সমতলের বাঙ্গালীর উপর উপজাতি সন্ত্রাসীদের হামলা; ঘটনার বর্ণনা দিলেন ভুক্তভোগী।

0

উপজাতীয়দের সবসময় একটা কমন অভিযোগ থাকে, পার্বত্য বাঙ্গালীরা ভালো নয়। পার্বত্য বাঙ্গালীরা ধর্ষক, দাঙ্গাবাজ ও ভূমি দখলদার। তাই পাহাড়ে সংঘাত সৃষ্টি হয়। উপজাতি-বাঙ্গালী সংঘর্ষের সূত্রপাত এটাই!

তাদের এই কথাকে আমাদের দেশের তথাকথিত গণমাধ্যম, সুশীল, বুদ্ধিজীবি ও চেতনার ফেরি করা মানুষগুলো হরহামেশাই বিশ্বাস করে তাদের পক্ষাবলম্বন করে। এখন আমার প্রশ্ন সমতলের বাঙ্গালীরা তো তাদের সবার দৃষ্টিতে খুবি ভালো। সমতলের এই ভালো বাঙ্গালীর উপর কেন পাহাড়ে হামলা হয়? কেন বা হত্যার হুমকি দিয়ে তাদের থেকে মুক্তিপণ্য আদায় করা হয়?

পাহাড়ের প্রকৃত বাস্তবতার নিরিখে বলতে গেলে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী হয়ে জন্ম নেওয়াটাই বড় পাপের। এখানে বাঙ্গালীকে চরমভাবে অবজ্ঞা করা হয়। এখানে যত দোষ নন্দঘোষ। পার্বত্য চট্টগ্রামে সবকিছুর জন্য বাঙ্গালীদের দায়ী করা হয়। পাহাড়ে সংঘাত নাকি শুধু ধর্ষণ আর ভূমি বিরোধীকে কেন্দ্র করে হয়! অথচ এখানকার সংঘাতের মূল কারণ, চাঁদাবাজি ও অপহরণ বাণিজ্য। চাঁদাবাজির টাকা ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে আধিপত্য বিস্তারে লিপ্ত হয় পার্বত্য উপজাতি সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো। এই চরম সত্যকে অনেকেই চেপে যেতে চাই!

এদিকে তার সমস্ত দায়ভার পার্বত্য বাঙ্গালীদের উপর দেওয়া হয়। এখানে উপজাতি সন্ত্রাসীদের কাছে পার্বত্য বাঙ্গালী এবং সমতল বাঙ্গালী কোনো তফাৎ বা পার্থক্য নয়। এখানে তাদের চোখে সবাই বাঙ্গালী। যারা মনে করে সমতলের বাঙ্গালীদের সঙ্গে পাহাড়ের উপজাতীয়দের কোনো বিরোধ নেই। সব বিরোধ পাহাড়ের বাঙ্গালীদের সঙ্গে। তাদেরকে আমি বলবো সমতল থেকে পাহাড়ে পিকনিকে এসে কেন পর্যটন গাড়ি হামলার শিকার হয়? কেন অপহরণ ও চাঁদাবাজির শিকার হয়? কেন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়। জানি তারা এসবের উত্তর এড়িয়ে যাবে।

এখানে একটা দৃষ্টান্ত উল্লেখ করতে চাই-

গতকাল বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারী) ২০২২ খ্রিস্টাব্দে সন্ধ্যা প্রায় ৬টার সময় শেফায়েত উল্লাহ সোহান তার ফেসবুক একাউন্ট থেকে একটি পোস্ট প্রসব করে। উক্ত পোস্টে তিনি পাহাড়ের উপজাতি সন্ত্রাসীদের হাত থেকে ৫ লক্ষ্য টাকা মুক্তিপণ দিয়ে বেছে আসার কিছু কথা ও নির্যাতনের ছবি শেয়ার করেছেন। পাঠকদের জ্ঞাতার্থে তার পোস্টের ছবি ও লেখা নিম্নে হুবহু তুলে ধরছি-
তার পোস্ট লিংক… https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=274122858145476&id=100066432918399

“আলহামদুলিল্লাহ এই যাত্রায় বেঁচে গেলাম মা-বাবা এবং সকলের দোয়ায়।

অনেক স্বপ্ন নিয়ে ব্যবসার উদ্দেশ্যে নোয়াখালী থেকে পাড়ি জমিয়েছি খাগড়াছড়ি পার্বত্য অঞ্চলে, কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমাদের ব্যবসার সফলতাটা অনেকের প্রতি হিংসা চোখে পড়ছে। পরিশেষে একদল নরপিশাচ ঘাতকের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে আমাকে দীর্ঘ চার ঘণ্টা রাত ১২টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত পার্বত্য অঞ্চলের পাহাড়ের সর্বোচ্চ চূড়ায় আটক করা হয়। এবং 20 লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অতঃপর তাদের প্রস্তাবে আমি সম্মতি প্রস্তাবে প্রকাশ না করায় আমাকে মেরে ফেলার জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়। এবং AK47 থেকে শুরু করে শান্তিবাহিনীর সমস্ত ভারি ভারি অস্ত্র আমার দিকে তাক করা হয়, এবং তাদের বন্দুকের নল দিয়ে আমার সমস্ত শরীর ক্ষতবিক্ষত করা হয় ।

একটা প্রবাদ আছে বিপদে বন্ধুর পরিচয়। সে হলো আমার বন্ধু # Abdullah Al Masum Bejoy তার সমস্ত উপার্জনে সর্বোচ্চ অর্থে প্রায় 5 লক্ষ টাকার বিনিময়ে আমাকে উদ্ধার করা হয়। পরিশেষে ধন্যবাদ জানাই প্রিয় বন্ধুকে, এবং ধন্যবাদ জানায় খাগড়াছড়ির পার্বত্য অঞ্চলের সামরিক, দাপ্তরিক, এবং প্রশাসনিক, উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের, যারা আমাকে আগামীর এ পার্বত্য অঞ্চলের নিরাপদ ব্যবস্থা নিশ্চিত করে আশ্বাস দিয়ে যান।

অতঃপর সকলের কাছে দোয়া প্রার্থী এখনো পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছি।”

পোস্ট স্কিনশট

নোয়াখালীর ছেলে মোঃ শেফায়েত উল্লাহ সোহানের উপরোক্ত ফেসবুক পোস্টের লেখা পড়ে খুব সহজেই অনুমেয় যে, উপজাতীয়দের বাধা কিন্তু শুধু পার্বত্য বাঙ্গালীরা নয়। বস্তুত, সমগ্র বাঙ্গালীরাই তাদের বাধা। বলাবাহুল্য যে, তারা মূলত বাঙ্গালী বিদ্বেষী। পার্বত্য চট্টগ্রামে তারা বাঙ্গালীদের কোনো প্রকার উপস্থিতি সহ্য করতে পারেনা। তাই পাহাড়ে বাঙ্গালীদের উপর হত্যা, অপহরণ ও চাঁদাবাজি অব্যাহত রেখেছে। মোঃ শেফায়েত উল্লাহ সোহানের সাথে যে, অবিচার, অন্যায় উপজাতি সন্ত্রাসীরা করেছে তা খুবি অমানবিকতা। এই রকম ঘটনা পার্বত্য চট্টগ্রামে অহরহ ঘটে। যা ভয়ে কেউ প্রকাশ করেনা। আমাদের দেশের গণমাধ্যম তা প্রকাশ করেনা।

প্রিয় পাঠক আপনারা পড়ছেন, HWF & HBF এর পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কে লেখা। প্রচারের স্বার্থেই লেখা শেয়ার করুন।

দুঃখটা এখানে যে, পার্বত্য উপজাতি সন্ত্রাসীরা যে, চাঁদাবাজির টাকার জন্য যে কাউকেই হত্যা বা অপহরণ করতে পারে তা এদেশের অধিকাংশ বাঙ্গালী বুঝতে অক্ষম। এখানে কে পার্বত্য বাঙ্গালী আর কে সমতল বাঙ্গালী তা তাদের বিবেচ্য বিষয় নয়। তাদের কাছে সবাই বাঙ্গালী। এই কথাটি সকল বাঙ্গালীর বুঝা উচিত।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More