সেনাক্যাম্প সরাতে হবে কেএনএফ এর এই দাবি কী মামার বাড়ির আবদার!

0

মোঃ সোহেল রিগ্যান- কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট বা কেএনএফ একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন। কেএনএফ-এর প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে নাথান বম এর নাম গণমাধ্যমে ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে এসেছে। এই সংগঠনটি শুরুতে সামাজিক সংগঠন এবং সেবামূলক সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে প্রশাসন ও সেনাবাহিনীকে বিভিন্ন জনসেবামূলক কর্মসূচীতে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ করলেও তাদের মূলত লক্ষ্য উদ্দেশ্য ছিল পার্বত্য চট্টগ্রামে বিচ্ছিন্নতাবাদ এবং বাংলাদেশ বিরোধী কর্মকাণ্ড করা। তাদের বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ৬ অক্টোবর থেকে শুরু হয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান। অভিযানে কোণঠাসা হয়ে তারা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। তারা এখন দাবি করছে সেনাক্যাম্প সরিয়ে নিতে হবে। তাদের এই দাবি কী মামার বাড়ির আবদার? পার্বত্য চট্টগ্রামে রাষ্ট্রের অখণ্ডতার স্বার্থে সেনাবাহিনী আছে থাকবে। দেশের অন্যান্য অঞ্চলে সেনাবাহিনী থাকতে পারলে পার্বত্য চট্টগ্রামে থাকতে সমস্যা কোথায়? পার্বত্য চুক্তিতে কোথাও বলা নেই যে পার্বত্য চট্টগ্রামে একদম সেনাবাহিনী থাকতে পারবে না? চুক্তিতে বলা আছে পার্বত্য চট্টগ্রামে মোট ৬টি সেনানিবাস থাকবে। সেসব সেনানিবাস কোথায় কীভাবে কোন পরিসরে থাকে তা বলা নেই। একটি তথ্য উল্লেখ করতে চাই, সেনাবাহিনী স্বাধীনতার কাল থেকে সুনামের সাথে কাজ করছে৷ জাতিসংঘে সেনাবাহিনী প্রশংসা কুড়িয়েছে। এদেশের সেনাবাহিনীর সুনাম এবং অর্জন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। শান্তিরক্ষা মিশনে সেনাবাহিনীর অবদানে সিয়েরা লিওন এর মত দেশ বাংলা ভাষাকে সে দেশের দ্বিতীয় রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এমন গর্বের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা, বানোয়াট ও কুৎসা অপপ্রচার আমরা দেশপ্রেমিক জনতা মেনে নেবনা। শুরুতেই কুকি চিন ভালো ছিল৷ ভালো ছিল তাদের প্রতিষ্ঠাতা নেতা নাথানবম। শুরুতে তারা সেনাবাহিনীর সঙ্গে ভালো ছিল। কিন্তু তাদের পূর্ব পরিকল্পনা কেউ বুঝতে পারেনি। তারা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী, পশ্চিমা এনজিও, মিশনারী ও খ্রিস্টান মিশনারীদের মদদপুষ্টে নিজেদের একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে। এরপর হইতে তারা ঘোষণা করেন, তাদের ভাষায়, “সুবিধা বঞ্চিত কুকি-চিন জনগোষ্ঠীর জন্যে স্বশাসিত বা পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন ক্ষমতাসহ একটি ছোট রাজ্য” এবং তার আদলে তারা স্বাধীন রাষ্ট্রও দাবির পক্ষে সশস্ত্র সংগ্রামের পরিকল্পনা করেন। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অব্যাহত অভিযানে তারা এখন ছিন্ন-ছিচ্ছিন। তারা এখন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে টিকতে না পেরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করছে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে জনমতে নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করার। তারা দাবি করেছিল বান্দরবানের ক্ষুদ্র জাতিসত্তার পাঁচটি জনগোষ্ঠীর অধিকার নিয়ে আন্দোলন করে। কিন্তু পাঁচ জাতির সংগঠনের নেতারা দাবি করেছেন, জাতিগতভাবে তারা পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সঙ্গে জড়িত নন। কেউ বিপথগামী হয়ে বিচ্ছিন্নভাবে এ ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। পাঁচটি ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি করা হয়।

কেএনএফ এর সেনাক্যাম্প প্রত্যাহার দাবির বার্তা সম্পর্কে বলতে চাই তারা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সম্পর্কে কতটুকু জানে? একটি রাষ্ট্রের সর্ববৃহৎ বাহিনীকে যে হুমকি দিচ্ছে তারা কী ধারণা রাখে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শক্তি ও সক্ষমতার কথা? তারা সাধারণ জনসাধারণকে মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে এবং অপপ্রচার বিভ্রান্তি ছড়িয়ে কতদিন টিকে থাকবে? বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তাদের মত মেরুদণ্ডহীন সন্ত্রাসীদের নিশ্চিহ্ন করতে বেশি সময় লাগবে না। সুতরাং বলতে চাই সাধু সাবধান। যদি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে দুঃসাহস প্রদর্শন করার বিন্দুমাত্র চেষ্টা করে বিষদাঁত উপড়ে ফেলা হবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More