রাজধানী ঢাকার বুকে আদিবাসী শব্দ যুক্ত কলেজ: বিতর্ক এবং সমালোচনা।

0

মোঃ সোহেল রিগ্যান:

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা এখনো একাধিক প্রতিষ্ঠান ধারণ করছে ‘আদিবাসী’ শব্দযুক্ত নাম। এমনই একটি প্রতিষ্ঠান হলো মীরপুরের ‘বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজ’, যা বর্তমানে সরকারের আদেশ সত্ত্বেও সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। সরকার ১৯ জুলাই ২০২২ তারিখে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে ‘আদিবাসী’ শব্দটি ব্যবহার না করার অনুরোধ জানিয়েছিল, তবে বাস্তবতা হলো, এই শব্দটি এখনও কিছু প্রতিষ্ঠান ও সরকারি নথিতে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিশেষ করে, এ ধরনের শব্দের ব্যবহার নিয়ে বিশেষজ্ঞ মহলে উদ্বেগ এবং বিতর্ক বৃদ্ধি পেয়েছে।

প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সরকারের পক্ষ থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দের ব্যবহার বন্ধে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে, তবে অনেক সরকারি কর্মকর্তা ও নেতারা এখনো এই শব্দ ব্যবহার অব্যাহত রেখেছেন। বিশেষ করে, পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত উপজাতি জনগোষ্ঠীকে আদিবাসী হিসেবে সম্বোধন করা হচ্ছে, যা সরকারের স্পষ্ট নির্দেশনার বিরুদ্ধে যায়। এই পরিস্থিতি বিশেষভাবে উদ্বেগজনক, কারণ এটি সরকারের অবস্থান ও নীতির অগ্রগতির সাথে সাংঘর্ষিক হতে পারে।

একদিকে সরকার ‘আদিবাসী’ শব্দটি ব্যবহার না করার নির্দেশ দিচ্ছে, অন্যদিকে ঢাকা শহরে এমন কলেজের অস্তিত্ব রহস্য সৃষ্টি করেছে। ‘বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজ’ নামক কলেজটি কিভাবে সরকারী অনুমোদন পেল, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো উত্তর মেলেনি। এ প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষাবিদ ও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি সরিষায় ভূত থাকার মত। এর ফলে দেশের যুবসমাজের মধ্যে ভুল ধারণা তৈরি হতে পারে, যা ভবিষ্যতে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।

রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহল থেকে উঠে আসা প্রতিবন্ধকতা এবং সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে আসা সমালোচনা এই ইস্যুকে আরও জটিল করে তুলেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে, যেখানে নেটিজেনরা ‘আদিবাসী’ শব্দের ব্যবহার বন্ধের জন্য সরকারের কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছেন।

এদিকে, সরকারকেই এক্ষেত্রে আরো সতর্ক হতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে ‘আদিবাসী’ শব্দের ব্যবহার কোনওভাবেই প্রতিষ্ঠান বা নথিপত্রে আর না দেখা যায়। বিশেষত, ‘বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজ’-এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলির নাম সংশোধন অথবা বন্ধ করা অত্যন্ত জরুরি বলে অভিমত প্রকাশ করছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

তারা মনে করছেন, ‘আদিবাসী’ শব্দের ব্যবহার একটি জাতিগত, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক বিষয়। এটি অন্যদিকে জাতিগত সংখ্যালঘুদের মধ্যে বিভেদ এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী মনোভাব তৈরি করতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তা ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। ফলে, সরকারের উচিত এই সমস্যার সমাধান করে, জাতিগত সত্তা সংক্রান্ত বিষয়ের সঠিক প্রতিফলন নিশ্চিত করা।

পরিশেষে, এটি পরিষ্কার যে, সরকারকে ‘আদিবাসী’ শব্দের ব্যবহার বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে, যেন ভবিষ্যতে এই বিষয়টি আবার কোনো ধরনের বিতর্কের সৃষ্টি না করে।

আগের পোস্টভারতের অরুণাচলের চাকমা, হাজংদের দেওয়া ‘রেসিডেন্সিয়াল প্রুফ সার্টিফিকেট’ স্থগিত।
পরের পোস্টপার্বত্য চুক্তি পক্ষ জেএসএস সন্তুর হাতে অত্যাধুনিক মারণাস্ত্র।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন