেছে সেনাবাহিনীরাই। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেনাবাহিনীরাই অক্লান্ত পরিশ্রম করে পাহাড়ের আনাচে-কানাচে তৈরি করেছে শত শত কিঃমিঃ রাস্তা। যার ফলে সমতলের সাথে পাহাড়ের নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়েছে।
পাহাড়ের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ পরিচালনায় বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠান। যাতে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হয়ে দূর হচ্ছে পাহাড়ের অন্ধকার।এছাড়াও হাসপাতাল ও ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প পরিচালনার মাধ্যমে পাহাড়ের হাজার হাজার প্রান্তিক জনগোষ্ঠির কাছে চিকিৎসা সেবা পৌছিয়ে দিচ্ছে একমাত্র তারাই। পাহাড়ি যেসব এলাকায় খাবার পানির সংকট রয়েছে সেখানেও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে।পাহাড়ের ঘাতক ব্যাধি ম্যালেরিয়া-টাইফয়েড নিধন সহ যে কোন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সেনাবাহিনীর ভূমিকাই সর্বাগ্রে।
সেনাবাহিনী আছে বলেই দেশ-বিদেশের লক্ষ লক্ষ ভ্রমন পিপাসু মানুষ পাহাড়ে নির্ভয়ে বেড়াতে আসতে পারে। সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় গড়ে ওঠেছে পাহাড়ের অপার সম্ভাবনাময় পর্যটন শিল্প। সেনাবাহিনী আছে বলেই পাহাড়ের শত শত কোটি মূল্যর কাঠ,বাঁশ বন, পশুপাখি ইত্যাদি প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা পাচ্ছে। আমাদের গর্বিত সেনাবাহিনী পাহাড় বাসীর আস্থার প্রতীক। মোট কথা সেনাবাহিনী ব্যাতীত সুষ্ঠু, শান্ত পাহাড়ের কথা কল্পনা করা অসম্ভব।
এতকিছুর পরও পাহাড়ের কতিপয় উপজাতি বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠি পাহাড়ে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি সহ্য করতে পারেনা। কারণ,তারা খুন অপহরণ, চাঁদাবাজীর মাধ্যমে পাহাড়কে ভয়ানক মৃত্যুপুরী বানিয়ে রেখেছে। উপজাতি বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীরা বাংলাদেশের স্বাধীন ভূখন্ডে অর্ধলক্ষ নিরীহ বাঙালিকে হত্যা করেছে। এই উপজাতি সন্ত্রাসীরা পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদীদের মদদে পার্বত্য চট্টগ্রামকে দেশ থেকে আলাদা করে স্বাধীন জুম্মল্যান্ড প্রতিষ্ঠা করতে চায়। ৫০ বছর পরেও উপজাতি সন্ত্রাসীরা দেশের স্বাধীনতাকে মেনে নিতে পারেনি। এখনো তারা শয়নে-স্বপনে, ধ্যান জাগরণে দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্তে লিপ্ত।
কাজেই দেশদ্রোহী উপজাতি সন্ত্রাসীদের এহেন হীনস্বার্থ চরিতার্থ করতে আগে যে কোন মূল্যে পাহাড় থেকে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে বিতাড়িত করতে হবে। তাই তারা যখনই সুযোগ পায় তখনই আমাদের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জঘন্য ও নগ্ন অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণ ও জমি দখলের হাস্যকর কালিমা লেপনের চেষ্টা করা হয়েছে /হচ্ছে ।
পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বাভাবিক জীবন সচল রাখতে সেনাবাহিনীর কোন বিকল্প নেই। কাজেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি পাহাড়বাসীর আকূল আবেদন, পাহাড়ের লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষের কল্যাণের কথা বিবেচনা করে, বাংলাদেশর স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রাখতে ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সরিয়ে নেয়া সেনা ক্যাম্পগুলো পুনঃস্থাপন করুন।
ঝুঁকিপূর্ণ স্থান গুলোতে নতুন করে সেনা ক্যাম্প নির্মাণ করে পাহাড়ে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করুন।