পার্বত্য চুক্তির দুইযুগ পূর্তি: সন্ত্রাসীদের অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানিতে কাঙ্খিত শান্তি ফিরেনি।

0

 

মুক্তমত লেখক : মোঃ সোহেল রিগ্যান, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক লেখক ও গবেষক।

পাহাড়ের মানুষগুলো আজ যেনো নিজ দেশে পরবাসী। রোহিঙ্গাদের মত নিজদের ভাগ্য বরণ করে নিয়েছে। পাহাড়ে চলছে হত্যা, অপহরণ, খুন-গুম, ধর্ষণ ও অস্ত্রের লড়াই এবং ছড়িয়ে-ছিটিয়ে সর্বত্র চাঁদাবাজির মহা উৎসব চলছে। চারদিকে গুলির শব্দ, বারুদের গন্ধ আর রক্তের দাগ। অধিকাংশ মানুষ স্বজন হারিয়েছে এই নৃশংস বর্বর জেএসএস-ইউপিডিএফ-এর মত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর হাতে। সন্ত্রাসীদের হাতে শুধু বাঙ্গালীরা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়নি, শিকার হয়েছে সাধারণ হাজারো উপজাতি। পাহাড়ে সন্ত্রাসীদের এতটাই ক্ষমতার দাপট, যার ফলে প্রশাসনও তাদের হাতে নাজেহাল হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
বিগতবছর গুলোতে সন্ত্রাসীরা পাহাড়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও রাস্ট্রীয় সম্পদের উপর নৃশংস হামলা চালিয়েছে- বাঘাইছড়ি নির্বাচন শেষ করে কেন্দ্র থেকে ফেরার পথিমধ্যে ইউপিডিএফ ব্রাশ ফায়ার করে নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত থাকা ৭জনকে হত্যা সহ ১৬জনকে আহত করে: রাজস্থলী সেনা সদস্য মো. নাছিম-কে হত্যা করে: মানিকছড়িতে সেনা মেজরকে রক্তাক্ত করেছে: নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান শক্তিমান চাকমা সহ ৬জনকে হত্যা করেছে। সবই এই বিশ্বাসঘাতক উপজাতি সন্ত্রাসীদের রাস্ট্রদ্রোহীতার বহিঃপ্রকাশ। এ বছরের ঘটনা বলি- রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) অফিস রুমে ঢুকে গুলি করে ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যকে হত্যা করে উপজাতি সন্ত্রাসীরা। নিহতের নাম সমর বিজয় চাকমা (৩৮)। তিনি উপজেলার রূপকারি ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার। কতবড় দুঃসাহস হলে সরকারি অফিসে প্রবেশ করে গুলি করে জনপ্রতিনিধি হত্যা করে??

এবার আসি চাঁদাবাজির প্রসঙ্গে-
পার্বত্য চট্টগ্রামে চাঁদাবাজির পরিমাণ এতটাই যে, বৃদ্ধি পেয়েছে যা কল্পনা করা যায় না। বছরে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা (নয় শত কোটি টাকা) সমপরিমাণ চাঁদা উত্তোলন করা হয়। এই চাঁদাবাজির ৩০% ইউপিডিএফ-জেএসএসের কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতাদের হাতে চলে যায়৷ অবশিষ্ট টাকা দিয়ে তাদের বেতন-ভাতা ও অস্ত্র ক্রয়, প্রশিক্ষণ, এবং দেশবিরোধী অপশক্তিকে ভরণপোষণ করা হয়। পরিতাপের বিষয় যে, উপজাতি সন্ত্রাসীরা জাতির অধিকারের দোহাই দিয়ে সাধারণ মানুষ থেকে চাঁদা উত্তোলন করে। সেই চাঁদাবাজির টাকা দিয়ে নিজেরা বিলাসবহুল জীবনযাপন করে। সাধারণ মানুষ তাদের চাহিদা মত চাঁদা পরিশোধ করতে করতে নাভিশ্বাস।

চাঁদাবাজি সম্পর্কে আরো একটি ভয়ঙ্কর তথ্য হল-
পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড প্রসারিত করতে চাঁদা দিতে হয়! চাঁদাবাজির মহা উৎস গুলো হল: গাছ, বাঁশ, আদা-হলুদ, জুম চাষ, কাঠাল, হাঁস-মুরগী, গবাদিপশু ক্রয়-বিক্রয়, এবং যানবাহন, ঠিকাদার ও ব্যবসা-বাণিজ্য। সাধারণ জনগন ইউপিডিএফ-জেএসএস’কে মোটা অংকের চাঁদা দিতে বাধ্য হয়। এই চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজি থেকে পরিত্রাণের বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই পাহাড়ের মানুষগুলোর।

প্রশ্ন আসতে পারে পাহাড়ে প্রশাসন কি করে?
বাস্তবতার নিরিখে বলতে গেলে পাহাড়ে প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নামে মাত্র আছে। এখানে প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বদা নীরবতা পালন করতে হয়। নানান চাপের কারণে তারা তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন না। আরো একটি বড় কারণ হল উপজাতি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে রাস্ট্রীয়ভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়না মূলত আন্তর্জাতিক মহলের চাপের কারণে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে উপজাতি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা পার্বত্য ভূখণ্ডকে নিজেদের নিরাপদ স্বর্গরাজ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

উপজাতি সন্ত্রাসীদের শক্তির মূল উৎস কোথায়?
শক্তির উৎস খুঁজতে গিয়ে গোয়েন্দা তথ্য ও বিভিন্ন সূত্রের তথ্য মতে জানা যায়, প্রতিবেশী রাস্ট্রগুলো পার্বত্য উপজাতি সন্ত্রাসীদের অস্ত্র সরবরাহ, অস্ত্র প্রশিক্ষণ ও আশ্রয়-প্রশয় দিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করার পর থেকে প্রতিবেশী রাস্ট্র বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণ করার অংশ হিসেবে উগ্রবাদী উপজাতি একটি অংশকে অস্ত্র দিয়ে লেলিয়ে দিয়েছে। যার উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, প্রতিবেশী দেশের সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলাগুলোর সীমান্তে কাঁটা তাঁরের বেড়া না থাকা। প্রতিবেশী দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী অবাধে সীমান্তে উপজাতি সন্ত্রাসীদের অস্ত্র পারাপারে সহযোগিতা করে আসছে, তাদের মাটিতে জেএসএস-ইউপিডিএফকে ঘাঁটি করতে দেওয়া হয়েছে। দেশের অন্যান্য সীমান্তে বিএসএফ অবৈধ অনুপ্রবেশকারী ও গরু চোরাকারবারি ঠেকাতে পশুর মত গুলি করে মানুষ হত্যা করলেও পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলার সীমান্তে কখনো তাদেরকে গুলি ছুঁড়েনি দেখা যায় না! মূলত সীমান্তে অবাধে আসা যাওয়ার জন্য সীমান্তে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নেই এই থেকে প্রতিয়মান হয় যে, প্রতিবেশী রাস্ট্র বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের সন্ত্রাসীদের মদদ দিচ্ছে এবং এদেশের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে।

২-রা ডিসেম্বর, ২০২১ খ্রিস্টাব্দে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির দুইযুগ পূর্তি, অথাৎ ২৪ বছর পূর্তি হচ্ছে। দুঃখজনক যে, ২৪ বছর অতিবাহিত হওয়ার পরেও অবৈধ অস্ত্রধারীদের কারণে পাহাড়ে কাঙ্ক্ষিত শান্তি ফিরে আসেনি। এখনো অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি, বারুদের গন্ধ ও সারি সারি লাশ দেখা যায়। পাহাড়ে দীর্ঘদিনের হানাহানি ও রক্তারক্তি সংঘর্ষ বন্ধ করতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস), এবং বাংলাদেশ সরকার মধ্যকার ১৯৯৭ সালের ২-রা ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি সম্পাদিত হয়। এই চুক্তিতে সরকারের পক্ষ হতে বাড়তি শর্ত ছিল না। এদিকে জেএসএসের পক্ষ হতে অসংখ্য শর্ত ও দাবিদাওয়া ছিল। যা সরকার শর্তহীনভাবে মেনে নিয়েছে। এর মাধ্যমে সরকার ও জেএসএস সন্তু ৭২টি ধারা মোতাবেক চুক্তি সম্পাদিত করে। এই চুক্তির ফলে সকলের আশা-আকাঙ্ক্ষা ছিলো পাহাড়ে শান্তির সুবাতাস বয়েই যাবে, আর কোন মায়ের বুক খালি হবে না। এর মধ্যদিয়ে অশান্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্ত হবে, দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সমস্যা ও যুদ্ধের অচল অবস্থার অবসান ঘটবে। কিন্তু তার কোনটার প্রতিফলন ঘটেনি। বরং জেএসএস পার্বত্য চুক্তির মৌলিক প্রধান শর্ত ‘অবৈধ অস্ত্র পরিহার’ লঙ্ঘন করে পূর্বের মত অস্ত্র হাতে নিয়ে পাহাড়ে মানুষ হত্যা, হানাহানি ও চাঁদাবাজি অব্যাহত রেখেছে। চুক্তির সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে জেএসএস চালকের আসনে অবতীর্ণ হয়েছে। এবং তার পাশাপাশি ভারী অস্ত্রশস্ত্র সংগ্রহ করে সন্ত্রাসবাদ বৃদ্ধি করার মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। চুক্তির সময় ছিল জেএসএস একটি গ্রুপ। চুক্তির পরবর্তী সময় জেএসএস ভেঙে চারভাগে বিভক্ত হয়েছে। তারা চারভাগে বিভক্ত হলেও তাদের সবার নীতি আদর্শ এক অভিন্ন। শুধুমাত্র চাঁদাবাজির টাকা ভাগাভাগি ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি হয়। এছাড়া অন্য কিছু নয়। পাহাড়ের মানুষ যেটা নিয়ে চিন্তিত, সেটা হলো: সন্ত্রাসী তৎপরতা ও চাঁদাবাজি কোনোক্রমে বন্ধ হচ্ছে না। বরং সন্ত্রাসী তৎপরতা ও চাঁদাবাজি পূর্বের তুলনায় বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। এমতবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এখানকার হতদরিদ্র মানুষগুলো। যাদের জীবিকা নির্বাহ চলে মূলত লাকড়ি সংগ্রহ করে ও জুমচাষের উপর ভিত্তি করে। তারা তাদের কষ্টে উপার্জিত টাকা অবৈধ অস্ত্রধারী জেএসএস, ইউপিডিএফ, জেএসএস সংস্কার এম.এন ও ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক’কে অনিচ্ছার স্বত্তেও দিয়ে বাধ্য হচ্ছে। দিনের পর দিন চাঁদা দিয়ে বাঁচতে হচ্ছে অসহায় মানুষগুলোকে। পার্বত্য চট্টগ্রামের নির্যাতিত-নিপীড়ন মানুষগুলোর অসহ্য যন্ত্রণা ও দুঃখ-দুর্দশা কেউ অনুভব করে না। দেশের তথাকথিত সুশীল, বুদ্ধিজীবিরা পাহাড়ের মানুষগুলোর কান্নার আওয়াজ শুনতে পায়না। এখানে মা’র সামনে মেয়েকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হয়, আবার মেয়ের সামনে মা’কে ধর্ষণ করা হয়। সবকিছু চলে মধ্যযুগীয় কায়দায়। দিনে দুপুরে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে সমগ্র জনপদ আতঙ্কিত করার মাধ্যমে চাঁদা আদায় করা হয়। দাবীকৃত চাঁদা নির্ধারিত সময়েই না পেলে নারীদের গণধর্ষণ এবং পুরুষদের অপহরণ পূর্বক হত্যা করা হয়। কতো নারী শিশুকে তারা স্বজনের সামনে হত্যা করেছে তারো কোনো সঠিক হিসাবনিকাশ নেই। পার্বত্য চট্টগ্রামে মানুষ হত্যা করলে বিচার হয়না। এখানে একটি প্রবাদ বিদ্যমান। এখানে চাকমারা মানুষ মারলে তার বিচার হয়না। আর এসব হত্যাকারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কথা বলার দুঃসাহসও কেউ দেখায় না। যদি দুঃসাহস কেউ একবার দেখায়, তাহলে তাকে মোটাঅংকে জরিমানা করা হয়। এমনকি হত্যাও করা হয়। এমন ভয়ঙ্কর শাস্তির ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করার দুঃসাহস করেনা। বাংলাদেশের উপর আন্তর্জাতিক মহলের চাপ সৃষ্টির ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। সবচেয়ে বড় কথা হল: রাষ্ট্রের উদাসীন নীতি ও যুগোপযোগী পার্বত্যনীতি না থাকায় আজ পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ সন্ত্রাসবাদের শিকার হচ্ছে।

পার্বত্য চুক্তির সময় তৎকালীন রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন সংগঠনগুলো পার্বত্য চুক্তিকে কালো চুক্তি হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এই চুক্তিকে দেশ বিক্রির কালো চুক্তি বলা হয়েছে। চুক্তির অসাংবিধানিক ধারাগুলো সংশোধন চেয়ে আন্দোলন করেছে একাধিক সংগঠন। চুক্তির অধিকাংশ ধারা বাংলাদেশ সংবিধান পরিপন্থী। মূলত এই কারণেই চুক্তির বিরোধিতা পার্বত্য বাঙ্গালীদের ন্যায় সারা দেশের মানুষ করেছে। কারণ এই অসাংবিধানিক চুক্তি, দেশ বিক্রির শামিল। এই চুক্তির মাধ্যমে পাহাড়ের বাঙ্গালীদের মৌলিক অধিকার হরণ করা হয়েছে। রাস্ট্র দ্বিখণ্ডিত হওয়ার দারপ্রান্তে। রাস্ট্রের জন্য হুমকি ও বৈষম্যমূলক এই চুক্তি। সন্তু লারমা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে পার্বত্য চুক্তির সাথে। এটাকে পার্বত্য চুক্তি না বলে সন্তু লারমার বিশ্বাসঘাতকতা বলা উচিত।

এদিকে সরকার ও জেএসএসের পক্ষ চুক্তির দুইযুগ পূর্তি উপলক্ষ্যে ঢাকঢোল পিটিয়ে পালন করবে। কিন্তু পাহাড়ে চুক্তির সুবাতাস এখনো ছড়িয়ে পড়েনি। এখানকার মানুষগুলো আজ প্রতিবাদের ভাষা হারিয়ে ফেলেছে৷ জেএসএস-ইউপিডিএফের অবৈধ অস্ত্রের জোরের কাছে পাহাড়ের হতদরিদ্র খেটে খাওয়া মানুষগুলো অসহায়। এর পরেও চুক্তি পালন!

সন্তু লারমার অভিযোগের সাথে বাস্তবতার অনেক ফারাক রয়েছে। পার্বত্য চুক্তির শর্ত অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সরকার ২৩৯ টি সেনাক্যাম্প প্রত্যাহার করে নিয়েছে। যার ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে নিরাপত্তা সংকট সৃষ্টি হয়েছে। সেনাক্যাম্প চলে যাওয়ার ফলে সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। মানুষদের উপর হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষ অসহায়ত্ব বোধ করছে। তবুও সরকার নীরব ভূমিকায়। মূলত সরকারের সঙ্গে জেএসএস পার্বত্য চুক্তির মাধ্যমে ভাঁওতাবাজি করেছে৷ যা সরকার বুঝতে কালক্ষেপণ হচ্ছে। সরকার চুক্তির ৪৮টি ধারা সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন করেছে, ১২টি ধারা আংশিক বাস্তবায়ন করেছে, অবশিষ্ট ১২টি ধারা বাস্তবায়ন প্রতিক্রিয়াধীন। ইদানিং শুনা যাচ্ছে, পার্বত্য চুক্তির অবশিষ্ট ধারাগুলো বাস্তবায়ন করতে চুক্তি বাস্তবায়ন কমিটি তৎপর হয়েছে! তবুও জেএসএস সন্তু লারমা অভিযোগ করছে, সরকার চুক্তি বাস্তবায়নে আন্তরিক নয়। বর্নিত বিষয় বিচার বিশ্লেষণ করে বলা যায়, সন্তু লারমার অভিযোগের সঙ্গে বাস্তবতার অনেক ফারাক রয়েছে। গণমাধ্যমে কিছুদিন পর পর সন্তু লারমা চুক্তির বিষয়ে অভিযোগ করেন। বস্তুত যা মিথ্যা ও বানোয়াট এবং উদ্দেশ্য প্রণোদীত বলে প্রতিয়মান। সন্তু লারমা চুক্তির মৌলিক শর্ত অনুযায়ী সরকারের নিকট অবৈধ অস্ত্র সম্পূর্ণভাবে আত্মসমর্পণ করেনি৷ কিছুসংখ্যক ভাঙা মরিচে ধরা অস্ত্র জমা দিয়ে ভাঁওতাবাজি করেছে। চুক্তি লঙ্ঘন করার কারণে সন্তু লারমার বিরুদ্ধে রাস্ট্রদ্রোহী মামলা করে তার বিচার করা উচিত৷ আরো একটি কারণে তার বিচার হওয়া উচিত, তা হলো সেই পাহাড়ের ৩৮ হাজার নিরস্ত্র বাঙ্গালীর উপর গণহত্যা চালিয়েছে। এই অভিযোগ তাকে অভিযুক্ত করে তার বিচার নিশ্চিত না করলে পার্বত্যবাসী ও ইতিহাস তাকে কোনো দিন ক্ষমা করবে না।

সর্বশেষ বলবো, চুক্তির পরে যদি পাহাড়ে অবৈধ অস্ত্রধারী বিদ্যমান থাকতে পারে তাহলে সেনাবাহিনীও সন্ত্রাসী দমনে পাহাড়ে বিদ্যমান থাকতে পারে। রাস্ট্রের অখণ্ডতা রক্ষায় প্রত্যাহারকৃত সকল সেনাক্যাম্প পুনঃস্থাপন করা বর্তমান সময়ে জরুরী দাবি।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More