রাঙামাটি সরকারি কলেজে অার্থিকভাবে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের জন্য দরিদ্র তহবিল থেকে এককালীন আর্থিক সাহায্য প্রদানের তালিকা অত্র কলেজের ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হয়েছে ২২শে ফেব্রুয়ারি গতকাল বুধবার, উক্ত তালিকায় বাঙালী শিক্ষার্থীরা বৈষম্যের শিকার হওয়ায় প্রতিবাদ জানিয়ে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) রাঙামাটি সরকারি কলেজ শাখা।
রাঙামাটি সরকারি কলেজের ৩৪৩ শিক্ষার্থীকে আর্থিক সাহায্য প্রদানের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১২০ (৩৪.৯৯%) জন বাঙালী এবং ২২৩ (৬৫.০১%) জন অবাঙালী তথা ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর শিক্ষার্থী সাহায্য পাবে। জনসংখ্যা অনুপাতে বাঙালীরা ৫২% হলেও বাঙালী শিক্ষার্থীদের সমান ভাবে উক্ত তালিকায় নাম প্রকাশ না করে অবাঙালীদের ৬৫% দেওয়ায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে বাঙালী শিক্ষার্থীদের মাঝে। তাই পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ রাঙামাটি সরকারি কলেজ শাখা উক্ত বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) রাঙামাটি সরকারি কলেজ শাখার আহ্বায়ক ও পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র শহিদুল ইসলাম বলেন, রাঙামাটি সরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষ থেকে এই ধরনের বৈষম্য মেনে নেওয়া যায় না, আমরা বরাবরই অসাম্প্রদায়িক অবস্থানের দাবি জানিয়ে আসছি, আমরা চাই সকল সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীরা দরিদ্র তহবিল থেকে আর্থিক সহযোগীতা সমানভাবে পাক, এছাড়াও কলেজ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সকল কার্যক্রমে সকল জনগোষ্ঠীকে যাতে সমান ভাবে সুযোগ দেওয়া হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ রাঙামাটি জেলা সভাপতি মোঃ হাবীব আজম কলেজ শাখার বিবৃতিতে একত্মতা জানিয়ে বলেন, রাঙামাটিতে পাহাড়ীদের আঞ্চলিক দল পিসিপিকে কলেজ ক্যাম্পাসে কার্যক্রম করতে দিচ্ছে কলেজ কর্তৃপক্ষ, অন্যদিকে বাঙালীদের একমাত্র আঞ্চলিক ছাত্র সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) কলেজ ক্যাম্পাসে কার্যক্রম করতে চাইলে কলেজ কর্তৃপক্ষ অনুমতি দেন না, এই বৈষম্য কেন? অথচ পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) জেএসএসের একটি ছাত্র সংগঠন, তাদের সংগঠন অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজ লালন পালন করে, তেমনি একটি সন্ত্রাসী সংগঠনের ছাত্র সংগঠনকে কলেজ ক্যাম্পাসে অবাধে কার্যক্রম পরিচালনা করতে দিয়েছে, অন্যদিকে বাঙালী দের অধিকার আদায়ে ও পার্বত্য চট্টগ্রামের সন্ত্রাস বিরোধী অবস্থান এবং দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার পক্ষের সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ (পিসিএনপি’র) ছাত্র সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপিকে) কার্যক্রম করতে অনুমতি না দেওয়া কলেজ কর্তৃপক্ষের চরম বৈষম্য মূলক আচরণ।
আমরা আশা করি রাঙামাটি সরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষ দরিদ্র তহবিল থেকে আর্থিক সহযোগীতা সকল সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের সমান ভাবে দিবে এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদকে ক্যাম্পাসে কার্যক্রম পরিচালনা করতে অনুমতি দিবে সব ধরণের বৈষম্যের উর্দ্ধে উঠে।
হাবীব আজম বিবৃতিতে আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষাবৃত্তি, কোটা ও চাকরি ক্ষেত্রে বাঙালী শিক্ষার্থীদের সাথে সাম্প্রদায়িক বৈষম্যের প্রতিবাদে আগামী ২৮শে ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাঙামাটি জেলায় বিক্ষোভ সমাবেশ করবে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) রাঙামাটি জেলা শাখা, এছাড়াও আগামীতে আরো কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে বিবৃতিতে হুশিয়ারি দেওয়া হয়।